সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আন্তঃজেলায় মোটরসাইকেল চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধের সুপারিশ

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আন্তঃজেলায় রাইডশেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধের সুপারিশ করেছে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ টাস্কফোর্স। এছাড়া মাদকাসক্ত পরীক্ষা করে চালকদের লাইসেন্স নবায়ন, ডোপ টেস্টের ফি কমানো ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো, বিআরটিএ, হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশে জনবল বৃদ্ধি, সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ ও অবৈধ ড্রাইভিং স্কুলগুলো বন্ধের সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।

গতকাল সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে টাস্কফোর্সের পঞ্চম সভায় এই সুপারিশ করা হয়। সভায় শুরুতে টাস্কফোর্সের সভাপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সভাপতিত্ব করেন। পরে জরুরি কাজ থাকায় তিনি চলে যান। সভাশেষে টাস্কফোর্সের সদস্য ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি সংসদ সদস্য শাজাহান খান এই তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

এ সময় শাজাহান খান বলেন, ‘মোটরসাইকেল নিয়ে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, দূরপাল্লায়, আন্তঃজেলায় রাইডশেয়ারিং হবে না। সভায় এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটাকে কঠোরভাবে মানার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আপনারা জানেন ৪০ শতাংশ দুর্ঘটনা হয় মোটরসাইকেলে। সুতরাং আমরা সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা এটাকে বাস্তবায়নের জন্য বলেছি। তবে এখনও স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি।’ অনেকে বলছেন বাস মালিকদের ষড়যন্ত্রে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে শাজাহান খান বলেন, ‘এটা হাস্যকর ব্যাপার ছাড়া আর কিছু না।’

বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে শাজাহান খান বলেন, ‘ইতোমধ্যে ড্রাইভারদের ডোপ টেস্ট করে লাইসেন্স নবায়ন করা বা নতুন লাইসেন্স দেয়ার একটি সিদ্ধান্ত আছে। এই ডোপ টেস্টের বিষয়ে কয়েকটি সেন্টার আছে। আমরা এর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বলেছি। এই টেস্ট করতে ৯০০ টাকা প্রয়োজন হয়, সেটাকে কমানোর জন্য অনুরোধ করেছি। যাতে ড্রাইভারদের হয়রানি করা না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি বিআরটিএর ৯৩১ জন কর্মীর জনবল কাঠামো রয়েছে। এর মধ্যে ১২২টি পদ এখনও শূন্য। আমরা বলেছি, আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে এদের নিয়োগ দিতে হবে এবং সংখ্যা বাড়াতে হবে। এছাড়া হাইওয়ে পুলিশের সংখ্যা প্রয়োজন আট হাজারের ওপরে। সেখানে দুই হাজার প্লাস রয়েছে। এটাও যাতে বাড়ানো যায় আমরা সেই অনুরোধ করেছি। ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা এখন ঢাকা শহরে যা আছে আমরা মনে করি এটা খুবই সামান্য। ট্রাফিক নিয়েন্ত্রণে পুলিশের সংখ্যাও আমরা বাড়াতে বলেছি।’

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নামে চাঁদাবাজি অনেকটাই বন্ধ হয়েছে দাবি করে শাজাহান খান বলেন, ‘তবে নতুন করে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছে বিশেষ করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা যারা সড়ক-মহাসড়ক থেকে টোলের নামে টাকা নিচ্ছে। অথচ ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সার্কুলারে বলা হয়েছে সড়ক-মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা যাবে না, শুধু টার্মিনাল থেকে টোল নিতে পারবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগকে পত্র নিয়ে অবিলম্বের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে যে চাঁদা আদায় হচ্ছে টোলের নামে তা বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

অবৈধ ড্রাইভিং স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানসম্মত ড্রাইভিং স্কুল আমাদের দেশে অনেক কম। উত্তরায় বা অন্য জায়গায় প্রচুর অবৈধ স্কুল আছে। আমরা বিআরটিএকে নির্দেশনা দিয়েছি এসব স্কুল বন্ধ করে যাদের অনুমতি দেয়া সম্ভব তাদের অনুমোদন দিতে। এছাড়া হাইওয়ের পাশের হাটগুলো ইজারা দেয়া হচ্ছে। এগুলোকে ইজারা না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।’

সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্রের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘এখন শ্রমিকরা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। এখন কেন্দ্রীয়ভাবে মালিক ও শ্রমিকরা এ বিষয়ে বসবেন। আমরা সবাই একমত হয়েছি সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একদিন ভার্চুয়ালি সারাদেশে একসঙ্গে নিয়োগপত্র দেয়ার বিষয়টি উদ্বোধন করবেন। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত অনেক আগের বাস্তবায়নটা একটু দুর্বল ছিল, এটাকে আমরা এভাবে ত্বরান্বিত করতে চাই।’

১১১ সুপারিশের মধ্যে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের হেলমেট পরা, ট্রাকের বাম্পার-অ্যাঙ্গেল অপসারণসহ কয়েকটি বিষয় সরকার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস প্রায় ৮০ ভাগ চাঁদাবাজি বন্ধ করে দিয়েছি। বাকিটা বন্ধ করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আইজি-সাহেবসহ মন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সেভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবো।’

শহরে এখনও বাসগুলো প্রতিযোগিতা করে চলাচল করছে, একটি বাস আরেকটি বাসের গতি রোধ করে যাত্রী তুলছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা আজও বিষয়টি আলোচনা করেছি এবং এটায় খুবই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অনেক সময় আমাদের শ্রমিকদের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। শ্রমিকরা মালিকদের কাছ থেকে বাস ইজারা নেয়। এ অবস্থা আমরা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছি। এটা ক্ষতিকর।’

‘আমরা নির্দেশ দিচ্ছি, যাতে কোনক্রমেই একটি বাস আরেকটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা না করে। গাড়ি রেখে রাস্তা আটকে রাখা এসব বিষয়ে আমরা একটা সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আমরা কর্মরত ৬২ হাজার পরিবহন শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আরও পরিবহন শ্রমিককের আমরা প্রশিক্ষণ করাবো টার্মিনালগুলোতে’ বলেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আরও কয়েকটি বাস টার্মিনাল করার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেগুলো হলে আর সড়কে পার্কিং করা যাবে না। আর পুরোনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি শুধু পুলিশ জব্দ করবে না, সেগুলো স্ক্র্যাপ করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর
ডি-৮ দেশগুলোর শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্লক গড়ে তুলতে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
ডি-৮ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ
বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপির বিক্ষোভ বছরের সেরা কৌতুক : কাদের
রাজশাহীতে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে রাখে রাবির ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা
গাফিলতির কারণেই দুটি উড়োজাহাজের মধ্যে সংঘর্ষ হয় বিমান প্রতিমন্ত্রী
নিরাপত্তাকর্মীর পরিচয় বড় কর্মকর্তা, রাতারাতি বনেছেন কোটিপতি
ছিনতাইয়ে বাঁধা দেয়ায় হত্যা করা হয় বুলবুলকে
বেরোবি শিক্ষক সমিতির সমাবেশ
এডিশ মশার প্রজনন ও উপস্থিতি রাজধানীতে ডেঙ্গুজ্বর ও পাহাড়ে ম্যালেরিয়া বাড়ছে
ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে প্রতিপক্ষকে মারধর, মামলা তুলে নিতে হুমকি

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০২২ , ১৩ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আন্তঃজেলায় মোটরসাইকেল চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধের সুপারিশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আন্তঃজেলায় রাইডশেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধের সুপারিশ করেছে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ টাস্কফোর্স। এছাড়া মাদকাসক্ত পরীক্ষা করে চালকদের লাইসেন্স নবায়ন, ডোপ টেস্টের ফি কমানো ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো, বিআরটিএ, হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশে জনবল বৃদ্ধি, সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ ও অবৈধ ড্রাইভিং স্কুলগুলো বন্ধের সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।

গতকাল সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে টাস্কফোর্সের পঞ্চম সভায় এই সুপারিশ করা হয়। সভায় শুরুতে টাস্কফোর্সের সভাপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সভাপতিত্ব করেন। পরে জরুরি কাজ থাকায় তিনি চলে যান। সভাশেষে টাস্কফোর্সের সদস্য ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি সংসদ সদস্য শাজাহান খান এই তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

এ সময় শাজাহান খান বলেন, ‘মোটরসাইকেল নিয়ে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, দূরপাল্লায়, আন্তঃজেলায় রাইডশেয়ারিং হবে না। সভায় এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটাকে কঠোরভাবে মানার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আপনারা জানেন ৪০ শতাংশ দুর্ঘটনা হয় মোটরসাইকেলে। সুতরাং আমরা সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা এটাকে বাস্তবায়নের জন্য বলেছি। তবে এখনও স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি।’ অনেকে বলছেন বাস মালিকদের ষড়যন্ত্রে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে শাজাহান খান বলেন, ‘এটা হাস্যকর ব্যাপার ছাড়া আর কিছু না।’

বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে শাজাহান খান বলেন, ‘ইতোমধ্যে ড্রাইভারদের ডোপ টেস্ট করে লাইসেন্স নবায়ন করা বা নতুন লাইসেন্স দেয়ার একটি সিদ্ধান্ত আছে। এই ডোপ টেস্টের বিষয়ে কয়েকটি সেন্টার আছে। আমরা এর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বলেছি। এই টেস্ট করতে ৯০০ টাকা প্রয়োজন হয়, সেটাকে কমানোর জন্য অনুরোধ করেছি। যাতে ড্রাইভারদের হয়রানি করা না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি বিআরটিএর ৯৩১ জন কর্মীর জনবল কাঠামো রয়েছে। এর মধ্যে ১২২টি পদ এখনও শূন্য। আমরা বলেছি, আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে এদের নিয়োগ দিতে হবে এবং সংখ্যা বাড়াতে হবে। এছাড়া হাইওয়ে পুলিশের সংখ্যা প্রয়োজন আট হাজারের ওপরে। সেখানে দুই হাজার প্লাস রয়েছে। এটাও যাতে বাড়ানো যায় আমরা সেই অনুরোধ করেছি। ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা এখন ঢাকা শহরে যা আছে আমরা মনে করি এটা খুবই সামান্য। ট্রাফিক নিয়েন্ত্রণে পুলিশের সংখ্যাও আমরা বাড়াতে বলেছি।’

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নামে চাঁদাবাজি অনেকটাই বন্ধ হয়েছে দাবি করে শাজাহান খান বলেন, ‘তবে নতুন করে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছে বিশেষ করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা যারা সড়ক-মহাসড়ক থেকে টোলের নামে টাকা নিচ্ছে। অথচ ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সার্কুলারে বলা হয়েছে সড়ক-মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা যাবে না, শুধু টার্মিনাল থেকে টোল নিতে পারবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগকে পত্র নিয়ে অবিলম্বের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে যে চাঁদা আদায় হচ্ছে টোলের নামে তা বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

অবৈধ ড্রাইভিং স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানসম্মত ড্রাইভিং স্কুল আমাদের দেশে অনেক কম। উত্তরায় বা অন্য জায়গায় প্রচুর অবৈধ স্কুল আছে। আমরা বিআরটিএকে নির্দেশনা দিয়েছি এসব স্কুল বন্ধ করে যাদের অনুমতি দেয়া সম্ভব তাদের অনুমোদন দিতে। এছাড়া হাইওয়ের পাশের হাটগুলো ইজারা দেয়া হচ্ছে। এগুলোকে ইজারা না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।’

সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্রের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘এখন শ্রমিকরা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। এখন কেন্দ্রীয়ভাবে মালিক ও শ্রমিকরা এ বিষয়ে বসবেন। আমরা সবাই একমত হয়েছি সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একদিন ভার্চুয়ালি সারাদেশে একসঙ্গে নিয়োগপত্র দেয়ার বিষয়টি উদ্বোধন করবেন। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত অনেক আগের বাস্তবায়নটা একটু দুর্বল ছিল, এটাকে আমরা এভাবে ত্বরান্বিত করতে চাই।’

১১১ সুপারিশের মধ্যে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের হেলমেট পরা, ট্রাকের বাম্পার-অ্যাঙ্গেল অপসারণসহ কয়েকটি বিষয় সরকার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস প্রায় ৮০ ভাগ চাঁদাবাজি বন্ধ করে দিয়েছি। বাকিটা বন্ধ করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আইজি-সাহেবসহ মন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সেভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবো।’

শহরে এখনও বাসগুলো প্রতিযোগিতা করে চলাচল করছে, একটি বাস আরেকটি বাসের গতি রোধ করে যাত্রী তুলছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা আজও বিষয়টি আলোচনা করেছি এবং এটায় খুবই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অনেক সময় আমাদের শ্রমিকদের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। শ্রমিকরা মালিকদের কাছ থেকে বাস ইজারা নেয়। এ অবস্থা আমরা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছি। এটা ক্ষতিকর।’

‘আমরা নির্দেশ দিচ্ছি, যাতে কোনক্রমেই একটি বাস আরেকটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা না করে। গাড়ি রেখে রাস্তা আটকে রাখা এসব বিষয়ে আমরা একটা সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আমরা কর্মরত ৬২ হাজার পরিবহন শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আরও পরিবহন শ্রমিককের আমরা প্রশিক্ষণ করাবো টার্মিনালগুলোতে’ বলেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আরও কয়েকটি বাস টার্মিনাল করার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেগুলো হলে আর সড়কে পার্কিং করা যাবে না। আর পুরোনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি শুধু পুলিশ জব্দ করবে না, সেগুলো স্ক্র্যাপ করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।