নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে সন্তানদের স্কুলবাসে দিতে রাজি অভিভাবকরা

রাজধানীতে যানজট নিরসন ও জ্বালানি সাশ্রয়ে স্কুলবাস চালু করতে সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ‘স্কুলবাস সার্ভিস প্রবর্তনসংক্রান্ত প্রাথমিক কর্মকৌশল নির্ধারণবিষয়ক’ শীর্ষক একটি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ঢাকা উত্তর সিটির আওতায় এলাকার চিটাগং গ্রামার স্কুল, স্কলাসটিকা স্কুল, স্যার জন উইলসন স্কুল এবং বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়ালের প্রধান ও অভিভাবক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় শিক্ষার্থীদের জন্য আরামদায়ক বাস, নির্দিষ্ট স্থান থেকে শিক্ষার্থীদের বাসে তোলা ও স্কুলের গেটে নামানো, প্রশিক্ষিত চালক ও সহকারী নিয়োগ, অ্যাপের মাধ্যমে বাসে শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি ও খরচ ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়। এ সময় অভিভাবকরা বাসের ফিটনেস, চালক ও সহকারীর বৈশিষ্ট্য, স্কুলের সময়, যানজট, বাসে ওঠা-নামার সময় ও নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তারা জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলেই তারা স্কুলবাসে সন্তানদের দিবেন।

গত বুধবার এ লক্ষ্যে প্রাথমিক কর্মকৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত এক সভা গুলশান-২ নগর ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে মেয়র আতিকুল ইসলামের বক্তব্যের পর কীভাবে বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে স্কুলভিত্তিক বাস পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে তার ওপর একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন তুলে ধরা হয়। সেখানে মেয়রের এমন প্রস্তাবে উপস্থিত অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। জবাবে মেয়র বলেন, ‘সন্তান প্রত্যেক মা-বাবার কাছে মূল্যবান সম্পদ। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলবাসে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমে ট্র্যাকিং ব্যবস্থা থাকবে। কখন বাসে উঠল, বাস থেকে কখন নামল, স্কুলে কখন প্রবেশ করল-সবই অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই অভিভাবকেরা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।’

তিনি জানান, চারটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি পাইলট প্রকল্প গড়ে তোলা হবে এবং এটি সফলতা পেলে পরে সব মাধ্যমের স্কুলেই এ সার্ভিস চালু করা হবে।

মেয়র বলেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে স্কুলে আসা যাবে না। স্কুলে যাতায়াতের জন্য ঢাকা উত্তর সিটির ব্যবস্থাপনায় স্কুলবাস চালু করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুলবাস সেবা চালু হবে। স্কুলবাস চালুর পরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা কোন ব্যক্তগত গাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’

বাস রুট নির্ধারণের বিষয়ে অভিভাবকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘সব শিক্ষার্থীদের বাসার ঠিকানা অনুযায়ী বাস রুট নির্ধারণ করা হবে।’ ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘কাজটি করতে গেলে কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রপিং পয়েন্ট কোনটা হবে, বাচ্চারা কাদের কাছে যাবে, বাচ্চাদের নিরাপত্তা, বাসের মধ্যে বাচ্চারা নিরাপত্তা বোধ করবে কি না ইত্যাদি। এসব বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অভিভাবকদের অনেকগুলো প্রশ্ন ছিল সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পরে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’

সভায় অন্যান্যের সঙ্গে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন, চিটাগং গ্রামার স্কুল, ঢাকা’র প্রিন্সিপাল আছিয়া আলম চৌধুরী, স্কলাস্টিকা স্কুল, মিরপুর শাখার প্রিন্সিপাল নুরুন নাহার মজুমদার, স্যার জন উইলসন স্কুলের প্রিন্সিপাল সাবরিনা শাহেদ ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়ালের প্রিন্সিপাল লুবনা চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৫ ভাদ্র ১৪২৯ ১২ সফর ১৪৪৪

নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে সন্তানদের স্কুলবাসে দিতে রাজি অভিভাবকরা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীতে যানজট নিরসন ও জ্বালানি সাশ্রয়ে স্কুলবাস চালু করতে সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ‘স্কুলবাস সার্ভিস প্রবর্তনসংক্রান্ত প্রাথমিক কর্মকৌশল নির্ধারণবিষয়ক’ শীর্ষক একটি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ঢাকা উত্তর সিটির আওতায় এলাকার চিটাগং গ্রামার স্কুল, স্কলাসটিকা স্কুল, স্যার জন উইলসন স্কুল এবং বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়ালের প্রধান ও অভিভাবক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় শিক্ষার্থীদের জন্য আরামদায়ক বাস, নির্দিষ্ট স্থান থেকে শিক্ষার্থীদের বাসে তোলা ও স্কুলের গেটে নামানো, প্রশিক্ষিত চালক ও সহকারী নিয়োগ, অ্যাপের মাধ্যমে বাসে শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি ও খরচ ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়। এ সময় অভিভাবকরা বাসের ফিটনেস, চালক ও সহকারীর বৈশিষ্ট্য, স্কুলের সময়, যানজট, বাসে ওঠা-নামার সময় ও নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তারা জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলেই তারা স্কুলবাসে সন্তানদের দিবেন।

গত বুধবার এ লক্ষ্যে প্রাথমিক কর্মকৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত এক সভা গুলশান-২ নগর ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে মেয়র আতিকুল ইসলামের বক্তব্যের পর কীভাবে বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে স্কুলভিত্তিক বাস পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে তার ওপর একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন তুলে ধরা হয়। সেখানে মেয়রের এমন প্রস্তাবে উপস্থিত অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। জবাবে মেয়র বলেন, ‘সন্তান প্রত্যেক মা-বাবার কাছে মূল্যবান সম্পদ। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলবাসে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমে ট্র্যাকিং ব্যবস্থা থাকবে। কখন বাসে উঠল, বাস থেকে কখন নামল, স্কুলে কখন প্রবেশ করল-সবই অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই অভিভাবকেরা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।’

তিনি জানান, চারটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি পাইলট প্রকল্প গড়ে তোলা হবে এবং এটি সফলতা পেলে পরে সব মাধ্যমের স্কুলেই এ সার্ভিস চালু করা হবে।

মেয়র বলেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে স্কুলে আসা যাবে না। স্কুলে যাতায়াতের জন্য ঢাকা উত্তর সিটির ব্যবস্থাপনায় স্কুলবাস চালু করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুলবাস সেবা চালু হবে। স্কুলবাস চালুর পরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা কোন ব্যক্তগত গাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’

বাস রুট নির্ধারণের বিষয়ে অভিভাবকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘সব শিক্ষার্থীদের বাসার ঠিকানা অনুযায়ী বাস রুট নির্ধারণ করা হবে।’ ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘কাজটি করতে গেলে কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রপিং পয়েন্ট কোনটা হবে, বাচ্চারা কাদের কাছে যাবে, বাচ্চাদের নিরাপত্তা, বাসের মধ্যে বাচ্চারা নিরাপত্তা বোধ করবে কি না ইত্যাদি। এসব বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অভিভাবকদের অনেকগুলো প্রশ্ন ছিল সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পরে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’

সভায় অন্যান্যের সঙ্গে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন, চিটাগং গ্রামার স্কুল, ঢাকা’র প্রিন্সিপাল আছিয়া আলম চৌধুরী, স্কলাস্টিকা স্কুল, মিরপুর শাখার প্রিন্সিপাল নুরুন নাহার মজুমদার, স্যার জন উইলসন স্কুলের প্রিন্সিপাল সাবরিনা শাহেদ ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়ালের প্রিন্সিপাল লুবনা চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।