ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পুরাতন ভবনের নিউরো সার্জারি বিভাগে সক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে ঢামেকের এই বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। প্রয়োজনীয় বিছানা না থাকায়, নিউরো সার্জারি বিভাগের ৯৮, ১০০, ১০৩ ও ২০৪নং ওয়ার্ডের পাশপাশি বারান্দায় রোগী রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১০-২০ জন রোগী ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি হচ্ছে। রোগী বেশি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এছাড়া প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে ভুক্তভোগী রোগীদের। দেখা গেছে, ওয়ার্ডের বেশিরভাগ বিছানার চাদর নেই। রোগীরা গামছা, পুরাতন কাপড় বিছিয়ে কোনরকমভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সরেজমিন নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। ১০৩নং ওয়ার্ডে প্রায় দেড় মাস ধরে ভর্তি বগুড়ার জিলহজ্ব (২৪)। তার মাথায় ব্যান্ডেজ। হুঁশ নেই। শরীর শুকিয়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে। জিলহজ্বের বাবা জিন্নাহ জানান, গত কয়েকদিন আগে ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগে তার অপারেশন হয়। অবস্থা বেশি ভালো না। তিনি অভিযোগ করেন, হাসপাতালের বিছানার চাদর পরিবর্তন করার সময় ওয়ার্ড বয়রা ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত তার কাছ থেকে নিয়েছেন।
বারান্দায় শোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের রোগী মুজাহেদ (৪০)। তার অভিযোগ, নিউরো সার্জারি ১০৩নং ওয়ার্ডের বারান্দায় সিট পেতে ওয়ার্ডের একজনকে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে এবং ঠিকমতো ডাক্তার পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সংবাদকে বলেন, যখন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৫০০০ হবে তখন নিউরো সার্জারি বিভাগ বর্ধিত করা যাবে। তবে আমরা নিউরো সার্জারি বিভাগে নতুন ৫০টি বেড বাড়ানোর ব্যাপারে একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। যার কার্যক্রম শুরু হবে চলতি আগস্ট মাসে। শেষ হবে আগামী ২০২৩ সালের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে। এছাড়া নিউরো সার্জারি বিভাগে রোগীর চাপ কমাতে কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে নিউরো সার্জারি বিভাগে আরও একটি ওটি চালু করবো। বর্তমানে নিউরো সার্জারিতে ৪টি ওটিতে রোগীদের অপারেশন হচ্ছে। চিকিৎসা শেষে এসএমএসএর মাধ্যমে নিউরো সার্জারিতে দীর্ঘদিন ভর্তি রোগীদের বাড়ি পাঠানোর ব্যাপারে জানানো হবে।
পরিচালক নাজমুল হক আরও বলেন, সারাদেশ থেকে যেভাবে ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগে রোগীর চাপ বাড়ছে তা সামলাতে ঢামেকের পাশাপাশি রাজধানীর অন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতেও নিউরো সার্জারি বিভাগ চালু করা উচিত।
শনিবার, ০৬ আগস্ট ২০২২ , ২২ শ্রাবণ ১৪২৯ ৭ মহররম ১৪৪৪
খন্দকার জাফর আহমদ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পুরাতন ভবনের নিউরো সার্জারি বিভাগে সক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে ঢামেকের এই বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। প্রয়োজনীয় বিছানা না থাকায়, নিউরো সার্জারি বিভাগের ৯৮, ১০০, ১০৩ ও ২০৪নং ওয়ার্ডের পাশপাশি বারান্দায় রোগী রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১০-২০ জন রোগী ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি হচ্ছে। রোগী বেশি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এছাড়া প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে ভুক্তভোগী রোগীদের। দেখা গেছে, ওয়ার্ডের বেশিরভাগ বিছানার চাদর নেই। রোগীরা গামছা, পুরাতন কাপড় বিছিয়ে কোনরকমভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সরেজমিন নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। ১০৩নং ওয়ার্ডে প্রায় দেড় মাস ধরে ভর্তি বগুড়ার জিলহজ্ব (২৪)। তার মাথায় ব্যান্ডেজ। হুঁশ নেই। শরীর শুকিয়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে। জিলহজ্বের বাবা জিন্নাহ জানান, গত কয়েকদিন আগে ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগে তার অপারেশন হয়। অবস্থা বেশি ভালো না। তিনি অভিযোগ করেন, হাসপাতালের বিছানার চাদর পরিবর্তন করার সময় ওয়ার্ড বয়রা ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত তার কাছ থেকে নিয়েছেন।
বারান্দায় শোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের রোগী মুজাহেদ (৪০)। তার অভিযোগ, নিউরো সার্জারি ১০৩নং ওয়ার্ডের বারান্দায় সিট পেতে ওয়ার্ডের একজনকে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে এবং ঠিকমতো ডাক্তার পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সংবাদকে বলেন, যখন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৫০০০ হবে তখন নিউরো সার্জারি বিভাগ বর্ধিত করা যাবে। তবে আমরা নিউরো সার্জারি বিভাগে নতুন ৫০টি বেড বাড়ানোর ব্যাপারে একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। যার কার্যক্রম শুরু হবে চলতি আগস্ট মাসে। শেষ হবে আগামী ২০২৩ সালের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে। এছাড়া নিউরো সার্জারি বিভাগে রোগীর চাপ কমাতে কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে নিউরো সার্জারি বিভাগে আরও একটি ওটি চালু করবো। বর্তমানে নিউরো সার্জারিতে ৪টি ওটিতে রোগীদের অপারেশন হচ্ছে। চিকিৎসা শেষে এসএমএসএর মাধ্যমে নিউরো সার্জারিতে দীর্ঘদিন ভর্তি রোগীদের বাড়ি পাঠানোর ব্যাপারে জানানো হবে।
পরিচালক নাজমুল হক আরও বলেন, সারাদেশ থেকে যেভাবে ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগে রোগীর চাপ বাড়ছে তা সামলাতে ঢামেকের পাশাপাশি রাজধানীর অন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতেও নিউরো সার্জারি বিভাগ চালু করা উচিত।