মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করছে সুপারশপগুলো, প্রতিনিধিদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আজ

চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় চেইন সুপারশপগুলোর মাত্রাতিরিক্ত মুনাফার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সুপারশপ স্বপ্ন এক কেজি চালে ৩৬ টাকা মুনাফা করছে। গতকাল অধিদপ্তরে প্যাকেটজাত পণ্য নিয়ে সুপারশপ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভায় এ তথ্য জানান তিনি। সভা শেষে জানানো হয়, অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়ে আজ উৎপাদক, ভেন্ডর (সরবরাহকারী) ও সুপারশপের মালিকপক্ষকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করা হবে।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অভিযানে দেখছি, যেকোন পণ্যে সুপারশপগুলো লাভের পরিমাণ অনেক বেশি করছে। সুপার প্রিমিয়ামের নামে ৫২ টাকার চাল বিক্রি করছে ৮৮ টাকায়। এটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে? যদি লাভটা সহনশীল পর্যায়ে করতো তাহলে মানা যেত। কিন্তু না, তারা এমনভাবেই লাভ করছে যে ভোক্তার পকেট পুরোটাই কেটে ফেলছে। এভাবে তো চলতে দেয়া যেতে পারে না। আমি নিজেও একজন ভোক্তা। কে কত টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করছেন তা আমাদের কাছে তথ্য আছে। এসব বিষয় নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।’

আলোচনায় অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার ম-ল বলেন, ‘ডিমের দামেও লাভ করা হচ্ছে আকাশ-পাতাল ব্যবধানে। একটি খোলা ডিমের ক্রয়মূল্য ৯ টাকা ১৮ পয়সা হলেও বিক্রি করা হচ্ছে ১০ টাকা। আর এক ডজন প্যাকেটজাত ডিমের ক্রয়মূল্য হলো ১৩৬ টাকা ৪০ পয়সা, কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে ১৫৫ টাকায়। তার মানে ডজনপ্রতি লাভ করা হচ্ছে ১৮ টাকা ৩ পয়সা। খোলা পণ্য প্যাকেটজাত হলেই তারা লাভ করে নিচ্ছে দ্বিগুণ।’

আজ যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হতে যাচ্ছে তাতে বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভারসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে ডাকা হয়েছে বলেও জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি। তিনি বলেন, ‘কেন সাবান, ডিটারজেন্ট, পেস্টের দাম এত বাড়লো তা নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, এটা কতটুকু যৌক্তিক তা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে।’

ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুত ও বিপণনকারী কোম্পানি সিঙ্গারকেও ডাকা হয়েছে তাদের ঈদ অফারের ব্যাখ্যা দিতে। সফিকুজ্জামান বলেন, ‘সিঙ্গার কোম্পানি ঈদের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে যেখানে লেখা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত ক্যাশব্যাক। তাদেরও আগামীকাল ডেকেছি। তাদের ভাষায় তারা বৈধভাবে প্রতারণা করছে। ভোক্তারা প্রতিটা জায়গায় প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন। এর সমাধান দরকার।’

মিডিয়াতে খবর আসার কারণে ভোক্তারা সচেতন হচ্ছে বলেও মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এ কারণে তারা আগের চেয়ে বেশি অভিযোগ পাচ্ছেন বলে জানান।

বুধবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩ ভাদ্র ১৪২৯ ১০ সফর ১৪৪৪

মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করছে সুপারশপগুলো, প্রতিনিধিদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আজ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় চেইন সুপারশপগুলোর মাত্রাতিরিক্ত মুনাফার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সুপারশপ স্বপ্ন এক কেজি চালে ৩৬ টাকা মুনাফা করছে। গতকাল অধিদপ্তরে প্যাকেটজাত পণ্য নিয়ে সুপারশপ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভায় এ তথ্য জানান তিনি। সভা শেষে জানানো হয়, অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়ে আজ উৎপাদক, ভেন্ডর (সরবরাহকারী) ও সুপারশপের মালিকপক্ষকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করা হবে।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অভিযানে দেখছি, যেকোন পণ্যে সুপারশপগুলো লাভের পরিমাণ অনেক বেশি করছে। সুপার প্রিমিয়ামের নামে ৫২ টাকার চাল বিক্রি করছে ৮৮ টাকায়। এটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে? যদি লাভটা সহনশীল পর্যায়ে করতো তাহলে মানা যেত। কিন্তু না, তারা এমনভাবেই লাভ করছে যে ভোক্তার পকেট পুরোটাই কেটে ফেলছে। এভাবে তো চলতে দেয়া যেতে পারে না। আমি নিজেও একজন ভোক্তা। কে কত টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করছেন তা আমাদের কাছে তথ্য আছে। এসব বিষয় নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।’

আলোচনায় অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার ম-ল বলেন, ‘ডিমের দামেও লাভ করা হচ্ছে আকাশ-পাতাল ব্যবধানে। একটি খোলা ডিমের ক্রয়মূল্য ৯ টাকা ১৮ পয়সা হলেও বিক্রি করা হচ্ছে ১০ টাকা। আর এক ডজন প্যাকেটজাত ডিমের ক্রয়মূল্য হলো ১৩৬ টাকা ৪০ পয়সা, কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে ১৫৫ টাকায়। তার মানে ডজনপ্রতি লাভ করা হচ্ছে ১৮ টাকা ৩ পয়সা। খোলা পণ্য প্যাকেটজাত হলেই তারা লাভ করে নিচ্ছে দ্বিগুণ।’

আজ যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হতে যাচ্ছে তাতে বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভারসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে ডাকা হয়েছে বলেও জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি। তিনি বলেন, ‘কেন সাবান, ডিটারজেন্ট, পেস্টের দাম এত বাড়লো তা নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, এটা কতটুকু যৌক্তিক তা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে।’

ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুত ও বিপণনকারী কোম্পানি সিঙ্গারকেও ডাকা হয়েছে তাদের ঈদ অফারের ব্যাখ্যা দিতে। সফিকুজ্জামান বলেন, ‘সিঙ্গার কোম্পানি ঈদের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে যেখানে লেখা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত ক্যাশব্যাক। তাদেরও আগামীকাল ডেকেছি। তাদের ভাষায় তারা বৈধভাবে প্রতারণা করছে। ভোক্তারা প্রতিটা জায়গায় প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন। এর সমাধান দরকার।’

মিডিয়াতে খবর আসার কারণে ভোক্তারা সচেতন হচ্ছে বলেও মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এ কারণে তারা আগের চেয়ে বেশি অভিযোগ পাচ্ছেন বলে জানান।