শিক্ষা খাতে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে, শিক্ষার হার বেড়ে ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশে উন্নীত

সাক্ষরতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের আলোকে আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এর সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারের গত সাড়ে ১৩ বছরে বিভিন্ন সময়োপযোগী কর্মসূচি নেয়া এবং বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষা খাতে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার হার ২০০৭ সালের ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।’

গতকাল ছিল ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২২’। দিবসটি উপলক্ষে ৭ সেপ্টেম্বর দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২২’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত বলে বাণীতে উল্লেখ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ট্রান্সফরমিং লিটারেসি লার্নিং স্পেসেস’ সময়োপযোগী হয়েছে।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন এবং শিক্ষার গুণগত মান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে। তিনি ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২২’ উপলক্ষে নেয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সরকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৪০০ কোটি ৫৪ লাখ ৬৭ হাজার ৯১১ কপি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিনামূল্যে বই বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মেধাবৃত্তি, উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে।’

২০১৪ সালে প্রণীত ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন’র কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার শিক্ষার সুযোগবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান দেয়া, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিকরণ এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উক্ত জনগোষ্ঠীর জীবিকায়ন নিশ্চিত করতে কাজ করছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সব ছাত্র-ছাত্রীর অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সীমিত আর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তিনি ৩৬ হাজার ১৬৫টি স্কুলকে জাতীয়করণ করার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন।’ একই সঙ্গে, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নিরক্ষরতা দূরীকরণে কর্মকৌশল নেন। বঙ্গবন্ধু দেশকে নিরক্ষরমুক্ত এবং বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকার ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু যারা আগে কখনো স্কুলে যায়নি বা স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ১৫ বছর বা এর বেশি বয়সী নারী-পুরুষের চাহিদাভিত্তিক জীবন ও জীবিকায়ন-দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে বাণীতে উল্লেখ করেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘সরকারের নেয়া কার্যক্রমের ফলস্বরূপ একদিকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির হার বেড়েছে, শিক্ষাক্রম থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমেছে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা সমাপ্তির হারও বাড়ছে।’

করোনা মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে শিক্ষার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সরকার প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনা করে বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের কথা মাথায় রেখে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা কার্যক্রমে আইসিটি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা।

সব নিরক্ষরকে মৌলিক সাক্ষরতা জ্ঞান প্রদানের ক্ষেত্রে আইসিটি বেজড জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয় বাণীতে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অনলাইন, সংসদ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।’

শুক্রবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৫ ভাদ্র ১৪২৯ ১২ সফর ১৪৪৪

শিক্ষা খাতে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে, শিক্ষার হার বেড়ে ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশে উন্নীত

সাক্ষরতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের আলোকে আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এর সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারের গত সাড়ে ১৩ বছরে বিভিন্ন সময়োপযোগী কর্মসূচি নেয়া এবং বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষা খাতে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার হার ২০০৭ সালের ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।’

গতকাল ছিল ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২২’। দিবসটি উপলক্ষে ৭ সেপ্টেম্বর দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২২’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত বলে বাণীতে উল্লেখ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ট্রান্সফরমিং লিটারেসি লার্নিং স্পেসেস’ সময়োপযোগী হয়েছে।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন এবং শিক্ষার গুণগত মান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে। তিনি ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২২’ উপলক্ষে নেয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সরকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৪০০ কোটি ৫৪ লাখ ৬৭ হাজার ৯১১ কপি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিনামূল্যে বই বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মেধাবৃত্তি, উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে।’

২০১৪ সালে প্রণীত ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন’র কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার শিক্ষার সুযোগবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান দেয়া, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিকরণ এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উক্ত জনগোষ্ঠীর জীবিকায়ন নিশ্চিত করতে কাজ করছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সব ছাত্র-ছাত্রীর অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সীমিত আর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তিনি ৩৬ হাজার ১৬৫টি স্কুলকে জাতীয়করণ করার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন।’ একই সঙ্গে, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নিরক্ষরতা দূরীকরণে কর্মকৌশল নেন। বঙ্গবন্ধু দেশকে নিরক্ষরমুক্ত এবং বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকার ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু যারা আগে কখনো স্কুলে যায়নি বা স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ১৫ বছর বা এর বেশি বয়সী নারী-পুরুষের চাহিদাভিত্তিক জীবন ও জীবিকায়ন-দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে বাণীতে উল্লেখ করেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘সরকারের নেয়া কার্যক্রমের ফলস্বরূপ একদিকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির হার বেড়েছে, শিক্ষাক্রম থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমেছে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা সমাপ্তির হারও বাড়ছে।’

করোনা মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে শিক্ষার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সরকার প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনা করে বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের কথা মাথায় রেখে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা কার্যক্রমে আইসিটি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা।

সব নিরক্ষরকে মৌলিক সাক্ষরতা জ্ঞান প্রদানের ক্ষেত্রে আইসিটি বেজড জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয় বাণীতে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অনলাইন, সংসদ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।’