সিজিপিএ বাতিল দাবিতে অনির্দিষ্টকাল আন্দোলনে মমেক শিক্ষার্থীরা

ক্যারি অন বহাল রেখে সিজিপিএ বাতিলের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নেমেছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

গত সোমবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়ায় কর্মসূচিতে এমবিবিএস ৫৯ ও বিএডিসি ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা ক্যারি অন বহাল বাহাল চাই, সিজিপিএ বাতিল চাই সেøøাগান দিয়ে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ করে প্রথমদিনের মতো কর্মসূচি পালন করেন।

সম্প্রতি মন্ত্রণালয় ২০২১-২০২২ সেশনে নতুন কারিকুলামে পূর্বের ক্যারি অন পদ্ধতি বাতিল করে সিজিপিএ পদ্ধতি চালু করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এরপরেই শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ গড়া নিয়ে শঙ্কার বিষয়টি সামনে তুলে ধরে আন্দোলনে নামেন। তবে সিজিপিএ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তবে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন তাদের তেমন কিছু করার নেই।

এ সময় শিক্ষার্থী মেহেরাব হোসেন মিয়াদ জানান, ২০২১-২০২২ সেশনে হঠাৎ করে বিএমডি ক্যারি অন বাতিল করে সিজিপিএ চালু করেছে। সিজিপিএ চালু থাকলে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হবে যার ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটা বৈষম্য সৃষ্টি হবে এবং রেজাল্ট ভালো করার জন্য একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে। এতে বাস্তবিক জ্ঞান কখোনই অর্জন সম্ভব না। মেডিকেলের বাস্তায় শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীরা দূরে সরে যাবে তাই সিজিপিএ বাতিল করতে হবে।

মেডিকেল শিক্ষার্থী আরাফাত ইসলাম টুটুল জানান, মেডিকেল শিক্ষার্থীরা সাধারণত একটু বেশি চাপে থাকে, এখন যদি সিজিপিএ চালু করা হয় তাহলে আমাদের জন্য অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। সবাই রেজাল্ট ভালো করার জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামবে। এতে শিক্ষার্থী হয়রানীর পাশাপাশি অভিভাবকরাও চাপে থাকবে। নতুন কারিকুলামে কেউ এক সাবজেক্টে ফেল করলে তাকে ছয় মাস পর ওই সাবজেক্টে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে। এতে বিড়ম্বনা ছাড়া আর কিছুই হবে না।

আফসারা বিনতে আরিয়ানা জানান, সিজিপিএ বাতিল করতে হবে কারণ সিজিপিএ থাকলে একজন শিক্ষার্থী কোন সাবজেক্টে ফেল করলে পরবর্তী বর্ষে যেতে পারবে না। থাকে ওই সাবজেক্ট পাশ করে বর্ষ পরিবর্তন করতে হবে। এতে এক সাথে ভর্তি হয়েও এক সাথে পাশ করে মেডিকেল থেকে বের হওয়া বেশির শিক্ষার্থীদের জন্য দূরুহ হয়ে পড়বে। পূর্বে এসময় সিজিপিএ চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল পরে আন্দোলনের মুখে তা বাতিল করা হয়। এ পদ্ধতি যতক্ষণ না পর্যন্ত বাতিল করা হবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে অবগত রয়েছেন জানিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা একটু বিপাকেই পড়বে। তবে মন্ত্রনালয় থেকে যে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটির বিরোধিতা আমি করতে পারি না। আমার কাজ সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যাওয়ায় তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আসলে আমরা তা বাস্তবায়নে তা চেষ্টা করব।

বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৪ ভাদ্র ১৪২৯ ১১ সফর ১৪৪৪

সিজিপিএ বাতিল দাবিতে অনির্দিষ্টকাল আন্দোলনে মমেক শিক্ষার্থীরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, ময়মনসিংহ

image

ময়মনসিংহ : সড়কে মমেক শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন -সংবাদ

ক্যারি অন বহাল রেখে সিজিপিএ বাতিলের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নেমেছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

গত সোমবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়ায় কর্মসূচিতে এমবিবিএস ৫৯ ও বিএডিসি ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা ক্যারি অন বহাল বাহাল চাই, সিজিপিএ বাতিল চাই সেøøাগান দিয়ে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ করে প্রথমদিনের মতো কর্মসূচি পালন করেন।

সম্প্রতি মন্ত্রণালয় ২০২১-২০২২ সেশনে নতুন কারিকুলামে পূর্বের ক্যারি অন পদ্ধতি বাতিল করে সিজিপিএ পদ্ধতি চালু করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এরপরেই শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ গড়া নিয়ে শঙ্কার বিষয়টি সামনে তুলে ধরে আন্দোলনে নামেন। তবে সিজিপিএ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তবে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন তাদের তেমন কিছু করার নেই।

এ সময় শিক্ষার্থী মেহেরাব হোসেন মিয়াদ জানান, ২০২১-২০২২ সেশনে হঠাৎ করে বিএমডি ক্যারি অন বাতিল করে সিজিপিএ চালু করেছে। সিজিপিএ চালু থাকলে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হবে যার ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটা বৈষম্য সৃষ্টি হবে এবং রেজাল্ট ভালো করার জন্য একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে। এতে বাস্তবিক জ্ঞান কখোনই অর্জন সম্ভব না। মেডিকেলের বাস্তায় শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীরা দূরে সরে যাবে তাই সিজিপিএ বাতিল করতে হবে।

মেডিকেল শিক্ষার্থী আরাফাত ইসলাম টুটুল জানান, মেডিকেল শিক্ষার্থীরা সাধারণত একটু বেশি চাপে থাকে, এখন যদি সিজিপিএ চালু করা হয় তাহলে আমাদের জন্য অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। সবাই রেজাল্ট ভালো করার জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামবে। এতে শিক্ষার্থী হয়রানীর পাশাপাশি অভিভাবকরাও চাপে থাকবে। নতুন কারিকুলামে কেউ এক সাবজেক্টে ফেল করলে তাকে ছয় মাস পর ওই সাবজেক্টে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে। এতে বিড়ম্বনা ছাড়া আর কিছুই হবে না।

আফসারা বিনতে আরিয়ানা জানান, সিজিপিএ বাতিল করতে হবে কারণ সিজিপিএ থাকলে একজন শিক্ষার্থী কোন সাবজেক্টে ফেল করলে পরবর্তী বর্ষে যেতে পারবে না। থাকে ওই সাবজেক্ট পাশ করে বর্ষ পরিবর্তন করতে হবে। এতে এক সাথে ভর্তি হয়েও এক সাথে পাশ করে মেডিকেল থেকে বের হওয়া বেশির শিক্ষার্থীদের জন্য দূরুহ হয়ে পড়বে। পূর্বে এসময় সিজিপিএ চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল পরে আন্দোলনের মুখে তা বাতিল করা হয়। এ পদ্ধতি যতক্ষণ না পর্যন্ত বাতিল করা হবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে অবগত রয়েছেন জানিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা একটু বিপাকেই পড়বে। তবে মন্ত্রনালয় থেকে যে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটির বিরোধিতা আমি করতে পারি না। আমার কাজ সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যাওয়ায় তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আসলে আমরা তা বাস্তবায়নে তা চেষ্টা করব।