আনারসের ভরা মৌসুমে বাজার জমজমাট

টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে উৎপাদিত জলডুগী ও কলম্বিয়া জাতের আনারসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকার কারণে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে মধুপুরের আনরস। কুষ্টিয়া, বগুড়া, সিলেট, ঢাকা, নাটোর, রাজশাহী, খুলনা, হবিগঞ্জ, নীলফামারী, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নারায়নগঞ্জ ও দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। মধুপুরের আনারসের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। তবে আগের সেই সুনাম অনেকটা কমেছে বলে আনারস কিনতে আসা ক্রেতারা জানান। তাদের দাবি মধুপুরের আনারসের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার।

আনারসের রাজধানী হিসেবে খ্যাত লাল মাটি মধুপুর গড়ে জমে উঠেছে রসালো ফলের আনারসের বাজার। এখন আনারসের ভরা মৌসুম। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে ভাল দাম পাচ্ছে কৃষকরা। লাভের মুখ দেখতে পেয়ে কৃষকের মুখে যেন হাসি ফুটেছে। গড়াঞ্চলে সর্বত্র বিরাজ করছে চাষী, পাইকার ও ফরিয়া মহাজনদের ব্যস্ত সময়। কাকডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত আনারসকে ঘিরেই তাদের সময় কাটছে। সকাল থেকে গড় এলাকা জলছত্র, মোটের বাজার, গারো বাজার, সাগরদিঘী, আশ্রা বাজার ও ফুলবাড়ীয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় জমে উঠে বাজার। বিকিনিকি চলে রাত পর্যন্ত। সকাল থেকেই সাইকেল, ভ্যান, রিক্সা অটোবাইক ও ঘোড়ার গাড়ী দিয়ে বাজারে আনারস নিয়ে আসা শুরু হয়। বাজারে সারিবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে রাখা হয় আনারসের বাহনগুলো। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা কৃষকদের সাথে দর কষাকষির মধ্যে দিয়ে আনারস ক্রয় করে স্তুপাকার করেন। ক্রেতাদের আনারস ক্রয় চাহিদা মত হয়ে গেলে ট্রাকে তোলা শুরু হয়। এ এলাকার আনারস সাজানো শ্রমিকদের ফুসরত নেওয়ার জন্য সময় নেই। বাজারগুলো যেন আনারসকে ঘিরেই পুরটা সময় আবর্তিত হচ্ছে। আনারস মৌসুমে স্থানীয় খাবার হোটেল ও চায়ের দোকানে বেচাকিনি কয়েকগুন বেড়ে যায়। বাজারগুলোতে যেন আনারসের মৌ মৌ গন্ধ বিরাজ করছে।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মধুপুর গড়ের আনারসের অতীত ঐতিহ্য। এক সময় আনারস পরিপক্ক হলে প্রাকৃতিকভাবেই পেকে যেত। বৃষ্টি শুরু হলে আনারস পাকানো রোধ করা সম্ভব হতো না। এমনিতেই পেকে যেত। আনারসের জমিতে গোবর সার দিয়ে চাষ করা হত। ওই সময়টায় আনারসের স্বাদ ও গন্ধ ছিল অতুলনীয়। লোভনীয় ফল হিসেবে দেশ জুড়ে ছিল ঐতিহ্য ও খ্যাতি। স্বাদের কারণে শিয়াল ও ইদুরের উপদ্রব ছিল বেশী।

বর্তমান সময়ে বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষ করতে গিয়ে অধীক মুনাফা লাভের আশায় কৃষক চাষীরা আনারসের আকার, রং উজ্জল ও অসময়ে বাজারে উঠানোর জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এ পথ অবলম্বনের কারণে কৃষকরা লাভবান হলেও ভোক্তা ও আনারসের অতীত ঐতিহ্য হারাচ্ছে। জৌলুস হারাচ্ছে লাল মাটির ইতিহাস ঐতিহ্য খ্যাত মধুপুরের আনারস। এসবের পরেও গত কয়েক বছরের তুলনায় আবহাওয়ার কারণে ভাল দাম পাচ্ছে কৃষকরা।

মধুপুরের জলছত্র বাজারে গিয়ে কথা হয় জাঙ্গালিয়া গ্রামের আনারস চাষি হাবিল হোসেন এর সাথে। তিনি ৭ বিঘা জমিতে আনারসের চাষ করেছেন। তার প্রতি বিঘা জমিতে বিশ থেকে পচিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে তার আনারস বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রচ- গরমে আনারসের চাহিদা বেশি থাকায় দামও পাচ্ছেন ভালো। প্রতি পিচ আনারস বাজারে এনে আকার ভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।

আউশনারা গ্রামের হাফিজুর ও আব্দুল কাদের জানান, তারাও এ বছর ৫ বিঘা জমির আনারস বিক্রি করছেন। তারা বলেন, ঈদ থেকে এ পর্যন্ত প্রচ- গরমে আনারসের চাহিদা বেড়েছে। এতে প্রতিটি আনারস ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। ভাল দাম পেয়ে তারা খুব খুশি।

শুধু হাবিল, হাফিজুর ও আব্দুল কাদেরই নয়, চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে আনারসের ভালো ফলন ও দাম ভালো পেয়ে খুশি অন্যান্য চাষিরাও। এ সব আনারস কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। মধুপুরের আনারস দেশের বিভিন্ন মোকামে গিয়ে প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে এক শত থেকে দেড় শত টাকা পর্যন্ত।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানা যায়, চলতি বছর উপজেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৫ একর জমিতে, যা গতবছরের তুলনায় ১ হাজার ৭২৯ একর বেশি। উপজেলা ছাড়াও গড় এলাকার ঘাটাইল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা এবং জামালপুর সদর উপজেলা এলাকায় আরও সাত হাজার একর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। আনারসের জমিতে আদা, হলুদ, কলা, কচু ও পেঁপে, যেকোন তিনটি ফসল চাষ করা যায়। এ সব আনারস বেশিরভাগই মধুপুরের গারো বাজার ও জলছত্র পাইকারি হাটে বিক্রি করা হয়। জুন মাসের শেষদিকে আনারস উঠতে শুরু করে। চলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

সরেজমিন দেখা যায়, মধুপুর গড়াঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে চাষি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সাইকেল, ভ্যানে করে আনারস নিয়ে আসছেন পাইকারি হাটে। ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় আনারস চাষী হাবিবুর বলেন, এক বিঘা জমিতে তিন হাজার আনারসের চারা লাগিয়েছিলাম। প্রতিটি আনারস উৎপাদনে ১৫ টাকা করে খরচ হলেও প্রতিটি বিক্রি করছি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা পাইকারি দরে। আগে অতি বৃষ্টি, ভাইরাস ও মাটি দূষিত হওয়ার কারণে অনেক আনারস পচে নষ্ট হতো। কিন্তু এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে, নষ্টও হয়নি কোন আনারস।

পাইকারি ক্রেতা আতিকুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচ- গরম। এতে আনারসের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। তাই দামও অনেক বেশি। এক মাস আগেও যে আনারস ২৫-৩০ টাকা দিয়ে কেনা যেত। বর্তমানে সেই আনারস ৪৫-৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়ে গেছে। যদি চাহিদা কমে যায় তখন দামও কমে আসবে।

এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল বলেন, প্রচন্ড গরমে এ বছর আনারসের চাহিদা বেড়েছে। গত কয়েকবছরের চেয়ে এ বছর বেশি দামও পাচ্ছে কৃষকরা। আগামীবছর আনারসের উৎপাদন আরও বাড়বে বলেও তিনি জানান।

সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২ , ১০ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩

আনারসের ভরা মৌসুমে বাজার জমজমাট

হাবিবুর রহমান, মধুপুর (টাঙ্গাইল)

image

মধুপুর (টাঙ্গাইল) : বিক্রির উদ্দেশ্যে বাজারে সাজিয়ে রাখা আনারস -সংবাদ

টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে উৎপাদিত জলডুগী ও কলম্বিয়া জাতের আনারসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকার কারণে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে মধুপুরের আনরস। কুষ্টিয়া, বগুড়া, সিলেট, ঢাকা, নাটোর, রাজশাহী, খুলনা, হবিগঞ্জ, নীলফামারী, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নারায়নগঞ্জ ও দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। মধুপুরের আনারসের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। তবে আগের সেই সুনাম অনেকটা কমেছে বলে আনারস কিনতে আসা ক্রেতারা জানান। তাদের দাবি মধুপুরের আনারসের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার।

আনারসের রাজধানী হিসেবে খ্যাত লাল মাটি মধুপুর গড়ে জমে উঠেছে রসালো ফলের আনারসের বাজার। এখন আনারসের ভরা মৌসুম। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে ভাল দাম পাচ্ছে কৃষকরা। লাভের মুখ দেখতে পেয়ে কৃষকের মুখে যেন হাসি ফুটেছে। গড়াঞ্চলে সর্বত্র বিরাজ করছে চাষী, পাইকার ও ফরিয়া মহাজনদের ব্যস্ত সময়। কাকডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত আনারসকে ঘিরেই তাদের সময় কাটছে। সকাল থেকে গড় এলাকা জলছত্র, মোটের বাজার, গারো বাজার, সাগরদিঘী, আশ্রা বাজার ও ফুলবাড়ীয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় জমে উঠে বাজার। বিকিনিকি চলে রাত পর্যন্ত। সকাল থেকেই সাইকেল, ভ্যান, রিক্সা অটোবাইক ও ঘোড়ার গাড়ী দিয়ে বাজারে আনারস নিয়ে আসা শুরু হয়। বাজারে সারিবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে রাখা হয় আনারসের বাহনগুলো। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা কৃষকদের সাথে দর কষাকষির মধ্যে দিয়ে আনারস ক্রয় করে স্তুপাকার করেন। ক্রেতাদের আনারস ক্রয় চাহিদা মত হয়ে গেলে ট্রাকে তোলা শুরু হয়। এ এলাকার আনারস সাজানো শ্রমিকদের ফুসরত নেওয়ার জন্য সময় নেই। বাজারগুলো যেন আনারসকে ঘিরেই পুরটা সময় আবর্তিত হচ্ছে। আনারস মৌসুমে স্থানীয় খাবার হোটেল ও চায়ের দোকানে বেচাকিনি কয়েকগুন বেড়ে যায়। বাজারগুলোতে যেন আনারসের মৌ মৌ গন্ধ বিরাজ করছে।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মধুপুর গড়ের আনারসের অতীত ঐতিহ্য। এক সময় আনারস পরিপক্ক হলে প্রাকৃতিকভাবেই পেকে যেত। বৃষ্টি শুরু হলে আনারস পাকানো রোধ করা সম্ভব হতো না। এমনিতেই পেকে যেত। আনারসের জমিতে গোবর সার দিয়ে চাষ করা হত। ওই সময়টায় আনারসের স্বাদ ও গন্ধ ছিল অতুলনীয়। লোভনীয় ফল হিসেবে দেশ জুড়ে ছিল ঐতিহ্য ও খ্যাতি। স্বাদের কারণে শিয়াল ও ইদুরের উপদ্রব ছিল বেশী।

বর্তমান সময়ে বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষ করতে গিয়ে অধীক মুনাফা লাভের আশায় কৃষক চাষীরা আনারসের আকার, রং উজ্জল ও অসময়ে বাজারে উঠানোর জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এ পথ অবলম্বনের কারণে কৃষকরা লাভবান হলেও ভোক্তা ও আনারসের অতীত ঐতিহ্য হারাচ্ছে। জৌলুস হারাচ্ছে লাল মাটির ইতিহাস ঐতিহ্য খ্যাত মধুপুরের আনারস। এসবের পরেও গত কয়েক বছরের তুলনায় আবহাওয়ার কারণে ভাল দাম পাচ্ছে কৃষকরা।

মধুপুরের জলছত্র বাজারে গিয়ে কথা হয় জাঙ্গালিয়া গ্রামের আনারস চাষি হাবিল হোসেন এর সাথে। তিনি ৭ বিঘা জমিতে আনারসের চাষ করেছেন। তার প্রতি বিঘা জমিতে বিশ থেকে পচিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে তার আনারস বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রচ- গরমে আনারসের চাহিদা বেশি থাকায় দামও পাচ্ছেন ভালো। প্রতি পিচ আনারস বাজারে এনে আকার ভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।

আউশনারা গ্রামের হাফিজুর ও আব্দুল কাদের জানান, তারাও এ বছর ৫ বিঘা জমির আনারস বিক্রি করছেন। তারা বলেন, ঈদ থেকে এ পর্যন্ত প্রচ- গরমে আনারসের চাহিদা বেড়েছে। এতে প্রতিটি আনারস ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। ভাল দাম পেয়ে তারা খুব খুশি।

শুধু হাবিল, হাফিজুর ও আব্দুল কাদেরই নয়, চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে আনারসের ভালো ফলন ও দাম ভালো পেয়ে খুশি অন্যান্য চাষিরাও। এ সব আনারস কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। মধুপুরের আনারস দেশের বিভিন্ন মোকামে গিয়ে প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে এক শত থেকে দেড় শত টাকা পর্যন্ত।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানা যায়, চলতি বছর উপজেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৫ একর জমিতে, যা গতবছরের তুলনায় ১ হাজার ৭২৯ একর বেশি। উপজেলা ছাড়াও গড় এলাকার ঘাটাইল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা এবং জামালপুর সদর উপজেলা এলাকায় আরও সাত হাজার একর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। আনারসের জমিতে আদা, হলুদ, কলা, কচু ও পেঁপে, যেকোন তিনটি ফসল চাষ করা যায়। এ সব আনারস বেশিরভাগই মধুপুরের গারো বাজার ও জলছত্র পাইকারি হাটে বিক্রি করা হয়। জুন মাসের শেষদিকে আনারস উঠতে শুরু করে। চলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

সরেজমিন দেখা যায়, মধুপুর গড়াঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে চাষি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সাইকেল, ভ্যানে করে আনারস নিয়ে আসছেন পাইকারি হাটে। ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় আনারস চাষী হাবিবুর বলেন, এক বিঘা জমিতে তিন হাজার আনারসের চারা লাগিয়েছিলাম। প্রতিটি আনারস উৎপাদনে ১৫ টাকা করে খরচ হলেও প্রতিটি বিক্রি করছি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা পাইকারি দরে। আগে অতি বৃষ্টি, ভাইরাস ও মাটি দূষিত হওয়ার কারণে অনেক আনারস পচে নষ্ট হতো। কিন্তু এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে, নষ্টও হয়নি কোন আনারস।

পাইকারি ক্রেতা আতিকুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচ- গরম। এতে আনারসের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। তাই দামও অনেক বেশি। এক মাস আগেও যে আনারস ২৫-৩০ টাকা দিয়ে কেনা যেত। বর্তমানে সেই আনারস ৪৫-৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়ে গেছে। যদি চাহিদা কমে যায় তখন দামও কমে আসবে।

এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল বলেন, প্রচন্ড গরমে এ বছর আনারসের চাহিদা বেড়েছে। গত কয়েকবছরের চেয়ে এ বছর বেশি দামও পাচ্ছে কৃষকরা। আগামীবছর আনারসের উৎপাদন আরও বাড়বে বলেও তিনি জানান।