শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২, ২১ শ্রাবণ ১৪২৯ ৬ মহররম ১৪৪৪

যোগিনীঘাটের কাঁচা রাস্তায় যত দুর্ভোগ এলাকাবাসীর

মুন্সীগঞ্জে সরকারি হরগংগা কলেজের পূর্বপাশে মধ্যবর্তী স্থানের যোগিনীঘাটে যাওয়ার জন্য মাটির কাঁচা রাস্তাটি বর্তমানে বেহাল দশা বিরাজ করছে। প্রকৃত অর্থে এ রাস্তাটি বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের একটি কাঁচা রাস্তা।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ভেতরের এ অংশের জায়গাটি নব্বই দশকের মাটির কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি উঠেছে এ পথে চলাচলকারীদের মাঝ থেকে। দুই যুগের বেশি সময় ধরে এ রাস্তাটি কেউ পাকাকরণে হাত দেয়নি। চলাচলে সাধারণ মানুষের নানা রকমের দুর্ভোগসহ অসুবিধা হচ্ছে এলাকাবাসীর। বৃষ্টি হলে একেবারেই চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পরে। কোন কোন স্থানে বৃষ্টির পানি ও জমির পানি সমান সমান হয়ে যায়। তাতে আরও বিপত্তি দেখা দেয় মানুষের চলাচলে। কোথাও কোথাও রাস্তা ইতোমধ্যে দেবে গিয়ে এখন জমি সমান হয়ে গেছে। এ রাস্তার দক্ষিণে পাঁচঘড়িয়াকান্দির মুখে নতুন রাস্তা করা হলেও উত্তরের যোগিনীঘাট গ্রামের মানুষের সেই রাস্তাটি কোনভাবেই কাজে লাগেনি ।

এদিকে পাঁচঘরিয়াকান্দিতে নতুন রাস্তা তৈরির আগে মুন্সীগঞ্জ শহরের প্রধান বাজারের কাছ থেকে অটো দক্ষিণ ইসলামপুর যোগিনীঘাট হয়ে তবে শিলমন্দি এলাকায় চলাচল করত। তখন এ পথে ১০ টাকা দিয়ে চলাচল করা যেত। কিন্তু পাঁচঘরিয়া কান্দিতে নতুন রাস্তায় এ পথে পাবলিক অটো চলাচল করছে না। তাতে এখন মিশুক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে এ পথে আরো বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।

নব্বই দশকের দিকে মুন্সীগঞ্জ শহরে দ্রুত যান চলাচলের লক্ষ্যে এ রাস্তাটি মাটি ভরাট করা হয়। সেই সময়ে যোগিনীঘাটে একটি পাকা সেতুও নির্মাণ করা হয়। এ রাস্তাটি প্রকৃত অর্থে প্রাথমিকভাবে তৈরি করা হয় গজারিয়া উপজেলা ও মেঘনাঘাটে যাওয়ার জন্য। বাস্তবে এ রাস্তাটি এখনো আলোর মুখ দেখছে না। কবে লাগাত এ রাস্তাটি আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে সকলের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কিন্তু বছরের পর বছর পরে থাকলেও এই কাঁচা মাটির রাস্তাটি কোনভাবে পাকায় তৈরি না করায় এ পথ দিয়ে পায়ে হাটা ছাড়া কোন যানবাহন চলাচল শুরু হচ্ছে না। রহস্যজনক কারণে এ রাস্তাটি নতুন করে পাকা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে যোগিনীঘাটের এ রাস্তাকে কেন্দ্র করে সেই সময়ে মুন্সীগঞ্জের স্টেডিয়ামকে প্রধান সড়ক থেকে একটু দক্ষিণে সরিয়ে নেয়া হয় রাস্তা প্রশস্ত করণের লক্ষ্যে। যাতে খুব সহজেই যেন যোগিনীঘাট দিয়ে গজারিয়া থেকে আগত ভারী যানবাহন শহরে প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু সূদূর প্রসারিত চিন্তাভাবনা করে যে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়ে ছিল সেই সময়ে, সেই রাস্তাটি আজো আলোর মুখ দেখতে পারলো না রহস্যজনক কারণে। এলাকাবাসীর দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন এ রাস্তাটি দ্রুত পাকা রাস্তায় রূপ দেয়। এমনটি দাবি উঠেছে এই পথে চলাচলকারীদের পক্ষ থেকে।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. এনামুল হক বলেন, আমাদের সময়ে এখানে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির অর্থ দিয়ে যোগিনীঘাটের এ মাটির রাস্তাটি তৈরি করা হয়। এখন রাস্তাটি আগের মতো নেই। এখন রাস্তাটিতে আবারও পাশের জমির মালিকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে ভেকু দিয়ে রাস্তাটিতে আরও মাটি ফেলে উঁচু করা দরকার। তারপরে রাস্তাটি পাকা করার বিষয়টি ভাবা হলে ভালো হয়। গজারিয়ার সাথে সড়ক পথ যোগাযোগে এ রাস্তার কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন। বাণিজ্যিকভাবে অর্থনীতি বিকেন্দ্রীয়করণে এ রাস্তা জরুরী তৈরি করা প্রয়োজন।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. আওলাদ হোসেন বলেন, যোগিনীঘাটের এ রাস্তাটি মুন্সীগঞ্জ সওজ বিভাগের। যদিও রাস্তাটি এখন পৌরসভার সীমানার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু রাস্তা সওজ বিভাগের থাকায় পৌরসভা এ রাস্তার কাজ করতে পারে না আইনগতভাবে। এ রাস্তার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হবে।

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের সওজ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী ফাহিম রহমান খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমার জানামতে সওজ বিভাগের আওতায় কোন মাটির কাঁচা রাস্তা নেই। মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর কিভাবে এটি সওজ বিভাগের রাস্তা বলছেন, তা তার জানা নেই।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ যোগাযোগ মন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ ও নজরদারি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী বাসিন্দাগণ।

শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২ , ২১ শ্রাবণ ১৪২৯ ৬ মহররম ১৪৪৪

যোগিনীঘাটের কাঁচা রাস্তায় যত দুর্ভোগ এলাকাবাসীর

প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ

image

মুন্সীগঞ্জ : যোগিনীঘাটের কাঁচা রাস্তা। বৃষ্টি হলেই কাদা পানিতে বাড়ে জনদুর্ভোগ -সংবাদ

মুন্সীগঞ্জে সরকারি হরগংগা কলেজের পূর্বপাশে মধ্যবর্তী স্থানের যোগিনীঘাটে যাওয়ার জন্য মাটির কাঁচা রাস্তাটি বর্তমানে বেহাল দশা বিরাজ করছে। প্রকৃত অর্থে এ রাস্তাটি বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের একটি কাঁচা রাস্তা।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ভেতরের এ অংশের জায়গাটি নব্বই দশকের মাটির কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি উঠেছে এ পথে চলাচলকারীদের মাঝ থেকে। দুই যুগের বেশি সময় ধরে এ রাস্তাটি কেউ পাকাকরণে হাত দেয়নি। চলাচলে সাধারণ মানুষের নানা রকমের দুর্ভোগসহ অসুবিধা হচ্ছে এলাকাবাসীর। বৃষ্টি হলে একেবারেই চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পরে। কোন কোন স্থানে বৃষ্টির পানি ও জমির পানি সমান সমান হয়ে যায়। তাতে আরও বিপত্তি দেখা দেয় মানুষের চলাচলে। কোথাও কোথাও রাস্তা ইতোমধ্যে দেবে গিয়ে এখন জমি সমান হয়ে গেছে। এ রাস্তার দক্ষিণে পাঁচঘড়িয়াকান্দির মুখে নতুন রাস্তা করা হলেও উত্তরের যোগিনীঘাট গ্রামের মানুষের সেই রাস্তাটি কোনভাবেই কাজে লাগেনি ।

এদিকে পাঁচঘরিয়াকান্দিতে নতুন রাস্তা তৈরির আগে মুন্সীগঞ্জ শহরের প্রধান বাজারের কাছ থেকে অটো দক্ষিণ ইসলামপুর যোগিনীঘাট হয়ে তবে শিলমন্দি এলাকায় চলাচল করত। তখন এ পথে ১০ টাকা দিয়ে চলাচল করা যেত। কিন্তু পাঁচঘরিয়া কান্দিতে নতুন রাস্তায় এ পথে পাবলিক অটো চলাচল করছে না। তাতে এখন মিশুক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে এ পথে আরো বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।

নব্বই দশকের দিকে মুন্সীগঞ্জ শহরে দ্রুত যান চলাচলের লক্ষ্যে এ রাস্তাটি মাটি ভরাট করা হয়। সেই সময়ে যোগিনীঘাটে একটি পাকা সেতুও নির্মাণ করা হয়। এ রাস্তাটি প্রকৃত অর্থে প্রাথমিকভাবে তৈরি করা হয় গজারিয়া উপজেলা ও মেঘনাঘাটে যাওয়ার জন্য। বাস্তবে এ রাস্তাটি এখনো আলোর মুখ দেখছে না। কবে লাগাত এ রাস্তাটি আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে সকলের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কিন্তু বছরের পর বছর পরে থাকলেও এই কাঁচা মাটির রাস্তাটি কোনভাবে পাকায় তৈরি না করায় এ পথ দিয়ে পায়ে হাটা ছাড়া কোন যানবাহন চলাচল শুরু হচ্ছে না। রহস্যজনক কারণে এ রাস্তাটি নতুন করে পাকা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে যোগিনীঘাটের এ রাস্তাকে কেন্দ্র করে সেই সময়ে মুন্সীগঞ্জের স্টেডিয়ামকে প্রধান সড়ক থেকে একটু দক্ষিণে সরিয়ে নেয়া হয় রাস্তা প্রশস্ত করণের লক্ষ্যে। যাতে খুব সহজেই যেন যোগিনীঘাট দিয়ে গজারিয়া থেকে আগত ভারী যানবাহন শহরে প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু সূদূর প্রসারিত চিন্তাভাবনা করে যে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়ে ছিল সেই সময়ে, সেই রাস্তাটি আজো আলোর মুখ দেখতে পারলো না রহস্যজনক কারণে। এলাকাবাসীর দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন এ রাস্তাটি দ্রুত পাকা রাস্তায় রূপ দেয়। এমনটি দাবি উঠেছে এই পথে চলাচলকারীদের পক্ষ থেকে।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. এনামুল হক বলেন, আমাদের সময়ে এখানে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির অর্থ দিয়ে যোগিনীঘাটের এ মাটির রাস্তাটি তৈরি করা হয়। এখন রাস্তাটি আগের মতো নেই। এখন রাস্তাটিতে আবারও পাশের জমির মালিকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে ভেকু দিয়ে রাস্তাটিতে আরও মাটি ফেলে উঁচু করা দরকার। তারপরে রাস্তাটি পাকা করার বিষয়টি ভাবা হলে ভালো হয়। গজারিয়ার সাথে সড়ক পথ যোগাযোগে এ রাস্তার কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন। বাণিজ্যিকভাবে অর্থনীতি বিকেন্দ্রীয়করণে এ রাস্তা জরুরী তৈরি করা প্রয়োজন।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. আওলাদ হোসেন বলেন, যোগিনীঘাটের এ রাস্তাটি মুন্সীগঞ্জ সওজ বিভাগের। যদিও রাস্তাটি এখন পৌরসভার সীমানার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু রাস্তা সওজ বিভাগের থাকায় পৌরসভা এ রাস্তার কাজ করতে পারে না আইনগতভাবে। এ রাস্তার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হবে।

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের সওজ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী ফাহিম রহমান খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমার জানামতে সওজ বিভাগের আওতায় কোন মাটির কাঁচা রাস্তা নেই। মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর কিভাবে এটি সওজ বিভাগের রাস্তা বলছেন, তা তার জানা নেই।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ যোগাযোগ মন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ ও নজরদারি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী বাসিন্দাগণ।