দেশে নিয়মিত বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি। সর্বশেষ গত ৬ জুলাই নতুন দুই হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বাদে দেশে ৩০ হাজারের মতো এমপিওভুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে গত চার-পাঁচ বছরে দেড় হাজারের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হলেও এগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা এখনও সরকারিকরণের সুবিধা পাননি; তারা এমপিও সুবিধাই পাচ্ছেন। কিন্তু বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স পাঠদানকারী শিক্ষকরা ৩০ বছরেও এমপিও সুবিধা পাচ্ছেন না। ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হওয়ার পর থেকেই এই স্তরের শিক্ষকরা এমপিও থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তবে একই প্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি পাস কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষকরা সরকার থেকে পুরো বেতনভাতা (এমপিও) পাচ্ছেন। যদিও অনার্স-মাস্টার্স সমপর্যায়ের মাদ্রাসা পর্যায়ের ফাযিল (¯œাতক বা ডিগ্রি সমমান) এবং কামিল (¯œাতকোত্তর বা মাস্টার্স) পাঠদানকারী শিক্ষকদের এমপিও সুবিধা দেয়া হচ্ছে। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভুক্তি নিয়ে কলেজ পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হলেও ওই বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের বেতনভাতা বা এমপিওভুক্তির দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে বলে বঞ্চিত শিক্ষক সংগঠনগুলোর অভিযোগ।
সব মিলিয়ে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) পাচ্ছেন। তবে নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া দুই হাজার ৭১৬টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মীদের এমপিও সুবিধা পেতে দুই-তিন মাস সময় অপেক্ষা করতে হবে। কারণ জনবল কাঠামো অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর সব শিক্ষক-কর্মচারীর যাবতীয় সনদ ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে তাদের এমপিওভুক্তি করা হবে। তবে প্যাটার্নভুক্ত নয় এবং জনবল কাঠামোর বাইরে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মীদের বেতনভাতা দেয়ার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের।
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত ৩৫২টি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী ১০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ছিল। শূন্য পদে নিয়োগ পেয়েও ওইসব শিক্ষক এমপিওভুক্তির আওতায় আসছিলেন না। এর মধ্যে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান গত কয়েক বছরে জাতীয়করণ হয়েছে। বর্তমানে আড়াইশ’ কলেজে চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পাঠদান করছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
‘বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স, মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদ’র সভাপতি মনিরুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হয়েছে। এরপরও প্রায় আড়াইশ’ কলেজের শিক্ষক এমপিওবঞ্চিত রয়েছেন। এসব কলেজে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক অনার্স-মাস্টার্স পড়াচ্ছেন। পাশাপাশি তারা এইচএসসি এবং ডিগ্রি পাস কোর্সে পাঠদান করছেন। এর বিনিময়ে কাউকে কাউকে নামমাত্র সম্মানী দেয়া হলেও অধিকাংশ শিক্ষকই তা পাচ্ছেন না।’
এমপিওভুক্তির দাবিতে সম্প্রতি অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা (অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী) বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেক শিক্ষক দিনমজুর ও অটো রিকশা চালিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করছেন।’ লিখিত অভিযোগে তিনি আরও বলেন, ‘বেতন ভাতা না পেলে একজন শিক্ষকের পক্ষে ক্লাসে সুষ্ঠুভাবে পাঠদান করা সম্ভব নয়। তাদের বেতনের ব্যবস্থা না করে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়ন অসম্ভব। বৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষককে ৩০ বছর পর্যন্ত জনবল কাঠামোয় অন্তুর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে তাদের এমপিওভুক্তি হচ্ছে না। এটি জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়।’
মনিরুল ইসলামের দাবি, ‘একই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যেখানে ইন্টারমেডিয়েট ও ডিগ্রির শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারেন; অন্যদিকে মাদ্রাসা পর্যায়ে আলিম, ফাযিল ও কামিল স্তরের শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৩-৯৪ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। ১৯৮২ সালে প্রণীত জনবল কাঠামো অনুযায়ী ইন্টারমিডিয়েট পাঠদানকারী একজন এবং ডিগ্রি পাস কোর্সের প্রতি বিষয়ের জন্য একজন শিক্ষক (মোট ২ জন) এমপিওভুক্ত হয়।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী সংবাদকে বলেন, ‘বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছেন। এ বিষয়ে মাউশির তেমন কিছু করার নেই। এমপিওভুক্তি করতে হলে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। কারণ তাদের জনবল কাঠামোতে অন্তুর্ভুক্ত করতে হবে। এর সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষও রয়েছে।’
এদিকে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের দুই কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, বিশ^বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে তদবির করা হলেও তাতে ফল আসেনি। তবে পর্যায়ক্রমে প্রতি উপজেলায় কলেজ জাতীয়করণ হওয়ায় ওই সংকট কমে আসছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়মানুযায়ী, অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করতে প্রতি বিষয়ের জন্য কলেজে কমপক্ষে ৬/৮ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া আবশ্যক। সেই নিয়মানুযায়ী বেসরকারি কলেজেও শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়।
অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালুর প্রায় ৩০ বছর হলেও প্রতি বিষয়ের জন্য শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির অনুপাত বৃদ্ধি করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ফলে এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজে ‘অনার্স-মাস্টার্স কোর্স’ পাঠদানকারী শিক্ষক ছাড়া সবাই এমপিও সুবিধা পাচ্ছেন।
এমপিওভুক্তির জন্য বঞ্চিত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির তত্ত্বাবধানে নিয়মিত অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষক নিয়োগও পাচ্ছেন।
সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২ , ১০ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩
রাকিব উদ্দিন
দেশে নিয়মিত বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি। সর্বশেষ গত ৬ জুলাই নতুন দুই হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বাদে দেশে ৩০ হাজারের মতো এমপিওভুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে গত চার-পাঁচ বছরে দেড় হাজারের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হলেও এগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা এখনও সরকারিকরণের সুবিধা পাননি; তারা এমপিও সুবিধাই পাচ্ছেন। কিন্তু বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স পাঠদানকারী শিক্ষকরা ৩০ বছরেও এমপিও সুবিধা পাচ্ছেন না। ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হওয়ার পর থেকেই এই স্তরের শিক্ষকরা এমপিও থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তবে একই প্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি পাস কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষকরা সরকার থেকে পুরো বেতনভাতা (এমপিও) পাচ্ছেন। যদিও অনার্স-মাস্টার্স সমপর্যায়ের মাদ্রাসা পর্যায়ের ফাযিল (¯œাতক বা ডিগ্রি সমমান) এবং কামিল (¯œাতকোত্তর বা মাস্টার্স) পাঠদানকারী শিক্ষকদের এমপিও সুবিধা দেয়া হচ্ছে। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভুক্তি নিয়ে কলেজ পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হলেও ওই বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের বেতনভাতা বা এমপিওভুক্তির দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে বলে বঞ্চিত শিক্ষক সংগঠনগুলোর অভিযোগ।
সব মিলিয়ে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) পাচ্ছেন। তবে নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া দুই হাজার ৭১৬টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মীদের এমপিও সুবিধা পেতে দুই-তিন মাস সময় অপেক্ষা করতে হবে। কারণ জনবল কাঠামো অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর সব শিক্ষক-কর্মচারীর যাবতীয় সনদ ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে তাদের এমপিওভুক্তি করা হবে। তবে প্যাটার্নভুক্ত নয় এবং জনবল কাঠামোর বাইরে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মীদের বেতনভাতা দেয়ার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের।
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত ৩৫২টি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী ১০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ছিল। শূন্য পদে নিয়োগ পেয়েও ওইসব শিক্ষক এমপিওভুক্তির আওতায় আসছিলেন না। এর মধ্যে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান গত কয়েক বছরে জাতীয়করণ হয়েছে। বর্তমানে আড়াইশ’ কলেজে চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পাঠদান করছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
‘বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স, মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদ’র সভাপতি মনিরুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হয়েছে। এরপরও প্রায় আড়াইশ’ কলেজের শিক্ষক এমপিওবঞ্চিত রয়েছেন। এসব কলেজে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক অনার্স-মাস্টার্স পড়াচ্ছেন। পাশাপাশি তারা এইচএসসি এবং ডিগ্রি পাস কোর্সে পাঠদান করছেন। এর বিনিময়ে কাউকে কাউকে নামমাত্র সম্মানী দেয়া হলেও অধিকাংশ শিক্ষকই তা পাচ্ছেন না।’
এমপিওভুক্তির দাবিতে সম্প্রতি অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা (অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী) বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেক শিক্ষক দিনমজুর ও অটো রিকশা চালিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করছেন।’ লিখিত অভিযোগে তিনি আরও বলেন, ‘বেতন ভাতা না পেলে একজন শিক্ষকের পক্ষে ক্লাসে সুষ্ঠুভাবে পাঠদান করা সম্ভব নয়। তাদের বেতনের ব্যবস্থা না করে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়ন অসম্ভব। বৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষককে ৩০ বছর পর্যন্ত জনবল কাঠামোয় অন্তুর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে তাদের এমপিওভুক্তি হচ্ছে না। এটি জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়।’
মনিরুল ইসলামের দাবি, ‘একই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যেখানে ইন্টারমেডিয়েট ও ডিগ্রির শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারেন; অন্যদিকে মাদ্রাসা পর্যায়ে আলিম, ফাযিল ও কামিল স্তরের শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৩-৯৪ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। ১৯৮২ সালে প্রণীত জনবল কাঠামো অনুযায়ী ইন্টারমিডিয়েট পাঠদানকারী একজন এবং ডিগ্রি পাস কোর্সের প্রতি বিষয়ের জন্য একজন শিক্ষক (মোট ২ জন) এমপিওভুক্ত হয়।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী সংবাদকে বলেন, ‘বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছেন। এ বিষয়ে মাউশির তেমন কিছু করার নেই। এমপিওভুক্তি করতে হলে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। কারণ তাদের জনবল কাঠামোতে অন্তুর্ভুক্ত করতে হবে। এর সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষও রয়েছে।’
এদিকে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের দুই কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, বিশ^বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে তদবির করা হলেও তাতে ফল আসেনি। তবে পর্যায়ক্রমে প্রতি উপজেলায় কলেজ জাতীয়করণ হওয়ায় ওই সংকট কমে আসছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়মানুযায়ী, অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করতে প্রতি বিষয়ের জন্য কলেজে কমপক্ষে ৬/৮ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া আবশ্যক। সেই নিয়মানুযায়ী বেসরকারি কলেজেও শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়।
অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালুর প্রায় ৩০ বছর হলেও প্রতি বিষয়ের জন্য শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির অনুপাত বৃদ্ধি করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ফলে এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজে ‘অনার্স-মাস্টার্স কোর্স’ পাঠদানকারী শিক্ষক ছাড়া সবাই এমপিও সুবিধা পাচ্ছেন।
এমপিওভুক্তির জন্য বঞ্চিত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির তত্ত্বাবধানে নিয়মিত অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষক নিয়োগও পাচ্ছেন।