ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতা মারা গেছেন

আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

ভোলায় বিএনপি ও পুলিশ সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম তিন দিন লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গতকাল বিকেল ৩টা ১০ মিনেটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। গত রোববারের ওই সংঘর্ষে এর আগে মারা যান দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিম। আহত হয় অর্ধশতাধিক। নূরে আলমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা বিএনপি সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর।

মৃত্যুর ঘটনায় আজ ভোলা জেলা সদরে সকাল-সন্ধ্যা হারতাল ডেকেছে জেলা বিএনপি। নূরে আলমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে খ- খ- বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে হরতালের ঘোষণা দেন জেলা বিএনপি সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর। গোলাম নবী আলমগীর জানান, মাথায় ও বুকে গুলিবিদ্ধ আহত নূরে আলমকে প্রথমে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসাপাতলে আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।

এদিকে জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিমের এমন মৃত্যুর বিষয় মেনে নিতে পারছেন না বিএনপি নেতারা। এমন ঘটায় পরিবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়াসহ ঘটনার তদন্তে আজ কেন্দ্রীয় বিএনপির ১০ নেতা রাতে ভোলায় আসছেন। এরা আজ সকাল থেকে দলীয় অফিস এলাকাসহ নিহতদের বাড়ি যাবেন বলে জানান বিএনপি সভাপতি।

নূরে আলমের সুস্থতা কামনায় গত মঙ্গলবার বিএনপি নেতারা দোয়া অনুষ্ঠান করেন। এদিকে নূরে আলমের ভাই ওয়াদুল হক ও বালু মোল্লা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, এমন মৃত্যু তারা মানতে পারছেন না। ওর ৫ বছরের শিশুকন্যা ও স্ত্রীর ভবিষ্যৎ কী হবে। এদিকে আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা নূরে আলমের ফিরে আসা কামানা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে সর্বশ্রেণীর মানুষ পোস্ট করেন। সব দোয়া ও প্রার্থনা উপেক্ষা করেই গতকাল মৃত্যুগামী হলেন তিনি। বিএনপি নেতারা এই মৃত্যু ও হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের শাস্তি দাবি করেন। বিএনপি’র তরফ থেকে মামলা করার প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান বিএনপি সভাপতি।

ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ছাত্রদল সভাপতির মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা নিশ্চিত হতে ঢাকায় যোগাযোগ করেন। নিহত নূরে আলমের ময়নাতদন্ত ঢাকায় হবে বলেও জানান পুলিশ সুপার। গত রোববার প্রথমে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিএনপি কর্মীরা রাস্তায় নামলে পুলিশ বেরিকেট দেয়। এ সময় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে বিএনপি কর্মীরা। পুলিশও লাঠিচার্জ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও শটগানের গুলি ছোড়েন। উভয়মুখী সংঘর্ষে আবদুর রহিম ও নূরে আলমসহ ১০ পুলিশ আহত হয় বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ সরদার।

বৃহস্পতিবার, ০৪ আগস্ট ২০২২ , ২০ শ্রাবণ ১৪২৯ ৫ মহররম ১৪৪৪

ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতা মারা গেছেন

আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

জেলা বার্তা পরিবেশক, ভোলা

ভোলায় বিএনপি ও পুলিশ সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম তিন দিন লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গতকাল বিকেল ৩টা ১০ মিনেটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। গত রোববারের ওই সংঘর্ষে এর আগে মারা যান দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিম। আহত হয় অর্ধশতাধিক। নূরে আলমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা বিএনপি সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর।

মৃত্যুর ঘটনায় আজ ভোলা জেলা সদরে সকাল-সন্ধ্যা হারতাল ডেকেছে জেলা বিএনপি। নূরে আলমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে খ- খ- বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে হরতালের ঘোষণা দেন জেলা বিএনপি সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর। গোলাম নবী আলমগীর জানান, মাথায় ও বুকে গুলিবিদ্ধ আহত নূরে আলমকে প্রথমে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসাপাতলে আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।

এদিকে জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিমের এমন মৃত্যুর বিষয় মেনে নিতে পারছেন না বিএনপি নেতারা। এমন ঘটায় পরিবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়াসহ ঘটনার তদন্তে আজ কেন্দ্রীয় বিএনপির ১০ নেতা রাতে ভোলায় আসছেন। এরা আজ সকাল থেকে দলীয় অফিস এলাকাসহ নিহতদের বাড়ি যাবেন বলে জানান বিএনপি সভাপতি।

নূরে আলমের সুস্থতা কামনায় গত মঙ্গলবার বিএনপি নেতারা দোয়া অনুষ্ঠান করেন। এদিকে নূরে আলমের ভাই ওয়াদুল হক ও বালু মোল্লা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, এমন মৃত্যু তারা মানতে পারছেন না। ওর ৫ বছরের শিশুকন্যা ও স্ত্রীর ভবিষ্যৎ কী হবে। এদিকে আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা নূরে আলমের ফিরে আসা কামানা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে সর্বশ্রেণীর মানুষ পোস্ট করেন। সব দোয়া ও প্রার্থনা উপেক্ষা করেই গতকাল মৃত্যুগামী হলেন তিনি। বিএনপি নেতারা এই মৃত্যু ও হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের শাস্তি দাবি করেন। বিএনপি’র তরফ থেকে মামলা করার প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান বিএনপি সভাপতি।

ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ছাত্রদল সভাপতির মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা নিশ্চিত হতে ঢাকায় যোগাযোগ করেন। নিহত নূরে আলমের ময়নাতদন্ত ঢাকায় হবে বলেও জানান পুলিশ সুপার। গত রোববার প্রথমে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিএনপি কর্মীরা রাস্তায় নামলে পুলিশ বেরিকেট দেয়। এ সময় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে বিএনপি কর্মীরা। পুলিশও লাঠিচার্জ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও শটগানের গুলি ছোড়েন। উভয়মুখী সংঘর্ষে আবদুর রহিম ও নূরে আলমসহ ১০ পুলিশ আহত হয় বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ সরদার।