টেলিটকের ফাইভ জি : ঢাকায় ২০২৫ এর শুরুতে মিলতে পারে সেবা

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় পঞ্চম প্রজন্মের ইন্টারনেট বা ফাইভ-জি সেবা চালু করতে চায় রাষ্ট্রায়ত্ত মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটক। আর এই পঞ্চম প্রজন্ম বা ফাইভ জি সেবা দিতে ২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক।

প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সংবাদকে জানিয়েছেন টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাহাব উদ্দিন।

আজ অনুমোদন পেলে আগামী দেড় বছরের মধ্যে এই পঞ্চম প্রজন্মের সেবা চালু করতে পারবেন বলে আশা করছেন সাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু এই প্রযুক্তি নতুন ও ব্যয় বহুল তাই দুই তিন মাস বেশি সময় লাগতে পারে, তবে চেষ্টা থাকবে সময়ের মধ্যে শেষ করার।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটকের নেটওয়ার্কে বাণিজ্যিকভাবে ৫জি প্রযুক্তি চালুকরণ’ শীর্ষক এই প্রকল্প ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে চায় টেলিটক। অর্থের যোগান আসবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারলে ২০২৫ সালের শুরু থেকেই পঞ্চম প্রজন্মের সেবা দেয়া শুরু করবে টেলিটক।

সাহাব উদ্দীন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ঢাকার এক লাখ গ্রাহককে ফাইভ-জি সেবার আওতায় আনা হবে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে অগ্রাধিকার পাবে সরকারি দপ্তর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলো। শুরুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ফাইভজির আওতায় আনা হবে। এছাড়া আবাসিক এলাকা মোহাম্মদপুর, শেরে বাংলা নগর, বনানী, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা টেলিটকের পঞ্চম প্রজন্ম সেবার আওতায় আসবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বঙ্গভবন, সচিবালয়সহ মতিঝিল, রমনা শাহবাগ ও ধানমন্ডি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোতে ফাইভ জি সেবা দেয়ার কথা ভাবছে টেলিটক। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পটি আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়ন করতে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া সময়ের দাবি। আশা করছি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অনুমোদন দেয়া হবে।’

বিটিআরসির নিলাম থেকে গত ৩১ মার্চ টেলিটক এক হাজার ৬৮০ কোটি টাকায় ৩০ মেগাহার্টজ ফাইভ জি তরঙ্গ কেনে।

সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘ফাইভ জির যন্ত্রপাতি ফোরজি থেকে আলাদা, দামও অনেক বেশি। তাই ইচ্ছা করলেই ফাইভ জি নেটওয়ার্ক সম্প্রারণ করা যাচ্ছে না। এটি অনেক ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা শহরে টেলিটকের ২০০টি ৪জি বিটিএস সাইটে ৫জি প্রযুক্তিনির্ভর টেলিকম যন্ত্রপাতি সংযোজন করে উচ্চগতির ফাইভ জি তরঙ্গ নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে।’

টেলিটকের নেটওয়ার্ক এখনও গ্রাহকদের আশানুরূপ সেবা দিতে পারছে না সেক্ষেত্রে পঞ্চম প্রজন্ম নিয়ে কাজ করা কতোটা যুক্তিযুক্ত এমন প্রশ্নের জবাবে সাহাবউদ্দীন বলেন, ‘এখনও অনেক জায়গায় অর্থাৎ রুরাল এরিয়াতে (গ্রামীণ এলাকায়) টু জি নেটওয়ার্ক আছে। তবে ফাইভ জি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকাগুলো ফোর জি হয়ে যাবে। গ্রাহকরা স্যাটিসফাই (সন্তুষ্ট) যেন হয় সে বিষয়ে কাজ করছি।’

রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক ২০০৪ সালে কাজ শুরু করে। বর্তমানে এর গ্রাহক সংখ্যা ৬৭ লাখের মত, যা মোট মোবাইল গ্রাহকের সাড়ে ৩ শতাংশের মত।

মঙ্গলবার, ০২ আগস্ট ২০২২ , ১৮ শ্রাবণ ১৪২৯ ৩ মহররম ১৪৪৪

টেলিটকের ফাইভ জি : ঢাকায় ২০২৫ এর শুরুতে মিলতে পারে সেবা

জাহিদা পারভেজ ছন্দা

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় পঞ্চম প্রজন্মের ইন্টারনেট বা ফাইভ-জি সেবা চালু করতে চায় রাষ্ট্রায়ত্ত মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটক। আর এই পঞ্চম প্রজন্ম বা ফাইভ জি সেবা দিতে ২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক।

প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সংবাদকে জানিয়েছেন টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাহাব উদ্দিন।

আজ অনুমোদন পেলে আগামী দেড় বছরের মধ্যে এই পঞ্চম প্রজন্মের সেবা চালু করতে পারবেন বলে আশা করছেন সাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু এই প্রযুক্তি নতুন ও ব্যয় বহুল তাই দুই তিন মাস বেশি সময় লাগতে পারে, তবে চেষ্টা থাকবে সময়ের মধ্যে শেষ করার।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটকের নেটওয়ার্কে বাণিজ্যিকভাবে ৫জি প্রযুক্তি চালুকরণ’ শীর্ষক এই প্রকল্প ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে চায় টেলিটক। অর্থের যোগান আসবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারলে ২০২৫ সালের শুরু থেকেই পঞ্চম প্রজন্মের সেবা দেয়া শুরু করবে টেলিটক।

সাহাব উদ্দীন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ঢাকার এক লাখ গ্রাহককে ফাইভ-জি সেবার আওতায় আনা হবে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে অগ্রাধিকার পাবে সরকারি দপ্তর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলো। শুরুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ফাইভজির আওতায় আনা হবে। এছাড়া আবাসিক এলাকা মোহাম্মদপুর, শেরে বাংলা নগর, বনানী, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা টেলিটকের পঞ্চম প্রজন্ম সেবার আওতায় আসবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বঙ্গভবন, সচিবালয়সহ মতিঝিল, রমনা শাহবাগ ও ধানমন্ডি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোতে ফাইভ জি সেবা দেয়ার কথা ভাবছে টেলিটক। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পটি আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়ন করতে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া সময়ের দাবি। আশা করছি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অনুমোদন দেয়া হবে।’

বিটিআরসির নিলাম থেকে গত ৩১ মার্চ টেলিটক এক হাজার ৬৮০ কোটি টাকায় ৩০ মেগাহার্টজ ফাইভ জি তরঙ্গ কেনে।

সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘ফাইভ জির যন্ত্রপাতি ফোরজি থেকে আলাদা, দামও অনেক বেশি। তাই ইচ্ছা করলেই ফাইভ জি নেটওয়ার্ক সম্প্রারণ করা যাচ্ছে না। এটি অনেক ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা শহরে টেলিটকের ২০০টি ৪জি বিটিএস সাইটে ৫জি প্রযুক্তিনির্ভর টেলিকম যন্ত্রপাতি সংযোজন করে উচ্চগতির ফাইভ জি তরঙ্গ নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে।’

টেলিটকের নেটওয়ার্ক এখনও গ্রাহকদের আশানুরূপ সেবা দিতে পারছে না সেক্ষেত্রে পঞ্চম প্রজন্ম নিয়ে কাজ করা কতোটা যুক্তিযুক্ত এমন প্রশ্নের জবাবে সাহাবউদ্দীন বলেন, ‘এখনও অনেক জায়গায় অর্থাৎ রুরাল এরিয়াতে (গ্রামীণ এলাকায়) টু জি নেটওয়ার্ক আছে। তবে ফাইভ জি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকাগুলো ফোর জি হয়ে যাবে। গ্রাহকরা স্যাটিসফাই (সন্তুষ্ট) যেন হয় সে বিষয়ে কাজ করছি।’

রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক ২০০৪ সালে কাজ শুরু করে। বর্তমানে এর গ্রাহক সংখ্যা ৬৭ লাখের মত, যা মোট মোবাইল গ্রাহকের সাড়ে ৩ শতাংশের মত।