জ্বালানির দাম বাড়িয়ে সরকার মানুষের সর্বনাশ করেছে : ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মধ্যরাতে জ্বালানির দাম বাড়িয়ে সরকার দেশের মানুষের সর্বনাশ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, এই দেশের মানুষ আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রদলের জেলা সভাপতি নুর আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিমের মৃত্যু এবং জ্বালানি তেল ও সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল।

মির্জা ফখরুল বলেন, জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়বে। চালের দাম, তেলের দাম, সারের দাম, যাতায়াত খরচ বাড়বে। সবকিছু বাড়বে। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনীতি আরও খারাপ হবে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে, তখন তারাও কমায়। আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে তখন এখানে দাম বাড়ানো হয়। কেন? তারা যে লুটপাট করে, চুরি করে, দুর্নীতি করে সেই টাকাকে হালাল করার জন্য জনগণের পকেট থেকে কেড়ে নিয়ে যায়।’

জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সরকার মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যেসব তথ্য দিচ্ছে এর একটা তথ্যও সঠিক নয়। সব তথ্য হচ্ছে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য।

বিএনপির মহাসচিব জনগণের উদ্দেশে বলেন, তাদের (সরকারের) তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে সত্যিকার যে বিষয়টা, তা জানতে নিজেদের প্রশ্ন করুন। চালের দাম, তেলের দাম, সবজির দাম, মাছের দাম, গোশতের দাম কত বেড়েছে, তাহলে বুঝবেন দেশের অবস্থা কী।

মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, জনগণকে সরকারের দরকার নেই। কারণ, তার (সরকারের) আছে পুলিশ বাহিনী, বন্দুক বাহিনী এসব বাহিনী দিয়েই সে দেশ চালাবে। এভাবে আর হবে না। এই দেশের মানুষ আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না। বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, বাইক চালিয়ে যারা পরিবার চালাচ্ছেন, তারা এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন চোখে অন্ধকার দেখছেন কৃষকেরাও। ডিজেলের দাম বাড়লে কীভাবে সেচের কাজ করবেন তারা। এগুলোয় সরকারের কোন কিছু যায় আসে না। কারণ জনগণকে তাদের দরকার নেই।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের দাম বাড়িয়েছেন, কোথায় যাবে মানুষ? আপনাদের পকেটে বহু দুর্নীতি-ঘুষের টাকা আছে। আমাদের পকেটে তো ভাই নিজেদের বেঁচে থাকার পয়সাও শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা রাজনীতি, অর্থনীতি ও আমাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে। সুতরাং এই সরকারকে আর টিকতে দেয়া যায় না। এজন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি।’ সব রাজনৈতিক দলের কাছে আবারও আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বিভেদ সৃষ্টি না করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে আকাক্সক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, গণতান্ত্রিক সমাজ তৈরি করা, একটা সাম্য তৈরি করা, সেই লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করি।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ১৫ বছর ধরে বেআইনিভাবে, অযৌক্তিকভাবে শুধু রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে, পুলিশ ও র?্যাব দিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। ওই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বহু হত্যা, খুন, গুম করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নুর আলম ও আবদুর রহিমকে হত্যা করা হয়েছে। এই দুই নেতাকে হত্যার অভিযোগে ভোলার ওসি (তদন্ত) আরমানকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার দাবি জানান ফখরুল।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করে সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, প্রতিরোধ করে প্রতিবাদের জোয়ারে এই সরকারকে ভাসিয়ে দেয়া হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের যারা হত্যা করেছেন, তাদের বিচার এই দেশেই হবে।

সোমবার, ০৮ আগস্ট ২০২২ , ২৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ৯ মহররম ১৪৪৪

জ্বালানির দাম বাড়িয়ে সরকার মানুষের সর্বনাশ করেছে : ফখরুল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মধ্যরাতে জ্বালানির দাম বাড়িয়ে সরকার দেশের মানুষের সর্বনাশ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, এই দেশের মানুষ আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রদলের জেলা সভাপতি নুর আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিমের মৃত্যু এবং জ্বালানি তেল ও সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল।

মির্জা ফখরুল বলেন, জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়বে। চালের দাম, তেলের দাম, সারের দাম, যাতায়াত খরচ বাড়বে। সবকিছু বাড়বে। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনীতি আরও খারাপ হবে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে, তখন তারাও কমায়। আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে তখন এখানে দাম বাড়ানো হয়। কেন? তারা যে লুটপাট করে, চুরি করে, দুর্নীতি করে সেই টাকাকে হালাল করার জন্য জনগণের পকেট থেকে কেড়ে নিয়ে যায়।’

জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সরকার মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যেসব তথ্য দিচ্ছে এর একটা তথ্যও সঠিক নয়। সব তথ্য হচ্ছে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য।

বিএনপির মহাসচিব জনগণের উদ্দেশে বলেন, তাদের (সরকারের) তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে সত্যিকার যে বিষয়টা, তা জানতে নিজেদের প্রশ্ন করুন। চালের দাম, তেলের দাম, সবজির দাম, মাছের দাম, গোশতের দাম কত বেড়েছে, তাহলে বুঝবেন দেশের অবস্থা কী।

মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, জনগণকে সরকারের দরকার নেই। কারণ, তার (সরকারের) আছে পুলিশ বাহিনী, বন্দুক বাহিনী এসব বাহিনী দিয়েই সে দেশ চালাবে। এভাবে আর হবে না। এই দেশের মানুষ আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না। বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, বাইক চালিয়ে যারা পরিবার চালাচ্ছেন, তারা এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন চোখে অন্ধকার দেখছেন কৃষকেরাও। ডিজেলের দাম বাড়লে কীভাবে সেচের কাজ করবেন তারা। এগুলোয় সরকারের কোন কিছু যায় আসে না। কারণ জনগণকে তাদের দরকার নেই।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের দাম বাড়িয়েছেন, কোথায় যাবে মানুষ? আপনাদের পকেটে বহু দুর্নীতি-ঘুষের টাকা আছে। আমাদের পকেটে তো ভাই নিজেদের বেঁচে থাকার পয়সাও শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা রাজনীতি, অর্থনীতি ও আমাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে। সুতরাং এই সরকারকে আর টিকতে দেয়া যায় না। এজন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি।’ সব রাজনৈতিক দলের কাছে আবারও আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বিভেদ সৃষ্টি না করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে আকাক্সক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, গণতান্ত্রিক সমাজ তৈরি করা, একটা সাম্য তৈরি করা, সেই লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করি।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ১৫ বছর ধরে বেআইনিভাবে, অযৌক্তিকভাবে শুধু রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে, পুলিশ ও র?্যাব দিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। ওই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বহু হত্যা, খুন, গুম করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নুর আলম ও আবদুর রহিমকে হত্যা করা হয়েছে। এই দুই নেতাকে হত্যার অভিযোগে ভোলার ওসি (তদন্ত) আরমানকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার দাবি জানান ফখরুল।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করে সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, প্রতিরোধ করে প্রতিবাদের জোয়ারে এই সরকারকে ভাসিয়ে দেয়া হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের যারা হত্যা করেছেন, তাদের বিচার এই দেশেই হবে।