নওগাঁ
প্রতিনিধি, নওগাঁ
নওগাঁ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ছয় নেতা। এদের মধ্যে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী, তা নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন চলছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থক-অনুসারীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর শেষে শনিবার(১০ সেপ্টেম্বর) দলের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নওগাঁসহ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেন। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। ফলে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি?- সেটি জানতে রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নপত্যাশীদের ৪ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমাদানের দিন ধার্য করে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা পর্যন্ত এ মনোনয়ন ফরম জমাদানের শেষ সময় ছিল।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ছয় নেতা। যে ছয়জন নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা হলেন, জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলে রাব্বি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক, সাবেক সাংসদ শাহিন মনোয়ারা হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাভেদ জাহাঙ্গীর সোহেল ও বিভাস কুমার মজুমদার গোপাল এবং জেলা যুবলীগের সভাপতি খোদাদদ খান পিটু।
এ কে এম ফজলে রাব্বি বলেন, ‘জেলা পরিষদের প্রশাসক ও চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য দলের কাছে আবার মনোনয়ন চেয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা আস্থা রেখে মনোনয়ন দিলে আগামীতেও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে চাই।’
চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক। এছাড়া তিনি দীর্ঘ দিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শাহিন মনোয়ারা হক বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখে দুইবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচন করেছেন। আমি নিষ্ঠার সঙ্গে সেই দায়িত্ব পালন করেছি। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে জেলা আওয়ামী লীগের পদে থেকে দলকে সংগঠিত করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছি এবং এখনও সেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে নওগাঁর উন্নয়ন কর্মকা-ে ভূমিকা রাখব।’
জাভেদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মনোনয়ন মপ্রত্যাশীদের রাজনৈতিক কর্মকা- বিশ্লেষণ করে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করবেন। সেই দিক বিবেচনা করে প্রার্থী নির্বাচন করা হলে আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’
বিভাস কুমার মজুমদার বলেন, ‘দলের প্রতি আমার দীর্ঘদিনের ত্যাগ ও নিষ্ঠা এবং কর্মঠ, সৎ ও পরিচ্ছন্ন প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেই জননেত্রী শেখ হাসিনা ও দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী নির্বাচন করবেন। দল আমার প্রতি আস্থা রাখলে এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করব।’
খোদাদ খান বলেন, ‘জেলা পরিষদ হলো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ সংস্থা। এই সংস্থার মাধ্যমে অনেক উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব। আমার বাবা অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই খান নওগাঁ জেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান (১৯৮৮-১৯৯০) ছিলেন। তার সময়ে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে অবস্থিত জেলা পরিষদ পার্ক ও বর্তমান জেলা পরিষদ ভবন তৈরি হয়েছে। এছাড়া তিনি জেলায় বহু রাস্তাঘাট নির্মাণ করে গেছেন। দল থেকে মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে আমি জেলা পরিষদকে কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই এবং নওগাঁর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে চাই।’
আগামী ১৭ অক্টোবর নওগাঁসহ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর ও প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর।
ভোলা
জেলা বার্তা পরিবেশক, ভোলা
ভোলায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য ৩ জন ফরম কিনলেও গত শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত রির্টানিং অফিসারের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন এক জন। ৩ জন সংরক্ষিত ( নারী) সদস্য পদের জন্য ৬ জন ও ৭ জন পুরুষ সাধারণ সদস্য পদের জন্য ৯ জন মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। ১৬ জন মনোনয়নপত্র ক্রয় করলেও জমা দেননি একজনও। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ সফিকুল হক জানান, চেয়ারম্যান পদে কেবল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক আবদুল মমিন টুলু। নারী সদস্য পদে সংরক্ষিত-১ (ভোলা-দৌলতখান উপজেলা) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন, যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক খাদিজা আক্তার স্বপ্না, মহিলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস, স্কুল শিক্ষক ও ক্রীড়া সংস্থার সদস্য মুসরিন আক্তার। সংরক্ষিত-২ (বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন ও লালমোহন উপজেলা) উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি কামরুন নাহার সুমি, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা ইয়াসমিন, পৌর মহিলা লীগের সভাপতি সালমা জাহান। সংরক্ষিত-৩ থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত কেউ মনোনয়নপত্র ক্রয় করেননি। পুরুষ সাধারণ ওয়ার্ড-১ (ভোলা সদর) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন, মো. হুমায়ুন কবির, সাধারন ওয়ার্ড-৩ (বোরহানউদ্দিন) এমএন আব্দুল্লাহ, এহসানুল হক, সাধারন ওয়ার্ড-৪ (লালমোহন) মো. হাছান, সাধারন ওয়ার্ড-৫ (তজুমদ্দিন) মো. হোসেন, মো. জাকির হোসেন, মো. মনিরুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম, সাধারন ওয়ার্ড-৬ (চরফ্যাশন) উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভিপি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এবার ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৯৮২ জন। উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি মেম্বার ভোট প্রদান করবেন।
এদিকে গত শুক্রবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে ভোলার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য পদে ৩ বার দায়িত্বে থাকা বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মমিন টুলু, আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য ভোলার ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হামিদুল হক বাহালুল, ও চরফ্যাশনের কৃষক লীগ সদস্য মফিজুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়নপরম পূরণ করে আব্দুল মমিন টুলু ভোলায় এসে স্বাভাবিক কাজ করছেন। অপরদিকে অপর দুইজন কেন্দ্রে লবিং করছেন বলে শোনা যায়। আবদুল মমিন টুলু জানান, এখানে লবিং এর কিছু নেই । কারা দলের জন্য, সমাজের জন্য কাজ করেছেন, তার সকল রিপোর্ট কেন্দ্রের হাতে রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
জেলা বার্তা পরিবেশক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়নপত্র ইতিমধ্যে জমা প্রদান করেছে আওয়ামী লীগের ৭ প্রার্থী। ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কর্মকান্ড অনেকটা নিরবে থাকলেও তাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এখন ভোটারদের কাছে ছুটতে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। প্রায় প্রার্থীর ব্যস্ততা এখন কেন্দ্রের দিকে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তফসিলে বলা হয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময় ১৯-২১ সেপ্টেম্বর। ২২-২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি এবং ২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২৬ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দ ও ভোটগ্রহণ হবে ১৭ অক্টোবর। কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন আর কে হচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তবে এ নির্বাচনে বিএনপিসহ অন্য কোনো দলের তৎপরতা এখনো নেই। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন পেতে তৎপরতা শুরু করেছেন এঁরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের ২ বারের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রুহুল আমিন, জেলা পরিষদের প্রশাসক আ.লীগ নেতা মো. আশরাফুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মো. শরিফুল আলম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হালিমা বেগম, আ.লীগ নেতা খুরশিদ আলম বাচ্চু, এপিপি অ্যাডভোকেট আঞ্জুমান আরা। এসব প্রার্থীদের সাথে কোন না কোন কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্পর্ক থাকায় তারা চেষ্টা করছেন দলীয় মনোনয়ন লাভের। তাদের অনেকেই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। অন্যদিকে সদস্য পদে সাবেক সদস্য ছাড়াও নতুন মুখ নির্বাচনে অংশ নিতে কার্যক্রম শুরু করেছেন।
তবে বিগত পরিষদে যারা সদস্য ছিলেন তাদের অনেকের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ থাকায় এবার অনেক ভোটার চাইছেন নতুন মুখ নির্বাচিত করতে। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওদুদ (সাবেক এমপি) বলেন, দলের সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন, তার পক্ষে দল কাজ করবে। অন্যদিকে, গতবারের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি চেম্বারের সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ এবারও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া জেলা বিএনপির একাংশ স্থানীয় যুবলীগের বহিস্কৃত এক নেতাকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাবে বলে শোনা যাচ্ছে।
রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৭ ভাদ্র ১৪২৯ ১৪ সফর ১৪৪৪
নওগাঁ
প্রতিনিধি, নওগাঁ
নওগাঁ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ছয় নেতা। এদের মধ্যে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী, তা নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন চলছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থক-অনুসারীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর শেষে শনিবার(১০ সেপ্টেম্বর) দলের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নওগাঁসহ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেন। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। ফলে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি?- সেটি জানতে রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নপত্যাশীদের ৪ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমাদানের দিন ধার্য করে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা পর্যন্ত এ মনোনয়ন ফরম জমাদানের শেষ সময় ছিল।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ছয় নেতা। যে ছয়জন নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা হলেন, জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলে রাব্বি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক, সাবেক সাংসদ শাহিন মনোয়ারা হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাভেদ জাহাঙ্গীর সোহেল ও বিভাস কুমার মজুমদার গোপাল এবং জেলা যুবলীগের সভাপতি খোদাদদ খান পিটু।
এ কে এম ফজলে রাব্বি বলেন, ‘জেলা পরিষদের প্রশাসক ও চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য দলের কাছে আবার মনোনয়ন চেয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা আস্থা রেখে মনোনয়ন দিলে আগামীতেও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে চাই।’
চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক। এছাড়া তিনি দীর্ঘ দিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শাহিন মনোয়ারা হক বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখে দুইবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচন করেছেন। আমি নিষ্ঠার সঙ্গে সেই দায়িত্ব পালন করেছি। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে জেলা আওয়ামী লীগের পদে থেকে দলকে সংগঠিত করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছি এবং এখনও সেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে নওগাঁর উন্নয়ন কর্মকা-ে ভূমিকা রাখব।’
জাভেদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মনোনয়ন মপ্রত্যাশীদের রাজনৈতিক কর্মকা- বিশ্লেষণ করে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করবেন। সেই দিক বিবেচনা করে প্রার্থী নির্বাচন করা হলে আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’
বিভাস কুমার মজুমদার বলেন, ‘দলের প্রতি আমার দীর্ঘদিনের ত্যাগ ও নিষ্ঠা এবং কর্মঠ, সৎ ও পরিচ্ছন্ন প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেই জননেত্রী শেখ হাসিনা ও দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী নির্বাচন করবেন। দল আমার প্রতি আস্থা রাখলে এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করব।’
খোদাদ খান বলেন, ‘জেলা পরিষদ হলো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ সংস্থা। এই সংস্থার মাধ্যমে অনেক উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব। আমার বাবা অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই খান নওগাঁ জেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান (১৯৮৮-১৯৯০) ছিলেন। তার সময়ে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে অবস্থিত জেলা পরিষদ পার্ক ও বর্তমান জেলা পরিষদ ভবন তৈরি হয়েছে। এছাড়া তিনি জেলায় বহু রাস্তাঘাট নির্মাণ করে গেছেন। দল থেকে মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে আমি জেলা পরিষদকে কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই এবং নওগাঁর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে চাই।’
আগামী ১৭ অক্টোবর নওগাঁসহ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর ও প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর।
ভোলা
জেলা বার্তা পরিবেশক, ভোলা
ভোলায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য ৩ জন ফরম কিনলেও গত শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত রির্টানিং অফিসারের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন এক জন। ৩ জন সংরক্ষিত ( নারী) সদস্য পদের জন্য ৬ জন ও ৭ জন পুরুষ সাধারণ সদস্য পদের জন্য ৯ জন মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। ১৬ জন মনোনয়নপত্র ক্রয় করলেও জমা দেননি একজনও। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ সফিকুল হক জানান, চেয়ারম্যান পদে কেবল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক আবদুল মমিন টুলু। নারী সদস্য পদে সংরক্ষিত-১ (ভোলা-দৌলতখান উপজেলা) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন, যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক খাদিজা আক্তার স্বপ্না, মহিলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস, স্কুল শিক্ষক ও ক্রীড়া সংস্থার সদস্য মুসরিন আক্তার। সংরক্ষিত-২ (বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন ও লালমোহন উপজেলা) উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি কামরুন নাহার সুমি, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা ইয়াসমিন, পৌর মহিলা লীগের সভাপতি সালমা জাহান। সংরক্ষিত-৩ থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত কেউ মনোনয়নপত্র ক্রয় করেননি। পুরুষ সাধারণ ওয়ার্ড-১ (ভোলা সদর) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন, মো. হুমায়ুন কবির, সাধারন ওয়ার্ড-৩ (বোরহানউদ্দিন) এমএন আব্দুল্লাহ, এহসানুল হক, সাধারন ওয়ার্ড-৪ (লালমোহন) মো. হাছান, সাধারন ওয়ার্ড-৫ (তজুমদ্দিন) মো. হোসেন, মো. জাকির হোসেন, মো. মনিরুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম, সাধারন ওয়ার্ড-৬ (চরফ্যাশন) উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভিপি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এবার ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৯৮২ জন। উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি মেম্বার ভোট প্রদান করবেন।
এদিকে গত শুক্রবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে ভোলার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য পদে ৩ বার দায়িত্বে থাকা বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মমিন টুলু, আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য ভোলার ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হামিদুল হক বাহালুল, ও চরফ্যাশনের কৃষক লীগ সদস্য মফিজুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়নপরম পূরণ করে আব্দুল মমিন টুলু ভোলায় এসে স্বাভাবিক কাজ করছেন। অপরদিকে অপর দুইজন কেন্দ্রে লবিং করছেন বলে শোনা যায়। আবদুল মমিন টুলু জানান, এখানে লবিং এর কিছু নেই । কারা দলের জন্য, সমাজের জন্য কাজ করেছেন, তার সকল রিপোর্ট কেন্দ্রের হাতে রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
জেলা বার্তা পরিবেশক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়নপত্র ইতিমধ্যে জমা প্রদান করেছে আওয়ামী লীগের ৭ প্রার্থী। ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কর্মকান্ড অনেকটা নিরবে থাকলেও তাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এখন ভোটারদের কাছে ছুটতে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। প্রায় প্রার্থীর ব্যস্ততা এখন কেন্দ্রের দিকে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তফসিলে বলা হয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময় ১৯-২১ সেপ্টেম্বর। ২২-২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি এবং ২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২৬ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দ ও ভোটগ্রহণ হবে ১৭ অক্টোবর। কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন আর কে হচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তবে এ নির্বাচনে বিএনপিসহ অন্য কোনো দলের তৎপরতা এখনো নেই। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন পেতে তৎপরতা শুরু করেছেন এঁরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের ২ বারের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রুহুল আমিন, জেলা পরিষদের প্রশাসক আ.লীগ নেতা মো. আশরাফুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মো. শরিফুল আলম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হালিমা বেগম, আ.লীগ নেতা খুরশিদ আলম বাচ্চু, এপিপি অ্যাডভোকেট আঞ্জুমান আরা। এসব প্রার্থীদের সাথে কোন না কোন কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্পর্ক থাকায় তারা চেষ্টা করছেন দলীয় মনোনয়ন লাভের। তাদের অনেকেই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। অন্যদিকে সদস্য পদে সাবেক সদস্য ছাড়াও নতুন মুখ নির্বাচনে অংশ নিতে কার্যক্রম শুরু করেছেন।
তবে বিগত পরিষদে যারা সদস্য ছিলেন তাদের অনেকের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ থাকায় এবার অনেক ভোটার চাইছেন নতুন মুখ নির্বাচিত করতে। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওদুদ (সাবেক এমপি) বলেন, দলের সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন, তার পক্ষে দল কাজ করবে। অন্যদিকে, গতবারের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি চেম্বারের সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ এবারও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া জেলা বিএনপির একাংশ স্থানীয় যুবলীগের বহিস্কৃত এক নেতাকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাবে বলে শোনা যাচ্ছে।