রাজনৈতিক ‘সমঝোতা’ হলে সব আসনে ‘ব্যালটে’ ভোট হবে : সিইসি

রাজনৈতিক ‘সমঝোতা’ হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব আসনে ‘ব্যালট পেপারে’ ভোট নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে তার মতে, ইভিএম নিয়ে কোনভাবেই রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না। সংকট ইভিএম নিয়ে নয়, সেটা আরও মোটাদাগের সংকট।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ এর জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে সবগুলো (৩০০) সংসদীয় আসনে ইভিএমে ভোট করার কথা বলেছে। তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিসহ নিবন্ধিত অধিকাংশ দল ইভিএমের বিরোধিতা করছে। সিইসি নিজেও জানিয়েছেন, ইভিএম নিয়ে অধিকাংশ দল বিশ্বাস করতে পারছে না। তবে সংলাপের পর কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে ‘সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে’ ইভিএমে ভোট করার।

তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে গত মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৩৯ নাগরিক। গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারে ইসির নেয়া সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।

‘৩৯ নাগরিকের বিবৃতি’ ওই প্রসঙ্গে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে যে ডিজিটাল জালিয়াতির কথা বলা হচ্ছে, তা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘যন্ত্র দুর্বল নাকি সবল, তা বিবেচনার বিষয় নয়, যন্ত্র কাজ করছে কি না সেটি মূল বিষয়।’ তিনি দাবি করেন, ‘কোন নির্বাচনে কোথাও ম্যালফ্যাংশনের ঘটনা ঘটেনি। ডিজিটাল জালিয়াতি নিরসনে প্রচুর সময় নেয়া হয়েছে, যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়েছে।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা বরং রাজনৈতিক পরিম-লে যে সংকটগুলো দেখছি, সে সংকট ইভিএম নিয়ে নয়, আরও মোটাদাগের সংকট। আমরা আশা করি, দোয়া করি, এ সংকটগুলো কেটে যাক। কেটে গিয়ে যদি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ফয়সালা হয়, সব ভোট ব্যালটে হবে, শতভাগ সমঝোতায় হয়, অসুবিধা কী। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব, সব দল যখন নির্বাচনে আসছে, তাহলে সেটা ভালো উদ্যোগ।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ইভিএমে ভোট না করার বিষয়ে ৩৯ নাগরিক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তারা ইভিএমের ত্রুটির বিষয়টি কমিশনে এসে তুলে ধরুক।’

সিইসি ইভিএম নিয়ে বলেন, ‘আমাদের জন্য যেটা প্রয়োজন, ইভিএমে ভোট করলাম কি না, সেটা নয়; নির্বাচনটা সঠিক, অবাধ, নির্বিঘœ হলো কি না, সেটা। ইভিএমে হোক বা ব্যালটে হোক, সেটা হওয়া বড় কথা। কাজেই বড় ধরনের সংকট ওখানে নয়, আপনারও তা জানেন; ওই সংকট নিরসন হলে নির্বাচনটা সুন্দরভাবে উঠে আসবে।’

উল্লেখ্য, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট নেয়া হয়েছিল। অবশিষ্ট ২৯৪টি আসনে ভোট হয়েছে ‘কাগুজে’ ব্যালটে।

বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৪ ভাদ্র ১৪২৯ ১১ সফর ১৪৪৪

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

রাজনৈতিক ‘সমঝোতা’ হলে সব আসনে ‘ব্যালটে’ ভোট হবে : সিইসি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজনৈতিক ‘সমঝোতা’ হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব আসনে ‘ব্যালট পেপারে’ ভোট নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে তার মতে, ইভিএম নিয়ে কোনভাবেই রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না। সংকট ইভিএম নিয়ে নয়, সেটা আরও মোটাদাগের সংকট।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ এর জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে সবগুলো (৩০০) সংসদীয় আসনে ইভিএমে ভোট করার কথা বলেছে। তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিসহ নিবন্ধিত অধিকাংশ দল ইভিএমের বিরোধিতা করছে। সিইসি নিজেও জানিয়েছেন, ইভিএম নিয়ে অধিকাংশ দল বিশ্বাস করতে পারছে না। তবে সংলাপের পর কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে ‘সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে’ ইভিএমে ভোট করার।

তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে গত মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৩৯ নাগরিক। গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারে ইসির নেয়া সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।

‘৩৯ নাগরিকের বিবৃতি’ ওই প্রসঙ্গে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে যে ডিজিটাল জালিয়াতির কথা বলা হচ্ছে, তা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘যন্ত্র দুর্বল নাকি সবল, তা বিবেচনার বিষয় নয়, যন্ত্র কাজ করছে কি না সেটি মূল বিষয়।’ তিনি দাবি করেন, ‘কোন নির্বাচনে কোথাও ম্যালফ্যাংশনের ঘটনা ঘটেনি। ডিজিটাল জালিয়াতি নিরসনে প্রচুর সময় নেয়া হয়েছে, যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়েছে।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা বরং রাজনৈতিক পরিম-লে যে সংকটগুলো দেখছি, সে সংকট ইভিএম নিয়ে নয়, আরও মোটাদাগের সংকট। আমরা আশা করি, দোয়া করি, এ সংকটগুলো কেটে যাক। কেটে গিয়ে যদি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ফয়সালা হয়, সব ভোট ব্যালটে হবে, শতভাগ সমঝোতায় হয়, অসুবিধা কী। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব, সব দল যখন নির্বাচনে আসছে, তাহলে সেটা ভালো উদ্যোগ।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ইভিএমে ভোট না করার বিষয়ে ৩৯ নাগরিক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তারা ইভিএমের ত্রুটির বিষয়টি কমিশনে এসে তুলে ধরুক।’

সিইসি ইভিএম নিয়ে বলেন, ‘আমাদের জন্য যেটা প্রয়োজন, ইভিএমে ভোট করলাম কি না, সেটা নয়; নির্বাচনটা সঠিক, অবাধ, নির্বিঘœ হলো কি না, সেটা। ইভিএমে হোক বা ব্যালটে হোক, সেটা হওয়া বড় কথা। কাজেই বড় ধরনের সংকট ওখানে নয়, আপনারও তা জানেন; ওই সংকট নিরসন হলে নির্বাচনটা সুন্দরভাবে উঠে আসবে।’

উল্লেখ্য, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট নেয়া হয়েছিল। অবশিষ্ট ২৯৪টি আসনে ভোট হয়েছে ‘কাগুজে’ ব্যালটে।