শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২, ২১ শ্রাবণ ১৪২৯ ৬ মহররম ১৪৪৪

টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ

একজন গ্রেপ্তার, দ্রুত বিচার চান ভুক্তভোগী নারী

টাঙ্গাইলের মধুপুরে যাত্রীবেশে ডাকাতি ও এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ছিনতাইকৃত তিনটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার রাজা মিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা এলাকার বাসিন্দা। তিনি টাঙ্গাইল নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানিয়েছে, রাজা মিয়া টাঙ্গাইল-চন্দ্রা পথে চলাচলকারী ঝটিকা পরিবহনের বাসের চালক। টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় বাসটির মূল চালক মনিরুল ইসলাম মনিরকে সরিয়ে রাজা মিয়া বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেন। মনিরকে তখন বাসের পেছনে বেঁধে রাখা হয়। রাজা মিয়াই তিন ঘণ্টা ধরে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন রাস্তায় বাসটি চালিয়েছেন। রাতভর অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ঘটনার অন্য সঙ্গীদের নামও বলেছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে থাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। পুলিশ জানায়, যাত্রীবেশে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নাইট কোচে উঠে ডাকাত দল গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের মারধর ও তাদের সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র লুট করে। পরে বাসে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদের উল্টোপাশে মজিবরের বাড়ির সামনের বালির ঢিবিতে বাস উঠিয়ে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। অন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১০ থেকে ১২ সদস্য টানা তিন ঘণ্টা বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এমন ঘটনা ঘটায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই নারী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন। তিনি ওইদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। নারায়নণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গেও কোন যোগাযোগ নেই। প্রথম স্বামীর ঘরে এক সন্তান রয়েছে তার। ওইদিন রাতে তিনি একাই ঈগল পরিবহনের বাসে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলেন। পেছনের দিকে তিনি এক সিটে একাই বসা ছিলেন। যাত্রীবেশে ডাকাত দল বাসে উঠে একজন তার পাশেই বসে। সবাইকে জিম্মি করে সবকিছু লুট করার পর তাকে ৫-৬ জন ধর্ষণ করে। তিনি বাধা দিলে তার হাত সিটের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন ডাকাতরা। এ সময় ডাকাতদল তার ওপর নির্মম পাশবিক যৌন নির্যাতন চালায়। তিনি প্রশাসনের কাছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডাক্তার রেহেনা পারভীন বলেন, গতকাল দুপুরে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২ , ২১ শ্রাবণ ১৪২৯ ৬ মহররম ১৪৪৪

টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ

একজন গ্রেপ্তার, দ্রুত বিচার চান ভুক্তভোগী নারী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

image

টাঙ্গাইলের মধুপুরে যাত্রীবেশে ডাকাতি ও এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ছিনতাইকৃত তিনটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার রাজা মিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা এলাকার বাসিন্দা। তিনি টাঙ্গাইল নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানিয়েছে, রাজা মিয়া টাঙ্গাইল-চন্দ্রা পথে চলাচলকারী ঝটিকা পরিবহনের বাসের চালক। টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় বাসটির মূল চালক মনিরুল ইসলাম মনিরকে সরিয়ে রাজা মিয়া বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেন। মনিরকে তখন বাসের পেছনে বেঁধে রাখা হয়। রাজা মিয়াই তিন ঘণ্টা ধরে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন রাস্তায় বাসটি চালিয়েছেন। রাতভর অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ঘটনার অন্য সঙ্গীদের নামও বলেছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে থাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। পুলিশ জানায়, যাত্রীবেশে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নাইট কোচে উঠে ডাকাত দল গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের মারধর ও তাদের সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র লুট করে। পরে বাসে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদের উল্টোপাশে মজিবরের বাড়ির সামনের বালির ঢিবিতে বাস উঠিয়ে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। অন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১০ থেকে ১২ সদস্য টানা তিন ঘণ্টা বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এমন ঘটনা ঘটায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই নারী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন। তিনি ওইদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। নারায়নণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গেও কোন যোগাযোগ নেই। প্রথম স্বামীর ঘরে এক সন্তান রয়েছে তার। ওইদিন রাতে তিনি একাই ঈগল পরিবহনের বাসে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলেন। পেছনের দিকে তিনি এক সিটে একাই বসা ছিলেন। যাত্রীবেশে ডাকাত দল বাসে উঠে একজন তার পাশেই বসে। সবাইকে জিম্মি করে সবকিছু লুট করার পর তাকে ৫-৬ জন ধর্ষণ করে। তিনি বাধা দিলে তার হাত সিটের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন ডাকাতরা। এ সময় ডাকাতদল তার ওপর নির্মম পাশবিক যৌন নির্যাতন চালায়। তিনি প্রশাসনের কাছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডাক্তার রেহেনা পারভীন বলেন, গতকাল দুপুরে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।