১১ বছর পর ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন আজ

দীর্ঘ ১১ বছর পর ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রথমবারের মত ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার ভোটাররা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিবেন। তবে ইভিএমে ভোট দিতে বয়স্কদের কিছুটা সমস্যা হলেও তরুণদের খুব একটা সমস্যা হবে না। সীমানা সংক্রান্ত আইনী জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন বন্ধ ছিল।২০২২ সালে এসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই কাক্সিক্ষত নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটযুদ্ধের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছেন । সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

দীর্ঘদিন পর কে হচ্ছেন এবার পৌর মেয়র- এ নিয়ে শহরের প্রতিটি চায়ের দোকান, রাস্তাঘাটে চলছে আলোচনা। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু, শান্তিপুর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে মোতায়েন করা হয়েছে ৫ প্লাটুন বিজিবিসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কঠোর অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝিনাইদহে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ খুব শক্তিশালী। এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন করলে তাদের প্রার্থীই বিজয়ী হওয়া সম্ভব। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম অপু ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক অ্যাডঃ আজিজুর রহমান,জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক কনক কান্তি দাষ, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাসসহ দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব,গ্রুপিং-লবিং ভুলে এক সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেকসহ আ’লীগের নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া সতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল ও মিজানুর রহমান মাসুম ভোটযুদ্ধে নেমেছেন কোমর বেঁধে। তারাও বিজয়ের আশা নিয়েই রাত-দিন ভোটের মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে সতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গেই আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা সাধারণ ভোটারদের।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক বলেন,কালো টাকায় ভাসছে এখন ঝিনাইদহ শহর। একটি মহল কালো টাকা ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। তবে নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা। তাকে জেতাতে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আঃ ছালেক জানান, ২০১৫ সাল থেকে সীমানা জটিলতা মামলায় প্রায় ১১ বছর পর ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১১ বছর পর এই নির্বাচন হচ্ছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও দেখা গেছে উৎসবের আমেজ।

ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮২,৬৯৫ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০,৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২,২৪৯ জন, ভোট কেন্দ্র ৪৭ টি এবং ভোট কক্ষ রয়েছে ২৬৫ টি।

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল খালেক (নৌকা),স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল (নারিকেল গাছ) এবং আরেক সতন্ত্র প্রার্থী বিশিষ্ট ঠিকাদার মিজানুর রহমান (মাসুম) (মোবাইল ফোন) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম (হাতপাখা) । এখানে নারী সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর (নারী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬৪ জন। এ পৌরসভায় সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর সাথে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ৫ প্লাটুন বিজিবি, ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, ৪৮০ জন পুলিশ, ৪২৩ জন আনসার ও ৯টি মোবাইল টিমসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র‌্যাবের ৩টি টহল সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়ার্ডন লিডার ইসতিয়াক হোসেন।

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৭ ভাদ্র ১৪২৯ ১৪ সফর ১৪৪৪

১১ বছর পর ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন আজ

জেলা বার্তা পরিবেশক, ঝিনাইদহ

image

দীর্ঘ ১১ বছর পর ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রথমবারের মত ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার ভোটাররা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিবেন। তবে ইভিএমে ভোট দিতে বয়স্কদের কিছুটা সমস্যা হলেও তরুণদের খুব একটা সমস্যা হবে না। সীমানা সংক্রান্ত আইনী জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন বন্ধ ছিল।২০২২ সালে এসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই কাক্সিক্ষত নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটযুদ্ধের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছেন । সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

দীর্ঘদিন পর কে হচ্ছেন এবার পৌর মেয়র- এ নিয়ে শহরের প্রতিটি চায়ের দোকান, রাস্তাঘাটে চলছে আলোচনা। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু, শান্তিপুর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে মোতায়েন করা হয়েছে ৫ প্লাটুন বিজিবিসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কঠোর অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝিনাইদহে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ খুব শক্তিশালী। এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন করলে তাদের প্রার্থীই বিজয়ী হওয়া সম্ভব। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম অপু ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক অ্যাডঃ আজিজুর রহমান,জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক কনক কান্তি দাষ, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাসসহ দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব,গ্রুপিং-লবিং ভুলে এক সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেকসহ আ’লীগের নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া সতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল ও মিজানুর রহমান মাসুম ভোটযুদ্ধে নেমেছেন কোমর বেঁধে। তারাও বিজয়ের আশা নিয়েই রাত-দিন ভোটের মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে সতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গেই আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা সাধারণ ভোটারদের।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক বলেন,কালো টাকায় ভাসছে এখন ঝিনাইদহ শহর। একটি মহল কালো টাকা ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। তবে নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা। তাকে জেতাতে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আঃ ছালেক জানান, ২০১৫ সাল থেকে সীমানা জটিলতা মামলায় প্রায় ১১ বছর পর ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১১ বছর পর এই নির্বাচন হচ্ছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও দেখা গেছে উৎসবের আমেজ।

ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮২,৬৯৫ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০,৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২,২৪৯ জন, ভোট কেন্দ্র ৪৭ টি এবং ভোট কক্ষ রয়েছে ২৬৫ টি।

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল খালেক (নৌকা),স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল (নারিকেল গাছ) এবং আরেক সতন্ত্র প্রার্থী বিশিষ্ট ঠিকাদার মিজানুর রহমান (মাসুম) (মোবাইল ফোন) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম (হাতপাখা) । এখানে নারী সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর (নারী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬৪ জন। এ পৌরসভায় সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর সাথে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ৫ প্লাটুন বিজিবি, ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, ৪৮০ জন পুলিশ, ৪২৩ জন আনসার ও ৯টি মোবাইল টিমসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র‌্যাবের ৩টি টহল সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়ার্ডন লিডার ইসতিয়াক হোসেন।