দেশে কোন হাহাকার নেই : কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে কোন হাহাকার নেই। হ্যাঁ, কিছু-কিছু জিনিসের দাম হয়তো কিছুটা বেড়েছে। এটা ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকটের জন্য হয়েছে। আমরা সেটি নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছি। গতকাল বিএআরসি অডিটোরিয়ামে ‘বছরব্যাপী পুষ্টিকর ও উচ্চমূল্যের ফল উৎপাদন শীর্ষক’ এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচারের (বিএএজি) ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ ১ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুর রহিম। মূল প্রবন্ধ ২ উপস্থাপন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ। কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, মঙ্গা শব্দটি আমরা দূর করেছি। গত ১৩ বছরে নীলফামারী-কুড়িগ্রামে মঙ্গায় একজন মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি।

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছরে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। পটাশিয়াম সার যেসব দেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এর মধ্যে আবার রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে খাদ্য সংকট হচ্ছে। সারা পৃথিবীর মানুষ সেটি মোকাবিলা করছে।’ তিনি বলেন, সারের মূল্য আমরা অনেক কমিয়েছি। গত অর্থবছরে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে সারের মূল্যহ্রাস অব্যাহত রেখেছি। এ বছর এখন পর্যন্ত ৮ থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছি। এগুলোর সুফলভোগী কিন্তু গুলশান, ধানমন্ডি এলাকার লোক নয়। এর সুফলভোগী হয়েছেন কৃষকেরা। এর ফলে একটা শান্তির আবহাওয়া বাংলাদেশে বহমান রয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি, তিনি বলেছেন, দাম যতই হোক, কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্যে সার পান ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন।

কৃষিবিদদের উদ্দেশে আবদুর রাজ্জাক বলেন, আপনাদের নেতৃত্বের গুণাবলি থাকতে হবে। লিডারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেখেন আজকে সিপিডির দেবপ্রিয় কিছু বললেই পত্রিকার প্রথম পাতায় আসে। বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচারের (বিএএজি) কর্মকর্তারা একটা ফোরাম গঠন করলে আপনারা আরও বেশি কাজ করতে পারতেন।

বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, দেশে আগুন, ভাঙটচুরের মাধ্যমে কোন নির্বাচন হবে না। সরকার পতন হলে সেটি হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচনে আমরা যদি হেরে যাই তাহলে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব। তিনি বলেন, সারাবছর ফল উৎপাদনকে কীভাবে আরও ব্যাপক আকারে করা যায় সেটির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আগামী ৫ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা নির্ধারণ করতে হবে। এর মধ্যে আমরা সারা বছরব্যাপী ফল উৎপাদনে কীভাবে সক্ষমতা অর্জন করতে পারি, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। উৎপাদন করে কীভাবে সুষ্ঠু উপায়ে এসব ফল বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ করা যাবে সে চেষ্টা করা হবে।

পরে সেমিনারে কৃষিতে বিশেষ অবদান রাখায় সুপ্রিম সিডস নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে কৃষিমন্ত্রী স্বর্ণপদক তুলে দেন। সেমিনারে বক্তারা বছরব্যাপী ফল উৎপাদনে বেশি বেশি প্রশিক্ষণ ও নতুন নতুন ফলের দেশীয় জাত উদ্ভাবনে গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারে সভাপতিত্বে করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচারের (বিএএজি) সভাপতি ও ইমিরেটাস সায়েনটিস্ট ড. কাজী মোস্তফা এম. বদরুদ্দোজা। বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. নাথুরাম সরকার।

রবিবার, ২৪ জুলাই ২০২২ , ০৯ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৫ জিলহজ ১৪৪৩

দেশে কোন হাহাকার নেই : কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে কোন হাহাকার নেই। হ্যাঁ, কিছু-কিছু জিনিসের দাম হয়তো কিছুটা বেড়েছে। এটা ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকটের জন্য হয়েছে। আমরা সেটি নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছি। গতকাল বিএআরসি অডিটোরিয়ামে ‘বছরব্যাপী পুষ্টিকর ও উচ্চমূল্যের ফল উৎপাদন শীর্ষক’ এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচারের (বিএএজি) ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ ১ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুর রহিম। মূল প্রবন্ধ ২ উপস্থাপন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ। কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, মঙ্গা শব্দটি আমরা দূর করেছি। গত ১৩ বছরে নীলফামারী-কুড়িগ্রামে মঙ্গায় একজন মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি।

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছরে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। পটাশিয়াম সার যেসব দেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এর মধ্যে আবার রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে খাদ্য সংকট হচ্ছে। সারা পৃথিবীর মানুষ সেটি মোকাবিলা করছে।’ তিনি বলেন, সারের মূল্য আমরা অনেক কমিয়েছি। গত অর্থবছরে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে সারের মূল্যহ্রাস অব্যাহত রেখেছি। এ বছর এখন পর্যন্ত ৮ থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছি। এগুলোর সুফলভোগী কিন্তু গুলশান, ধানমন্ডি এলাকার লোক নয়। এর সুফলভোগী হয়েছেন কৃষকেরা। এর ফলে একটা শান্তির আবহাওয়া বাংলাদেশে বহমান রয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি, তিনি বলেছেন, দাম যতই হোক, কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্যে সার পান ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন।

কৃষিবিদদের উদ্দেশে আবদুর রাজ্জাক বলেন, আপনাদের নেতৃত্বের গুণাবলি থাকতে হবে। লিডারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেখেন আজকে সিপিডির দেবপ্রিয় কিছু বললেই পত্রিকার প্রথম পাতায় আসে। বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচারের (বিএএজি) কর্মকর্তারা একটা ফোরাম গঠন করলে আপনারা আরও বেশি কাজ করতে পারতেন।

বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, দেশে আগুন, ভাঙটচুরের মাধ্যমে কোন নির্বাচন হবে না। সরকার পতন হলে সেটি হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচনে আমরা যদি হেরে যাই তাহলে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব। তিনি বলেন, সারাবছর ফল উৎপাদনকে কীভাবে আরও ব্যাপক আকারে করা যায় সেটির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আগামী ৫ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা নির্ধারণ করতে হবে। এর মধ্যে আমরা সারা বছরব্যাপী ফল উৎপাদনে কীভাবে সক্ষমতা অর্জন করতে পারি, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। উৎপাদন করে কীভাবে সুষ্ঠু উপায়ে এসব ফল বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ করা যাবে সে চেষ্টা করা হবে।

পরে সেমিনারে কৃষিতে বিশেষ অবদান রাখায় সুপ্রিম সিডস নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে কৃষিমন্ত্রী স্বর্ণপদক তুলে দেন। সেমিনারে বক্তারা বছরব্যাপী ফল উৎপাদনে বেশি বেশি প্রশিক্ষণ ও নতুন নতুন ফলের দেশীয় জাত উদ্ভাবনে গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারে সভাপতিত্বে করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচারের (বিএএজি) সভাপতি ও ইমিরেটাস সায়েনটিস্ট ড. কাজী মোস্তফা এম. বদরুদ্দোজা। বাংলাদেশ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. নাথুরাম সরকার।