নিষেধাজ্ঞার সুফলে সাগর নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

মৎস্য আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরপরই বঙ্গোপসাগরের বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে এখন ইলিশের ব্যাপক প্রাচুর্য দেখা যাচ্ছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। টানা দুই মাসের বেকার সময় কাটিয়ে সাগরে জাল ফেলে জেলেদের চোখে আলো এসেছে। প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে কক্সবাজার ও দক্ষিণাঞ্চলের সব ইলিশের মোকামগুলো।

কক্সবাজার শহরের মৎস্য অবতরণকেন্দ্র ফিশারি ঘাটে চারদিকে ইলিশে সয়লাব। জেলেরা মাছ নিয়ে ফিরছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ঘাটে। অপরদিকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের খুচরা বাজারেও গত দুই দিনে ইলিশের সরবারহ বেড়েছে যথেষ্ট। ইলিশ পাওয়া যাওয়ায় সব ধরনের মাছের দামেও কিছুটা ইতিকবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

বরিশালের খুচরা বাজারগুলোতে এক কেজি সাইজের ইলিশের কেজি দেড় হাজার টাকা থেকে নেমে ইতোমধ্যে ১২০০ টাকায় নেমে এসেছে। এক কেজি নিচের সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রাম সাইজেরগুলো বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি। আর সাগরের ইলিশের দাম আরও কম।

প্রতিদিনই আলীপুর-মহিপুর, গলাচিপা, পাথরঘাটা, পাড়ের হাট, চর মোন্তাজ, ঢালচর, চর কুকরি-মুকরিসহ সাগর পাড়ের আরও বেশ কিছু মোকাম থেকে বরফ বোঝাই করে ছোট-বড় ট্রলার ছুটছে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণে। এসব ট্রলার ১০-১২ দিনের জন্য বরফসহ জেলেদের খাবার নিয়ে সাগরে গেলেও গত তিনদিনেই বেশকিছু ট্রলার ইলিশ বোঝাই করে মোকামে ফিরে এসেছে। মহিপুরÑআলীপুর ও গলাচিপার একাধিক জেলে ও আড়তদার জানিয়েছেন, এবার ইলিশের সাইজ ভালো। সাগর থেকে ৮০০ গ্রাম থেকে ১২০০ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ নিয়ে ফিরতে শুরু করেছে জেলেরা। তবে বরিশাল মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, এখন সাগরের যে ইলিশ নিয়ে জেলেরা আসছে এগুলো গভীর সাগরের নয়। ছোট ছোট ট্রলারে যারা মাছ আহরণ করেন তারাই মাছ নিয়ে আসছেন। বড় বড় ট্রলারগুলো যখন আরও ৫-৭ দিন পর আসবে তখন আরও বড় সাইজের ইলিশ আসবে। তখন দাম আরও কমবে।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, দেশের উপকূলীয় তটরেখা এবং সমুদ্রের ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একান্ত অর্থনৈতিক এলাকার এক লাখ ১৮ হজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের প্রায় সর্বত্রই ইলিশের বিচরণ রয়েছে। তবে দুর্যোগপূর্ণ মৌসুম হওয়ায় বর্তমানে দুবলা পয়েন্ট থেকে ভোলার মনপুরার ভাটিতে ঢালচর ও চর কুকরি-মুকরি হয়ে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের মধ্যবর্তী সাগর এলাকা পর্যন্ত জেলেরা জাল ফেলতে পারছে। এসব এলাকাতেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠে আসছে জালে।

বঙ্গোপসাগরের মৎস্য সম্পদকে সমৃদ্ধ করতেই মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশে ২০১৫ সাল থেকে ’১৮ সাল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে বাণিজ্যিক ট্রলারের ক্ষেত্রে এবং ২০১৯ সাল থেকে সব মৎস্য নৌযানের ক্ষেত্রেই ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, সাগরে মাছ ধরার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের মাঝে যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল তা ক্রমে কেটে যাচ্ছে। তাদের মতে, কোন সম্পদই অফুরন্ত নয়।

কক্সবাজারের জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা পরপরই সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় দারুণ খুশি তারা। ব্যবসায়ীদের ধারণা, আবহাওয়া ভালো থাকলে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে।

তবে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গভীর সাগরে যাওয়া ট্রলারগুলো মাছ শিকার করতে পারছে না বলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি। গত মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজারের পাইকারি মাছ বিক্রির প্রধান কেন্দ্র মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে গিয়ে জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

এদিকে খবর পাওয়া গেছে, এক ট্রলারে ১০০ মণ ইলিশ শিকারের রেকর্ড করে কূলে ফিরেছে ‘মায়ের দোয়া’ নামে একটি ফিশিং ট্রলার। শুধু মায়ের দোয়া নয়, এ রকম প্রতিটি ট্রলারে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ও ১৪৭ প্রজাতির মাছ ভর্তি ট্রলার ভিড়ছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ম্যানেজার এহসানুল হক জানিয়েছেন, কক্সবাজার উপকূল সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মাছ ভর্তি ট্রলারও ভিড়ছে অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে। 

স্থানীয় ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, গতকাল সবচেয়ে বেশি ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। এরমধ্যে অনেক মাছের ওজন দুই কেজির চেয়ে বেশি। আবহাওয়া ভালো থাকলে জালে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে। 

জেলেরা বলছেন, গত রোববার মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ করেই তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য সাগরে নেমেছিল। কিন্তু তিনদিনই তারা ট্রলার ভর্তি মাছ নিয়ে কূলে আসতে পেরেছেন। ইলিশের পাশাপাশি লইট্যা, টোনা, লাল পোয়া, স্যালমন, ফাইস্যাসহ নানাজাতের মাছ বেশি ধরা পড়ছে জালে।

কক্সবাজার অবতরণকেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন জানান, ফিশারি ঘাটে পাইকারি ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৩৫ হাজার টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৪২ হাজার টাকায়, ৯০০ থেকে ১০০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৭০ হাজার টাকায় এবং ১০০০ থেকে ২০০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ ইলিশ ঢাকা, চট্টগ্রাম ছাড়াও রাজশাহী, সিলেট, বগুড়া, ফরিদপুরে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইলিশ ধরতে সাগরে নেমেছে কক্সবাজারের টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার অন্তত ৬ হাজার ট্রলার। বেশিরভাগ ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরের ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে জাল ফেলছে। অবশিষ্ট ট্রলার ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটারে জাল ফেলে। এখন কাছের ট্রলারগুলো ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে। দূরের ট্রলারগুলো মাছ ধরে ফিরতে আরও দু-একদিন সময় লাগবে।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০২২ , ১৩ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

নিষেধাজ্ঞার সুফলে সাগর নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল ও প্রতিনিধি, কক্সবাজার

image

কক্সবাজার : গত মঙ্গলবার ফিশারিঘাটে আড়তে জমা করা ইলিশ -সংবাদ

মৎস্য আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরপরই বঙ্গোপসাগরের বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে এখন ইলিশের ব্যাপক প্রাচুর্য দেখা যাচ্ছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। টানা দুই মাসের বেকার সময় কাটিয়ে সাগরে জাল ফেলে জেলেদের চোখে আলো এসেছে। প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে কক্সবাজার ও দক্ষিণাঞ্চলের সব ইলিশের মোকামগুলো।

কক্সবাজার শহরের মৎস্য অবতরণকেন্দ্র ফিশারি ঘাটে চারদিকে ইলিশে সয়লাব। জেলেরা মাছ নিয়ে ফিরছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ঘাটে। অপরদিকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের খুচরা বাজারেও গত দুই দিনে ইলিশের সরবারহ বেড়েছে যথেষ্ট। ইলিশ পাওয়া যাওয়ায় সব ধরনের মাছের দামেও কিছুটা ইতিকবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

বরিশালের খুচরা বাজারগুলোতে এক কেজি সাইজের ইলিশের কেজি দেড় হাজার টাকা থেকে নেমে ইতোমধ্যে ১২০০ টাকায় নেমে এসেছে। এক কেজি নিচের সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রাম সাইজেরগুলো বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি। আর সাগরের ইলিশের দাম আরও কম।

প্রতিদিনই আলীপুর-মহিপুর, গলাচিপা, পাথরঘাটা, পাড়ের হাট, চর মোন্তাজ, ঢালচর, চর কুকরি-মুকরিসহ সাগর পাড়ের আরও বেশ কিছু মোকাম থেকে বরফ বোঝাই করে ছোট-বড় ট্রলার ছুটছে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণে। এসব ট্রলার ১০-১২ দিনের জন্য বরফসহ জেলেদের খাবার নিয়ে সাগরে গেলেও গত তিনদিনেই বেশকিছু ট্রলার ইলিশ বোঝাই করে মোকামে ফিরে এসেছে। মহিপুরÑআলীপুর ও গলাচিপার একাধিক জেলে ও আড়তদার জানিয়েছেন, এবার ইলিশের সাইজ ভালো। সাগর থেকে ৮০০ গ্রাম থেকে ১২০০ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ নিয়ে ফিরতে শুরু করেছে জেলেরা। তবে বরিশাল মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, এখন সাগরের যে ইলিশ নিয়ে জেলেরা আসছে এগুলো গভীর সাগরের নয়। ছোট ছোট ট্রলারে যারা মাছ আহরণ করেন তারাই মাছ নিয়ে আসছেন। বড় বড় ট্রলারগুলো যখন আরও ৫-৭ দিন পর আসবে তখন আরও বড় সাইজের ইলিশ আসবে। তখন দাম আরও কমবে।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, দেশের উপকূলীয় তটরেখা এবং সমুদ্রের ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একান্ত অর্থনৈতিক এলাকার এক লাখ ১৮ হজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের প্রায় সর্বত্রই ইলিশের বিচরণ রয়েছে। তবে দুর্যোগপূর্ণ মৌসুম হওয়ায় বর্তমানে দুবলা পয়েন্ট থেকে ভোলার মনপুরার ভাটিতে ঢালচর ও চর কুকরি-মুকরি হয়ে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের মধ্যবর্তী সাগর এলাকা পর্যন্ত জেলেরা জাল ফেলতে পারছে। এসব এলাকাতেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠে আসছে জালে।

বঙ্গোপসাগরের মৎস্য সম্পদকে সমৃদ্ধ করতেই মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশে ২০১৫ সাল থেকে ’১৮ সাল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে বাণিজ্যিক ট্রলারের ক্ষেত্রে এবং ২০১৯ সাল থেকে সব মৎস্য নৌযানের ক্ষেত্রেই ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, সাগরে মাছ ধরার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের মাঝে যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল তা ক্রমে কেটে যাচ্ছে। তাদের মতে, কোন সম্পদই অফুরন্ত নয়।

কক্সবাজারের জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা পরপরই সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় দারুণ খুশি তারা। ব্যবসায়ীদের ধারণা, আবহাওয়া ভালো থাকলে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে।

তবে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গভীর সাগরে যাওয়া ট্রলারগুলো মাছ শিকার করতে পারছে না বলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি। গত মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজারের পাইকারি মাছ বিক্রির প্রধান কেন্দ্র মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে গিয়ে জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

এদিকে খবর পাওয়া গেছে, এক ট্রলারে ১০০ মণ ইলিশ শিকারের রেকর্ড করে কূলে ফিরেছে ‘মায়ের দোয়া’ নামে একটি ফিশিং ট্রলার। শুধু মায়ের দোয়া নয়, এ রকম প্রতিটি ট্রলারে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ও ১৪৭ প্রজাতির মাছ ভর্তি ট্রলার ভিড়ছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ম্যানেজার এহসানুল হক জানিয়েছেন, কক্সবাজার উপকূল সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মাছ ভর্তি ট্রলারও ভিড়ছে অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে। 

স্থানীয় ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, গতকাল সবচেয়ে বেশি ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। এরমধ্যে অনেক মাছের ওজন দুই কেজির চেয়ে বেশি। আবহাওয়া ভালো থাকলে জালে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে। 

জেলেরা বলছেন, গত রোববার মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ করেই তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য সাগরে নেমেছিল। কিন্তু তিনদিনই তারা ট্রলার ভর্তি মাছ নিয়ে কূলে আসতে পেরেছেন। ইলিশের পাশাপাশি লইট্যা, টোনা, লাল পোয়া, স্যালমন, ফাইস্যাসহ নানাজাতের মাছ বেশি ধরা পড়ছে জালে।

কক্সবাজার অবতরণকেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন জানান, ফিশারি ঘাটে পাইকারি ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৩৫ হাজার টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৪২ হাজার টাকায়, ৯০০ থেকে ১০০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৭০ হাজার টাকায় এবং ১০০০ থেকে ২০০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ ইলিশ ঢাকা, চট্টগ্রাম ছাড়াও রাজশাহী, সিলেট, বগুড়া, ফরিদপুরে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইলিশ ধরতে সাগরে নেমেছে কক্সবাজারের টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার অন্তত ৬ হাজার ট্রলার। বেশিরভাগ ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরের ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে জাল ফেলছে। অবশিষ্ট ট্রলার ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটারে জাল ফেলে। এখন কাছের ট্রলারগুলো ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে। দূরের ট্রলারগুলো মাছ ধরে ফিরতে আরও দু-একদিন সময় লাগবে।