গ্রামের মানুষ ‘সুশাসন’ বলতে সামাজিক নিরাপত্তা বোঝে

এখন কিছু অসুবিধা হচ্ছে, এটাকে কেউ কেউ ইস্যু বানাতে চায় : পরিকল্পনামন্ত্রী

‘বিশ-বাইশ বছরের সামরিক শাসন আমাদের মূল ধারা থেকে সরিয়ে রেখেছিল। মূল ধারায় ফিরে এসেছি বারো-তেরো বছরে। আমি বিশ্বাস করি উন্নয়নের এমন ধারা অব্যাহত থাকবে’ বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেল ‘দ্যা রিসার্চ ফাইন্ডিংস অব দ্যা লেবার মার্কেট স্টাডিজ ফর স্কিল অ্যান্ড ইম্পলয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘সুশাসন নিয়ে অনেকের ধারণা নাই। গ্রামের মানুষ সুশাসন বোঝে না, উন্নয়ন বোঝে। গ্রামের মানুষ পানি, বিদ্যুৎ, ঘর, খাবার ও ভালোমতো থাকতে চায়। সুশাসন বলতে তারা সামাজিক নিরাপত্তা বোঝে।

মন্ত্রী বলেন, ?‘এ দেশে আজীবন বিদ্যুৎ ছিল না। বিদ্যুৎ আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। তবে বর্তমানে মানুষের কিছু অসুবিধা হচ্ছে। এটাকে কেউ কেউ ইস্যু বানাতে চায়। গ্রামের মানুষের সঙ্গে আমার নিয়মিত সাক্ষাৎ হয়। তারা দুই-এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুতের কষ্ট সহ্য করছেন। তবে এ সমস্যা বেশিদিন থাকবে না।’

মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কম দেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ?‘চলমান মেগা প্রকল্পে টাকা না দিয়ে ফেলে রাখা ঠিক হবে না। তবে যেগুলো ড্রয়িং মুডে আছে, চিন্তা-চেতনায় আছে, নকশা বা পরিকল্পনার পর্যায়ে আছে সেগুলোর জন্য হয়তো আরও কিছু সময় নেব।’

?‘আমরা শুধু খাতা নিয়ে কাজ করি না। জনগণের মনের কথাও শুনি। পদ্মা সেতুতে মানুষ ছবি তোলে, এটা দারুণ একটা উপহার। মেট্রোরেলের জন্য মানুষ ব্যাকুল হয়ে আছে। এগুলোতে টাকা বরাদ্দ দিতেই হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকটে মানুষের সামান্য অসুবিধাকে অনেকে ইস্যু বানাতে চায়। এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের একটা বিরাট অংশ বেকার। তাদের জন্য একটা অপরচুনিটি (সুযোগ) করে দেয়া যেতে পারে প্রশিক্ষলের মাধ্যমে। যেমন, বয়োবৃদ্ধদের সেবা করা, চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া, তাদের সঙ্গে গল্প করা, টয়লেটিং করা ইত্যাদি বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করা যেতে পারে।

কর্মশালার শুরুতে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. কাজী ইকবাল ১০টি সেক্টরাল প্রতিবেদন, ম্যাক্রফ্রেম ওয়ার্ক, ক্রমবর্ধমান প্রশিক্ষণের চাহিদা সংবলিত পাঁচটি অতিরিক্ত সেক্টর শনাক্তকরণ, ঞৎধরহরহম ধহফ াড়পধঃরড়হধষ ঊফঁপধঃরড় ধহফ ঞৎধরহম (ঞঠঊঞ) এবং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজার নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরিন আফরোজ, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ ইমদাদ উল্লাহ মিয়া।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্তি সচিব ও নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক মো. এখলাসুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট-ফাইনান্স) উজমা চৌধুরী প্রমুখ।

সোমবার, ২৯ আগস্ট ২০২২ , ১৪ ভাদ্র ১৪২৯ ১ সফর ১৪৪৪

গ্রামের মানুষ ‘সুশাসন’ বলতে সামাজিক নিরাপত্তা বোঝে

এখন কিছু অসুবিধা হচ্ছে, এটাকে কেউ কেউ ইস্যু বানাতে চায় : পরিকল্পনামন্ত্রী

‘বিশ-বাইশ বছরের সামরিক শাসন আমাদের মূল ধারা থেকে সরিয়ে রেখেছিল। মূল ধারায় ফিরে এসেছি বারো-তেরো বছরে। আমি বিশ্বাস করি উন্নয়নের এমন ধারা অব্যাহত থাকবে’ বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেল ‘দ্যা রিসার্চ ফাইন্ডিংস অব দ্যা লেবার মার্কেট স্টাডিজ ফর স্কিল অ্যান্ড ইম্পলয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘সুশাসন নিয়ে অনেকের ধারণা নাই। গ্রামের মানুষ সুশাসন বোঝে না, উন্নয়ন বোঝে। গ্রামের মানুষ পানি, বিদ্যুৎ, ঘর, খাবার ও ভালোমতো থাকতে চায়। সুশাসন বলতে তারা সামাজিক নিরাপত্তা বোঝে।

মন্ত্রী বলেন, ?‘এ দেশে আজীবন বিদ্যুৎ ছিল না। বিদ্যুৎ আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। তবে বর্তমানে মানুষের কিছু অসুবিধা হচ্ছে। এটাকে কেউ কেউ ইস্যু বানাতে চায়। গ্রামের মানুষের সঙ্গে আমার নিয়মিত সাক্ষাৎ হয়। তারা দুই-এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুতের কষ্ট সহ্য করছেন। তবে এ সমস্যা বেশিদিন থাকবে না।’

মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কম দেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ?‘চলমান মেগা প্রকল্পে টাকা না দিয়ে ফেলে রাখা ঠিক হবে না। তবে যেগুলো ড্রয়িং মুডে আছে, চিন্তা-চেতনায় আছে, নকশা বা পরিকল্পনার পর্যায়ে আছে সেগুলোর জন্য হয়তো আরও কিছু সময় নেব।’

?‘আমরা শুধু খাতা নিয়ে কাজ করি না। জনগণের মনের কথাও শুনি। পদ্মা সেতুতে মানুষ ছবি তোলে, এটা দারুণ একটা উপহার। মেট্রোরেলের জন্য মানুষ ব্যাকুল হয়ে আছে। এগুলোতে টাকা বরাদ্দ দিতেই হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকটে মানুষের সামান্য অসুবিধাকে অনেকে ইস্যু বানাতে চায়। এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের একটা বিরাট অংশ বেকার। তাদের জন্য একটা অপরচুনিটি (সুযোগ) করে দেয়া যেতে পারে প্রশিক্ষলের মাধ্যমে। যেমন, বয়োবৃদ্ধদের সেবা করা, চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া, তাদের সঙ্গে গল্প করা, টয়লেটিং করা ইত্যাদি বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করা যেতে পারে।

কর্মশালার শুরুতে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. কাজী ইকবাল ১০টি সেক্টরাল প্রতিবেদন, ম্যাক্রফ্রেম ওয়ার্ক, ক্রমবর্ধমান প্রশিক্ষণের চাহিদা সংবলিত পাঁচটি অতিরিক্ত সেক্টর শনাক্তকরণ, ঞৎধরহরহম ধহফ াড়পধঃরড়হধষ ঊফঁপধঃরড় ধহফ ঞৎধরহম (ঞঠঊঞ) এবং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজার নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরিন আফরোজ, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ ইমদাদ উল্লাহ মিয়া।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্তি সচিব ও নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক মো. এখলাসুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট-ফাইনান্স) উজমা চৌধুরী প্রমুখ।