নোটিশ ছাড়াই মিটার চার্জ ৪০ টাকা বাড়ালো তিতাস

মাস দেড়েক আগে গ্যাসের দাম ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধির পর চলতি জুলাই থেকে প্রি-পেইড মিটার চার্জ ৪০ টাকা বাড়িয়েছে দেশের বৃহত্তম গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাস। কোম্পানিটি এতদিন মিটার চার্জ বাবদ প্রতিমাসে ৬০ টাকা করে নিত, যা জুলাই থেকে ১০০ টাকা করা হয়েছে। তবে এজন্য কোন নোটিশ দেয়নি তিতাস।

তিতাসের তরফেও চার্জ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করা হয়েছে, তবে এজন্য নোটিশ দেয়ার ‘প্রয়োজন’ দেখছেন না কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ মোল্লাহ বলেন, একটা গ্যাসের মিটার ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে, যার লাইফ টাইম বা মেয়াদ হচ্ছে ১০ বছর। ৬০ টাকা করে বিল নিতে থাকলে মিটারের দাম উঠতে সময় লাগবে ৩৫ বছর। তিতাস নিজের টাকায় মিটার কিনে ৩২ বছর ধরে টাকা উসুল করবে? এটা কি খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে?

কোম্পানির বোর্ড সভায় এই চার্জ ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব উঠেছিলো জানিয়ে তিনি বলেন,

‘বোর্ড থেকে বলা হলো, ঠিক আছে- আস্তে আস্তে বাড়ান। মাত্র ৪০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তাতে এত কথা উঠার কথা না। গ্রাহকের উচিত প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেয়া। কারণ মিটারের কারণে তার সাশ্রয় হয়েছে ৫০০ টাকা করে। এটা নিয়ে অভিযোগ আসার কথা না। বরং আমাদের সাধুবাদ দেয়া উচিত।

চার্জ বৃদ্ধির দাপ্তরিক ঘোষণা দেয়া হয়েছিল কি-না এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নোটিস কেন যাবে? আমরা সব মিটারের সফটওয়্যারে আপডেট করে দিয়েছি। অলরেডি গ্রাহকরা জেনে গেছে।’

তিতাসের এক কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানিসহ অন্যান্য কোম্পানি আগে থেকেই মিটার চার্জ ১০০ টাকা করে নিচ্ছে। ফলে তিতাসও ১০০ টাকার ঘরে এলো। গত জুন থেকে পাইপলাইনে সরবরাহ করা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের পাইকারি দাম ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ টাকা ৯১ পয়সা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা জুন থেকেই কার্যকর হয়েছে। আর প্রিপেইড মিটারে প্রতি ইউনিটের খরচ ১২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৪৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১৮ টাকা করা হয়েছে।

তিতাসের মোট ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪৮ জন গ্রাহকের মধ্যে আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৭ জন। ২০২১ সালের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ গ্রাহককে মিটার প্রিপেইড পদ্ধতিতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তিন লাখ ২৮ হাজার গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের সুবিধা দিতে পেরেছে তিতাস। গ্যাসের অপচয় রোধে ২০১১ সাল থেকে ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিতে আবাসিক শ্রেণীর গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়। আবাসিক শ্রেণীতে গ্যাসের গ্রাহক ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৯ জন।

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২ , ১১ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৭ জিলহজ ১৪৪৩

নোটিশ ছাড়াই মিটার চার্জ ৪০ টাকা বাড়ালো তিতাস

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মাস দেড়েক আগে গ্যাসের দাম ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধির পর চলতি জুলাই থেকে প্রি-পেইড মিটার চার্জ ৪০ টাকা বাড়িয়েছে দেশের বৃহত্তম গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাস। কোম্পানিটি এতদিন মিটার চার্জ বাবদ প্রতিমাসে ৬০ টাকা করে নিত, যা জুলাই থেকে ১০০ টাকা করা হয়েছে। তবে এজন্য কোন নোটিশ দেয়নি তিতাস।

তিতাসের তরফেও চার্জ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করা হয়েছে, তবে এজন্য নোটিশ দেয়ার ‘প্রয়োজন’ দেখছেন না কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ মোল্লাহ বলেন, একটা গ্যাসের মিটার ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে, যার লাইফ টাইম বা মেয়াদ হচ্ছে ১০ বছর। ৬০ টাকা করে বিল নিতে থাকলে মিটারের দাম উঠতে সময় লাগবে ৩৫ বছর। তিতাস নিজের টাকায় মিটার কিনে ৩২ বছর ধরে টাকা উসুল করবে? এটা কি খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে?

কোম্পানির বোর্ড সভায় এই চার্জ ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব উঠেছিলো জানিয়ে তিনি বলেন,

‘বোর্ড থেকে বলা হলো, ঠিক আছে- আস্তে আস্তে বাড়ান। মাত্র ৪০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তাতে এত কথা উঠার কথা না। গ্রাহকের উচিত প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেয়া। কারণ মিটারের কারণে তার সাশ্রয় হয়েছে ৫০০ টাকা করে। এটা নিয়ে অভিযোগ আসার কথা না। বরং আমাদের সাধুবাদ দেয়া উচিত।

চার্জ বৃদ্ধির দাপ্তরিক ঘোষণা দেয়া হয়েছিল কি-না এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নোটিস কেন যাবে? আমরা সব মিটারের সফটওয়্যারে আপডেট করে দিয়েছি। অলরেডি গ্রাহকরা জেনে গেছে।’

তিতাসের এক কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানিসহ অন্যান্য কোম্পানি আগে থেকেই মিটার চার্জ ১০০ টাকা করে নিচ্ছে। ফলে তিতাসও ১০০ টাকার ঘরে এলো। গত জুন থেকে পাইপলাইনে সরবরাহ করা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের পাইকারি দাম ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ টাকা ৯১ পয়সা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা জুন থেকেই কার্যকর হয়েছে। আর প্রিপেইড মিটারে প্রতি ইউনিটের খরচ ১২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৪৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১৮ টাকা করা হয়েছে।

তিতাসের মোট ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪৮ জন গ্রাহকের মধ্যে আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৭ জন। ২০২১ সালের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ গ্রাহককে মিটার প্রিপেইড পদ্ধতিতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তিন লাখ ২৮ হাজার গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের সুবিধা দিতে পেরেছে তিতাস। গ্যাসের অপচয় রোধে ২০১১ সাল থেকে ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিতে আবাসিক শ্রেণীর গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়। আবাসিক শ্রেণীতে গ্যাসের গ্রাহক ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৯ জন।