বৃষ্টি হচ্ছে তবু গরম থেকে স্বস্তি মিলছে না, বাড়লো দুর্ভোগ

সারাদেশে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে

কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও গরম কমছিল না। গতকালের সকালটাও ছিল কড়া রোদের। সকালের ঝলমলে কড়া সূর্য দুপুর না হতেই কালো মেঘ হয়ে ঝরবে এমনটা বুঝতে পারেনি মরিয়ম নূর। ছাতাটাও অনেকটা ইচ্ছে করেই ব্যাগে ভরেননি। ভিজে জুবুথুব হয়ে একটা দোকানের ছাউনিতে গিয়ে আশ্রয় নেন।

বৃষ্টি থেকে নিজেকে বাঁচাতে আগে থেকেই ওই দোকানের ছাউনিতে দাঁড়িয়ে থাকা একজন মরিয়মের অবস্থা দেখে বলেন, ‘এ সময়ের আকাশ এমনটাই। এর গতিপ্রকৃতি বোঝা যায় না। এই রোদ, এই বৃষ্টি। আবার এই বৃষ্টি কিন্তু বেশি সময় ধরে থাকে না। এ জন্য সব সময় ছাতা ব্যাগে পুরে রাখতে হয়।’

যদিও কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের অনেক জায়গায় কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও গরম থেকে স্বস্তি মিলছিল না মানুষের।

টানা কয়েকদিনের এমন তাপমাত্রার পারদে জল ঢেলে দিয়েছে গতকাল দুপুরের বৃষ্টি। দুপুরে শুরু হওয়া বৃষ্টি যেন গরম আর লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী ৩ দিন সারাদেশে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে।

গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণও হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও তাপমাত্রা কমেনি। এখনও দেশের কোন কোন স্থানের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে। যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্তত দশ জেলার তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির ওপরে রয়েছে।

যে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে তা অন্তত আগামী ৩ দিনে বাড়বে। এ সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

প্রচ- গরমে বৃষ্টি আশা করছিলেন রাজধানীবাসী। সেই এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি বিভিন্ন রাস্তায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এতে পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়েন।

বিশেষ করে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা, উত্তরা, আজিমপুর, মগবাজার মিরপুরসহ বেশকিছু এলাকায় জলাবদ্ধ অবস্থা দেখা যায়। তবে যানজট ও জলজট নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দ্রুতই কাজ শুরু করেন।

প্রায় এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাস্তায় প্রচ- যানজট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পথচারীরা। কারওয়ান বাজার এলাকায় কথা হয় মিরপুরের পথচারী রুমা আনসারির সঙ্গে।

তিনি বলেন, রাস্তা মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল বৃষ্টির কারণে অনেক সিগন্যাল বন্ধ। এজন্য বেশি যানজট তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে আমিও ভিজে গেছি।

কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারের সামনে কথা হয় পথচারী রেজাউল রেজার সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেও যানজট আর জলজটে পড়তে হয় আমাদের।

একজন পথচারী মাহমুদ মুসা অভিযোগ করে বলেন, বৃষ্টি হলেই যানজট আর জলজট তৈরি হয় ঢাকা শহরে। একেবারেই ঢাকা অচল শহর হিসেবে পরিণত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট খায়রুল হোসেন বলেন, বৃষ্টি হলে অনেক লেন বন্ধ হয়ে যায়, চালকরা যানজট তৈরি করে এবং অনেক রাস্তায় পানি থাকে। এ কারণে লেন ছোট হয়ে যায় এজন্য মূলত যানজট দেখা যায়।

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২২ ভাদ্র ১৪২৯ ৯ সফর ১৪৪৪

বৃষ্টি হচ্ছে তবু গরম থেকে স্বস্তি মিলছে না, বাড়লো দুর্ভোগ

সারাদেশে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও গরম কমছিল না। গতকালের সকালটাও ছিল কড়া রোদের। সকালের ঝলমলে কড়া সূর্য দুপুর না হতেই কালো মেঘ হয়ে ঝরবে এমনটা বুঝতে পারেনি মরিয়ম নূর। ছাতাটাও অনেকটা ইচ্ছে করেই ব্যাগে ভরেননি। ভিজে জুবুথুব হয়ে একটা দোকানের ছাউনিতে গিয়ে আশ্রয় নেন।

বৃষ্টি থেকে নিজেকে বাঁচাতে আগে থেকেই ওই দোকানের ছাউনিতে দাঁড়িয়ে থাকা একজন মরিয়মের অবস্থা দেখে বলেন, ‘এ সময়ের আকাশ এমনটাই। এর গতিপ্রকৃতি বোঝা যায় না। এই রোদ, এই বৃষ্টি। আবার এই বৃষ্টি কিন্তু বেশি সময় ধরে থাকে না। এ জন্য সব সময় ছাতা ব্যাগে পুরে রাখতে হয়।’

যদিও কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের অনেক জায়গায় কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও গরম থেকে স্বস্তি মিলছিল না মানুষের।

টানা কয়েকদিনের এমন তাপমাত্রার পারদে জল ঢেলে দিয়েছে গতকাল দুপুরের বৃষ্টি। দুপুরে শুরু হওয়া বৃষ্টি যেন গরম আর লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী ৩ দিন সারাদেশে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে।

গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণও হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও তাপমাত্রা কমেনি। এখনও দেশের কোন কোন স্থানের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে। যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্তত দশ জেলার তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির ওপরে রয়েছে।

যে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে তা অন্তত আগামী ৩ দিনে বাড়বে। এ সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

প্রচ- গরমে বৃষ্টি আশা করছিলেন রাজধানীবাসী। সেই এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি বিভিন্ন রাস্তায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এতে পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়েন।

বিশেষ করে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা, উত্তরা, আজিমপুর, মগবাজার মিরপুরসহ বেশকিছু এলাকায় জলাবদ্ধ অবস্থা দেখা যায়। তবে যানজট ও জলজট নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দ্রুতই কাজ শুরু করেন।

প্রায় এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাস্তায় প্রচ- যানজট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পথচারীরা। কারওয়ান বাজার এলাকায় কথা হয় মিরপুরের পথচারী রুমা আনসারির সঙ্গে।

তিনি বলেন, রাস্তা মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল বৃষ্টির কারণে অনেক সিগন্যাল বন্ধ। এজন্য বেশি যানজট তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে আমিও ভিজে গেছি।

কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারের সামনে কথা হয় পথচারী রেজাউল রেজার সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেও যানজট আর জলজটে পড়তে হয় আমাদের।

একজন পথচারী মাহমুদ মুসা অভিযোগ করে বলেন, বৃষ্টি হলেই যানজট আর জলজট তৈরি হয় ঢাকা শহরে। একেবারেই ঢাকা অচল শহর হিসেবে পরিণত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট খায়রুল হোসেন বলেন, বৃষ্টি হলে অনেক লেন বন্ধ হয়ে যায়, চালকরা যানজট তৈরি করে এবং অনেক রাস্তায় পানি থাকে। এ কারণে লেন ছোট হয়ে যায় এজন্য মূলত যানজট দেখা যায়।