জলাশয় ভরাট, সার, কীটনাশকের যথেচ্ছা ব্যবহারে

বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ

মাছে ভাতে বাঙ্গালী, পুটি মাছের কাঙ্গালী এ-কথাগুলি জেলার বটিয়াঘাটায় এখন শুধুই প্রবাদ ও গল্পমাত্র। বটিয়াঘাটা উপজেলার দেশীয় প্রজাতির মাছ নানা কারনে বিলুপ্তি হয়ে গেছে। এখনও দেশীয় প্রজাতির যে সকল মাছ পাওয়া যাচ্ছে তাও প্রায় বিলুপ্তির পথে। উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় যেসব সরকারী খাল,বিল, হাওড়,বাওড়ে দেশীয় প্রজাতির মাছের আবাসস্থল ও বংশ বিস্তারে করে , বর্তমানে নানা কারনে তা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে বৈরী আবহাওয়া। প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারিয়ে যাওয়া ,রাসায়ণিক সার ও কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার। অবৈধ প্লট ব্যবসায়ীদের সরকারী খাল ভরাট করে ও কৃষিজমি নষ্ট করে সৃষ্ট কৃত্রিম সমস্যা কারন হিসাবে দাবী করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

এ আঞ্চলের যে সকল দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে গেছে সেগুলো হলো, পাবদা,সরপুটি, নয়না/ভেদা, বড়ো, গজাল, বাওস, আড় ,বোল, কাণ, টেপা, খলিসা, ফলই ,চিতল,শোল,টাকি,বান, ভোদর ইত্যাদি। বর্তমানে যে সকল দেশীয় প্রজাতির মাছ আছে প্রায় বিলুপ্তির পথে তা হলো, শৈল,টাকি,কৈ,মাগুর,সিংহী, কড়েপুঁটি ,তিত-পুটি ,মৌরলা,কুচে, ডগরা ইত্যাদি। উপজেলার ৭ ইউনিয়নের হাওড়-বাওড় ও বিলগুলো হ”েছ সুস্দর মহল বিল, সুরখালী বিল, রাজা খার বিল,নাইনখালি নদী, বগার খাল,নালুয়া নদী, পুটিমারি বিল, ছঘরিয়া বিল,ময়ুর নদী, জয়খালি বিল,মাথাভাঙ্গা বিল,আমিরপুর বিল, ভান্ডারকোট বিল, বালিয়াডাঙ্গা বিল,খারাবাদসহ অসংখ্য বিল ও খাল থেকে এসব দেশী প্রজাতির মাছ হারিয়ে যেতে বসেছে। মৎস্য চাষি পঞ্চানন গাইন, নাজমুল ইসলাম নান্নু, শহিদ গাজী, ইসমাইল সরদার, আকব্বার ফকির, আসাদুল বিশ্বাস, বন্কিম বাবু বলেন, নানা কারণে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছ। তার কারণ হচ্ছে খাল বিল ভরাট, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার। অন্যদিকে, উপজেলা প্রসাশনের উদ্দ্যোগে এ সকল সরকারি খাল ,বিল হাওড় ও বাওর গুলোর অবৈধ ¯’াপনা ও দখলদারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদের জন্য বহুবার অভিযান চালিয়ে উন্মুক্ত করার চেষ্টা চালালেও নানা কারণে আবারও দখলদারীরা দখল করে নিয়েছে। অপর দিকে অবৈধ প্লট ব্যবসায়ীরা ১৯৫০ সালের প্রজাস্বত্ত্ব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কৃষি জমি ধংস করে অবৈধ প্লট নির্মান করেছে এবং উক্ত প্লটের পাশে থাকা সরকারি খাল ভরাট করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে প্রাকৃতি পরিবেশ ধ্বংস করছে। যে-কারণে মাছের বংশ বিস্তারের আবাস ভুমি হারিয়ে যা”েছ।

এব্যপারে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার মোঃ মুনিরুল মামুন বলেন,মাছের বংশ বিস্তারে ও তাদের বিচরনে জায়গা কমে যাওয়ায় এসব দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। তবে বানিজ্যিক ভিত্তিতে দেশীয় মাছ চাষ করলে অনেক লাভ করা সম্ভব। ইতি মধ্যে মাছের চাহিদা মেটাতে আড় মাছের চাষ করতে চাষিদের উৎসাহিত করছি। অনেক চাষি তারা তাদের পুকুর বা জলাশয়ে আইড় মাছের পোনা ছেড়ে চাষাবাদ শুরু করেছে। আশা করছি অনেক লাভজনক হবে। দেশি প্রজাতির মাছ প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষাবাদ করলে বিলুপ্ত মাছ আবার ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২ , ১১ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৭ জিলহজ ১৪৪৩

জলাশয় ভরাট, সার, কীটনাশকের যথেচ্ছা ব্যবহারে

বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ

প্রতিনিধি, বটিয়াঘাটা (খুলনা)

image

মাছে ভাতে বাঙ্গালী, পুটি মাছের কাঙ্গালী এ-কথাগুলি জেলার বটিয়াঘাটায় এখন শুধুই প্রবাদ ও গল্পমাত্র। বটিয়াঘাটা উপজেলার দেশীয় প্রজাতির মাছ নানা কারনে বিলুপ্তি হয়ে গেছে। এখনও দেশীয় প্রজাতির যে সকল মাছ পাওয়া যাচ্ছে তাও প্রায় বিলুপ্তির পথে। উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় যেসব সরকারী খাল,বিল, হাওড়,বাওড়ে দেশীয় প্রজাতির মাছের আবাসস্থল ও বংশ বিস্তারে করে , বর্তমানে নানা কারনে তা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে বৈরী আবহাওয়া। প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারিয়ে যাওয়া ,রাসায়ণিক সার ও কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার। অবৈধ প্লট ব্যবসায়ীদের সরকারী খাল ভরাট করে ও কৃষিজমি নষ্ট করে সৃষ্ট কৃত্রিম সমস্যা কারন হিসাবে দাবী করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

এ আঞ্চলের যে সকল দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে গেছে সেগুলো হলো, পাবদা,সরপুটি, নয়না/ভেদা, বড়ো, গজাল, বাওস, আড় ,বোল, কাণ, টেপা, খলিসা, ফলই ,চিতল,শোল,টাকি,বান, ভোদর ইত্যাদি। বর্তমানে যে সকল দেশীয় প্রজাতির মাছ আছে প্রায় বিলুপ্তির পথে তা হলো, শৈল,টাকি,কৈ,মাগুর,সিংহী, কড়েপুঁটি ,তিত-পুটি ,মৌরলা,কুচে, ডগরা ইত্যাদি। উপজেলার ৭ ইউনিয়নের হাওড়-বাওড় ও বিলগুলো হ”েছ সুস্দর মহল বিল, সুরখালী বিল, রাজা খার বিল,নাইনখালি নদী, বগার খাল,নালুয়া নদী, পুটিমারি বিল, ছঘরিয়া বিল,ময়ুর নদী, জয়খালি বিল,মাথাভাঙ্গা বিল,আমিরপুর বিল, ভান্ডারকোট বিল, বালিয়াডাঙ্গা বিল,খারাবাদসহ অসংখ্য বিল ও খাল থেকে এসব দেশী প্রজাতির মাছ হারিয়ে যেতে বসেছে। মৎস্য চাষি পঞ্চানন গাইন, নাজমুল ইসলাম নান্নু, শহিদ গাজী, ইসমাইল সরদার, আকব্বার ফকির, আসাদুল বিশ্বাস, বন্কিম বাবু বলেন, নানা কারণে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছ। তার কারণ হচ্ছে খাল বিল ভরাট, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার। অন্যদিকে, উপজেলা প্রসাশনের উদ্দ্যোগে এ সকল সরকারি খাল ,বিল হাওড় ও বাওর গুলোর অবৈধ ¯’াপনা ও দখলদারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদের জন্য বহুবার অভিযান চালিয়ে উন্মুক্ত করার চেষ্টা চালালেও নানা কারণে আবারও দখলদারীরা দখল করে নিয়েছে। অপর দিকে অবৈধ প্লট ব্যবসায়ীরা ১৯৫০ সালের প্রজাস্বত্ত্ব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কৃষি জমি ধংস করে অবৈধ প্লট নির্মান করেছে এবং উক্ত প্লটের পাশে থাকা সরকারি খাল ভরাট করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে প্রাকৃতি পরিবেশ ধ্বংস করছে। যে-কারণে মাছের বংশ বিস্তারের আবাস ভুমি হারিয়ে যা”েছ।

এব্যপারে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার মোঃ মুনিরুল মামুন বলেন,মাছের বংশ বিস্তারে ও তাদের বিচরনে জায়গা কমে যাওয়ায় এসব দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। তবে বানিজ্যিক ভিত্তিতে দেশীয় মাছ চাষ করলে অনেক লাভ করা সম্ভব। ইতি মধ্যে মাছের চাহিদা মেটাতে আড় মাছের চাষ করতে চাষিদের উৎসাহিত করছি। অনেক চাষি তারা তাদের পুকুর বা জলাশয়ে আইড় মাছের পোনা ছেড়ে চাষাবাদ শুরু করেছে। আশা করছি অনেক লাভজনক হবে। দেশি প্রজাতির মাছ প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষাবাদ করলে বিলুপ্ত মাছ আবার ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে।