রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ডলারের একক দাম নির্ধারণ

দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন থেকে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা হিসেবে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) সংগ্রহ করবে। রপ্তানি বিল নগদায়ন হবে প্রতি ডলার ৯৯ টাকায়। অর্থাৎ রেমিট্যান্স আহরণ ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় খরচ হবে ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করবে ব্যাংকগুলো। ফলে এলসি সেটেলমেন্টের জন্য ডলার বিক্রি হবে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সায়। এতে কিছুটা খরচ কমবে আমদানিকারকদের।

গতকাল সোনালী ব্যাংকের বোর্ড রুমে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত আসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাফেদার চেয়ারম্যান এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম, এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।

আমদানি বেড়ে যাওয়া ও আশানুরূপ প্রবাসী আয় না আসায় দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট সৃষ্টি হয়। ফলে দিন দিন বাড়তে থাকে ডলারের দাম। অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে পতন হয় টাকার মান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে ৯৫ টাকা দরে। গত বছরের আগস্টে যা ছিল ৮৫ টাকা।

তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগু?লো? ৯৫ থেকে ৯৬ টাকা ডলারের মূল্য ঘোষণা দিলেও আদমানি পর্যায়ে ডলারের দাম নিচ্ছে ১০১ থে?কে ১০৬ টাকা। আর নগদ ডলার বি?ক্রি করছে ১০৬ থে?কে ১০৮ টাকা। খোলা বাজারে ডলারের দাম ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এর আগে দে?শে খোলা বাজারে ডলার চলতি বছরের ১০ ও ১১ আগস্ট নগদ ডলার ১২০ টাকায় উঠেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ডলার বাজারের সংকট কমেনি। এবার ঠিক হয়েছে ব্যাংকগুলো নিজেই ডলারের দাম নির্ধারণ করবে। গত বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো নিজেই ডলারের দাম নির্ধারণ করবে। রেমিট্যান্স বা প্রবাসী ও রপ্তানি আয়, আমদানি বিল নিষ্পত্তিসহ প্রতিটি লেনদেনে ডলারের দাম হবে পৃথক। তবে ব্যাংকগুলো একই দামে ডলার কেনাবেচা করবে। আর কেনাবেচায় মুনাফা হবে সর্বোচ্চ ১ টাকা।

ডলারের এই দাম নিয়মিত ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাবে ব্যাংকগুলো। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা তা পর্যবেক্ষণ করবে এবং নিয়মিত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে তথ্যউপাত্ত বিনিময় করবে। ডলারের সংকট ও বাজারের অস্থিরতা কাটাতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভও ৩৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১৭৩ কোটি ডলারের বিল পরিশোধের পর গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭০৬ কোটি ডলার (৩৭ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার)। গত বছরের শেষের দিকে রিজার্ভ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার পর্যন্ত উঠেছিল।

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৮ ভাদ্র ১৪২৯ ১৫ সফর ১৪৪৪

রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ডলারের একক দাম নির্ধারণ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন থেকে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা হিসেবে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) সংগ্রহ করবে। রপ্তানি বিল নগদায়ন হবে প্রতি ডলার ৯৯ টাকায়। অর্থাৎ রেমিট্যান্স আহরণ ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় খরচ হবে ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করবে ব্যাংকগুলো। ফলে এলসি সেটেলমেন্টের জন্য ডলার বিক্রি হবে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সায়। এতে কিছুটা খরচ কমবে আমদানিকারকদের।

গতকাল সোনালী ব্যাংকের বোর্ড রুমে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত আসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাফেদার চেয়ারম্যান এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম, এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।

আমদানি বেড়ে যাওয়া ও আশানুরূপ প্রবাসী আয় না আসায় দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট সৃষ্টি হয়। ফলে দিন দিন বাড়তে থাকে ডলারের দাম। অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে পতন হয় টাকার মান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে ৯৫ টাকা দরে। গত বছরের আগস্টে যা ছিল ৮৫ টাকা।

তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগু?লো? ৯৫ থেকে ৯৬ টাকা ডলারের মূল্য ঘোষণা দিলেও আদমানি পর্যায়ে ডলারের দাম নিচ্ছে ১০১ থে?কে ১০৬ টাকা। আর নগদ ডলার বি?ক্রি করছে ১০৬ থে?কে ১০৮ টাকা। খোলা বাজারে ডলারের দাম ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এর আগে দে?শে খোলা বাজারে ডলার চলতি বছরের ১০ ও ১১ আগস্ট নগদ ডলার ১২০ টাকায় উঠেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ডলার বাজারের সংকট কমেনি। এবার ঠিক হয়েছে ব্যাংকগুলো নিজেই ডলারের দাম নির্ধারণ করবে। গত বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো নিজেই ডলারের দাম নির্ধারণ করবে। রেমিট্যান্স বা প্রবাসী ও রপ্তানি আয়, আমদানি বিল নিষ্পত্তিসহ প্রতিটি লেনদেনে ডলারের দাম হবে পৃথক। তবে ব্যাংকগুলো একই দামে ডলার কেনাবেচা করবে। আর কেনাবেচায় মুনাফা হবে সর্বোচ্চ ১ টাকা।

ডলারের এই দাম নিয়মিত ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাবে ব্যাংকগুলো। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা তা পর্যবেক্ষণ করবে এবং নিয়মিত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে তথ্যউপাত্ত বিনিময় করবে। ডলারের সংকট ও বাজারের অস্থিরতা কাটাতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভও ৩৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১৭৩ কোটি ডলারের বিল পরিশোধের পর গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭০৬ কোটি ডলার (৩৭ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার)। গত বছরের শেষের দিকে রিজার্ভ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার পর্যন্ত উঠেছিল।