এডিসি লাবনী ও কনস্টেবলের আত্মহত্যার হিসাব মিলাতে পারছে না পুলিশ

দুই অপমৃত্যু মামলা

মাগুরায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর মারা যাওয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার খন্দকার লাবনী তার অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসায় ৫০ লাখ টাকার জোগান দিয়েছেন বলে ভাষ্য সহকর্মীদের। ভারতে স্বামীর চিকিৎসার জন্য ছুটি দিয়ে দুই মাস অবস্থান করেছিলেন। তার পরও কেন তিনি স্বামীর সংসারে অসুখী ছিলেন এ প্রশ্নের উত্তর মিলাতে পারছে পুলিশ।’ এদিকে এডিসি লাবনী আক্তার ও কনস্টেবল মাহামুদুলের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুজনকেই পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এডিসি লাবনীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে উইমেন পুলিশ নেটওয়ার্ক।

পুলিশের ভাষ্য, খন্দকার লাবনী কেন আত্মহত্যা করবে এর কোন হিসাব তারা মিলাতে পারছেন না। পারিবারিক অশাস্তিতে যদি তিনি আত্মহত্যাই করেন তাহলে তার সাবেক দেহরক্ষী কনস্টেবল মাহামুদুল কাছাকাছি সময়ে কেন আত্মহত্যা করল? কনস্টেবল মাহমুদুল ও খন্দকার লাবনীর মধ্যে সম্পর্কের যে খবর বলা হচ্ছে তা নিছক অপ্রচার বলে মনে করছেন সহকর্মীরা গত বুধবার রাতে মাগুরায় নানা বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ৪০ বছর বয়সী খন্দকার লাবনীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ মৃত্যুর পর ভোরে পুলিশ ব্যারাকের একটি ভবনের ছাদে নিজের অস্ত্রের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মারা যান পুলিশ কনস্টেবল ২৫ বছর বয়সী মাহামুদুল হাসান। মাহমুদুল কনেস্টবলের চাকরি শুরু করার পর খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাকে কর্মরত খন্দকার লাবলীর দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত হন। দের মাস আগে সেখান থেকে বদলি হয়ে মাগুরায় জেলা পুলিশে আসেন।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার ভাষ্য, ব্যাংকার আবদুল্লাহার সঙ্গে বিয়ের পর তাদের সংসারে ২ সন্তান রয়েছে। আবদুল্লাহ আর খন্দকার লাবনী একই জেলার বাসিন্দা। পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছে। স্বামীর ক্যানসার ধরা পড়ার পর আপসেট হয়ে পড়েন লাবনী। স্বামীকে সুস্থ করার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিপুল পরিমাণ টাকার জোদান দেয়া থেকে শুরু করে স্বামীকে নিয়ে এই চিকিৎসক, ওই চিকিৎসক সবদিকেই দৌড়াদৌড়ি করতেন। কিছুদিন আগে ব্যাচমেটসহ পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বামীর চিকিৎসায় ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তার ব্যাচম্যাটসহ পুলিশের বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতায় ৪০ লাখ টাকার মতো জোগারও করে ফেলেন লাবনী। সেই টাকা পুরোটাই স্বামীর চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করেছেন। সম্প্রতি ভারতে গিয়ে স্বামীর সঙ্গে টানা দু মাস ছিলেন স্বামীর চিকিৎসার জন্য।

লাবনীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আজম মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদাহ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, তার মেয়ে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও হাসিখুশি মনের মানুষ ছিল। তার মতো মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে এটা তিনি ভাবতেও পারছেন না। ‘তবে লাবনীর স্বামী বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক তারেক আবদুল্লার সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। প্রায় প্রতিদিন তাদের মধ্যে ঝাগড়াঝাটি হতো। বিশেষ করে অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকত। মূলত স্বামীর সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের জেরেই লাবনী আত্মহত্যা করেছে।’

লাবনীর আত্মহত্যার সঙ্গে তার সাবেক দেহরক্ষী মাহামুদুল হাসানের আত্মহত্যার কোন সম্পর্ক আছে কি না জানতে চাইলে খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, ‘এ দুটি ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক নেই।’

আত্মহননকারী পুলিশ সদস্য মাহামুদুল হাসানের বাবা চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত পুলিশের কনস্টেবল এজাজুল হক খান ছেলের সম্পর্কে বলেন, মাহামুদুল খুব হাসিখুশি ও শান্ত মেজাজের ছিলেন। ঘটনার আগের রাতেও ফোনে বাবা-ছেলের কথা হয়। কনস্টেবলের চাকরি নিয়ে সে খুশি ছিল না। কারণ এ চাকরিতে অনেক কষ্ট বলে সে তার মাকে বলত। তার ইচ্ছা ছিল পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর পদে চাকরি করার। সেজন্য সে চাকরির পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে পাংশা কলেজে অ্যাকাউন্টিংয়ে অনার্সে ভর্তি হয়েছিল। সে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।’ তবে মাহামুদুল কেন অত্মহত্যা করেছেন তা তিনি বলতে পারেননি। এজাজুল হক খান বলেন, ‘মাহামুদুল যে খুলনায় এডিসি খন্দকার লাবনীর দেহরক্ষী ছিল এটাও তার মৃত্যুর পর জানতে পেরেছি।’

কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বড় বোন সুমাইয়া খাতুন কুষ্টিয়ায় থাকেন। সুমাইয়া বলেন, ‘দুই বছর চার মাস আগে মাহামুদুল পুলিশের চাকরিতে যোগ দেয়। মাহমুদুলকে অনেক স্নেহ করতেন বড় বোনতুল্য লাবনী। লাবনী মাহমুদুলকে শুধু ছোট ভাই ভাবতেন। তাদের মধ্যে কোন দৃষ্টিকটু সম্পর্ক ছিল না। তাদের এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’

মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুর ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে দুই আত্মহত্যার ঘটনায় মাগুরা থানা ও শ্রীপুর থানায় দুটি ইউডি মামলা হয়েছে। পুলিশ দুটি আত্মহত্যার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে। ‘লাবনী আক্তারের পারিবারিক কলহ ও একই দিনে সাবেক দেহরক্ষী মাহমুদুল হাসানের আত্মহত্যার বিষয়সহ সব দিক মাথায় রেখে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তদন্তে কোন ক্লু পাওয়া গেলে তা সাংবাদিকদের সময়মতো জানানো হবে।’

এদিকে এডিসি খন্দকার লাবনীর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক এক শোকবার্তায় জানিয়েছে, ৩০ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবনী একজন চৌকশ, দক্ষ, সাহসী ও মেধাবী ছিলেন। উইমেন পুলিশ নেটওয়ার্কের সভাপতি এসবির ডিআইজি আমেনা বেগম স্বাক্ষরিত বার্তায় বলা হয়েছে, প্রতিভাবান পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুতে পুলিশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে লাবনীর স্বামী ক্যানসারে আক্রান্ত। কিছুদিন আগে তিনি তার স্বামীর চিকিৎসা ভারত থেকে করিয়ে এনেছেন। তার স্বামীর চিকিৎসা চলমান রয়েছে। তার এক কন্যা সন্তান শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার স্বামীর অসুস্থতা, চিকিৎসার খচর, ভবিষৎ নিয়ে দুচিন্তায় ছিলেন। পারিবারিক ও মানসিক বিপর্যস্ততার কারণেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২ , ০৮ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৪ জিলহজ ১৪৪৩

এডিসি লাবনী ও কনস্টেবলের আত্মহত্যার হিসাব মিলাতে পারছে না পুলিশ

দুই অপমৃত্যু মামলা

সাইফ বাবলু

মাগুরায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর মারা যাওয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার খন্দকার লাবনী তার অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসায় ৫০ লাখ টাকার জোগান দিয়েছেন বলে ভাষ্য সহকর্মীদের। ভারতে স্বামীর চিকিৎসার জন্য ছুটি দিয়ে দুই মাস অবস্থান করেছিলেন। তার পরও কেন তিনি স্বামীর সংসারে অসুখী ছিলেন এ প্রশ্নের উত্তর মিলাতে পারছে পুলিশ।’ এদিকে এডিসি লাবনী আক্তার ও কনস্টেবল মাহামুদুলের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুজনকেই পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এডিসি লাবনীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে উইমেন পুলিশ নেটওয়ার্ক।

পুলিশের ভাষ্য, খন্দকার লাবনী কেন আত্মহত্যা করবে এর কোন হিসাব তারা মিলাতে পারছেন না। পারিবারিক অশাস্তিতে যদি তিনি আত্মহত্যাই করেন তাহলে তার সাবেক দেহরক্ষী কনস্টেবল মাহামুদুল কাছাকাছি সময়ে কেন আত্মহত্যা করল? কনস্টেবল মাহমুদুল ও খন্দকার লাবনীর মধ্যে সম্পর্কের যে খবর বলা হচ্ছে তা নিছক অপ্রচার বলে মনে করছেন সহকর্মীরা গত বুধবার রাতে মাগুরায় নানা বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ৪০ বছর বয়সী খন্দকার লাবনীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ মৃত্যুর পর ভোরে পুলিশ ব্যারাকের একটি ভবনের ছাদে নিজের অস্ত্রের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মারা যান পুলিশ কনস্টেবল ২৫ বছর বয়সী মাহামুদুল হাসান। মাহমুদুল কনেস্টবলের চাকরি শুরু করার পর খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাকে কর্মরত খন্দকার লাবলীর দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত হন। দের মাস আগে সেখান থেকে বদলি হয়ে মাগুরায় জেলা পুলিশে আসেন।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার ভাষ্য, ব্যাংকার আবদুল্লাহার সঙ্গে বিয়ের পর তাদের সংসারে ২ সন্তান রয়েছে। আবদুল্লাহ আর খন্দকার লাবনী একই জেলার বাসিন্দা। পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছে। স্বামীর ক্যানসার ধরা পড়ার পর আপসেট হয়ে পড়েন লাবনী। স্বামীকে সুস্থ করার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিপুল পরিমাণ টাকার জোদান দেয়া থেকে শুরু করে স্বামীকে নিয়ে এই চিকিৎসক, ওই চিকিৎসক সবদিকেই দৌড়াদৌড়ি করতেন। কিছুদিন আগে ব্যাচমেটসহ পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বামীর চিকিৎসায় ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তার ব্যাচম্যাটসহ পুলিশের বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতায় ৪০ লাখ টাকার মতো জোগারও করে ফেলেন লাবনী। সেই টাকা পুরোটাই স্বামীর চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করেছেন। সম্প্রতি ভারতে গিয়ে স্বামীর সঙ্গে টানা দু মাস ছিলেন স্বামীর চিকিৎসার জন্য।

লাবনীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আজম মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদাহ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, তার মেয়ে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও হাসিখুশি মনের মানুষ ছিল। তার মতো মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে এটা তিনি ভাবতেও পারছেন না। ‘তবে লাবনীর স্বামী বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক তারেক আবদুল্লার সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। প্রায় প্রতিদিন তাদের মধ্যে ঝাগড়াঝাটি হতো। বিশেষ করে অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকত। মূলত স্বামীর সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের জেরেই লাবনী আত্মহত্যা করেছে।’

লাবনীর আত্মহত্যার সঙ্গে তার সাবেক দেহরক্ষী মাহামুদুল হাসানের আত্মহত্যার কোন সম্পর্ক আছে কি না জানতে চাইলে খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, ‘এ দুটি ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক নেই।’

আত্মহননকারী পুলিশ সদস্য মাহামুদুল হাসানের বাবা চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত পুলিশের কনস্টেবল এজাজুল হক খান ছেলের সম্পর্কে বলেন, মাহামুদুল খুব হাসিখুশি ও শান্ত মেজাজের ছিলেন। ঘটনার আগের রাতেও ফোনে বাবা-ছেলের কথা হয়। কনস্টেবলের চাকরি নিয়ে সে খুশি ছিল না। কারণ এ চাকরিতে অনেক কষ্ট বলে সে তার মাকে বলত। তার ইচ্ছা ছিল পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর পদে চাকরি করার। সেজন্য সে চাকরির পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে পাংশা কলেজে অ্যাকাউন্টিংয়ে অনার্সে ভর্তি হয়েছিল। সে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।’ তবে মাহামুদুল কেন অত্মহত্যা করেছেন তা তিনি বলতে পারেননি। এজাজুল হক খান বলেন, ‘মাহামুদুল যে খুলনায় এডিসি খন্দকার লাবনীর দেহরক্ষী ছিল এটাও তার মৃত্যুর পর জানতে পেরেছি।’

কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বড় বোন সুমাইয়া খাতুন কুষ্টিয়ায় থাকেন। সুমাইয়া বলেন, ‘দুই বছর চার মাস আগে মাহামুদুল পুলিশের চাকরিতে যোগ দেয়। মাহমুদুলকে অনেক স্নেহ করতেন বড় বোনতুল্য লাবনী। লাবনী মাহমুদুলকে শুধু ছোট ভাই ভাবতেন। তাদের মধ্যে কোন দৃষ্টিকটু সম্পর্ক ছিল না। তাদের এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’

মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুর ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে দুই আত্মহত্যার ঘটনায় মাগুরা থানা ও শ্রীপুর থানায় দুটি ইউডি মামলা হয়েছে। পুলিশ দুটি আত্মহত্যার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে। ‘লাবনী আক্তারের পারিবারিক কলহ ও একই দিনে সাবেক দেহরক্ষী মাহমুদুল হাসানের আত্মহত্যার বিষয়সহ সব দিক মাথায় রেখে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তদন্তে কোন ক্লু পাওয়া গেলে তা সাংবাদিকদের সময়মতো জানানো হবে।’

এদিকে এডিসি খন্দকার লাবনীর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক এক শোকবার্তায় জানিয়েছে, ৩০ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবনী একজন চৌকশ, দক্ষ, সাহসী ও মেধাবী ছিলেন। উইমেন পুলিশ নেটওয়ার্কের সভাপতি এসবির ডিআইজি আমেনা বেগম স্বাক্ষরিত বার্তায় বলা হয়েছে, প্রতিভাবান পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুতে পুলিশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে লাবনীর স্বামী ক্যানসারে আক্রান্ত। কিছুদিন আগে তিনি তার স্বামীর চিকিৎসা ভারত থেকে করিয়ে এনেছেন। তার স্বামীর চিকিৎসা চলমান রয়েছে। তার এক কন্যা সন্তান শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার স্বামীর অসুস্থতা, চিকিৎসার খচর, ভবিষৎ নিয়ে দুচিন্তায় ছিলেন। পারিবারিক ও মানসিক বিপর্যস্ততার কারণেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।