কুমিল্লায় ৭ জন কলেজছাত্র ১৬ দিন ধরে নিখোঁজ : থানায় জিডি

৮ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় পরিবারের সদস্যরা ৮ খুঁজতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে

কুমিল্লায় ৭ কলেজছাত্র গত ১৬ দিন ধরে নিখোঁজের খবরে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই ছাত্রদের খোঁজে পেতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এদিকে নিখোঁজ ওই ছাত্রদের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যসহ স্বজনদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এই ছাত্ররা বাড়ি ছেড়ে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করেছে, নাকি তাবলিগ জামাতে গিয়েছে, নাকি কোন জঙ্গি ছকে পা রেখেছে? এসব প্রশ্ন সামনে রেখে তদন্ত চলছে।

নিখোঁজ ওই ছাত্ররা হলেন- মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে আল আমিন, নিহাল আবদুল্লাহ, মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ ওরফে রিফাত, আস সামী, সরতাজ ইসলাম ওরফে নিলয়, ইমরান বিন রহমান ওরফে শিথিল, মো. হাসিবুল ইসলাম। তারা কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজ ও ঢাকা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ছাত্র। তারা গত ২৩ আগস্ট কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

পুলিশ ও নিখোঁজদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ সাত কলেজ ছাত্রের পরিবার আলাদাভাবে থানায় নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে জিডি করেন। ইমরান বিন রহমান ওরফে শিথিলের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, শিথিল আমার একমাত্র ছেলে। সে পড়াশোনা, কলেজ, কোচিং সেন্টার আর মসজিদ ছাড়া কোথায়ও যেত না। কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে ২৩ আগস্ট বিকালে বাসা থেকে বের হয়। এরপর আর বাসায় ফেরেনি। পরদিন কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করি। বিষয়টি র‌্যাবের কুমিল্লা কার্যালয়েও অবহিত করা হয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে ইমতিয়াজ আহম্মেদ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। কুমিল্লা শহরে তাদের বাসা। তার বাবা মো. ফয়েজ আহম্মেদ গত ২৬ আগস্ট ছেলের নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করেন। নিখোঁজ আমিনুলের বাবা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমিনুল আমার বড় ছেলে। সে আগে তাবলিগের নেতাদের সঙ্গে চিল্লায় যেত। পড়াশোনার পাশাপাশি কান্দিরপাড়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসতো। ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছি না, আমরা উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব সাংবাদিকদের বলেন, ৭ কলেজ ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আশা করি খুব শিগগিরই তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ সহিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে করা সাধারণ ডায়েরিমূলে তাদের সন্তানদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। নিখোঁজ ছাত্রদের আগের সব কললিস্ট এবং গতিবিধি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ জানতে পেরেছে তারা বাড়ি ছাড়ার পর কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরে যায়। এরপর চাঁদপুর রেলস্টেশন এলাকার একটি হোটেলে রাতযাপন করে। পরদিন সকালে তারা ওই হোটেল ছেড়ে যায়। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ থাকায় উদ্ধার কিংবা তাদের অবস্থান জানতে বিলম্ব হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৪ ভাদ্র ১৪২৯ ১১ সফর ১৪৪৪

কুমিল্লায় ৭ জন কলেজছাত্র ১৬ দিন ধরে নিখোঁজ : থানায় জিডি

৮ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় পরিবারের সদস্যরা ৮ খুঁজতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুমিল্লা

কুমিল্লায় ৭ কলেজছাত্র গত ১৬ দিন ধরে নিখোঁজের খবরে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই ছাত্রদের খোঁজে পেতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এদিকে নিখোঁজ ওই ছাত্রদের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যসহ স্বজনদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এই ছাত্ররা বাড়ি ছেড়ে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করেছে, নাকি তাবলিগ জামাতে গিয়েছে, নাকি কোন জঙ্গি ছকে পা রেখেছে? এসব প্রশ্ন সামনে রেখে তদন্ত চলছে।

নিখোঁজ ওই ছাত্ররা হলেন- মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে আল আমিন, নিহাল আবদুল্লাহ, মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ ওরফে রিফাত, আস সামী, সরতাজ ইসলাম ওরফে নিলয়, ইমরান বিন রহমান ওরফে শিথিল, মো. হাসিবুল ইসলাম। তারা কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজ ও ঢাকা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ছাত্র। তারা গত ২৩ আগস্ট কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

পুলিশ ও নিখোঁজদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ সাত কলেজ ছাত্রের পরিবার আলাদাভাবে থানায় নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে জিডি করেন। ইমরান বিন রহমান ওরফে শিথিলের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, শিথিল আমার একমাত্র ছেলে। সে পড়াশোনা, কলেজ, কোচিং সেন্টার আর মসজিদ ছাড়া কোথায়ও যেত না। কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে ২৩ আগস্ট বিকালে বাসা থেকে বের হয়। এরপর আর বাসায় ফেরেনি। পরদিন কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করি। বিষয়টি র‌্যাবের কুমিল্লা কার্যালয়েও অবহিত করা হয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে ইমতিয়াজ আহম্মেদ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। কুমিল্লা শহরে তাদের বাসা। তার বাবা মো. ফয়েজ আহম্মেদ গত ২৬ আগস্ট ছেলের নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করেন। নিখোঁজ আমিনুলের বাবা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমিনুল আমার বড় ছেলে। সে আগে তাবলিগের নেতাদের সঙ্গে চিল্লায় যেত। পড়াশোনার পাশাপাশি কান্দিরপাড়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসতো। ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছি না, আমরা উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব সাংবাদিকদের বলেন, ৭ কলেজ ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আশা করি খুব শিগগিরই তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ সহিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে করা সাধারণ ডায়েরিমূলে তাদের সন্তানদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। নিখোঁজ ছাত্রদের আগের সব কললিস্ট এবং গতিবিধি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ জানতে পেরেছে তারা বাড়ি ছাড়ার পর কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরে যায়। এরপর চাঁদপুর রেলস্টেশন এলাকার একটি হোটেলে রাতযাপন করে। পরদিন সকালে তারা ওই হোটেল ছেড়ে যায়। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ থাকায় উদ্ধার কিংবা তাদের অবস্থান জানতে বিলম্ব হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।