লাইসেন্সবিহীন সিএনজি স্টেশনের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

টাকা জমা দেয়া হলেও আপডেট করেনি তিতাস : অভিযোগ মালিক সমিতির

বিইআরসির লাইসেন্স নেই অথবা নবায়ন করা হয়নি, এমন অভিযোগে সিএনজি স্টেশনের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (তিতাস গ্যাস)। গতকালও অভিযান চালিয়ে শতাব্দী সিএনজি, মনি সিএনজি, মক্কা সিএনজি, ঢাকা সিএনজি, মাহতাব সিএনজিসহ বেশকিছু স্টেশনের গ্যাস লাইন কেটে দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ও তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা যায়, দেশে পাঁচ শতাধিক সিএনজি স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে অন্তত ২০০ স্টেশনের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। বার বার তাগাদা দিয়ে মালিকদের সাড়া না পাওয়ায় তিতাস অভিযান পরিচালনা করে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্শন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর গতকাল রাতে সংবাদকে বলেন, ‘অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। আমাদের অনেক স্টেশন মালিক লাইসেন্স নবায়ন করেছেন। অনেকের মেয়াদ আছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। অথচ আমাদের কাছে তিতাস গ্যাসের পাঠানো চিঠিতে এমন অনেক স্টেশনের নাম আছে, যারা লাইসেন্স নবায়ন করেছে। এসব স্টেশনে লাইন কাটতেও গেছে তিতাস।’গত ১১ আগস্ট তিতাস গ্যাসের পাঠানো এক চিঠিতে দেখা যায়, ২০টি সিএনজি স্টেশনকে লাইসেন্স নবায়ন করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। যথা সময়ে লাইসেন্স নবায়ন না করলে গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও জরিমানার কথাও বলা হয়েছে চিঠিতে।

তালিকা ধরে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান পরিচালনা করছে তিতাস। এরমধ্যে নরসিংদীর এমএমকে সিএনজি স্টেশনেও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে স্টেশন কর্মকর্তারা বাধা দেয়। তারা জানায়, তাদের লাইসেন্স নবায়ন করা আছে। এরপরও ঝামেলা করছে তিতাস। বলা হয়, তাদের হালনাগাদ তথ্য অনলাইনে নেই।

বিষয়টি জানিয়ে সিএনজি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর বলেন, ‘সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো একদমই আপডেট না। তাই এমন পরিস্থিতি হচ্ছে। আর লাইসেন্স ফি নিয়েও আপত্তি আছে। একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র করার যে লাইসেন্স ফি একই পরিমাণ টাকা সিএনজি স্টেশনের জন্যও নির্ধারিত ছিল। অনেক আপত্তির পর ২০১৬ সালে এটা কমানো হলেও, আগের বছরগুলোর জন্য পূর্ব নির্ধারিত হারেই টাকা দিতে হচ্ছে।

এদিকে তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভিজিল্যান্স টীম এবং সংশ্লিষ্ট জোনের যৌথ উদ্যোগে বিইআরসির লাইসেন্স না থাকায় মেটাবিবি-৬ এর আওতাধীন মেসার্স শতাব্দী সিএনজি এবং মনি সিএনজির ইনলেট ব্লাভ বন্ধ করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয় এবং বিইআরসির লাইসেন্স না থাকায় ও বকেয়ার কারণে মেসার্স ঢাকা সিএনজির মিটার অপসারণ করে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

লাইসেন্স হালনাগাদ না থাকায় উত্তর বাড্ডার মক্কা সিএনজির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস গ্যাস। এছাড়া গতকাল মধ্য বাড্ডার সিটিজেন সিএনজি এবং মেটাবিবি-৫-এর অধীন ২টি সিএনজি স্টেশনের গ্যাস সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। তবে আদালতে মামলা থাকায় অন্য একজন গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করতে পারেনি তিতাস।

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৭ ভাদ্র ১৪২৯ ১৪ সফর ১৪৪৪

লাইসেন্সবিহীন সিএনজি স্টেশনের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

টাকা জমা দেয়া হলেও আপডেট করেনি তিতাস : অভিযোগ মালিক সমিতির

ফয়েজ আহমেদ তুষার

বিইআরসির লাইসেন্স নেই অথবা নবায়ন করা হয়নি, এমন অভিযোগে সিএনজি স্টেশনের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (তিতাস গ্যাস)। গতকালও অভিযান চালিয়ে শতাব্দী সিএনজি, মনি সিএনজি, মক্কা সিএনজি, ঢাকা সিএনজি, মাহতাব সিএনজিসহ বেশকিছু স্টেশনের গ্যাস লাইন কেটে দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ও তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা যায়, দেশে পাঁচ শতাধিক সিএনজি স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে অন্তত ২০০ স্টেশনের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। বার বার তাগাদা দিয়ে মালিকদের সাড়া না পাওয়ায় তিতাস অভিযান পরিচালনা করে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্শন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর গতকাল রাতে সংবাদকে বলেন, ‘অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। আমাদের অনেক স্টেশন মালিক লাইসেন্স নবায়ন করেছেন। অনেকের মেয়াদ আছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। অথচ আমাদের কাছে তিতাস গ্যাসের পাঠানো চিঠিতে এমন অনেক স্টেশনের নাম আছে, যারা লাইসেন্স নবায়ন করেছে। এসব স্টেশনে লাইন কাটতেও গেছে তিতাস।’গত ১১ আগস্ট তিতাস গ্যাসের পাঠানো এক চিঠিতে দেখা যায়, ২০টি সিএনজি স্টেশনকে লাইসেন্স নবায়ন করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। যথা সময়ে লাইসেন্স নবায়ন না করলে গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও জরিমানার কথাও বলা হয়েছে চিঠিতে।

তালিকা ধরে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান পরিচালনা করছে তিতাস। এরমধ্যে নরসিংদীর এমএমকে সিএনজি স্টেশনেও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে স্টেশন কর্মকর্তারা বাধা দেয়। তারা জানায়, তাদের লাইসেন্স নবায়ন করা আছে। এরপরও ঝামেলা করছে তিতাস। বলা হয়, তাদের হালনাগাদ তথ্য অনলাইনে নেই।

বিষয়টি জানিয়ে সিএনজি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর বলেন, ‘সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো একদমই আপডেট না। তাই এমন পরিস্থিতি হচ্ছে। আর লাইসেন্স ফি নিয়েও আপত্তি আছে। একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র করার যে লাইসেন্স ফি একই পরিমাণ টাকা সিএনজি স্টেশনের জন্যও নির্ধারিত ছিল। অনেক আপত্তির পর ২০১৬ সালে এটা কমানো হলেও, আগের বছরগুলোর জন্য পূর্ব নির্ধারিত হারেই টাকা দিতে হচ্ছে।

এদিকে তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভিজিল্যান্স টীম এবং সংশ্লিষ্ট জোনের যৌথ উদ্যোগে বিইআরসির লাইসেন্স না থাকায় মেটাবিবি-৬ এর আওতাধীন মেসার্স শতাব্দী সিএনজি এবং মনি সিএনজির ইনলেট ব্লাভ বন্ধ করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয় এবং বিইআরসির লাইসেন্স না থাকায় ও বকেয়ার কারণে মেসার্স ঢাকা সিএনজির মিটার অপসারণ করে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

লাইসেন্স হালনাগাদ না থাকায় উত্তর বাড্ডার মক্কা সিএনজির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস গ্যাস। এছাড়া গতকাল মধ্য বাড্ডার সিটিজেন সিএনজি এবং মেটাবিবি-৫-এর অধীন ২টি সিএনজি স্টেশনের গ্যাস সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। তবে আদালতে মামলা থাকায় অন্য একজন গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করতে পারেনি তিতাস।