‘ওএসডি’ হচ্ছেন টেকনাফের ইউএনও কায়সার

কক্সবাজারের স্থানীয় এক সাংবাদিককে ‘অকথ্য’ ভাষায় গালাগালের ঘটনায় টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কায়সার খসরুকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

ওই কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওএসডি করার পাশাপাশি আদালত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে বললেও সেটাও প্রতিপালন করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় পাঁচশ’ জন লোকের মধ্যে সবাই ভালো হবে এটা কীভাবে আপনারা আশা করেন। এরইমধ্যে নির্দেশনা রয়েছে, তাকে ওএসডি করে নিয়ে এসে তার বিরুদ্ধে আদালত কী নির্দেশনা দেয় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া।’

বর্তমানে ৫৪১ জন ইউএনও রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৯২টি উপজেলায় একজন করে এবং বাকিরা বিভাগীয় কমিশনারদের কার্যালয়গুলোতে কর্মরত আছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি তাকে জরুরি ভিত্তিতে ওএসডি করে নিয়ে আসো। তারপর হাইকোর্ট থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটা।’

গত রোববার বিভাগীয় কমিশনারদের সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘খুব জোর দিয়ে বলা হয়েছে, তারা যে সমস্ত জেলায় যাবেন, সেখানকার সব কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে তাদের আচার ব্যবহার কেমন হবে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেবেন।’

টেকনাফ উপজেলার নাফ নদী সংলগ্ন ওয়াব্রাং এলাকায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য কিছু ঘর নির্মাণ করে উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি ঘর জোয়ার-ভাটা ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়, এতে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েন উপকারভোগীরা।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘ঢাকা পোস্ট’ নামের একটি ওয়েব পোর্টালে একটি খবর প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি তৈরি করেন ওই অনলাইন পত্রিকার কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম ফরহাদ।

সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় সাড়ে ১০টায় টেকনাফের ইউএনও তার সরকারি ফোন নম্বর থেকে সাইদুল ইসলামকে ফোন করে আপত্তিকর ভাষায় গালাগাল করেন। এর একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

বিষয়টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নজরে এলে সমাধানের জন্য পরদিন গত শুক্রবার দু’পক্ষকে ডাকা হয়। সেখানে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান ইউএনও।

এরপর গত রোববার একজন আইনজীবী পুরো বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন। এতে ইউএনও কায়সার খসরুর বিরুদ্ধে কী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে আদেশ দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

শুনানিতে একজন বিচারপতি বলেন, ‘কোন রং হেডেড পারসন ছাড়া এমনভাবে বলতে পারে না।’

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২ , ১১ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৭ জিলহজ ১৪৪৩

‘ওএসডি’ হচ্ছেন টেকনাফের ইউএনও কায়সার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

কক্সবাজারের স্থানীয় এক সাংবাদিককে ‘অকথ্য’ ভাষায় গালাগালের ঘটনায় টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কায়সার খসরুকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

ওই কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওএসডি করার পাশাপাশি আদালত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে বললেও সেটাও প্রতিপালন করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় পাঁচশ’ জন লোকের মধ্যে সবাই ভালো হবে এটা কীভাবে আপনারা আশা করেন। এরইমধ্যে নির্দেশনা রয়েছে, তাকে ওএসডি করে নিয়ে এসে তার বিরুদ্ধে আদালত কী নির্দেশনা দেয় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া।’

বর্তমানে ৫৪১ জন ইউএনও রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৯২টি উপজেলায় একজন করে এবং বাকিরা বিভাগীয় কমিশনারদের কার্যালয়গুলোতে কর্মরত আছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি তাকে জরুরি ভিত্তিতে ওএসডি করে নিয়ে আসো। তারপর হাইকোর্ট থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটা।’

গত রোববার বিভাগীয় কমিশনারদের সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘খুব জোর দিয়ে বলা হয়েছে, তারা যে সমস্ত জেলায় যাবেন, সেখানকার সব কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে তাদের আচার ব্যবহার কেমন হবে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেবেন।’

টেকনাফ উপজেলার নাফ নদী সংলগ্ন ওয়াব্রাং এলাকায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য কিছু ঘর নির্মাণ করে উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি ঘর জোয়ার-ভাটা ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়, এতে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েন উপকারভোগীরা।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘ঢাকা পোস্ট’ নামের একটি ওয়েব পোর্টালে একটি খবর প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি তৈরি করেন ওই অনলাইন পত্রিকার কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম ফরহাদ।

সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় সাড়ে ১০টায় টেকনাফের ইউএনও তার সরকারি ফোন নম্বর থেকে সাইদুল ইসলামকে ফোন করে আপত্তিকর ভাষায় গালাগাল করেন। এর একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

বিষয়টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নজরে এলে সমাধানের জন্য পরদিন গত শুক্রবার দু’পক্ষকে ডাকা হয়। সেখানে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান ইউএনও।

এরপর গত রোববার একজন আইনজীবী পুরো বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন। এতে ইউএনও কায়সার খসরুর বিরুদ্ধে কী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে আদেশ দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

শুনানিতে একজন বিচারপতি বলেন, ‘কোন রং হেডেড পারসন ছাড়া এমনভাবে বলতে পারে না।’