মা-বাবার প্রয়োজন সন্তানের ভালোবাসা

জীবনের শেষ অধ্যায়ে; বৃদ্ধ বয়সে খারাপের ভালো হিসেবে বেশ পরিচিত বৃদ্ধাশ্রম। বৃদ্ধাশ্রম হলো বৃদ্ধ মানৃষের আশ্রয়স্থল; বৃদ্ধরা তথাকথিত সন্তান থেকে চ্যুত হয়ে আজ একা। বৃদ্ধাশ্রমগুলো মনে করিয়ে দেয় ক্রন্দনরত মায়ের মুখ ও বুক ভরা আশা নিয়ে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা বাবার চোখের লুকানো অশ্রু। সারাটা জীবন সন্তানের জন্য উজার করে দিলেও, জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে তাদের বেঁচে থাকার বৃথা চেষ্টা। সারা জীবন যে বাবা-মা এর অবদান ছাড়া বেঁচে থাকা দায় ছিল, আজ যেন সন্তানদের বেঁচে থাকার পথে তারা এক বিশাল বোঝার সমান। বৃদ্ধাশ্রমে একটি প্রাণও ভালো নেই। বৃদ্ধাশ্রমজুড়ে আছে জীবনের শেষ প্রান্তে আসা অতৃপ্ত বৃদ্ধদের হাহাকার। সেখানে কেউ চেয়ে আছে নিজ সন্তানের করুণা করা এক দিনের আশায়, আবার কেউ হাঁফ ছাড়ছে রুদ্ধশ্বাসে বন্দি পরিস্থিতি থেকে আজ কিছুটা স্বস্তিতে এই ভেবে। কিন্তু ভেতরে তাদের হাহাকার।

আমাদের সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তিরাও আজ এ কাজে পিছিয়ে নেই। তাদের কাছেও তাদের বাবা-মা আজ তাদের বোঝার সমান। কি অমানবিক আচরণ! শিক্ষা তাদের শিক্ষিত করতে পারেনি। বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিটি বৃদ্ধের কান্না মনে করিয়ে দেয় আমরা মানবিকতার কতটা শেষ পর্যায়ে আছি। ছোটবেলা থেকে অসীম ভালোবাসা দিয়ে আমাদের একটু একটু করে বড় করে তুলেছে বাবা-মা। কিন্তু আমরা কি তার পরিচয় দিচ্ছি নাকি এর বিনিময়ে তাদের পাওনা হিসেবে তাদেরকে উপহার দিচ্ছি বৃদ্ধাশ্রম।

বৃদ্ধারা কোনো বোঝা কিংবা ফেলনার জিনিস নয়। বরং তারা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই তাদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া আমাদের দায়িত্ব। প্রতিটি সন্তানের উচিত তার বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা। তাদের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ও শান্তি নিশ্চিত করা। এই অমানবিক আচরণ থেকে আমরা যেদিন মুক্তি পাব সেদিন সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। কোন বৃদ্ধের চোখে থাকবে না করুণ চাওয়া, মনে থাকবে না অতৃপ্ত আশা। বরং তারাও হাসবে প্রাণখুলে। আশ্রয়স্থল নিয়ে তাদের মধ্যে থাকবে না আর অধীর চিন্তা ও অনিশ্চয়তা।

সাফা আক্তার নোলক

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২ , ১১ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৭ জিলহজ ১৪৪৩

মা-বাবার প্রয়োজন সন্তানের ভালোবাসা

জীবনের শেষ অধ্যায়ে; বৃদ্ধ বয়সে খারাপের ভালো হিসেবে বেশ পরিচিত বৃদ্ধাশ্রম। বৃদ্ধাশ্রম হলো বৃদ্ধ মানৃষের আশ্রয়স্থল; বৃদ্ধরা তথাকথিত সন্তান থেকে চ্যুত হয়ে আজ একা। বৃদ্ধাশ্রমগুলো মনে করিয়ে দেয় ক্রন্দনরত মায়ের মুখ ও বুক ভরা আশা নিয়ে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা বাবার চোখের লুকানো অশ্রু। সারাটা জীবন সন্তানের জন্য উজার করে দিলেও, জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে তাদের বেঁচে থাকার বৃথা চেষ্টা। সারা জীবন যে বাবা-মা এর অবদান ছাড়া বেঁচে থাকা দায় ছিল, আজ যেন সন্তানদের বেঁচে থাকার পথে তারা এক বিশাল বোঝার সমান। বৃদ্ধাশ্রমে একটি প্রাণও ভালো নেই। বৃদ্ধাশ্রমজুড়ে আছে জীবনের শেষ প্রান্তে আসা অতৃপ্ত বৃদ্ধদের হাহাকার। সেখানে কেউ চেয়ে আছে নিজ সন্তানের করুণা করা এক দিনের আশায়, আবার কেউ হাঁফ ছাড়ছে রুদ্ধশ্বাসে বন্দি পরিস্থিতি থেকে আজ কিছুটা স্বস্তিতে এই ভেবে। কিন্তু ভেতরে তাদের হাহাকার।

আমাদের সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তিরাও আজ এ কাজে পিছিয়ে নেই। তাদের কাছেও তাদের বাবা-মা আজ তাদের বোঝার সমান। কি অমানবিক আচরণ! শিক্ষা তাদের শিক্ষিত করতে পারেনি। বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিটি বৃদ্ধের কান্না মনে করিয়ে দেয় আমরা মানবিকতার কতটা শেষ পর্যায়ে আছি। ছোটবেলা থেকে অসীম ভালোবাসা দিয়ে আমাদের একটু একটু করে বড় করে তুলেছে বাবা-মা। কিন্তু আমরা কি তার পরিচয় দিচ্ছি নাকি এর বিনিময়ে তাদের পাওনা হিসেবে তাদেরকে উপহার দিচ্ছি বৃদ্ধাশ্রম।

বৃদ্ধারা কোনো বোঝা কিংবা ফেলনার জিনিস নয়। বরং তারা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই তাদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া আমাদের দায়িত্ব। প্রতিটি সন্তানের উচিত তার বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা। তাদের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ও শান্তি নিশ্চিত করা। এই অমানবিক আচরণ থেকে আমরা যেদিন মুক্তি পাব সেদিন সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। কোন বৃদ্ধের চোখে থাকবে না করুণ চাওয়া, মনে থাকবে না অতৃপ্ত আশা। বরং তারাও হাসবে প্রাণখুলে। আশ্রয়স্থল নিয়ে তাদের মধ্যে থাকবে না আর অধীর চিন্তা ও অনিশ্চয়তা।

সাফা আক্তার নোলক