সাগরের আগ্রাসন, কক্সবাজার বিমানবন্দর ভাঙন ঝুঁকিতে

সাগরের ভয়াল আগ্রাসনে ভাঙনের ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে রূপান্তরের জন্য যে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেটা সমুদ্রের কোলঘেঁষে। এরই মধ্যে কিছু স্থানে ভাঙন ঠেকাতে বসানো হয়েছে জিও ব্যাগ। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞদের মতামতের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। আর উচ্চ জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে তলিয়ে যাচ্ছে ঝাউগাছ ও সাগরপাড়ের দোকানপাট। এতে বালিয়াড়ির ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

গেল দুই বছর ধরে বর্ষা মৌসুম এলেই শুরু হয় সাগরের ভয়াল আগ্রাসন। বিলীন হতে থাকে সবুজ ঝাউবিথী আর হুমকিতে পড়ে নানা স্থাপনা।

এদিকে, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকে রূপান্তর করতে ভূমি অধিগ্রহণের কাজও চলছে। যা সমুদ্রের কোলঘেঁষে। এরই মধ্যে কিছু স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে, যা রক্ষায় প্রাথমিকভাবে জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মুর্তজা হোসেন জানান, ভাঙন প্রতিরোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রকল্প সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তাদের মাস্টারপ্ল্যান পরিবর্তন করে যেন দ্রুত কাজে হাত দেয়া হয়।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এমপি জানান, বিশেষজ্ঞদের মতামতের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিমান সরাসরি কক্সবাজারে অবতরণ করলেও নিয়মিত যাত্রী পরিবহন শুরু হয়নি। আর কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রতিদিনই ৪০টির মতো ফ্লাইট ওঠানামা করছে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এ প্রকল্পে পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন) ২০০৮-এর বিধি-৮ ও পিপিএ (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন) ২০০৬-এর আইনের ধারা-৭ লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ দুই আইন অনুযায়ী সাধারণত যে সব দরপত্র সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি থেকে অনুমোদিত হয় সেগুলো মূল্যায়নের জন্য একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করা আছে।

অভিযোগ আছে, কক্সবাজার বিমানবন্দর প্রকল্পের জন্য একটি কোম্পানিকে রেসপন্সিভ করা হয়েছে যে কোম্পানির জয়েন্টভেঞ্চার গঠন নিয়েও নানা অনিয়ম হয়েছে। ওই জয়েন্টভেঞ্চার কোম্পানির একটি পেরেন্ট কোম্পানিকে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাংক কালো তালিকাভুক্ত করেছে। সে হিসাবে ওই জয়েন্টভেঞ্চার কোম্পানি কিভাবে প্রকল্পে অংশ নিয়েছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৬ ভাদ্র ১৪২৯ ১৩ সফর ১৪৪৪

সাগরের আগ্রাসন, কক্সবাজার বিমানবন্দর ভাঙন ঝুঁকিতে

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার

image

কক্সবাজার : বিমানবন্দর রক্ষায় বসানো হচ্ছে জিও ব্যাগ -সংবাদ

সাগরের ভয়াল আগ্রাসনে ভাঙনের ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে রূপান্তরের জন্য যে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেটা সমুদ্রের কোলঘেঁষে। এরই মধ্যে কিছু স্থানে ভাঙন ঠেকাতে বসানো হয়েছে জিও ব্যাগ। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞদের মতামতের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। আর উচ্চ জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে তলিয়ে যাচ্ছে ঝাউগাছ ও সাগরপাড়ের দোকানপাট। এতে বালিয়াড়ির ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

গেল দুই বছর ধরে বর্ষা মৌসুম এলেই শুরু হয় সাগরের ভয়াল আগ্রাসন। বিলীন হতে থাকে সবুজ ঝাউবিথী আর হুমকিতে পড়ে নানা স্থাপনা।

এদিকে, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকে রূপান্তর করতে ভূমি অধিগ্রহণের কাজও চলছে। যা সমুদ্রের কোলঘেঁষে। এরই মধ্যে কিছু স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে, যা রক্ষায় প্রাথমিকভাবে জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মুর্তজা হোসেন জানান, ভাঙন প্রতিরোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রকল্প সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তাদের মাস্টারপ্ল্যান পরিবর্তন করে যেন দ্রুত কাজে হাত দেয়া হয়।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এমপি জানান, বিশেষজ্ঞদের মতামতের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিমান সরাসরি কক্সবাজারে অবতরণ করলেও নিয়মিত যাত্রী পরিবহন শুরু হয়নি। আর কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রতিদিনই ৪০টির মতো ফ্লাইট ওঠানামা করছে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এ প্রকল্পে পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন) ২০০৮-এর বিধি-৮ ও পিপিএ (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন) ২০০৬-এর আইনের ধারা-৭ লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ দুই আইন অনুযায়ী সাধারণত যে সব দরপত্র সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি থেকে অনুমোদিত হয় সেগুলো মূল্যায়নের জন্য একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করা আছে।

অভিযোগ আছে, কক্সবাজার বিমানবন্দর প্রকল্পের জন্য একটি কোম্পানিকে রেসপন্সিভ করা হয়েছে যে কোম্পানির জয়েন্টভেঞ্চার গঠন নিয়েও নানা অনিয়ম হয়েছে। ওই জয়েন্টভেঞ্চার কোম্পানির একটি পেরেন্ট কোম্পানিকে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাংক কালো তালিকাভুক্ত করেছে। সে হিসাবে ওই জয়েন্টভেঞ্চার কোম্পানি কিভাবে প্রকল্পে অংশ নিয়েছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।