চাল রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করলো ভারত

ভাঙা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। একই সঙ্গে রপ্তানি নিরুৎসাহিত করার জন্য বাসমতি ছাড়া অন্য চালে ২০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে দেশটি। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। গতকাল থেকে তা কার্যকর হয়েছে। তবে গুরুত্ব বিবেচনায় আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিছু ভাঙা চাল রপ্তানিতে অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে দেশটির বিদেশি বাণিজ্য মহাপরিচালক। দ্য প্রিন্ট।

এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতের অভ্যন্তরে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর চাল উৎপাদন কম হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ কারণে দেশটিতে চালের দামের পাশাপাশি অন্য শস্যের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে চলতি খরিফ মৌসুমে (চৈত্র থেকে ভাদ্র মাস) বৃষ্টি স্বল্পতার কারণে ধানের আবাদ ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে প্রায় ৩৮৪ লাখ হেক্টরে নেমে এসেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় চাল উৎপাদনকারী দেশ ভারত। বিশ্বে ৪০ শতাংশ চাল সরবরাহ করে ভারত। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ২১ দশমিক ২ মিলিয়ন টন চাল রপ্তানি করেছে ভারত। এর মধ্যে তিন দশমিক ৯৪ মিলিয়ন টন বাসমতি চাল রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, বিদেশি বাণিজ্যনীতি ২০১৫-২০২০ এর অধীনে অন্তর্র্বর্তীকালীন ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধানগুলি এ বিজ্ঞপ্তিতে প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার দেয়ার আগে যেসব জাহাজে ভাঙা চাল লোড করা হয়েছে বা শুরু হয়েছে বা শিপিং বিল দাখিল সম্পন্ন হয়েছে এমন গুরুত্ব বিবেচনায় আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিছু ভাঙা চাল রপ্তানি করা যাবে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে চীন সবচেয়ে বেশি ভাঙা চাল আমদানিকারক দেশ। গত বছর এক দশমিক এক মিলিয়ন টন ভাঙা চাল ক্রয় করে চীন। একই সময় আফ্রিকার বহু দেশ যেমন সেনেগাল মানুষের খাবারের জন্য ভাঙা চাল ক্রয় করে।

জানা যায়, চলতি সপ্তাহে ভারতের ৫ শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ চাল রপ্তানি হচ্ছে টনপ্রতি ৩৭৯-৩৮৭ ডলার মূল্যে, যা ২০২১ সালের জুনের পর সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহে একই জাতের চালের দাম ছিল টনপ্রতি ৩৬৬-৩৭২ ডলার। এ নিয়ে টানা তৃতীয় সপ্তাহের মতো দাম বেড়েছে।

ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সত্যম বালাজির নির্বাহী পরিচালক হিমাংশু আগারওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের দরপত্রের কারণে ভারতীয় সেদ্ধ চালের দাম বেড়েছে। ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করবে।’

ভারতের সরকার ও শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘শতভাগ ভাঙা চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপের চিন্তাভাবনা করছে ভারত। মূলত অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে দেশটি। এদিকে পর্যাপ্ত সরবরাহের প্রভাবে সাদা চালের বাজার স্থিতিশীল।’

অন্ধপ্রদেশের কাঁকিনাড়াভিত্তিক রপ্তানিকারকরা জানান, বাংলাদেশ এরই মধ্যে ভারত ও ভিয়েতনামের সঙ্গে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানির চুক্তি করেছে। উদ্দেশ্য, চালের মজুদ পরিপূর্ণ করা স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। বর্তমানে থাইল্যান্ডের ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম কিছুটা কমে টনপ্রতি ৪১৫-৪১৬ ডলারে রপ্তানি হচ্ছে।

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৬ ভাদ্র ১৪২৯ ১৩ সফর ১৪৪৪

চাল রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করলো ভারত

সংবাদ ডেস্ক

image

ভাঙা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। একই সঙ্গে রপ্তানি নিরুৎসাহিত করার জন্য বাসমতি ছাড়া অন্য চালে ২০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে দেশটি। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। গতকাল থেকে তা কার্যকর হয়েছে। তবে গুরুত্ব বিবেচনায় আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিছু ভাঙা চাল রপ্তানিতে অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে দেশটির বিদেশি বাণিজ্য মহাপরিচালক। দ্য প্রিন্ট।

এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতের অভ্যন্তরে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর চাল উৎপাদন কম হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ কারণে দেশটিতে চালের দামের পাশাপাশি অন্য শস্যের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে চলতি খরিফ মৌসুমে (চৈত্র থেকে ভাদ্র মাস) বৃষ্টি স্বল্পতার কারণে ধানের আবাদ ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে প্রায় ৩৮৪ লাখ হেক্টরে নেমে এসেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় চাল উৎপাদনকারী দেশ ভারত। বিশ্বে ৪০ শতাংশ চাল সরবরাহ করে ভারত। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ২১ দশমিক ২ মিলিয়ন টন চাল রপ্তানি করেছে ভারত। এর মধ্যে তিন দশমিক ৯৪ মিলিয়ন টন বাসমতি চাল রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, বিদেশি বাণিজ্যনীতি ২০১৫-২০২০ এর অধীনে অন্তর্র্বর্তীকালীন ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধানগুলি এ বিজ্ঞপ্তিতে প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার দেয়ার আগে যেসব জাহাজে ভাঙা চাল লোড করা হয়েছে বা শুরু হয়েছে বা শিপিং বিল দাখিল সম্পন্ন হয়েছে এমন গুরুত্ব বিবেচনায় আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিছু ভাঙা চাল রপ্তানি করা যাবে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে চীন সবচেয়ে বেশি ভাঙা চাল আমদানিকারক দেশ। গত বছর এক দশমিক এক মিলিয়ন টন ভাঙা চাল ক্রয় করে চীন। একই সময় আফ্রিকার বহু দেশ যেমন সেনেগাল মানুষের খাবারের জন্য ভাঙা চাল ক্রয় করে।

জানা যায়, চলতি সপ্তাহে ভারতের ৫ শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ চাল রপ্তানি হচ্ছে টনপ্রতি ৩৭৯-৩৮৭ ডলার মূল্যে, যা ২০২১ সালের জুনের পর সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহে একই জাতের চালের দাম ছিল টনপ্রতি ৩৬৬-৩৭২ ডলার। এ নিয়ে টানা তৃতীয় সপ্তাহের মতো দাম বেড়েছে।

ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সত্যম বালাজির নির্বাহী পরিচালক হিমাংশু আগারওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের দরপত্রের কারণে ভারতীয় সেদ্ধ চালের দাম বেড়েছে। ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করবে।’

ভারতের সরকার ও শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘শতভাগ ভাঙা চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপের চিন্তাভাবনা করছে ভারত। মূলত অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে দেশটি। এদিকে পর্যাপ্ত সরবরাহের প্রভাবে সাদা চালের বাজার স্থিতিশীল।’

অন্ধপ্রদেশের কাঁকিনাড়াভিত্তিক রপ্তানিকারকরা জানান, বাংলাদেশ এরই মধ্যে ভারত ও ভিয়েতনামের সঙ্গে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানির চুক্তি করেছে। উদ্দেশ্য, চালের মজুদ পরিপূর্ণ করা স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। বর্তমানে থাইল্যান্ডের ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম কিছুটা কমে টনপ্রতি ৪১৫-৪১৬ ডলারে রপ্তানি হচ্ছে।