আইএমএফের কাছে ঋণ চাওয়ার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে কি পরিমাণ ঋণ চাওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। এর আগে ‘কৌশলগত’ কারণে তিনি ঋণ চাওয়ার কথা সাংবাদিকদের অস্বীকার করেছিলেন বলে জানান।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে গতকাল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আইএমএফের কাছে ঋণ চাওয়া হবে, নাকি হবে না, এসব নিয়ে কয়েকদিন ধরে ধোঁয়াশা ছিল। অর্থমন্ত্রী এক সপ্তাহ আগে নিজেই বলেছিলেন, বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে থেকে ঋণ নেবে না।

মুস্তফা কামাল গতকাল বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকে যাব, জাইকায় যাব, সব জায়গায় সব সময় চেষ্টা করি আমাদের যে ঋণ প্রয়োজন হয় তা ভালো সুদে ও ভালো শর্তে নিতে। আইএমএফ টিম এখানে এসেছিল, তারা প্রতি বছরই আসে। তারা বাৎসরিক কনসালটেশন করে, সেজন্য তারা এসেছে। সে সময় যদি বলি আমাদের টাকা দরকার, তখন তারা টাকা দিলেও সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। বায়ার হিসেবে আমরাও খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করি। আমরা ভাব দেখাই, আমাদের দরকার নাই, এটাই হলো মূল কথা। এটি দেশের ভালোর জন্য করা হয়েছে। এতে কোন রকম টাকা-পয়সা নেয়া হয়নি, দেনদরবার হয়নি। সুতরাং চিন্তার কোন কারণ নেই।’

খবরে প্রকাশ, অর্থমন্ত্রী এক চিঠিতে আইএমএফের কাছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছেন। তবে মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কোন পরিমাণ উল্লেখ করিনি। আপনারা কোথায় পেয়েছেন, আমরা কি পরিমাণ লোন চেয়েছি? আমি তো চাইনি, তাহলে কে চাইতে পারে? এটা আমার মনে হয় ভুল বোঝাবুঝি। আমরা যা করবো, আমরা যদি লোন নেই সেক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব আপনাদের ব্যাখ্যা দেয়া। কারণ আমি সবসময় ব্যাখ্যা দিতে রাজি।’

দেশে ব্যাংকের সুদের হারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুদের হার ৬ ও ৯ হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজকে তার অবস্থানে আছে। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো। আপনারা ভালোটা দেখে যদি না বলেন, তাহলে আমাদের সমস্যা। যদি ৬ ও ৯ শতাংশ হারে সুদ না হতো, তাহলে কোভিড পরিস্থিতিতে ছোট, বড়, মাঝারি কোন প্রতিষ্ঠানকে খুঁজেও পেতাম না।’

আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বরাবর বলে যাচ্ছে, বাংলাদেশ ভালোভাবে এগুচ্ছে। আমরা ৬ ও ৯ শতাংশ করার কারণে ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল অবস্থা আছে। সরকারি ব্যাংকগুলোকে দায়িত্ব দিয়েছি তাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য। পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরের ব্যাংককগুলো যেটা লালে ছিল সেটা সবুজ হয়ছে।’

আইএমএফের লোন প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যদি বলি আমার দরকার, আমরা তো ডলার প্রিন্ট করি না। ডলার আমাদের অর্জন করতে হয়। আমরা ডলার অর্জন করি বিদেশের যে শ্রমিকরা আমাদের ডলার পাঠিয়ে সাহায্য করছেন। যারা দেশ থেকে গিয়ে বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, তারা আমাদের সেই ডলার বা বিভিন্ন কারেন্সি দিয়ে সাহায্য করে, তারাই আমাদের চালিয়ে নিচ্ছে। অল্প দিনের মধ্যে খারাপ কোন অবস্থা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন অর্থনীতি ম্যানেজ করি আমাদের কাছে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত দেখতে হয়। আমাদের ঋণ দরকার। আর কিছুদিন, এরপর ঋণ থাকবে না। আমরা তো বলেছিলাম ঋণ আমরা দেব। আমি আবারও বলি আমরা ঋণ দিতে পারব। আমার চাহিদা সবাই জানতে পারলে আমার ওপর খরচটা বেশি দেবে, সেজন্যই প্রয়োজন নেই বলেছি। এভাবেই ম্যানেজ করা হয়। ঋণের বিষয়টি যেন কোনভাবেই আমাদের বিপক্ষে না যায়। আমরা অর্থ চাই, আমরা বলেছি। কিন্তু কত লাগবে সেটি বলিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা কি শর্তে ঋণ দিতে চাচ্ছে, তাদের যদি পজিটিভলি দেখি তাহলে আমরা হয়ত বিবেচনা করতে পারি। আমরা বিবেচনা করবই এ ধরনের কোন প্রস্তাবনা আমরা দেইনি।’

রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের মাধ্যমেই ডলারের মূল চাহিদা পূরণ হবে বলে মনে করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘রেমিট্যান্স আমাদের বড় খাত। আমরা বিশ্বাস করি এ বছর আমাদের রেমিট্যান্স অনেক বাড়বে। এরই মধ্যে যেসব শ্রমিক বিদেশে গেছেন, তাদের সংখ্যাও বেশি। তারা করোনার পরেই গিয়েছেন। তারা আস্তে আস্তে সেখানে সেটেল হয়ে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। আমরা বিশ্বাস করি রেমিট্যান্স ও রপ্তানির মাধ্যমেই আমাদের মূল চাহিদা পূরণ হবে।’

মহামারীর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাতে শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার প্রান্তে না পৌঁছলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিও ঝুঁঁকির মুখে বলে আইএমএফের মূল্যায়ন।

সংকট বড় নয় বলে বাংলাদেশ সরকার দাবি করে এলেও জ্বালানি বাজারে অস্থিরতার কারণে জ্বালানির আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে ইতোমধ্যে রিজার্ভে টান পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোসহ ব্যয় সাশ্রয়ী নানা পদক্ষেপ নেয়ার মধ্যেই আইএমএফ থেকে ঋণ চাওয়ার খবরটি এল।

যে তহবিল থেকে বাংলাদেশ অর্থ চেয়েছে বলে আইএমএফের তরফে বলা হচ্ছে, তা থেকে নি¤œ আয়ের দেশ ও ঝুঁকিপূর্ণ মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে ঋণ দেয়া হয়। কোভিড মহামারী এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলার জন্য নীতি সহায়তার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়া হয় এই প্রকল্পে।

২০ বছর মেয়াদে এই ঋণ দিয়ে থাকে আইএমএফ, তার গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর। আর ঋণে সুদের হার আলোচনার মধ্য দিয়ে ঠিক হবে।

ডলারের দামে ‘কিছু কারসাজি’ চিহ্নিত

এদিকে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে ‘কিছু কারসাজি’ চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘এর দাম বাড়িয়ে আমদানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে এসব অনিয়ম চিহ্নিত করা ও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। ডলারের দাম কারা বাড়াচ্ছে, কী উদ্দেশ আছে আমি জানি না। ইমপোর্ট পর্যায়ে কিছু অব্যবস্থাপনা ছিল। সেগুলো আমরা হাতে নিচ্ছি। দায়িত্ব নিয়েই বলছি যে, যাতে এগুলো না ঘটে সেজন্য আমরা টুলসগুলো ব্যবহার করব। মার্কেট ডিমান্ড অনুযায়ী ডলারের সাপ্লাই দিতে হবে এটা ঠিক আছে। কিন্তু যদি আর্টিফিসিয়াল ওয়েতে যদি কিছু করা হয়, ওই পর্যায়ে যদি নিয়ে যাওয়া হয়, ইন দ্যাট কেস আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। সরকারের বিভিন্ন মেশিনারিজ আছে। আমরা দেখছি ইমপোর্ট করার প্রয়োজন, প্রাইস বাড়িয়ে সেটা করা হচ্ছে। এরই মাঝে আমরা এগুলো দেখা শুরু করেছি এবং এগুলো পেয়েছি। প্রাইস বাড়িয়ে ইমপোর্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যখন বাধা দেয়া হয়, তখন এক ব্যাংক থেকে সরিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে এলসি খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এগুলো সঠিক নয়। এগুলো আমরা ব্যবস্থা নেব যাতে এগুলো করতে না পারে।’

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০২২ , ১৩ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

আইএমএফের কাছে ঋণ চাওয়ার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে কি পরিমাণ ঋণ চাওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। এর আগে ‘কৌশলগত’ কারণে তিনি ঋণ চাওয়ার কথা সাংবাদিকদের অস্বীকার করেছিলেন বলে জানান।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে গতকাল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আইএমএফের কাছে ঋণ চাওয়া হবে, নাকি হবে না, এসব নিয়ে কয়েকদিন ধরে ধোঁয়াশা ছিল। অর্থমন্ত্রী এক সপ্তাহ আগে নিজেই বলেছিলেন, বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে থেকে ঋণ নেবে না।

মুস্তফা কামাল গতকাল বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকে যাব, জাইকায় যাব, সব জায়গায় সব সময় চেষ্টা করি আমাদের যে ঋণ প্রয়োজন হয় তা ভালো সুদে ও ভালো শর্তে নিতে। আইএমএফ টিম এখানে এসেছিল, তারা প্রতি বছরই আসে। তারা বাৎসরিক কনসালটেশন করে, সেজন্য তারা এসেছে। সে সময় যদি বলি আমাদের টাকা দরকার, তখন তারা টাকা দিলেও সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। বায়ার হিসেবে আমরাও খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করি। আমরা ভাব দেখাই, আমাদের দরকার নাই, এটাই হলো মূল কথা। এটি দেশের ভালোর জন্য করা হয়েছে। এতে কোন রকম টাকা-পয়সা নেয়া হয়নি, দেনদরবার হয়নি। সুতরাং চিন্তার কোন কারণ নেই।’

খবরে প্রকাশ, অর্থমন্ত্রী এক চিঠিতে আইএমএফের কাছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছেন। তবে মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কোন পরিমাণ উল্লেখ করিনি। আপনারা কোথায় পেয়েছেন, আমরা কি পরিমাণ লোন চেয়েছি? আমি তো চাইনি, তাহলে কে চাইতে পারে? এটা আমার মনে হয় ভুল বোঝাবুঝি। আমরা যা করবো, আমরা যদি লোন নেই সেক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব আপনাদের ব্যাখ্যা দেয়া। কারণ আমি সবসময় ব্যাখ্যা দিতে রাজি।’

দেশে ব্যাংকের সুদের হারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুদের হার ৬ ও ৯ হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজকে তার অবস্থানে আছে। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো। আপনারা ভালোটা দেখে যদি না বলেন, তাহলে আমাদের সমস্যা। যদি ৬ ও ৯ শতাংশ হারে সুদ না হতো, তাহলে কোভিড পরিস্থিতিতে ছোট, বড়, মাঝারি কোন প্রতিষ্ঠানকে খুঁজেও পেতাম না।’

আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বরাবর বলে যাচ্ছে, বাংলাদেশ ভালোভাবে এগুচ্ছে। আমরা ৬ ও ৯ শতাংশ করার কারণে ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল অবস্থা আছে। সরকারি ব্যাংকগুলোকে দায়িত্ব দিয়েছি তাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য। পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরের ব্যাংককগুলো যেটা লালে ছিল সেটা সবুজ হয়ছে।’

আইএমএফের লোন প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যদি বলি আমার দরকার, আমরা তো ডলার প্রিন্ট করি না। ডলার আমাদের অর্জন করতে হয়। আমরা ডলার অর্জন করি বিদেশের যে শ্রমিকরা আমাদের ডলার পাঠিয়ে সাহায্য করছেন। যারা দেশ থেকে গিয়ে বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, তারা আমাদের সেই ডলার বা বিভিন্ন কারেন্সি দিয়ে সাহায্য করে, তারাই আমাদের চালিয়ে নিচ্ছে। অল্প দিনের মধ্যে খারাপ কোন অবস্থা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন অর্থনীতি ম্যানেজ করি আমাদের কাছে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত দেখতে হয়। আমাদের ঋণ দরকার। আর কিছুদিন, এরপর ঋণ থাকবে না। আমরা তো বলেছিলাম ঋণ আমরা দেব। আমি আবারও বলি আমরা ঋণ দিতে পারব। আমার চাহিদা সবাই জানতে পারলে আমার ওপর খরচটা বেশি দেবে, সেজন্যই প্রয়োজন নেই বলেছি। এভাবেই ম্যানেজ করা হয়। ঋণের বিষয়টি যেন কোনভাবেই আমাদের বিপক্ষে না যায়। আমরা অর্থ চাই, আমরা বলেছি। কিন্তু কত লাগবে সেটি বলিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা কি শর্তে ঋণ দিতে চাচ্ছে, তাদের যদি পজিটিভলি দেখি তাহলে আমরা হয়ত বিবেচনা করতে পারি। আমরা বিবেচনা করবই এ ধরনের কোন প্রস্তাবনা আমরা দেইনি।’

রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের মাধ্যমেই ডলারের মূল চাহিদা পূরণ হবে বলে মনে করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘রেমিট্যান্স আমাদের বড় খাত। আমরা বিশ্বাস করি এ বছর আমাদের রেমিট্যান্স অনেক বাড়বে। এরই মধ্যে যেসব শ্রমিক বিদেশে গেছেন, তাদের সংখ্যাও বেশি। তারা করোনার পরেই গিয়েছেন। তারা আস্তে আস্তে সেখানে সেটেল হয়ে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। আমরা বিশ্বাস করি রেমিট্যান্স ও রপ্তানির মাধ্যমেই আমাদের মূল চাহিদা পূরণ হবে।’

মহামারীর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাতে শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার প্রান্তে না পৌঁছলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিও ঝুঁঁকির মুখে বলে আইএমএফের মূল্যায়ন।

সংকট বড় নয় বলে বাংলাদেশ সরকার দাবি করে এলেও জ্বালানি বাজারে অস্থিরতার কারণে জ্বালানির আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে ইতোমধ্যে রিজার্ভে টান পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোসহ ব্যয় সাশ্রয়ী নানা পদক্ষেপ নেয়ার মধ্যেই আইএমএফ থেকে ঋণ চাওয়ার খবরটি এল।

যে তহবিল থেকে বাংলাদেশ অর্থ চেয়েছে বলে আইএমএফের তরফে বলা হচ্ছে, তা থেকে নি¤œ আয়ের দেশ ও ঝুঁকিপূর্ণ মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে ঋণ দেয়া হয়। কোভিড মহামারী এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলার জন্য নীতি সহায়তার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়া হয় এই প্রকল্পে।

২০ বছর মেয়াদে এই ঋণ দিয়ে থাকে আইএমএফ, তার গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর। আর ঋণে সুদের হার আলোচনার মধ্য দিয়ে ঠিক হবে।

ডলারের দামে ‘কিছু কারসাজি’ চিহ্নিত

এদিকে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে ‘কিছু কারসাজি’ চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘এর দাম বাড়িয়ে আমদানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে এসব অনিয়ম চিহ্নিত করা ও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। ডলারের দাম কারা বাড়াচ্ছে, কী উদ্দেশ আছে আমি জানি না। ইমপোর্ট পর্যায়ে কিছু অব্যবস্থাপনা ছিল। সেগুলো আমরা হাতে নিচ্ছি। দায়িত্ব নিয়েই বলছি যে, যাতে এগুলো না ঘটে সেজন্য আমরা টুলসগুলো ব্যবহার করব। মার্কেট ডিমান্ড অনুযায়ী ডলারের সাপ্লাই দিতে হবে এটা ঠিক আছে। কিন্তু যদি আর্টিফিসিয়াল ওয়েতে যদি কিছু করা হয়, ওই পর্যায়ে যদি নিয়ে যাওয়া হয়, ইন দ্যাট কেস আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। সরকারের বিভিন্ন মেশিনারিজ আছে। আমরা দেখছি ইমপোর্ট করার প্রয়োজন, প্রাইস বাড়িয়ে সেটা করা হচ্ছে। এরই মাঝে আমরা এগুলো দেখা শুরু করেছি এবং এগুলো পেয়েছি। প্রাইস বাড়িয়ে ইমপোর্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যখন বাধা দেয়া হয়, তখন এক ব্যাংক থেকে সরিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে এলসি খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এগুলো সঠিক নয়। এগুলো আমরা ব্যবস্থা নেব যাতে এগুলো করতে না পারে।’