প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় চাহিদা মেটাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য রপ্তানি পণ্য বাড়াতে যার যার জলাধার রয়েছে সেখানে মাছ চাষের আওতায় আনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের মাছের কোন অভাব হবে না এবং নতুন রপ্তানি আইটেম যুক্ত করতেও সক্ষম হব। যার যার জলাধার আছে, তারা যেন সেই জলাধারকে মাছ চাষের আওতায় আনার ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দেন।’
কোভিড-১৯, এর পরবর্তীতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এসবের ফলে বিশ^মন্দার পরিস্থিতি বিবেচনা না করেও যারা ঢালাও সমালোচনা করেন এবং বাংলাদেশকে অচিরেই শ্রীলঙ্কার কাতারে এনে দাঁড় করাতে চান তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা নাই নাই, গেল গেল, হায় হায় করে বেড়াচ্ছে সেই হায় হায় পার্টি হায় হায় করতেই থাকুক। মাঝে মাঝে তাদেরও তো একটু বলতে দিতে হবে। আর আমরা আমাদের কাজ করে যাই। দেশ এগিয়ে যাক এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের ওপর আমাদের ভারসা আছে, জনগণ আমাদের পাশে আছে। আর জাতির পিতাই তো বলে গেছেন ‘বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’, কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’ উদযাপন এবং ‘জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সারাদেশে ২৩ জুলাই থেকে আগামী ২৯ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালিত হচ্ছে।
হাওর অঞ্চলে মৎস্য উৎপাদনের বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু হাওর না, বাওড়, খাল, বিল, বিভিন্ন জলাধার এত জায়গা আমাদের। আমার তো মনে হয় যার যেখানে এই ধরনের জলাধার আছে তারা যদি এই মৎস্য উৎপাদন করার দিকে একটু নজর দেন শুধু মাছও না মাছের সাথে কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক সব কিছুই চাষ করা যায়।
তিনি বলেন, ‘কাজেই সেগুলো করতে পারলে আমাদের নিজেদের কোন অভাব থাকবে না। রপ্তানি ক্ষেত্রে আমরা নতুন নতুন পণ্য দিতে পারবো।’
তিনি সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে খাদ্য ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং তরুণ প্রজন্মকে এ লক্ষ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এর ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।
সরকার প্রধান বলেন, পদ্মা সেতুতে বাধা দিয়েছিল সেই বাধা অতিক্রম করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ^কে আমরা এই বার্তাটা পৌঁছে দিয়েছি যে বাংলাদেশ পারে, আমরা পারি।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক মৎস্য খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২ প্রদান করেন। মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক পুরস্কার পর্বটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. ইয়ামিন চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন।
‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মৎস্য খাতে দেশের উন্নয়নবিষয়ক একটি তথ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়। এছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে তিন দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২ , ১০ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩
বাসস
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় চাহিদা মেটাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য রপ্তানি পণ্য বাড়াতে যার যার জলাধার রয়েছে সেখানে মাছ চাষের আওতায় আনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের মাছের কোন অভাব হবে না এবং নতুন রপ্তানি আইটেম যুক্ত করতেও সক্ষম হব। যার যার জলাধার আছে, তারা যেন সেই জলাধারকে মাছ চাষের আওতায় আনার ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দেন।’
কোভিড-১৯, এর পরবর্তীতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এসবের ফলে বিশ^মন্দার পরিস্থিতি বিবেচনা না করেও যারা ঢালাও সমালোচনা করেন এবং বাংলাদেশকে অচিরেই শ্রীলঙ্কার কাতারে এনে দাঁড় করাতে চান তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা নাই নাই, গেল গেল, হায় হায় করে বেড়াচ্ছে সেই হায় হায় পার্টি হায় হায় করতেই থাকুক। মাঝে মাঝে তাদেরও তো একটু বলতে দিতে হবে। আর আমরা আমাদের কাজ করে যাই। দেশ এগিয়ে যাক এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের ওপর আমাদের ভারসা আছে, জনগণ আমাদের পাশে আছে। আর জাতির পিতাই তো বলে গেছেন ‘বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’, কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’ উদযাপন এবং ‘জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সারাদেশে ২৩ জুলাই থেকে আগামী ২৯ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালিত হচ্ছে।
হাওর অঞ্চলে মৎস্য উৎপাদনের বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু হাওর না, বাওড়, খাল, বিল, বিভিন্ন জলাধার এত জায়গা আমাদের। আমার তো মনে হয় যার যেখানে এই ধরনের জলাধার আছে তারা যদি এই মৎস্য উৎপাদন করার দিকে একটু নজর দেন শুধু মাছও না মাছের সাথে কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক সব কিছুই চাষ করা যায়।
তিনি বলেন, ‘কাজেই সেগুলো করতে পারলে আমাদের নিজেদের কোন অভাব থাকবে না। রপ্তানি ক্ষেত্রে আমরা নতুন নতুন পণ্য দিতে পারবো।’
তিনি সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে খাদ্য ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং তরুণ প্রজন্মকে এ লক্ষ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এর ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।
সরকার প্রধান বলেন, পদ্মা সেতুতে বাধা দিয়েছিল সেই বাধা অতিক্রম করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ^কে আমরা এই বার্তাটা পৌঁছে দিয়েছি যে বাংলাদেশ পারে, আমরা পারি।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক মৎস্য খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২ প্রদান করেন। মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক পুরস্কার পর্বটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. ইয়ামিন চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন।
‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মৎস্য খাতে দেশের উন্নয়নবিষয়ক একটি তথ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়। এছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে তিন দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।