গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন : আটক ১

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মাহমুদা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মালিরচর জিগাতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় গৃহবধূর ভাসুরের স্ত্রী শিলা বেগম (৪০) নামে এক নারীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। আটক শিলা বেগম আজাদের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,প্রায় ১২ বছর আগে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মালিরচর জিগাতলা গ্রামের মৃত দিন্দার আলীর ছেলে আসাদুল হকের সাথে প্রতিবেশী দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ঝাউডাংগা গ্রামের মাহাজন মিয়ার কন্যা মাহমুদা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর আসাদুল স্ত্রী মাহমুদা বেগম কে রেখে বিদেশ (ব্রুনাই) যান। গত দুই মাস আগে দেশে ফিরে আসেন আসাদুল। ৪-৫ দিন আগে মাহমুদা বেগমকে বেড়ানোর কথা বলে বাপের বাড়ি ঝাউডাংগা রেখে আসেন আসাদুল হক। সোমবার দুপুরে ৩ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি মালিরচর জিগাতলা আসেন ওই গৃহবধূ। এ সময় তাকে বাড়িতে ডুকতে বাঁধা দেয় আসাদুলের স্বজনরা। কেন তাকে বাড়িতে ডুকতে দিচ্ছেন না জানতে চাইলে বাড়ির লোকজন জানায় তোমাকে আসাদুল তালাক দিয়েছে, তাই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবে না। জোড়পূর্বক স্বামীর ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে মাহমুদা। এক পর্যায়ে স্বামী আসাদুল হক,তার বড় ভাই এরশাদ আলী,ভাতিজা সায়ুম আলী, ভাসুরের স্ত্রী শিলা বেগম ও জাহিদা বেগম গৃহবধূ মাহমুদা বেগমকে গাছের সাথে বেধে নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধুকে উদ্ধার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিলা বেগমকে আটক করে।

নির্যাতিত গৃহবধূ মাহমুদা বেগম বলেন, গত ৪-৫ দিন আগে আমার স্বামী আসাদুল হক নিজে আমাকে বেড়ানোর জন্য বাপের বাড়ি রেখে আসছে। আজ বাড়িতে আসছি, বলছে আমাকে তালাক দিয়েছে। আমি এসবের কিছুই জানি না। প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে গাছের সাথে বেধেঁ নির্যাতন করেছে। নির্যাতিত গৃহবধূর মা মনোয়ারা বেগম বলেন, তারা বলছেন আমার মেয়েকে ১২ দিন আগে তালাক দিয়েছেন। তাহলে তালাক দেয়ার পরেও কিছু না জানিয়ে সংসার কিভাবে করল। আজ গাছের সাথে বেধেঁ নির্যাতন করল। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

আসাদুল হকের সহোদর বড় ভাই সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর কবীর আলমাছ বলেন, বিভিন্ন কার্যকলাপের জন্য গত ২৩ আগষ্ট স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে আসাদুল। তালাকের কাগজ গ্রহণ না করে বাড়িতে এসে আত্মহত্যার হুমকি দেয় মাহমুদা। তাই হয়ত বাড়ির লোকজন তাকে আটকে রেখেছিলো। নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক নয়।

বকশীগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় শিলা বেগম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৪ ভাদ্র ১৪২৯ ১১ সফর ১৪৪৪

গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন : আটক ১

প্রতিনিধি, জামালপুর

image

গৃহবধূ মাহমুদা বেগম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মাহমুদা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মালিরচর জিগাতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় গৃহবধূর ভাসুরের স্ত্রী শিলা বেগম (৪০) নামে এক নারীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। আটক শিলা বেগম আজাদের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,প্রায় ১২ বছর আগে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মালিরচর জিগাতলা গ্রামের মৃত দিন্দার আলীর ছেলে আসাদুল হকের সাথে প্রতিবেশী দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ঝাউডাংগা গ্রামের মাহাজন মিয়ার কন্যা মাহমুদা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর আসাদুল স্ত্রী মাহমুদা বেগম কে রেখে বিদেশ (ব্রুনাই) যান। গত দুই মাস আগে দেশে ফিরে আসেন আসাদুল। ৪-৫ দিন আগে মাহমুদা বেগমকে বেড়ানোর কথা বলে বাপের বাড়ি ঝাউডাংগা রেখে আসেন আসাদুল হক। সোমবার দুপুরে ৩ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি মালিরচর জিগাতলা আসেন ওই গৃহবধূ। এ সময় তাকে বাড়িতে ডুকতে বাঁধা দেয় আসাদুলের স্বজনরা। কেন তাকে বাড়িতে ডুকতে দিচ্ছেন না জানতে চাইলে বাড়ির লোকজন জানায় তোমাকে আসাদুল তালাক দিয়েছে, তাই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবে না। জোড়পূর্বক স্বামীর ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে মাহমুদা। এক পর্যায়ে স্বামী আসাদুল হক,তার বড় ভাই এরশাদ আলী,ভাতিজা সায়ুম আলী, ভাসুরের স্ত্রী শিলা বেগম ও জাহিদা বেগম গৃহবধূ মাহমুদা বেগমকে গাছের সাথে বেধে নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধুকে উদ্ধার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিলা বেগমকে আটক করে।

নির্যাতিত গৃহবধূ মাহমুদা বেগম বলেন, গত ৪-৫ দিন আগে আমার স্বামী আসাদুল হক নিজে আমাকে বেড়ানোর জন্য বাপের বাড়ি রেখে আসছে। আজ বাড়িতে আসছি, বলছে আমাকে তালাক দিয়েছে। আমি এসবের কিছুই জানি না। প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে গাছের সাথে বেধেঁ নির্যাতন করেছে। নির্যাতিত গৃহবধূর মা মনোয়ারা বেগম বলেন, তারা বলছেন আমার মেয়েকে ১২ দিন আগে তালাক দিয়েছেন। তাহলে তালাক দেয়ার পরেও কিছু না জানিয়ে সংসার কিভাবে করল। আজ গাছের সাথে বেধেঁ নির্যাতন করল। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

আসাদুল হকের সহোদর বড় ভাই সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর কবীর আলমাছ বলেন, বিভিন্ন কার্যকলাপের জন্য গত ২৩ আগষ্ট স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে আসাদুল। তালাকের কাগজ গ্রহণ না করে বাড়িতে এসে আত্মহত্যার হুমকি দেয় মাহমুদা। তাই হয়ত বাড়ির লোকজন তাকে আটকে রেখেছিলো। নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক নয়।

বকশীগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় শিলা বেগম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।