ইউরিয়ার দাম বাড়লো কেজিতে ৬ টাকা

বৈশ্বিক গ্যাস সংকট ও সরকারের ভর্তুকি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে দেশে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল ইউরিয়ার দাম ডিলার ও কৃষক পর্যায়ে কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানোর কথা জানিয়েছে। আগে কৃষকরা প্রতি কেজি ইউরিয়া কিনতেন ১৬ টাকায়। সেটি এখন নতুন দর হিসাবে কিনতে হবে ২২ টাকায়। ডিলার পর্যায়ে এই দাম ছিল ১৪ টাকা, যা এখন ২০ টাকায় কিনতে হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

ইউরিয়ার নতুন দাম গতকাল থেকেই কার্যকরের কথাও জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। এর ফলে ৬ টাকা দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে কেজিতে দেশে ৫৯ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের ভর্তুকি ছিল ১৫ টাকা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সারের মূল্য চার দফা কমিয়ে স্বল্পদামে পর্যাপ্ত সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সেজন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপি সারের মূল্য প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েকবছরে ডিএপি সারের ব্যবহার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে ডিএপি ব্যবহার হতো আট লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ১৬ লাখ টন।

ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়ায় ইউরিয়ার ব্যবহার কমার কথা। কিন্তু বাস্তবে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেনি, বরং বেড়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। ২০১৯ সালে ইউরিয়া ব্যবহার হতো ২৫ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন। গত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় তিন-চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকিও বেড়েছে প্রায় চার গুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে যেখানে ভর্তুকিতে লেগেছিল ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা; সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।

কৃষি মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছে, দেশে সব ধরনের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। আমন মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, বিপরীতে মজুত রয়েছে ৭ লাখ ২৭ হাজার টন। এই পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় এক লাখ টন বেশি বলে জানানো হয়।

মঙ্গলবার, ০২ আগস্ট ২০২২ , ১৮ শ্রাবণ ১৪২৯ ৩ মহররম ১৪৪৪

ইউরিয়ার দাম বাড়লো কেজিতে ৬ টাকা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বৈশ্বিক গ্যাস সংকট ও সরকারের ভর্তুকি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে দেশে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল ইউরিয়ার দাম ডিলার ও কৃষক পর্যায়ে কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানোর কথা জানিয়েছে। আগে কৃষকরা প্রতি কেজি ইউরিয়া কিনতেন ১৬ টাকায়। সেটি এখন নতুন দর হিসাবে কিনতে হবে ২২ টাকায়। ডিলার পর্যায়ে এই দাম ছিল ১৪ টাকা, যা এখন ২০ টাকায় কিনতে হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

ইউরিয়ার নতুন দাম গতকাল থেকেই কার্যকরের কথাও জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। এর ফলে ৬ টাকা দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে কেজিতে দেশে ৫৯ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের ভর্তুকি ছিল ১৫ টাকা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সারের মূল্য চার দফা কমিয়ে স্বল্পদামে পর্যাপ্ত সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সেজন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপি সারের মূল্য প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েকবছরে ডিএপি সারের ব্যবহার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে ডিএপি ব্যবহার হতো আট লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ১৬ লাখ টন।

ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়ায় ইউরিয়ার ব্যবহার কমার কথা। কিন্তু বাস্তবে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেনি, বরং বেড়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। ২০১৯ সালে ইউরিয়া ব্যবহার হতো ২৫ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন। গত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় তিন-চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকিও বেড়েছে প্রায় চার গুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে যেখানে ভর্তুকিতে লেগেছিল ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা; সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।

কৃষি মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছে, দেশে সব ধরনের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। আমন মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, বিপরীতে মজুত রয়েছে ৭ লাখ ২৭ হাজার টন। এই পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় এক লাখ টন বেশি বলে জানানো হয়।