কবিগুরুর ৮১তম প্রয়াণবার্ষিকী

বছর ঘুরে আবারও আমাদের সামনে এসেছে কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ বেদনায়-তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় মাথা নিচু করার দিন ‘বাইশে শ্রাবণ’। বাংলা ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ অর্থাৎ আজকের দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে শ্রাবণের বাদলঝরা দিনে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সূত্রে আজ, বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ভাষার শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১তম প্রয়াণ দিবস। আজ থেকে ৮১ বছর আগে বাংলা ১৩৪৮ সানের এইদিনে (৬ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির শ্যামল প্রাঙ্গণে ৮০ বছর বয়সে শ্রাবণের বর্ষণসিক্ত পরিবেশে তিনি পরলোকগমন করেন। তার এই চলে যাওয়া প্রতিটি বাঙালির হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত করলেও সবারই মনে শেষ পর্যন্ত জেগে ওঠে ‘এ যাওয়া তার শুধু দেহান্তর মাত্র। তিনি আমাদের মাঝে অনন্তকাল ধরে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল তার অসামান্য সব রচনা ও কাজের মধ্যে দিয়ে সব বাঙালির হৃদয়ে’।

যদিও কবিগুরু ‘জন্ম এবং মৃত্যু’ এই দুইয়ের মাঝে তফাৎ দেখেছেন খুব সামান্যই। আর, সৃষ্টিই যে এই নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বরতা দেয়, সে কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই তিনি জীবনের কোন এক সময় বলেছিলেন, ‘মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের মূল্য দিতে হয়/ সে প্রাণ অমৃতলোকে/মৃত্যুকে করে জয়।’ তিনিই আবার জীবনসায়াহ্নে লিখেছিলেন- ‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক।’ আর, তাইতো যখন মহান এই কবি ইহধাম ত্যাগ করেন সেদিন শোকার্ত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম শ্রদ্ধা নিবেদন করে লিখেছিলেন, ‘দুপুরের রবি পড়িয়াছে ঢলে অস্তপারে কোলে/বাংলার কবি শ্যাম বাংলার হৃদয়ের ছবি তুমি চলে যাবে বলে/ শ্রাবণের মেঘ ছুটে এলো দলে দলে।’

কবিগুরু ৮০ বছর বয়সে মর্তের এই পৃথিবী থেকে চলে গেলেও তার এই মৃত্যু শুধু লোকচক্ষুর অন্তরাল মাত্র। কেননা, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনেক কিছুরই প্রথম স্রষ্টা তিনি। তার পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয়েছে বাংলার শিল্প-সাহিত্য। তার হাত ধরেই বাংলা সাহিত্য নতুন রূপ লাভ করে। গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায়, নতুন নতুন সুরে ও বিচিত্র গানের বাণীতে, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া নিবন্ধে, এমনকি চিত্রকলায়ও রবীন্দ্রনাথ চিরনবীন-চির অমর।

চির নবীন-চির অমর এই বাংলা সাহিত্য তথা বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা বাংলা ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৮মে) কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সময়ের পথপরিক্রমায় নিজের অসাধারণ মেধা-প্রজ্ঞা আর অসামান্য চিন্তাশক্তির সম্মিলিত প্রয়োগে সৃষ্টি তার অনন্যসব শিল্প-সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি পরবর্তিতে বাংলা সাহিত্যের দিকপাল হয়ে ওঠেন। কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির শ্যামল আঙ্গিনায় জন্ম নেয়া এই মহিয়সী ব্যক্তি ধীরে-ধীরে সমৃদ্ধ করে তোলেন আমাদের বাংলা সাহিত্যের সব ক্ষেত্রকে। সমগ্র বিশ্বদরবারে তিনি একাধারে ধরা দেন ‘আপদমস্তক একজন কবি, একজন নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, ছোট গল্পকার, ভাষাবিদ ও একজন দার্শনিক’ হিসেবে। এছাড়া বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির এমন কোন শাখা নেই যেখানে তিনি দোর্দ- প্রতাপের সঙ্গে বিচরণ করেননি বা যা নিয়ে তিনি লেখালেখি করেননি।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ-ছোটগল্পের জনক, এমনকি বাংলা গদ্যের আধুনিকায়নের পথিকৃৎও তিনি। নোবেল জয় করে একটি প্রদেশিক (তৎকালীন) ভাষাকে বিশ্ব সাহিত্যে স্থান করে দিয়েছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত চিঠিও যে কী অসাধারণ ললিত সাহিত্য আর দার্শনিকতার দৃষ্টান্ত হতে পারে, তার ‘ছিন্নপত্র’ সৃষ্টির আগে তার তো কোন নজির ছিল না। গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায়, প্রবন্ধে, নতুন সুরে ও বিচিত্র গানের বাণীতে, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া অজস্র নিবন্ধে, এমনকি চিত্রকলায়ও- সবত্রই রবীন্দ্রনাথ চির নতুন, চির অম্লান-সবুজ।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের দর্শন ছিল মানুষের মুক্তির দর্শন। মানবতাবাদী এই কবি বিশ্বাস করতেন বিশ্বমানবতায়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শন অন্বেষণ করেছেন। তার কবিতা, গান, সাহিত্যের অন্য শাখার লেখনী মানুষকে আজো সেই অন্বেষণের পথে, তার অনিষ্ট উপলব্ধির পথে আকর্ষণ করে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের মন-মানসিকতা গঠনের, চেতনার উন্মেষের প্রধান অবলম্বন।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ’ নামের বানানটিও আমরা রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে নিয়েছি। আমাদের যাপিতজীবনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে। প্রতি বছর রমনা বটমূলে রবীন্দ্রনাথের গানে-গানে পহেলা বৈশাখ উদযাপন এখন আমাদের জাতীয় জীবনের অঙ্গ। শোকে-দুঃখে, উৎসবে-অনুষ্ঠানে তাকে না হলে আমাদের চলে না। তার রচনাবলি আমাদের প্রেরণার শিখা হয়ে পথ দেখায়। বাংলা সাহিত্যের সব শাখায় তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। জীবনের শেষ পর্যায়ে চিত্রকর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। বাংলা সাহিত্যকে তিনি বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

কবিগুরুর মহাপ্রয়াণকে ঘিরে বাঙালির আজ নানা আয়োজন। রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসে ঢাকার বাইরে শিলাইদহ, শাহজাদপুর, পতিসর ও খুলনার দক্ষিণডিহিতে অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। এছাড়া রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন নানা আয়োজনে পালন করছে কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোও রবীন্দ্রনাথের ওপর দিনভর বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। বিভিন্ন সংগঠন আয়োজন করেছে স্মরণ অনুষ্ঠান, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

শনিবার, ০৬ আগস্ট ২০২২ , ২২ শ্রাবণ ১৪২৯ ৭ মহররম ১৪৪৪

আজ ২২ শ্রাবণ

কবিগুরুর ৮১তম প্রয়াণবার্ষিকী

সাংস্কৃতিক বার্তা পরিবেশক

বছর ঘুরে আবারও আমাদের সামনে এসেছে কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ বেদনায়-তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় মাথা নিচু করার দিন ‘বাইশে শ্রাবণ’। বাংলা ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ অর্থাৎ আজকের দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে শ্রাবণের বাদলঝরা দিনে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সূত্রে আজ, বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ভাষার শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১তম প্রয়াণ দিবস। আজ থেকে ৮১ বছর আগে বাংলা ১৩৪৮ সানের এইদিনে (৬ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির শ্যামল প্রাঙ্গণে ৮০ বছর বয়সে শ্রাবণের বর্ষণসিক্ত পরিবেশে তিনি পরলোকগমন করেন। তার এই চলে যাওয়া প্রতিটি বাঙালির হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত করলেও সবারই মনে শেষ পর্যন্ত জেগে ওঠে ‘এ যাওয়া তার শুধু দেহান্তর মাত্র। তিনি আমাদের মাঝে অনন্তকাল ধরে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল তার অসামান্য সব রচনা ও কাজের মধ্যে দিয়ে সব বাঙালির হৃদয়ে’।

যদিও কবিগুরু ‘জন্ম এবং মৃত্যু’ এই দুইয়ের মাঝে তফাৎ দেখেছেন খুব সামান্যই। আর, সৃষ্টিই যে এই নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বরতা দেয়, সে কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই তিনি জীবনের কোন এক সময় বলেছিলেন, ‘মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের মূল্য দিতে হয়/ সে প্রাণ অমৃতলোকে/মৃত্যুকে করে জয়।’ তিনিই আবার জীবনসায়াহ্নে লিখেছিলেন- ‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক।’ আর, তাইতো যখন মহান এই কবি ইহধাম ত্যাগ করেন সেদিন শোকার্ত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম শ্রদ্ধা নিবেদন করে লিখেছিলেন, ‘দুপুরের রবি পড়িয়াছে ঢলে অস্তপারে কোলে/বাংলার কবি শ্যাম বাংলার হৃদয়ের ছবি তুমি চলে যাবে বলে/ শ্রাবণের মেঘ ছুটে এলো দলে দলে।’

কবিগুরু ৮০ বছর বয়সে মর্তের এই পৃথিবী থেকে চলে গেলেও তার এই মৃত্যু শুধু লোকচক্ষুর অন্তরাল মাত্র। কেননা, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনেক কিছুরই প্রথম স্রষ্টা তিনি। তার পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয়েছে বাংলার শিল্প-সাহিত্য। তার হাত ধরেই বাংলা সাহিত্য নতুন রূপ লাভ করে। গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায়, নতুন নতুন সুরে ও বিচিত্র গানের বাণীতে, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া নিবন্ধে, এমনকি চিত্রকলায়ও রবীন্দ্রনাথ চিরনবীন-চির অমর।

চির নবীন-চির অমর এই বাংলা সাহিত্য তথা বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা বাংলা ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৮মে) কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সময়ের পথপরিক্রমায় নিজের অসাধারণ মেধা-প্রজ্ঞা আর অসামান্য চিন্তাশক্তির সম্মিলিত প্রয়োগে সৃষ্টি তার অনন্যসব শিল্প-সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি পরবর্তিতে বাংলা সাহিত্যের দিকপাল হয়ে ওঠেন। কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির শ্যামল আঙ্গিনায় জন্ম নেয়া এই মহিয়সী ব্যক্তি ধীরে-ধীরে সমৃদ্ধ করে তোলেন আমাদের বাংলা সাহিত্যের সব ক্ষেত্রকে। সমগ্র বিশ্বদরবারে তিনি একাধারে ধরা দেন ‘আপদমস্তক একজন কবি, একজন নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, ছোট গল্পকার, ভাষাবিদ ও একজন দার্শনিক’ হিসেবে। এছাড়া বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির এমন কোন শাখা নেই যেখানে তিনি দোর্দ- প্রতাপের সঙ্গে বিচরণ করেননি বা যা নিয়ে তিনি লেখালেখি করেননি।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ-ছোটগল্পের জনক, এমনকি বাংলা গদ্যের আধুনিকায়নের পথিকৃৎও তিনি। নোবেল জয় করে একটি প্রদেশিক (তৎকালীন) ভাষাকে বিশ্ব সাহিত্যে স্থান করে দিয়েছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত চিঠিও যে কী অসাধারণ ললিত সাহিত্য আর দার্শনিকতার দৃষ্টান্ত হতে পারে, তার ‘ছিন্নপত্র’ সৃষ্টির আগে তার তো কোন নজির ছিল না। গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায়, প্রবন্ধে, নতুন সুরে ও বিচিত্র গানের বাণীতে, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া অজস্র নিবন্ধে, এমনকি চিত্রকলায়ও- সবত্রই রবীন্দ্রনাথ চির নতুন, চির অম্লান-সবুজ।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের দর্শন ছিল মানুষের মুক্তির দর্শন। মানবতাবাদী এই কবি বিশ্বাস করতেন বিশ্বমানবতায়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শন অন্বেষণ করেছেন। তার কবিতা, গান, সাহিত্যের অন্য শাখার লেখনী মানুষকে আজো সেই অন্বেষণের পথে, তার অনিষ্ট উপলব্ধির পথে আকর্ষণ করে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের মন-মানসিকতা গঠনের, চেতনার উন্মেষের প্রধান অবলম্বন।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ’ নামের বানানটিও আমরা রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে নিয়েছি। আমাদের যাপিতজীবনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে। প্রতি বছর রমনা বটমূলে রবীন্দ্রনাথের গানে-গানে পহেলা বৈশাখ উদযাপন এখন আমাদের জাতীয় জীবনের অঙ্গ। শোকে-দুঃখে, উৎসবে-অনুষ্ঠানে তাকে না হলে আমাদের চলে না। তার রচনাবলি আমাদের প্রেরণার শিখা হয়ে পথ দেখায়। বাংলা সাহিত্যের সব শাখায় তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। জীবনের শেষ পর্যায়ে চিত্রকর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। বাংলা সাহিত্যকে তিনি বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

কবিগুরুর মহাপ্রয়াণকে ঘিরে বাঙালির আজ নানা আয়োজন। রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসে ঢাকার বাইরে শিলাইদহ, শাহজাদপুর, পতিসর ও খুলনার দক্ষিণডিহিতে অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। এছাড়া রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন নানা আয়োজনে পালন করছে কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোও রবীন্দ্রনাথের ওপর দিনভর বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। বিভিন্ন সংগঠন আয়োজন করেছে স্মরণ অনুষ্ঠান, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।