মুন্সীগঞ্জে বেপরোয়া বালু ব্যবসায়ীরা

আর্থিক উৎকোচ নিয়ে মদিনা বাজারের উত্তরে সড়কের ওপর দিয়ে ড্রেজারের মোটা পাইপ স্থাপন করে সরকারি ও মালিকানা পুকুরের মাটি বিক্রি হচেছ দেদারছে।

অবৈধ ড্রেজার দিয়ে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা পুকুর থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে যাচ্ছে মৃত মজিবুর শেখের পুত্র জাহাঙ্গীর (৪০), মনসুর (৩৫), অপু (৩০) । জমি, বাড়িঘর এবং বিল্ডিং ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কায় কয়েকটি পরিবার । জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন আসমা বেগম জানান । উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অভিযোগের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিলেও মামলা করার দেন ।

সাংবাদিকদের ভুক্তভোগী আসমা বেগম বলেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সদর থানা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারি কমিশনার ভূমি বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রায় এক মাস অতিক্রম হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন লোকজন এসে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করেননি। আসমা বেগম আরও জানান, জাহাঙ্গীর (৪০), মনসুর (৩৫), অপু (৩০) ভূমিদস্যু। তার স্বামী, সন্তান, দেবর প্রবাসী। বৃদ্ধ শাশুড়ি, জ্যা ও ছোট ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করছেন। বেআইনীভাবে ড্রেজার বসিয়ে সরকারের মালিকানাধীন পুকুর হতে মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছে দেদারছে। তার শ^শুরের জায়গা থেকেও জোরপূর্বক পেশী শক্তির বলে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছে। ফসলি জমি ও ধানী জমি অনেকাংশে ইতোমধ্যে দেবে গেছে এবং ফাটল ধরেছে। প্রবাসের সারাজীবনের কষ্টর্জিত অর্থ দিয়ে তৈরিকৃত বাড়ি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোন সময় বাড়ি ও বসতভিটা, ফসলি জমি বিলীন হয়ে পুকুরে নেমে যাবে।

গত ১০ জুন সকাল ১০টার সময় ড্রেজার দ্বারা পুকুর হতে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনে বাঁধা দিলে অকথ্য ভাষায় নোংরা ও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে উদ্যত হয়। এ বিষয় নিয়ে প্রশাসনের কাছে বেশি গেলে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে লাশ গুম করে ফেলারও হুমকি দেয়। এ বিষয়ে সদর থানায় গত ১১ জুন লিখিত অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাননি বাদী আসমা বেগম ও তার পরিবার। পুলিশ আসলে তারা চলে যায় পরক্ষণেই আবার ড্রেজার চালু করে এবং ভয়ভীতি দেখায় এবং হুমকি প্রদান করে।

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুকুরে তার বাবার অংশ রয়েছে। তাই তার বাবার অংশ থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটছেন। অপরদিকে সিপাহীপাড়া টু আলদী সড়কে উচু করে ড্রেজারের পাইপ নিয়ে সরকারি পুকুরের মাটি কেটে বিক্রি করছে। এ বিষয় সড়ক ও জনপদকে জানালে তারা বলছেন লিখিত নোটিশ করা হবে । তিন দিনের মধ্যে ভেঙ্গে না ফেললে প্রশাসনের লোকজন নিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হবে। কিছুদিন সড়কের ওপর দিয়ে নেয়া উচু ড্রেজার সরিয়ে ফেলা হলেও অজ্ঞাত কারণে পুনরায় ড্রেজারের পাইপ লাগিয়েছে সাবেক এই মেম্বার জাহাঙ্গীর। এ বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কামরুল ইসলাম মারুফ জানান, অভিযোগ পেয়েছি । অভিযোগের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরে আপনারা তাদের দিয়ে একটি মামলা করিয়ে দেন এমন একটি পরামর্শ তিনি দিয়েছেন। তাহলে সরকারি পুকুরের মাটি রক্ষা করবে কে? সাথে ব্যক্তি মালিকানা পুকুরের মাটিকে রক্ষা করবে এটাই এখন ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয়দের।

সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী ফাহিম রহমান খান জানান, আমিই সড়কের ড্রেজার উঠিয়েছিলাম। তিনি আশ্চর্য হয়ে বলেন, পুনরায় কিভাবে একই জায়গায় ড্রেজারের পাইপ বসল আমার জানা নেই। দ্রুত আমি বন্ধ করে দিচ্ছি এই তদন্ত করে অনৈতিক কোন সুবিধা নিয়ে করে থাকলে তারও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ০৪ আগস্ট ২০২২ , ২০ শ্রাবণ ১৪২৯ ৫ মহররম ১৪৪৪

মুন্সীগঞ্জে বেপরোয়া বালু ব্যবসায়ীরা

প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ

image

মুন্সীগঞ্জ : ড্রেজার দিয়ে সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানার জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে -সংবাদ

আর্থিক উৎকোচ নিয়ে মদিনা বাজারের উত্তরে সড়কের ওপর দিয়ে ড্রেজারের মোটা পাইপ স্থাপন করে সরকারি ও মালিকানা পুকুরের মাটি বিক্রি হচেছ দেদারছে।

অবৈধ ড্রেজার দিয়ে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা পুকুর থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে যাচ্ছে মৃত মজিবুর শেখের পুত্র জাহাঙ্গীর (৪০), মনসুর (৩৫), অপু (৩০) । জমি, বাড়িঘর এবং বিল্ডিং ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কায় কয়েকটি পরিবার । জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন আসমা বেগম জানান । উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অভিযোগের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিলেও মামলা করার দেন ।

সাংবাদিকদের ভুক্তভোগী আসমা বেগম বলেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সদর থানা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারি কমিশনার ভূমি বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রায় এক মাস অতিক্রম হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন লোকজন এসে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করেননি। আসমা বেগম আরও জানান, জাহাঙ্গীর (৪০), মনসুর (৩৫), অপু (৩০) ভূমিদস্যু। তার স্বামী, সন্তান, দেবর প্রবাসী। বৃদ্ধ শাশুড়ি, জ্যা ও ছোট ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করছেন। বেআইনীভাবে ড্রেজার বসিয়ে সরকারের মালিকানাধীন পুকুর হতে মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছে দেদারছে। তার শ^শুরের জায়গা থেকেও জোরপূর্বক পেশী শক্তির বলে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছে। ফসলি জমি ও ধানী জমি অনেকাংশে ইতোমধ্যে দেবে গেছে এবং ফাটল ধরেছে। প্রবাসের সারাজীবনের কষ্টর্জিত অর্থ দিয়ে তৈরিকৃত বাড়ি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোন সময় বাড়ি ও বসতভিটা, ফসলি জমি বিলীন হয়ে পুকুরে নেমে যাবে।

গত ১০ জুন সকাল ১০টার সময় ড্রেজার দ্বারা পুকুর হতে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনে বাঁধা দিলে অকথ্য ভাষায় নোংরা ও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে উদ্যত হয়। এ বিষয় নিয়ে প্রশাসনের কাছে বেশি গেলে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে লাশ গুম করে ফেলারও হুমকি দেয়। এ বিষয়ে সদর থানায় গত ১১ জুন লিখিত অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাননি বাদী আসমা বেগম ও তার পরিবার। পুলিশ আসলে তারা চলে যায় পরক্ষণেই আবার ড্রেজার চালু করে এবং ভয়ভীতি দেখায় এবং হুমকি প্রদান করে।

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুকুরে তার বাবার অংশ রয়েছে। তাই তার বাবার অংশ থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটছেন। অপরদিকে সিপাহীপাড়া টু আলদী সড়কে উচু করে ড্রেজারের পাইপ নিয়ে সরকারি পুকুরের মাটি কেটে বিক্রি করছে। এ বিষয় সড়ক ও জনপদকে জানালে তারা বলছেন লিখিত নোটিশ করা হবে । তিন দিনের মধ্যে ভেঙ্গে না ফেললে প্রশাসনের লোকজন নিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হবে। কিছুদিন সড়কের ওপর দিয়ে নেয়া উচু ড্রেজার সরিয়ে ফেলা হলেও অজ্ঞাত কারণে পুনরায় ড্রেজারের পাইপ লাগিয়েছে সাবেক এই মেম্বার জাহাঙ্গীর। এ বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কামরুল ইসলাম মারুফ জানান, অভিযোগ পেয়েছি । অভিযোগের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরে আপনারা তাদের দিয়ে একটি মামলা করিয়ে দেন এমন একটি পরামর্শ তিনি দিয়েছেন। তাহলে সরকারি পুকুরের মাটি রক্ষা করবে কে? সাথে ব্যক্তি মালিকানা পুকুরের মাটিকে রক্ষা করবে এটাই এখন ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয়দের।

সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী ফাহিম রহমান খান জানান, আমিই সড়কের ড্রেজার উঠিয়েছিলাম। তিনি আশ্চর্য হয়ে বলেন, পুনরায় কিভাবে একই জায়গায় ড্রেজারের পাইপ বসল আমার জানা নেই। দ্রুত আমি বন্ধ করে দিচ্ছি এই তদন্ত করে অনৈতিক কোন সুবিধা নিয়ে করে থাকলে তারও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।