ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ছয় সুপারিশ মাউশির

ঝিনাইদহের সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ছয়টি সুপারিশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। সম্প্রতি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) ও পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই সুপারিশমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। এর আগে যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঝিনাইদহের মহেশপুরের খালিশপুর বাজারে ১৯৯৯ সালের ১ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০১৩ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। কলেজটি সরকারি হলে প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ রফিউদ্দিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। এ সময় ভুয়া শিক্ষকদের সরকারিকরণসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর দুই সদস্যের একটি তদন্ত দল সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজে গিয়ে অভিযোগের তদন্ত করে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার ও সদস্য ছিলেন এমএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক জিয়াউর রহমান। গত ৭ জুন এই কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, রফিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনি মহেশপুর বাজারে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। সেখানে মোট ব্যয়ের ৬৬ লাখ টাকার আয়ের উৎস দেখাতে পারেননি। বাড়ির ব্যয় হিসাব করেছেন ‘শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, যশোরের ইঞ্জিনিয়ার জহুরুল ইসলাম। আইন অনুযায়ী কোন কলেজ সরকারি হলে ওই কলেজে নিয়োজিত এবং কর্মরত শিক্ষকদের পদ সৃজনের জন্য অধ্যক্ষ ডিজির কাছে প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। ওই কলেজের ইংরেজি বিভাগে নিয়োগের জন্য তিনি রুহুল আমিনের নাম পাঠিয়েছিলেন যিনি পাঁচ বছর আগে থেকে যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার বীরপ্রতীক ইসহাক কলেজে চাকরি করেন। এমপিওভুক্ত হিসেবে বেতন নেন। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজে চাকরির আবেদনে তার স্বাক্ষর জাল। তিনি একদিনও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজে চাকরি করেননি; অথচ তিন বছর ধরে শিক্ষক হাজিরা খাতায় ভুয়া স্বাক্ষর দেখিয়েছেন।

অন্য স্কুল এবং কলেজের এমপিওভুক্ত ছয়জনকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজের শিক্ষক দেখিয়ে তাদের সরকারি চাকরি দেয়ার জন্য হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়েছেন। তারা কোনদিন ওই কলেজে চাকরি করেননি, অথচ হাজিরা খাতায় ভুয়া স্বাক্ষর দেখিয়েছেন, তদবির করে তাদের পদ সৃজনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ভুয়া সরকারি আদেশ জারি করিয়েছেন। অবশ্য তার শেষরক্ষা হয়নি।

তিনি ওই কলেজের ভূগোল বিষয়ের প্রভাষক এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি বিশ বছরের মধ্যে কোনদিন ক্লাস নেননি।

কলেজের সব বছরের হাজিরা খাতা নেই। বোর্ড এবং বিশ^বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার সময় ছাত্রছাত্রীদের হাজিরার যে শতকরা হার দেখানো হয় সেটিও ভুয়া।

তদন্তের আগের দিন ছাত্রছাত্রীদের হাজিরা খাতা এক রাতেই তৈরি করেছিলেন এবং চাপ দিয়ে শিক্ষকদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়েছিলেন।

যে সময় তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন না তখনও কোনদিন ক্লাস নেননি।

ওই তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ছয়টি সুপারিশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৪ আগস্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) ও পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই সুপারিশমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রেরণ করেছেন।

সুপারিশে বলা হয়েছেÑ ২০১৩ সালে আত্মীকরণ বিধিমালা, ২০০০ মোতাবেক কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। ইতোমধ্যে তিনজন শিক্ষক অন্যত্র বদলি হয়েছেন। সুতরা মো. রফিউদ্দিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ ও প্রভাষক-ভূগোলকে অন্যত্র বদলি করা।

কলেজের ভেঙে পড়া প্রশাসনকে পুনরুদ্ধারের জন্য অনতিবিলম্বে একজন অধ্যাপক পদমর্যাদার (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা।

যে সময় তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন না এবং প্রভাষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেননি (২ বছর চার মাস ২৬ দিন) ওই সময়ে নেয়া বেতন-ভাতার অর্থ হিসাব করে ফেরত নেয়ার জন্য প্রধান হিসাবরক্ষক এবং ফিন্যান্স কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় ৬৬ লাখ টাকা বাড়ি নির্মাণে বিনিয়োগ করেছেন। সুতরাং তার এই অর্থের উৎস অনুসন্ধানের জন্য সরকারের কোন বিধিবদ্ধ সংস্থাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া।

ভূগোল বিষয়ের দু’জন প্রভাষক মিজানুর রহমান ও আসমা ফেরদৌসী কমিটির সামনে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে রফিউদ্দিনের অনিয়মকে সমর্থন দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটি তদন্ত করে যেসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিনের বাড়ি নিয়ে তদন্ত করা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোরের সহকারী প্রকৌশলী একেএম জহুরুল ইসলাম জানান, তদন্ত দলের সঙ্গে তিনি মহেশপুরে গিয়ে বাজারে নির্মিত অধ্যক্ষের বহুতল ভবনটি দেখে ব্যয় নির্ধারণ করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিন দাবি করেন, অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারিকরণে তিনি কোন অনিয়ম দুর্নীতি করেননি। আর তদন্ত দলকে তিনি দুই কোটি টাকার আয়ের উৎস দেখিয়েছেন। ফলে বৈধ আয় থেকে তিনি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আর তদন্ত কমিটি তাদের এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে সুপারিশ করেছে বলে তিনি দাবি করেন।

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৬ ভাদ্র ১৪২৯ ১৩ সফর ১৪৪৪

সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজ

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ছয় সুপারিশ মাউশির

যশোর অফিস

ঝিনাইদহের সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ছয়টি সুপারিশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। সম্প্রতি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) ও পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই সুপারিশমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। এর আগে যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঝিনাইদহের মহেশপুরের খালিশপুর বাজারে ১৯৯৯ সালের ১ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০১৩ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। কলেজটি সরকারি হলে প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ রফিউদ্দিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। এ সময় ভুয়া শিক্ষকদের সরকারিকরণসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর দুই সদস্যের একটি তদন্ত দল সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজে গিয়ে অভিযোগের তদন্ত করে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার ও সদস্য ছিলেন এমএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক জিয়াউর রহমান। গত ৭ জুন এই কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, রফিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনি মহেশপুর বাজারে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। সেখানে মোট ব্যয়ের ৬৬ লাখ টাকার আয়ের উৎস দেখাতে পারেননি। বাড়ির ব্যয় হিসাব করেছেন ‘শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, যশোরের ইঞ্জিনিয়ার জহুরুল ইসলাম। আইন অনুযায়ী কোন কলেজ সরকারি হলে ওই কলেজে নিয়োজিত এবং কর্মরত শিক্ষকদের পদ সৃজনের জন্য অধ্যক্ষ ডিজির কাছে প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। ওই কলেজের ইংরেজি বিভাগে নিয়োগের জন্য তিনি রুহুল আমিনের নাম পাঠিয়েছিলেন যিনি পাঁচ বছর আগে থেকে যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার বীরপ্রতীক ইসহাক কলেজে চাকরি করেন। এমপিওভুক্ত হিসেবে বেতন নেন। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজে চাকরির আবেদনে তার স্বাক্ষর জাল। তিনি একদিনও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজে চাকরি করেননি; অথচ তিন বছর ধরে শিক্ষক হাজিরা খাতায় ভুয়া স্বাক্ষর দেখিয়েছেন।

অন্য স্কুল এবং কলেজের এমপিওভুক্ত ছয়জনকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজের শিক্ষক দেখিয়ে তাদের সরকারি চাকরি দেয়ার জন্য হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়েছেন। তারা কোনদিন ওই কলেজে চাকরি করেননি, অথচ হাজিরা খাতায় ভুয়া স্বাক্ষর দেখিয়েছেন, তদবির করে তাদের পদ সৃজনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ভুয়া সরকারি আদেশ জারি করিয়েছেন। অবশ্য তার শেষরক্ষা হয়নি।

তিনি ওই কলেজের ভূগোল বিষয়ের প্রভাষক এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি বিশ বছরের মধ্যে কোনদিন ক্লাস নেননি।

কলেজের সব বছরের হাজিরা খাতা নেই। বোর্ড এবং বিশ^বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার সময় ছাত্রছাত্রীদের হাজিরার যে শতকরা হার দেখানো হয় সেটিও ভুয়া।

তদন্তের আগের দিন ছাত্রছাত্রীদের হাজিরা খাতা এক রাতেই তৈরি করেছিলেন এবং চাপ দিয়ে শিক্ষকদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়েছিলেন।

যে সময় তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন না তখনও কোনদিন ক্লাস নেননি।

ওই তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ছয়টি সুপারিশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৪ আগস্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) ও পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই সুপারিশমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রেরণ করেছেন।

সুপারিশে বলা হয়েছেÑ ২০১৩ সালে আত্মীকরণ বিধিমালা, ২০০০ মোতাবেক কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। ইতোমধ্যে তিনজন শিক্ষক অন্যত্র বদলি হয়েছেন। সুতরা মো. রফিউদ্দিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ ও প্রভাষক-ভূগোলকে অন্যত্র বদলি করা।

কলেজের ভেঙে পড়া প্রশাসনকে পুনরুদ্ধারের জন্য অনতিবিলম্বে একজন অধ্যাপক পদমর্যাদার (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা।

যে সময় তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন না এবং প্রভাষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেননি (২ বছর চার মাস ২৬ দিন) ওই সময়ে নেয়া বেতন-ভাতার অর্থ হিসাব করে ফেরত নেয়ার জন্য প্রধান হিসাবরক্ষক এবং ফিন্যান্স কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় ৬৬ লাখ টাকা বাড়ি নির্মাণে বিনিয়োগ করেছেন। সুতরাং তার এই অর্থের উৎস অনুসন্ধানের জন্য সরকারের কোন বিধিবদ্ধ সংস্থাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া।

ভূগোল বিষয়ের দু’জন প্রভাষক মিজানুর রহমান ও আসমা ফেরদৌসী কমিটির সামনে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে রফিউদ্দিনের অনিয়মকে সমর্থন দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটি তদন্ত করে যেসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিনের বাড়ি নিয়ে তদন্ত করা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোরের সহকারী প্রকৌশলী একেএম জহুরুল ইসলাম জানান, তদন্ত দলের সঙ্গে তিনি মহেশপুরে গিয়ে বাজারে নির্মিত অধ্যক্ষের বহুতল ভবনটি দেখে ব্যয় নির্ধারণ করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিউদ্দিন দাবি করেন, অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারিকরণে তিনি কোন অনিয়ম দুর্নীতি করেননি। আর তদন্ত দলকে তিনি দুই কোটি টাকার আয়ের উৎস দেখিয়েছেন। ফলে বৈধ আয় থেকে তিনি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আর তদন্ত কমিটি তাদের এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে সুপারিশ করেছে বলে তিনি দাবি করেন।