শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২, ২১ শ্রাবণ ১৪২৯ ৬ মহররম ১৪৪৪

‘চুক্তি করলাম, তারপরও তো মানুষ যাচ্ছে না’

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশ অংশে খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, ‘চুক্তি করলাম। তারপরও তো মানুষ যাচ্ছে না। যদি কোন সমস্যা থাকে তা আমরা দেখব। কিন্তু মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন ধরনের কর্মী দরকার আছে।’

গতকাল ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কর্তৃক প্রবাসীকর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান তিনি। বৈদেশিক কর্মসংস্থানে ভাষার দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে আমাদের কর্মীর চাহিদা রয়েছে। আমরা দক্ষ কর্মীতে গুরুত্ব দিচ্ছি। ভাষার দক্ষতার ওপর জোর দিচ্ছি। আমরা আশা করছি এসব বিষয়ে যদি আমরা ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারি, আমাদের রেমিট্যান্স বাড়বে।’

ইমরান আহমদ বলেন, ‘সরকার সবসময় প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে নিয়োজিত আছে। প্রবাসী কর্মীর সন্তানরা যাতে ভালোভাবে পড়াশুনা করতে পারে এবং উচ্চশিক্ষা লাভে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা যাতে আত্মমর্যাদার সঙ্গে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে সরকার সে চেষ্টাই করছে।’ মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ আমাদের স্বকীয়তা বিনির্মাণে একটি বড় মাইলফলক। পদ্মা সেতু পৃথিবীর অন্যতম কঠিন স্ট্রাকচার। এই সেতু নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর কোথাও কোন সমালোচনা নেই।’ তিনি কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে গমনেচ্ছুদের জেনে বুঝে সচেতন হয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি বৃত্তিপ্রাপ্তদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে বলেন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিরা প্রবাসীদের ১০ জন মেধাবী সন্তানের হাতে বৃত্তির চেক তুলে দেন। এ সময় মোট ১৬২ জনকে বৃত্তির চেক দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এই আয়োজনে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান।

বিএমইটির তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার ৯২৭ জন, ২০১৯ সালে ৫৪৫ জন, ২০২০ সালে ১২৫ জন এবং চলতি বছর মাত্র ১৪ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় কর্মী হিসেবে গেছেন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১০ লাখ ৫৭ হাজার ২১৩ বাংলাদেশি কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে সম্পৃক্ত মালয়েশিয়ার ৮ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

বাংলাদেশি ও নেপালি শ্রমিক নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়ার সরকারকে সেবা প্রদানকারী আইটি কোম্পানি বেস্টিনেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) মোট ৮ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি)। মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র দ্য স্টার জানিয়েছে, বিদেশি শ্রমিকদের জন্য কোটা অর্জনে নিয়োগকর্তা বা এজেন্টদের সহযোগিতা করতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গত বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গেছে, প্রতি শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশি টাকায় ১৭ হাজার থেকে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন তারা।

স্টারের প্রতিবেদন অনুসারে, গত মে মাস থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮৬১টি আবেদন প্রক্রিয়া করেছে বেস্টিনেট। একটি সূত্র জানিয়েছে, রিক্রুটিং এজেন্টদের মূল হোতা হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার দাতো মোহাম্মদ আমিনকেও গ্রেপ্তার করেছে এমএসিসি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২ , ২১ শ্রাবণ ১৪২৯ ৬ মহররম ১৪৪৪

‘চুক্তি করলাম, তারপরও তো মানুষ যাচ্ছে না’

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশ অংশে খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, ‘চুক্তি করলাম। তারপরও তো মানুষ যাচ্ছে না। যদি কোন সমস্যা থাকে তা আমরা দেখব। কিন্তু মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন ধরনের কর্মী দরকার আছে।’

গতকাল ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কর্তৃক প্রবাসীকর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান তিনি। বৈদেশিক কর্মসংস্থানে ভাষার দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে আমাদের কর্মীর চাহিদা রয়েছে। আমরা দক্ষ কর্মীতে গুরুত্ব দিচ্ছি। ভাষার দক্ষতার ওপর জোর দিচ্ছি। আমরা আশা করছি এসব বিষয়ে যদি আমরা ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারি, আমাদের রেমিট্যান্স বাড়বে।’

ইমরান আহমদ বলেন, ‘সরকার সবসময় প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে নিয়োজিত আছে। প্রবাসী কর্মীর সন্তানরা যাতে ভালোভাবে পড়াশুনা করতে পারে এবং উচ্চশিক্ষা লাভে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা যাতে আত্মমর্যাদার সঙ্গে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে সরকার সে চেষ্টাই করছে।’ মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ আমাদের স্বকীয়তা বিনির্মাণে একটি বড় মাইলফলক। পদ্মা সেতু পৃথিবীর অন্যতম কঠিন স্ট্রাকচার। এই সেতু নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর কোথাও কোন সমালোচনা নেই।’ তিনি কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে গমনেচ্ছুদের জেনে বুঝে সচেতন হয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি বৃত্তিপ্রাপ্তদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে বলেন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিরা প্রবাসীদের ১০ জন মেধাবী সন্তানের হাতে বৃত্তির চেক তুলে দেন। এ সময় মোট ১৬২ জনকে বৃত্তির চেক দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এই আয়োজনে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান।

বিএমইটির তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার ৯২৭ জন, ২০১৯ সালে ৫৪৫ জন, ২০২০ সালে ১২৫ জন এবং চলতি বছর মাত্র ১৪ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় কর্মী হিসেবে গেছেন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১০ লাখ ৫৭ হাজার ২১৩ বাংলাদেশি কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে সম্পৃক্ত মালয়েশিয়ার ৮ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

বাংলাদেশি ও নেপালি শ্রমিক নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়ার সরকারকে সেবা প্রদানকারী আইটি কোম্পানি বেস্টিনেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) মোট ৮ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি)। মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র দ্য স্টার জানিয়েছে, বিদেশি শ্রমিকদের জন্য কোটা অর্জনে নিয়োগকর্তা বা এজেন্টদের সহযোগিতা করতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গত বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গেছে, প্রতি শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশি টাকায় ১৭ হাজার থেকে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন তারা।

স্টারের প্রতিবেদন অনুসারে, গত মে মাস থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮৬১টি আবেদন প্রক্রিয়া করেছে বেস্টিনেট। একটি সূত্র জানিয়েছে, রিক্রুটিং এজেন্টদের মূল হোতা হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার দাতো মোহাম্মদ আমিনকেও গ্রেপ্তার করেছে এমএসিসি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।