চাঁদপুরে ‘বালুখেকো’ সেলিম খানের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত মামলা করছে দুদক

অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের অন্যতম সহযোগী চাঁদপুরের বালুখোকো খ্যাত সেলিম খান ওরফে বালু সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেলিম খানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৩৫ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগ এনে গতকাল কমিশনের বৈঠকে এ মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। যেকোন সময় মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তা।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, চাঁদপুরের বিতর্কিত ‘বালুখেকো’ ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ওই মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। শীঘ্রই সংস্থার সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা আতাউর রহমান সরকার বাদী হয়ে মামলাটি করবেন। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও প্রায় ৬৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, সেলিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে তার বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়। এরপর তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করলে তাতে ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

গত ২৬ এপ্রিল দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম খানকে ৬০ দিনের জন্য বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ। পরবর্তীতে পুনরায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময় বাড়ানো হয়েছে। দুদক সচিব বলেন, অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সেলিম খান ও তার স্ত্রী শাহানারা বেগমের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দিয়েছিল দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সেলিম খানের আয়কর বিবরণীসহ বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই শেষে তার পারিবারিক ব্যয়ের হিসাব পাওয়া যায় ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত বেতন-ভাতা ও ঋণসহ তার মোট আয় পাওয়া যায় ৬১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এছাড়া চলতি বছরের ৬ এপ্রিল দুর্নীতির মাধ্যমে অগাধ সম্পত্তি অর্জন বিষয়ে চাঁদপুরের লক্ষ্মীপুরের ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যাচাইয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাৎ-এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালায়। দুদক টিম চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মৌজায় চাঁদপুর-হাইমচর সড়কের পাশে মেঘনা নদী থেকে ৮০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে। এ ঘটনা নিয়ে ২১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানিয়েছেন দুদক সচিব মাহবুব হোসেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযানকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকার নির্ধারিত মৌজা মূল্যের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি মূল্য দেখিয়ে ১৩৯টি উচ্চমূল্যের দলিল কারসাজির মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সেটা আর হয়নি। যদি তিনি সফল হতেন তাহলে সরকারের অতিরিক্ত ৩-৪শ’ কোটি টাকা লোকসান হতো, কিন্তু সেটা হয়নি। এছাড়া সেলিম খান মেঘনা-পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা আতাউর রহমানের কমিশনে দেয়া প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সেলিম খানের নিজ মালিকানায় চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মৌজায় ১৯ দশমিক ৮৯ একর জমি, ঢাকার কাকরাইলে আজমিন ভবন নামে পাঁচতলা একটি বাড়ি, কাকরাইলে ৭১৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগর মৌজায় শূন্য দশমিক ১২৫০ একর জমিতে দশ তলা বাড়িসহ প্রাথমিক অনুসন্ধানে মোট ২৬ কোটি ৪২ লাখ ৩২ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। এছাড়া ছয়টি ড্রেজার মেশিন, তিনটি প্রাইভেট কার ও জিপ, একটি পিস্তল, একটি শটগান, আসবাবপত্র ও স্বর্ণের গহনা, ব্যাংকে ও হাতে নগদ টাকা, ৯টি সিনেমা নির্মাণ ও আমদানি বিনিয়োগসহ ১১ কোটি ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে ৩৭ কোটি ৩১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের রেকর্ড পাওয়া যায়।

অন্যদিকে তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় এক কোটি ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৩১০ টাকা। অর্থাৎ পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনে তার মোট ব্যয় ৩৮ কোটি ৬৮ লাখ ৫ হাজার টাকা। এর বিপরীতে রেকর্ডপত্র অনুযায়ী তার গ্রহণযোগ্য আয় চার কোটি ১৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে আয় অপেক্ষা তার অতিরিক্ত সম্পদের পরিমাণ ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকা। যা অনুসন্ধানকালে তার আয়বহির্ভূত বা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে মনে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রস্তাবিত চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাবিপ্রবি) জমি অধিগ্রহণে শিক্ষামন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। শিক্ষামন্ত্রীর বড় ভাই ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ, মামাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম ও লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান কয়েক একর জমি কেনেন। এছাড়া সেলিম খান চাঁদপুরের নদী থেকে বছরের পর বছর অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন করে পরিবেশ বিনষ্টসহ বিপুল অঙ্কের সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের পরিপেক্ষিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া টাকা বৈধ করতে কয়েক মাস আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে মাত্র ১৩ কোটি টাকা রাজস্ব দিতে গেলে প্রশাসন নেয়নি।

সোমবার, ০১ আগস্ট ২০২২ , ১৭ শ্রাবণ ১৪২৯ ২ মহররম ১৪৪৪

চাঁদপুরে ‘বালুখেকো’ সেলিম খানের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত মামলা করছে দুদক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের অন্যতম সহযোগী চাঁদপুরের বালুখোকো খ্যাত সেলিম খান ওরফে বালু সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেলিম খানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৩৫ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগ এনে গতকাল কমিশনের বৈঠকে এ মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। যেকোন সময় মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তা।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, চাঁদপুরের বিতর্কিত ‘বালুখেকো’ ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ওই মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। শীঘ্রই সংস্থার সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা আতাউর রহমান সরকার বাদী হয়ে মামলাটি করবেন। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও প্রায় ৬৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, সেলিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে তার বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়। এরপর তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করলে তাতে ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

গত ২৬ এপ্রিল দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম খানকে ৬০ দিনের জন্য বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ। পরবর্তীতে পুনরায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময় বাড়ানো হয়েছে। দুদক সচিব বলেন, অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সেলিম খান ও তার স্ত্রী শাহানারা বেগমের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দিয়েছিল দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সেলিম খানের আয়কর বিবরণীসহ বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই শেষে তার পারিবারিক ব্যয়ের হিসাব পাওয়া যায় ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত বেতন-ভাতা ও ঋণসহ তার মোট আয় পাওয়া যায় ৬১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এছাড়া চলতি বছরের ৬ এপ্রিল দুর্নীতির মাধ্যমে অগাধ সম্পত্তি অর্জন বিষয়ে চাঁদপুরের লক্ষ্মীপুরের ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যাচাইয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাৎ-এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালায়। দুদক টিম চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মৌজায় চাঁদপুর-হাইমচর সড়কের পাশে মেঘনা নদী থেকে ৮০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে। এ ঘটনা নিয়ে ২১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানিয়েছেন দুদক সচিব মাহবুব হোসেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযানকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকার নির্ধারিত মৌজা মূল্যের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি মূল্য দেখিয়ে ১৩৯টি উচ্চমূল্যের দলিল কারসাজির মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সেটা আর হয়নি। যদি তিনি সফল হতেন তাহলে সরকারের অতিরিক্ত ৩-৪শ’ কোটি টাকা লোকসান হতো, কিন্তু সেটা হয়নি। এছাড়া সেলিম খান মেঘনা-পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা আতাউর রহমানের কমিশনে দেয়া প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সেলিম খানের নিজ মালিকানায় চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মৌজায় ১৯ দশমিক ৮৯ একর জমি, ঢাকার কাকরাইলে আজমিন ভবন নামে পাঁচতলা একটি বাড়ি, কাকরাইলে ৭১৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগর মৌজায় শূন্য দশমিক ১২৫০ একর জমিতে দশ তলা বাড়িসহ প্রাথমিক অনুসন্ধানে মোট ২৬ কোটি ৪২ লাখ ৩২ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। এছাড়া ছয়টি ড্রেজার মেশিন, তিনটি প্রাইভেট কার ও জিপ, একটি পিস্তল, একটি শটগান, আসবাবপত্র ও স্বর্ণের গহনা, ব্যাংকে ও হাতে নগদ টাকা, ৯টি সিনেমা নির্মাণ ও আমদানি বিনিয়োগসহ ১১ কোটি ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে ৩৭ কোটি ৩১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের রেকর্ড পাওয়া যায়।

অন্যদিকে তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় এক কোটি ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৩১০ টাকা। অর্থাৎ পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনে তার মোট ব্যয় ৩৮ কোটি ৬৮ লাখ ৫ হাজার টাকা। এর বিপরীতে রেকর্ডপত্র অনুযায়ী তার গ্রহণযোগ্য আয় চার কোটি ১৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে আয় অপেক্ষা তার অতিরিক্ত সম্পদের পরিমাণ ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকা। যা অনুসন্ধানকালে তার আয়বহির্ভূত বা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে মনে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রস্তাবিত চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাবিপ্রবি) জমি অধিগ্রহণে শিক্ষামন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। শিক্ষামন্ত্রীর বড় ভাই ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ, মামাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম ও লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান কয়েক একর জমি কেনেন। এছাড়া সেলিম খান চাঁদপুরের নদী থেকে বছরের পর বছর অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন করে পরিবেশ বিনষ্টসহ বিপুল অঙ্কের সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের পরিপেক্ষিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া টাকা বৈধ করতে কয়েক মাস আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে মাত্র ১৩ কোটি টাকা রাজস্ব দিতে গেলে প্রশাসন নেয়নি।