গরিবের চাল লুটপাটে আ’লীগ নেতা

শিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। আরও গুরুতর অভিযোগ স্থানীয় খাদ্য কর্মকর্তা সে বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো অভিযোগকারীদেরই শাস্তি দিয়েছেন। অভিযুক্ত ডিলার শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

গত ছয় বছর ধরে কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণ না করে ডিলার মনোরঞ্জন শীল নকুল সেই চাল ‘আত্মসাৎ’ করছেন বলে অভিযোগ। এসব কার্ডধারীদের মাঝে অনেকে কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু ডিলার নকুল স্থানীয় খাদ্য কর্মকর্তার সহায়তায় মৃত ব্যক্তিদের নামের কার্ডের চাল তুলেও আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ।

চর শিবালয়ের সিদ্দিক, শিবালয়ের ওয়াসিম, দুবুলিয়াডাংগার জলিল, ঝড়িয়ারবাগের রহম আলী এবং হাফেজা, অন্বয়পুরের বেলায়েত, লিয়াকতসহ আরও অনেকেই মারা গেছেন এক থেকে তিন বছর আগে। কিন্তু এখনও তাদের নামে কার্ড দিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল তোলা হছে।

আর এই কেরামতিতে একজন ভুক্তভোগীর আক্ষেপ, ‘আমার মা তো কয়েক বছর আগেই মারা গেছে। সে প্রতি মাসে নকুল শীলের দোকানে চাল নিত জানলে আগেই তার দোকানে বসে থাকতাম তাইলে মাকে এক নজর দেখতে পারতাম।’

মৃত পরিজানের ছেলে মোকামররম হোসেন বলছেন, ‘আমার মা জীবিত থাকাকালে কোনদিনও চাল পায়নি। তাছাড়া তিনি তো তিন-চার বছর আগেই মারা গেছেন, তাইলে তিনি চাল তুলেন কেমনে?’

এ ব্যাপারে এর আগেও এই ডিলারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার গোডাউন থেকে বিপুল সংখ্যক কার্ড উদ্ধার করে অসহায়দের মাঝে বিতরণ করে গেছেন। কিন্তু তারপরও ডিলারের কাছে বেশ কিছু কার্ড রয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কয়েক বছরে অসহায়-দরিদ্রদের প্রায় চল্লিশ লাখ টাকার চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে এক হিসাবে দেখা গেছে। কর্মসূচির তালিকাভুক্ত শতাধিক কার্ডধারী নারী-পুরুষ এবং মৃতের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

তবে মনোরঞ্জন শীল নকুল বলছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’। ‘যারা অভিযোগ করেছে তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই চাল নেয়নি। তাছাড়া আমি আওয়ামী লীগ করি। আগামী কাউন্সিলে আমি শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি প্রার্থী। তাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

আর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। পরে কথা হবে,’ বলে ফোন কেটে দেন।

দেশের অতি দরিদ্রদের মাঝে কম দামে খাদ্যসামগ্রী দেয়ার জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করে দশ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরু করে সরকার। এজন্য সারাদেশে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।

স্থানীয় খাদ্য কর্মকর্তার ‘যোগসাজশ’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে চাল আত্মসাতের একাধিক অভিযোগের পর ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু অভিযোগকারীরা বলছেন, ঘটনা ‘ধামাচাপা’ দিতে অভিযোগকারী কয়েকজনের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপজেলা কমিটির অনুমোদিত তালিকা আড়াল করে স্বাক্ষরবিহীন এবং অনুনমোদিত একটি তালিকা শিবালয়ের সব ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে অনুমোদিত তালিকায় থাকা অনেকের নাম বাদ পড়েছে। যেমন মো. শাহিনুর ইসলাম, ওয়াসিম মোল্লা, মো. শফি মল্লিক, মো. রফিকুল ইসলাম, আল্লাদি বেগম, সুফিয়া বেগম, আনিছা বেগম, মোছা. জবেদা বেগম, মো. মোশারফ মোল্লা, শুকচান সর্দার, মো. সিদ্দিক বেপারী যাদের কার্ড নম্বর যথাক্রমে ৭৭, ৮৭, ৯৬, ৯৭, ১৬২, ৪৭১, ৬৭২, ৬৮৯, ৬৯২, ৭১০, ৭২৪, ৭৪৮, ৭২৬, ৭৬৫। এসব ক্রমিকের নামের মধ্যে ডিলারের বিরুদ্ধে চাল না পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগকারীদের নাম রয়েছে।

গত আগস্টে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সভাপতি ইউএনও মো. জাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা হলরুমে তালিকাভুক্ত কার্ডধারীদের অনলাইন ডাটাবেইজ ‘শুদ্ধ ও সঠিকভাবে’ নিরূপণ এবং তাদের মাঝে খাদ্যশস্য বিতরণবিষয়ক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় চাল বিতরণে অনিয়ম এবং অভিযোগকারীদের নাম অনলাইন তালিকা থেকে বাদ দেয়ার কথা উঠলে অনুমোদিত তালিকা অনলাইনে পাঠানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। রহস্যজনক কারণে এখনও কমিটি অনুমোদিত তালিকা অনলাইনে দেয়া হয়নি। এতে কার্ডধারী অতিদরিদ্রদের চাল না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত তালিকা অনলাইনে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অভিযোগকারীদের বিষয়টির তদন্ত চলছে।

অর্থ আদায়ের অভিযোগ

কার্ডধারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কথাও অভিযোগকারীর বলেছেন। তবে এত অভিযোগের পরেও ডিলার নকুলের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, তাতে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অভিযোগে দেখা গেছে, চর শিবালয়ের মোশারফ মোল্লা বিগত কয়েক বছর কোন চাল পাননি। অথচ তালিকায় ২০১৬ সাল থেকেই তার নাম আছে। চিনি চাল চাইলে ডিলার তাকে গালাগাল করেছেন বলে অভিযোগ। আরেকজন মো. রফিকুল ইসলাম বললেন, ‘আমি দর্জি কাজ করি। বিগত করোনার সময় ২০২০ সালে আমার নামে একটি কার্ড করে দেন। কিন্তু ডিলার নকুল শীল আমাকে কার্ড এবং চাল কোনটাই দিচ্ছেন না। তার বিচার দাবিতে আমি ইউএনও এবং ডিসি বরাবর অভিযোগ করেছি।’

একই অভিযোগ দাসকান্দি গ্রামের রহমানের। তিনি বলেছেন, ‘আমি বিগত ছয় বছর যাবত কোন চাল পাইনি। নকুল আমাকে কার্ড এবং চাল না দেয়ায় আমি ইউএনও এবং ডিসির কাছে বিচার চেয়েছি।’ বিচার চাওয়ায় ডিলার নকুল তাদের হুমকি দিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন।

এবার ব্যাবস্থা, বলছেন কর্মকর্তারা

শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কমিটির সভাপতি হাজী আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ‘কার্ডধারী ভুক্তভোগী অনেকের অভিযোগ শুনেছি। বহুদিন যাবত এই ডিলারের নামে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে এবং তার সত্যতাও পাওয়া গেছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কেউ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তবে এবার শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুর রহমান কথা দিয়েছেন ব্যবস্থা নিবেন।’

জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বলেছেন, অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শুক্রবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৫ ভাদ্র ১৪২৯ ১২ সফর ১৪৪৪

গরিবের চাল লুটপাটে আ’লীগ নেতা

রফিকুল ইসলাম, শিবালয়, মানিকগঞ্জ

image

শিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। আরও গুরুতর অভিযোগ স্থানীয় খাদ্য কর্মকর্তা সে বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো অভিযোগকারীদেরই শাস্তি দিয়েছেন। অভিযুক্ত ডিলার শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

গত ছয় বছর ধরে কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণ না করে ডিলার মনোরঞ্জন শীল নকুল সেই চাল ‘আত্মসাৎ’ করছেন বলে অভিযোগ। এসব কার্ডধারীদের মাঝে অনেকে কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু ডিলার নকুল স্থানীয় খাদ্য কর্মকর্তার সহায়তায় মৃত ব্যক্তিদের নামের কার্ডের চাল তুলেও আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ।

চর শিবালয়ের সিদ্দিক, শিবালয়ের ওয়াসিম, দুবুলিয়াডাংগার জলিল, ঝড়িয়ারবাগের রহম আলী এবং হাফেজা, অন্বয়পুরের বেলায়েত, লিয়াকতসহ আরও অনেকেই মারা গেছেন এক থেকে তিন বছর আগে। কিন্তু এখনও তাদের নামে কার্ড দিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল তোলা হছে।

আর এই কেরামতিতে একজন ভুক্তভোগীর আক্ষেপ, ‘আমার মা তো কয়েক বছর আগেই মারা গেছে। সে প্রতি মাসে নকুল শীলের দোকানে চাল নিত জানলে আগেই তার দোকানে বসে থাকতাম তাইলে মাকে এক নজর দেখতে পারতাম।’

মৃত পরিজানের ছেলে মোকামররম হোসেন বলছেন, ‘আমার মা জীবিত থাকাকালে কোনদিনও চাল পায়নি। তাছাড়া তিনি তো তিন-চার বছর আগেই মারা গেছেন, তাইলে তিনি চাল তুলেন কেমনে?’

এ ব্যাপারে এর আগেও এই ডিলারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার গোডাউন থেকে বিপুল সংখ্যক কার্ড উদ্ধার করে অসহায়দের মাঝে বিতরণ করে গেছেন। কিন্তু তারপরও ডিলারের কাছে বেশ কিছু কার্ড রয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কয়েক বছরে অসহায়-দরিদ্রদের প্রায় চল্লিশ লাখ টাকার চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে এক হিসাবে দেখা গেছে। কর্মসূচির তালিকাভুক্ত শতাধিক কার্ডধারী নারী-পুরুষ এবং মৃতের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

তবে মনোরঞ্জন শীল নকুল বলছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’। ‘যারা অভিযোগ করেছে তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই চাল নেয়নি। তাছাড়া আমি আওয়ামী লীগ করি। আগামী কাউন্সিলে আমি শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি প্রার্থী। তাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

আর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। পরে কথা হবে,’ বলে ফোন কেটে দেন।

দেশের অতি দরিদ্রদের মাঝে কম দামে খাদ্যসামগ্রী দেয়ার জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করে দশ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরু করে সরকার। এজন্য সারাদেশে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।

স্থানীয় খাদ্য কর্মকর্তার ‘যোগসাজশ’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে চাল আত্মসাতের একাধিক অভিযোগের পর ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু অভিযোগকারীরা বলছেন, ঘটনা ‘ধামাচাপা’ দিতে অভিযোগকারী কয়েকজনের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপজেলা কমিটির অনুমোদিত তালিকা আড়াল করে স্বাক্ষরবিহীন এবং অনুনমোদিত একটি তালিকা শিবালয়ের সব ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে অনুমোদিত তালিকায় থাকা অনেকের নাম বাদ পড়েছে। যেমন মো. শাহিনুর ইসলাম, ওয়াসিম মোল্লা, মো. শফি মল্লিক, মো. রফিকুল ইসলাম, আল্লাদি বেগম, সুফিয়া বেগম, আনিছা বেগম, মোছা. জবেদা বেগম, মো. মোশারফ মোল্লা, শুকচান সর্দার, মো. সিদ্দিক বেপারী যাদের কার্ড নম্বর যথাক্রমে ৭৭, ৮৭, ৯৬, ৯৭, ১৬২, ৪৭১, ৬৭২, ৬৮৯, ৬৯২, ৭১০, ৭২৪, ৭৪৮, ৭২৬, ৭৬৫। এসব ক্রমিকের নামের মধ্যে ডিলারের বিরুদ্ধে চাল না পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগকারীদের নাম রয়েছে।

গত আগস্টে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সভাপতি ইউএনও মো. জাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা হলরুমে তালিকাভুক্ত কার্ডধারীদের অনলাইন ডাটাবেইজ ‘শুদ্ধ ও সঠিকভাবে’ নিরূপণ এবং তাদের মাঝে খাদ্যশস্য বিতরণবিষয়ক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় চাল বিতরণে অনিয়ম এবং অভিযোগকারীদের নাম অনলাইন তালিকা থেকে বাদ দেয়ার কথা উঠলে অনুমোদিত তালিকা অনলাইনে পাঠানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। রহস্যজনক কারণে এখনও কমিটি অনুমোদিত তালিকা অনলাইনে দেয়া হয়নি। এতে কার্ডধারী অতিদরিদ্রদের চাল না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত তালিকা অনলাইনে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অভিযোগকারীদের বিষয়টির তদন্ত চলছে।

অর্থ আদায়ের অভিযোগ

কার্ডধারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কথাও অভিযোগকারীর বলেছেন। তবে এত অভিযোগের পরেও ডিলার নকুলের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, তাতে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অভিযোগে দেখা গেছে, চর শিবালয়ের মোশারফ মোল্লা বিগত কয়েক বছর কোন চাল পাননি। অথচ তালিকায় ২০১৬ সাল থেকেই তার নাম আছে। চিনি চাল চাইলে ডিলার তাকে গালাগাল করেছেন বলে অভিযোগ। আরেকজন মো. রফিকুল ইসলাম বললেন, ‘আমি দর্জি কাজ করি। বিগত করোনার সময় ২০২০ সালে আমার নামে একটি কার্ড করে দেন। কিন্তু ডিলার নকুল শীল আমাকে কার্ড এবং চাল কোনটাই দিচ্ছেন না। তার বিচার দাবিতে আমি ইউএনও এবং ডিসি বরাবর অভিযোগ করেছি।’

একই অভিযোগ দাসকান্দি গ্রামের রহমানের। তিনি বলেছেন, ‘আমি বিগত ছয় বছর যাবত কোন চাল পাইনি। নকুল আমাকে কার্ড এবং চাল না দেয়ায় আমি ইউএনও এবং ডিসির কাছে বিচার চেয়েছি।’ বিচার চাওয়ায় ডিলার নকুল তাদের হুমকি দিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন।

এবার ব্যাবস্থা, বলছেন কর্মকর্তারা

শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কমিটির সভাপতি হাজী আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ‘কার্ডধারী ভুক্তভোগী অনেকের অভিযোগ শুনেছি। বহুদিন যাবত এই ডিলারের নামে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে এবং তার সত্যতাও পাওয়া গেছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কেউ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তবে এবার শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুর রহমান কথা দিয়েছেন ব্যবস্থা নিবেন।’

জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বলেছেন, অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।