শেরপুরে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ অসহায় দুই পরিবারকে!

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় নারী নির্যাতনের বিচার চাওয়ায় গ্রাম্য মাতবরের রোষানলে পড়েছেন দুইটি অসহায় পরিবার। এমনকি আগামী সাতদিনের মধ্যে ওই পরিবার দুইটিকে গ্রামছাড়ার নির্দেশও দিয়েছেন গ্রাম্য মাতবর নূর মোহাম্মদ ও তার লোকজন। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের চলাচলের রাস্তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বের হওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় প্রায় সাড়ে তিনমাস ধরে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না তারা। এমন অবস্থায় দিশেহারা অবরুদ্ধ ওই দুই পরিবার। তাই বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেতে সরকারের আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

রবিবার (২৪জুলাই) বিকেলে শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের মামুরশাহী পূর্বপাড়া গ্রামের কলি শেখের ছেলে দুলাল শেখ ও জামাল উদ্দিন শেখ এই দাবি জানান।

তারা অভিযোগ করে বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় তাদের পরিবারের এক নারী সদস্যকে নির্যাতন করা হয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বলেন প্রতিবেশী ও গ্রামের প্রভাবশালী মাতবর নুর মোহাম্মদ। কিন্তু তার কথা না শুনে বিচার চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তিনি। সেইসঙ্গে গ্রাম থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী দুলাল শেখ বলেন, গ্রাম্য মাতবর নুর মোহাম্মদের সঙ্গে আমরা দুইজন এজমালি (যৌথ মালিকানা) আঠারো শতক জমি ক্রয় করেছিলাম। পরে দক্ষিণপাশে জমির ওপর ইট দিয়ে রাস্তা তৈরি করেন। ওই রাস্তা দিয়েই দীর্ঘ ২৫-২৬ বছর ধরে সরকারি রাস্তায় উঠতেন। সম্প্রতি সেই রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। ওই গ্রাম্য মাতবরের কথা না শুনে নারী নির্যাতনের বিচার চাওয়ায় এটি করা হয়েছে। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তারা।

আরেক ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিন শেখ বলেন, বিষয়টি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি। তাই ওই গ্রাম্য মাতবর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এখন আমাদের গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ জারি করেছেন। এমনকি আগামী সাতদিনের মধ্যে গ্রাম ছেড়ে চলে না গেলে আমাদের প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে নুর মোহাম্মদ বলেন, এসব আমাদের পারিবারিক ব্যাপার। তেমন কিছু না। এছাড়া আমার ব্যক্তিগত জমিতে রাস্তা দেব কেন। তাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগটি তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২ , ১১ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৭ জিলহজ ১৪৪৩

নারী নির্যাতনের বিচার চাওয়ার জের

শেরপুরে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ অসহায় দুই পরিবারকে!

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় নারী নির্যাতনের বিচার চাওয়ায় গ্রাম্য মাতবরের রোষানলে পড়েছেন দুইটি অসহায় পরিবার। এমনকি আগামী সাতদিনের মধ্যে ওই পরিবার দুইটিকে গ্রামছাড়ার নির্দেশও দিয়েছেন গ্রাম্য মাতবর নূর মোহাম্মদ ও তার লোকজন। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের চলাচলের রাস্তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বের হওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় প্রায় সাড়ে তিনমাস ধরে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না তারা। এমন অবস্থায় দিশেহারা অবরুদ্ধ ওই দুই পরিবার। তাই বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেতে সরকারের আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

রবিবার (২৪জুলাই) বিকেলে শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের মামুরশাহী পূর্বপাড়া গ্রামের কলি শেখের ছেলে দুলাল শেখ ও জামাল উদ্দিন শেখ এই দাবি জানান।

তারা অভিযোগ করে বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় তাদের পরিবারের এক নারী সদস্যকে নির্যাতন করা হয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বলেন প্রতিবেশী ও গ্রামের প্রভাবশালী মাতবর নুর মোহাম্মদ। কিন্তু তার কথা না শুনে বিচার চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তিনি। সেইসঙ্গে গ্রাম থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী দুলাল শেখ বলেন, গ্রাম্য মাতবর নুর মোহাম্মদের সঙ্গে আমরা দুইজন এজমালি (যৌথ মালিকানা) আঠারো শতক জমি ক্রয় করেছিলাম। পরে দক্ষিণপাশে জমির ওপর ইট দিয়ে রাস্তা তৈরি করেন। ওই রাস্তা দিয়েই দীর্ঘ ২৫-২৬ বছর ধরে সরকারি রাস্তায় উঠতেন। সম্প্রতি সেই রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। ওই গ্রাম্য মাতবরের কথা না শুনে নারী নির্যাতনের বিচার চাওয়ায় এটি করা হয়েছে। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তারা।

আরেক ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিন শেখ বলেন, বিষয়টি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি। তাই ওই গ্রাম্য মাতবর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এখন আমাদের গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ জারি করেছেন। এমনকি আগামী সাতদিনের মধ্যে গ্রাম ছেড়ে চলে না গেলে আমাদের প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে নুর মোহাম্মদ বলেন, এসব আমাদের পারিবারিক ব্যাপার। তেমন কিছু না। এছাড়া আমার ব্যক্তিগত জমিতে রাস্তা দেব কেন। তাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগটি তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।