গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের প্রতি ক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা

নাট্যকর্মীদের এক সময়ের গর্ব বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন যাত্রা শুরু করার পর থেকে দেশের নানা সংকট, আন্দোলন সংগ্রাম আর দাবী আদায়ে ভূমিকা রাখলেও বর্তমান সময়ে সংগঠনটি নিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ নাট্যকর্মীরা। থিয়েটার চর্চায় সংকট নিরসনের লক্ষে আয়োজিত এক মুক্ত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় নিজেদের ক্ষোভ ও ফেডারেশনের নানা অনিয়ম তুলে ধরেন নাট্যকর্মীরা। বাংলাদেশের সাধারণ নাট্যকর্মী ব্যানারে ২৩ জুলাই বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।

নাট্যদলগুলোর মহড়া কক্ষের সংকট, হল ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম সহ বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকা-ে থিয়েটার অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নানা রকম সংকট ও স্থবিরতা। উদ্ভূত সংকটসমূহ নিরসনকল্পে এবং থিয়েটার তথা সংস্কৃতিচর্চাকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়েছে। তরুণ নাট্যকর্মীদের এই আয়োজনে নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, আসাদুজ্জামান নূর, মামুনুর রশিদ, মফিদুল হক, নাসিরউদ্দিন ইউসুফসহ শত থত নাট্যকর্মীরা উপস্থিত থাকলেও এই আয়োজনকে গুরুত্ব দেয়নি গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান। এর কমিটির সদস্যরা নাট্যকর্মীদের এই আয়োজনে তাদের অংশগ্রহণের যৌক্তিকতা নেই দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ লিপি প্রচার করেছে।

অনুষ্ঠানে সাধারণ নাট্যকর্মবৃন্দের পক্ষে সুনির্দিষ্ট একটি নিবন্ধ পাঠ করেন নাট্যজন অলোক বসু। নিবন্ধ পাঠের সাধারণ নাট্যকর্মীদের মধ্যে থেকে অনেকে অনেক প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে অনেকেই মনে করেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান নাট্যচর্চার দিকে না এগিয়ে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে ভোটের রাজনীতির দিকে।

সামগ্রিক এই আলোচনার পর নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানকে আমরা নিষ্ক্রিয় করতে চাই না। আমরা কাউকে বাদ দিয়ে কিছু করতে চাই না। প্রয়োজনে আমরা তাকে বাধ্য করবো যাতে তারা নাটকের স্বার্থে ভালো কাজ করে। নাট্যজন মফিদুল হক মনে করেন বর্তমান নাট্যচর্চা গভীর সংকটে পড়ে আছে সেটা নিয়ে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানকে একটি জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ মনে করেন, সৃষ্টিশীলতা বনাম কাঠামোর যে দ্বন্দ্ব। ফেডারেশানে যারা নেতৃত্ব দেন, তাদের সাথে অন্যদেও দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। নাট্যজন মামুনুর রশিদ বলেন, আমি ফেডারেশানকে অভিন্ন এবং শক্তিশালী দেখতে চাই। সংকট সব সময় আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমাধান করতে হয়। তা না হলে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। নাট্যজন কামাল বায়েজিদ বলেন, জনাব লিয়াকত আলী লাকী ১৯৯৯ সাল থেকে ফেডারেশানের বিভিন্ন পদে আছেন কিন্তু কোনো সামাজিক আন্দোলনের সাথে উনি যুক্ত হোন না। তবে সামগ্রিক আলোচনা থেকে উঠে আসে যে নাটকের হলগুলোর অব্যবস্থাপনা, মহড়া কক্ষের অভাব এবং সার্বিক নাট্যচর্চায় যে অনিয়ম বা ত্রুটি আছে সেগুলোর বিপক্ষে অবশ্যই কথা বলার প্রয়োজন আছে এবং সাধারণ নাট্যকর্মীদের ব্যানারে আজ যে সভার আয়োজন হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন।

সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২ , ১০ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩

গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের প্রতি ক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা

বিনোদন প্রতিবেদক

image

নাট্যকর্মীদের এক সময়ের গর্ব বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন যাত্রা শুরু করার পর থেকে দেশের নানা সংকট, আন্দোলন সংগ্রাম আর দাবী আদায়ে ভূমিকা রাখলেও বর্তমান সময়ে সংগঠনটি নিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ নাট্যকর্মীরা। থিয়েটার চর্চায় সংকট নিরসনের লক্ষে আয়োজিত এক মুক্ত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় নিজেদের ক্ষোভ ও ফেডারেশনের নানা অনিয়ম তুলে ধরেন নাট্যকর্মীরা। বাংলাদেশের সাধারণ নাট্যকর্মী ব্যানারে ২৩ জুলাই বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।

নাট্যদলগুলোর মহড়া কক্ষের সংকট, হল ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম সহ বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকা-ে থিয়েটার অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নানা রকম সংকট ও স্থবিরতা। উদ্ভূত সংকটসমূহ নিরসনকল্পে এবং থিয়েটার তথা সংস্কৃতিচর্চাকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়েছে। তরুণ নাট্যকর্মীদের এই আয়োজনে নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, আসাদুজ্জামান নূর, মামুনুর রশিদ, মফিদুল হক, নাসিরউদ্দিন ইউসুফসহ শত থত নাট্যকর্মীরা উপস্থিত থাকলেও এই আয়োজনকে গুরুত্ব দেয়নি গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান। এর কমিটির সদস্যরা নাট্যকর্মীদের এই আয়োজনে তাদের অংশগ্রহণের যৌক্তিকতা নেই দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ লিপি প্রচার করেছে।

অনুষ্ঠানে সাধারণ নাট্যকর্মবৃন্দের পক্ষে সুনির্দিষ্ট একটি নিবন্ধ পাঠ করেন নাট্যজন অলোক বসু। নিবন্ধ পাঠের সাধারণ নাট্যকর্মীদের মধ্যে থেকে অনেকে অনেক প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে অনেকেই মনে করেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান নাট্যচর্চার দিকে না এগিয়ে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে ভোটের রাজনীতির দিকে।

সামগ্রিক এই আলোচনার পর নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানকে আমরা নিষ্ক্রিয় করতে চাই না। আমরা কাউকে বাদ দিয়ে কিছু করতে চাই না। প্রয়োজনে আমরা তাকে বাধ্য করবো যাতে তারা নাটকের স্বার্থে ভালো কাজ করে। নাট্যজন মফিদুল হক মনে করেন বর্তমান নাট্যচর্চা গভীর সংকটে পড়ে আছে সেটা নিয়ে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানকে একটি জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ মনে করেন, সৃষ্টিশীলতা বনাম কাঠামোর যে দ্বন্দ্ব। ফেডারেশানে যারা নেতৃত্ব দেন, তাদের সাথে অন্যদেও দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। নাট্যজন মামুনুর রশিদ বলেন, আমি ফেডারেশানকে অভিন্ন এবং শক্তিশালী দেখতে চাই। সংকট সব সময় আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমাধান করতে হয়। তা না হলে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। নাট্যজন কামাল বায়েজিদ বলেন, জনাব লিয়াকত আলী লাকী ১৯৯৯ সাল থেকে ফেডারেশানের বিভিন্ন পদে আছেন কিন্তু কোনো সামাজিক আন্দোলনের সাথে উনি যুক্ত হোন না। তবে সামগ্রিক আলোচনা থেকে উঠে আসে যে নাটকের হলগুলোর অব্যবস্থাপনা, মহড়া কক্ষের অভাব এবং সার্বিক নাট্যচর্চায় যে অনিয়ম বা ত্রুটি আছে সেগুলোর বিপক্ষে অবশ্যই কথা বলার প্রয়োজন আছে এবং সাধারণ নাট্যকর্মীদের ব্যানারে আজ যে সভার আয়োজন হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন।