৩৪ বছর আত্মগোপনে থাকার পর চরমপন্থি নেতা সাইফুল গ্রেপ্তার

১৯৮৭ সালে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানা লুট করে একজন কনস্টেবলকে খুন, অস্ত্র লুট এবং আটক চরমপন্থিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত পলাতক আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে মানিককে (৫৬) গ্রেপ্তার করেছে র?্যাব। গত শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানিককে গ্রেপ্তারের পর র?্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মানিক সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য। সর্বহারাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সব কার্যক্রমে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিনি ছাত্তার নামে শ্রমিক সরদার হিসেবে কাজ করতেন।

২০১৮ সালে মানিক তার নাম পরিবর্তন করে সাইফুল প্রধান নামে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ভোটার হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন বলেও জানিয়েছে র?্যাব। গতকাল কারওয়ান বাজারে র?্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে একদল চরমপন্থি ছদ্মবেশে লুঙ্গি, গামছা পরা অবস্থায় হাতে পোটলা নিয়ে হাটের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে। পোটলার মধ্যে তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র লুকায়িত ছিল। তাদের মধ্যে কিছু লোক অস্ত্র প্রদর্শন করে টেলিফোন অফিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেন্ট্রাল কমান্ড বিকল করে দেয় এবং কয়েকজন থানায় প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে থানা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।

এ সময় কনস্টেবল হাবিবুর রহমান বাধা দিলে চরমপন্থিরা তাকে গুলি করে হত্যা করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে থানার অস্ত্রাগার লুট করে দুটি এসএমজি, চারটি এসএলআর, ১৮টি ৩.৩ রাইফেল ও গোলাবারুদ লুট করে থানার লকআপে বন্দী এক চরমপন্থি আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। তারপর আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তারা একযোগে টেলিফোন অফিস ও থানা কম্পাউন্ডে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানায় ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ৪৯ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০০৭ সালে মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত।

গত শুক্রবার রাতে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে, এ মামলার যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামি নারায়ণগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করে আছেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকা থেকে ছাত্তার নামে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করা সাইফুল ইসলাম ওরফে মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

মানিককে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের বরাতে র?্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, মানিক ১৯৮৪ সালে চরমপন্থি নেতা তারেকের মাধ্যমে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। চরমপন্থি নেতা তারেক প্রতি সপ্তাহে চাটমোহর এলাকায় উঠতি বয়সের যুবকদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে উঠান বৈঠক করতেন। এ বৈঠকে তিনি আকর্ষণীয় কথাবার্তা বলতেন। কেউ তাদের কাজে বাধা দিলে তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা বলতেন। যদি সরকার বা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তারা পুলিশ হত্যা করে থানা, ফাঁড়ি লুট করবেন বলেও জানান।

আসামির জীবন-বৃত্তান্ত

গ্রেপ্তার আসামি মানিক সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য। সর্বহারাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সব কার্যক্রমে তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। তার কোন নির্দিষ্ট পেশা ছিল না। ত্রাস সৃষ্টি, লুটপাট ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। সম্প্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় ছাত্তার নামে শ্রমিক সরদার হিসেবে কাজ করছিলেন। ২০১৮ সালে মানিক তার নাম পরিবর্তন করে সাইফুল প্রধান নামে নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জ এলাকায় ভোটার হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। রূপগঞ্জ এলাকায় তিনি ছাত্তার নামে পরিচিত। রূপগঞ্জ এলাকার মানুষ তার অপরাধ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতেন না।

মানিকের পলাতক জীবন

১২ জন হত্যা মামলার পর তারেকসহ চরমপন্থি দলের সদস্যরা চাটমোহর থেকে আত্মগোপন করে সিরাজগঞ্জে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তারা তাদের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ১৯৮৯ সালের নভেম্বর মাসে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে মানিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে চরমপন্থি দলের সঙ্গে আবারও হত্যা, লুটপাট, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অস্ত্র প্রদর্শন করে ত্রাস সৃষ্টি, অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়া, অর্থের বিনিময়ে জমি দখল, পারিবারিক বিরোধ মীমাংসার কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েন।

র?্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রেপ্তার মানিক তারেকের সঙ্গে নৌকায় বিলের মধ্যে অবস্থান করতেন। দলের কার্যক্রম শেষে তারা আবারও সশস্ত্র অবস্থায় বিভিন্ন এলাকায় নৌকার মধ্যেই জীবন-যাপন করতেন। ২০০৪ সালে চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলে তারেকের নির্দেশে চরমপন্থিরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন। তখন মানিক রাজধানীতে চলে আসেন। রাজধানীতে কিছুদিন বাসের হেলপারি করেন। ট্রাকে মালামাল লোড-আনলোডের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এরপর নারায়ণগঞ্জে তার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। ওই আত্মীয় তাকে একটি গার্মেন্ট কারখানায় চাকরি দেন এবং সবার কাছে তাকে ছাত্তার নামে পরিচয় করিয়ে দেন। ধীরে ধীরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে তারা আবার মাঝে মাঝে এলাকায় গিয়ে সর্বহারা দলের কার্যক্রম চালাতে থাকেন। ৭-৮ বছর আগে চরমপন্থি দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে তারেক নিহত হলে মানিক সর্বহারা দলের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। তিনি এনআইডি পরিবর্তন করে রূপগঞ্জ এলাকার ভোটার হিসেবে নিজেকে ছাত্তার নামে প্রতিষ্ঠিত করে নিজের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন।

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৭ ভাদ্র ১৪২৯ ১৪ সফর ১৪৪৪

গুরুদাসপুরে অস্ত্র লুট ও পুলিশ হত্যা

৩৪ বছর আত্মগোপনে থাকার পর চরমপন্থি নেতা সাইফুল গ্রেপ্তার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

১৯৮৭ সালে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানা লুট করে একজন কনস্টেবলকে খুন, অস্ত্র লুট এবং আটক চরমপন্থিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত পলাতক আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে মানিককে (৫৬) গ্রেপ্তার করেছে র?্যাব। গত শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানিককে গ্রেপ্তারের পর র?্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মানিক সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য। সর্বহারাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সব কার্যক্রমে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিনি ছাত্তার নামে শ্রমিক সরদার হিসেবে কাজ করতেন।

২০১৮ সালে মানিক তার নাম পরিবর্তন করে সাইফুল প্রধান নামে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ভোটার হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন বলেও জানিয়েছে র?্যাব। গতকাল কারওয়ান বাজারে র?্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে একদল চরমপন্থি ছদ্মবেশে লুঙ্গি, গামছা পরা অবস্থায় হাতে পোটলা নিয়ে হাটের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে। পোটলার মধ্যে তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র লুকায়িত ছিল। তাদের মধ্যে কিছু লোক অস্ত্র প্রদর্শন করে টেলিফোন অফিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেন্ট্রাল কমান্ড বিকল করে দেয় এবং কয়েকজন থানায় প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে থানা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।

এ সময় কনস্টেবল হাবিবুর রহমান বাধা দিলে চরমপন্থিরা তাকে গুলি করে হত্যা করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে থানার অস্ত্রাগার লুট করে দুটি এসএমজি, চারটি এসএলআর, ১৮টি ৩.৩ রাইফেল ও গোলাবারুদ লুট করে থানার লকআপে বন্দী এক চরমপন্থি আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। তারপর আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তারা একযোগে টেলিফোন অফিস ও থানা কম্পাউন্ডে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানায় ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ৪৯ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০০৭ সালে মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত।

গত শুক্রবার রাতে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে, এ মামলার যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামি নারায়ণগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করে আছেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকা থেকে ছাত্তার নামে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করা সাইফুল ইসলাম ওরফে মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

মানিককে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের বরাতে র?্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, মানিক ১৯৮৪ সালে চরমপন্থি নেতা তারেকের মাধ্যমে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। চরমপন্থি নেতা তারেক প্রতি সপ্তাহে চাটমোহর এলাকায় উঠতি বয়সের যুবকদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে উঠান বৈঠক করতেন। এ বৈঠকে তিনি আকর্ষণীয় কথাবার্তা বলতেন। কেউ তাদের কাজে বাধা দিলে তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা বলতেন। যদি সরকার বা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তারা পুলিশ হত্যা করে থানা, ফাঁড়ি লুট করবেন বলেও জানান।

আসামির জীবন-বৃত্তান্ত

গ্রেপ্তার আসামি মানিক সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য। সর্বহারাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সব কার্যক্রমে তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। তার কোন নির্দিষ্ট পেশা ছিল না। ত্রাস সৃষ্টি, লুটপাট ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। সম্প্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় ছাত্তার নামে শ্রমিক সরদার হিসেবে কাজ করছিলেন। ২০১৮ সালে মানিক তার নাম পরিবর্তন করে সাইফুল প্রধান নামে নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জ এলাকায় ভোটার হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। রূপগঞ্জ এলাকায় তিনি ছাত্তার নামে পরিচিত। রূপগঞ্জ এলাকার মানুষ তার অপরাধ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতেন না।

মানিকের পলাতক জীবন

১২ জন হত্যা মামলার পর তারেকসহ চরমপন্থি দলের সদস্যরা চাটমোহর থেকে আত্মগোপন করে সিরাজগঞ্জে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তারা তাদের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ১৯৮৯ সালের নভেম্বর মাসে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে মানিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে চরমপন্থি দলের সঙ্গে আবারও হত্যা, লুটপাট, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অস্ত্র প্রদর্শন করে ত্রাস সৃষ্টি, অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়া, অর্থের বিনিময়ে জমি দখল, পারিবারিক বিরোধ মীমাংসার কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েন।

র?্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রেপ্তার মানিক তারেকের সঙ্গে নৌকায় বিলের মধ্যে অবস্থান করতেন। দলের কার্যক্রম শেষে তারা আবারও সশস্ত্র অবস্থায় বিভিন্ন এলাকায় নৌকার মধ্যেই জীবন-যাপন করতেন। ২০০৪ সালে চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলে তারেকের নির্দেশে চরমপন্থিরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন। তখন মানিক রাজধানীতে চলে আসেন। রাজধানীতে কিছুদিন বাসের হেলপারি করেন। ট্রাকে মালামাল লোড-আনলোডের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এরপর নারায়ণগঞ্জে তার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। ওই আত্মীয় তাকে একটি গার্মেন্ট কারখানায় চাকরি দেন এবং সবার কাছে তাকে ছাত্তার নামে পরিচয় করিয়ে দেন। ধীরে ধীরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে তারা আবার মাঝে মাঝে এলাকায় গিয়ে সর্বহারা দলের কার্যক্রম চালাতে থাকেন। ৭-৮ বছর আগে চরমপন্থি দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে তারেক নিহত হলে মানিক সর্বহারা দলের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। তিনি এনআইডি পরিবর্তন করে রূপগঞ্জ এলাকার ভোটার হিসেবে নিজেকে ছাত্তার নামে প্রতিষ্ঠিত করে নিজের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন।