ঠিকাদারের ভূমিকায় এলজিইডির প্রকৌশলীরা! প্রকল্পে বিস্তর অভিযোগ

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে নি¤œ মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার ও ভাইব্রেটর ছাড়াই গ্রেটবিম ঢালাইসহ এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন যে কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ একাধিকবার ক্রয় বিক্রয়সহ প্রকল্পের কাজ চলাকালিন তদারকি কর্তৃপক্ষের কমিশন নেয়া ও প্রকল্পস্থলে কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিত না থাকাকে দায়সাড়া কাজের জন্য দায়ী করছেন স্থানীয়রা । কোন কোন প্রকল্পে উপ-সহকারি প্রকৌশলীরা ঠিকাদারের ভূমিকায় থেকে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদেরকে সুকৌশলে বুঝিয়ে নিম্নমানের কাজ করে যেতে সহোযগিতা করেন ।

ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার গুঞ্জর খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মানে, তারার বাজার হইতে ভোলানাথ বাজার রাস্তা সম্প্রসারনের কাজে ও কাটানদী খাল খননসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ।

অভিযোগ উঠেছে গুঞ্জর খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মানে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার ও ভাইব্রেটর ছাড়াই গ্রেটবিম ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছেন । ওই ভবনের গ্রেটবিম ঢালাইয়ের শাটারিং সামগ্রী খোলার পর গ্রেটবিমের একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত দেখা গেলে স্থানীয় সমাজ সচেতনরা কর্মরত মিস্ত্রিদের কাজ নিম্নমানের হওয়ার কারন জিজ্ঞাসা করলে ঠিকাদারের লোকজনের সাথে কথা কাটা কাটি একপর্যায়ে হাতা হাতি পর্যন্ত হয় । খবর পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম পীরগাছা থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাময়িকভাবে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর বিমের ফাকা জায়গাগুলো রাতের অন্ধকারে পুরন করে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে । স্থানীয়দের দাবী কাজ চলাকালিন প্রকৌশলী অফিসের লোক তেমন থাকেন না তারা সাইটে আসলেও সাথে একজন করে বহিরাগতকে নিয়ে আসেন প্রকৌশলীরা সামান্য কয়েক মিনিট থেকে নিজেদের টি.এ/ডি.এ সহ কমিশন নিয়ে ওই বহিরাগতকে রেখে চলে যান । তারা আরো বলেন গ্রেটবিম ঢালাইয়ের সময় ভাইব্রেটর ব্যবহার না করে ঢালাই করায় বিমের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত দেখা যাচ্ছে । একইভাবে তাম্বুলপুর ইউনিয়নের তারার বাজার হইতে ভোলানাথের হাট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলো.রাস্তার দুইধারে দুই ফুট করে সম্প্রসারনসহ পুরা রাস্তা কার্পেটিংয়ের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । ওই রাস্তার কাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ ইট দুই নম্বর ছিল । বর্তমানেও দৃশ্যমান অবস্থায় আছে রাস্তার দুই ধারে রেজিং এর দুই নম্বর ইট । খোজ নিয়ে জানা যায়,উর্ধতন কোন প্রকৌশলী কোন রাস্তার কাজ দেখার জন্য আসলে তাকে দেখানো হয় পীরগাছা হতে বকসির বাজার রাস্তার চালুনিয়া হতে বকসির বাজার পর্যন্ত । ওই রাস্তার ভালো হওয়ার কারনে বার বার একই রাস্তা দেখানো হচ্ছে বলে জানা যায়। কাটানদী খাল খননের সময় স্থানীয়দের মতামতকে প্রাধন্য না দিয়ে চরম বাধাকে উপেক্ষা করে প্রয়োজন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে বিবেচনা না করে নিজেদের ইচ্ছা মত খনন করায় নদীর দুই ধারের বসবাসকারি সাধারন মানুষ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । নদী খনন করে নদীর দুই ধারে তৈরী করা হয়নি বকচর,সঠিকভাবে লাগানো হয়নি গাছের চারা ও বপন করা হয়নি কাসিয়া/কাসফুল, কিন্তু সব কিছুর বাজেট বরাদ্দ উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে পশ্চিমদেবু আমডারা এবং পাকার মাথা রাজবাড়ী এলাকায় নদীতে ভেঙ্গে পড়েছে বেশ কিছু বাড়ী ঘর, সুপাড়ীর,লিচুর বাগান, পুকুর ও কয়েকটি ব্রিজ কালভার্ট । বিচ্ছিন্ন হয়েছে মানুষের যোগাযোগ ব্যাবস্থা । এভাবে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করলে একদিকে খরচ হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমানে সরকারি টাকা, অন্য দিকে ভারি হচ্ছে প্রকৌশলীদের পকেট কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা । পীরগাছায় অগনিত প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন অনিয়মের ঘটনা ঘটছে ।

দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী আহসান হাবীব এর সংগে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিপ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি । উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন আমি শুনেছি, গ্রেটবিম ঢালাইয়ের সময় ভাইভেরেটর নষ্ট হয়েছিল । এই জন্য একটু কাজের মান খারাপ হয়েছে । ওই খানে ঠিকাদারের লোকজনের সাথে গণমাধ্যম কর্মীসহ স্থানীদের ঝগড়াঝাটি শুরু হলে মাহিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৮ ভাদ্র ১৪২৯ ১৫ সফর ১৪৪৪

ঠিকাদারের ভূমিকায় এলজিইডির প্রকৌশলীরা! প্রকল্পে বিস্তর অভিযোগ

প্রতিনিধি, পীরগাছা (রংপুর)

image

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে নি¤œ মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার ও ভাইব্রেটর ছাড়াই গ্রেটবিম ঢালাইসহ এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন যে কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ একাধিকবার ক্রয় বিক্রয়সহ প্রকল্পের কাজ চলাকালিন তদারকি কর্তৃপক্ষের কমিশন নেয়া ও প্রকল্পস্থলে কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিত না থাকাকে দায়সাড়া কাজের জন্য দায়ী করছেন স্থানীয়রা । কোন কোন প্রকল্পে উপ-সহকারি প্রকৌশলীরা ঠিকাদারের ভূমিকায় থেকে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদেরকে সুকৌশলে বুঝিয়ে নিম্নমানের কাজ করে যেতে সহোযগিতা করেন ।

ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার গুঞ্জর খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মানে, তারার বাজার হইতে ভোলানাথ বাজার রাস্তা সম্প্রসারনের কাজে ও কাটানদী খাল খননসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ।

অভিযোগ উঠেছে গুঞ্জর খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মানে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার ও ভাইব্রেটর ছাড়াই গ্রেটবিম ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছেন । ওই ভবনের গ্রেটবিম ঢালাইয়ের শাটারিং সামগ্রী খোলার পর গ্রেটবিমের একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত দেখা গেলে স্থানীয় সমাজ সচেতনরা কর্মরত মিস্ত্রিদের কাজ নিম্নমানের হওয়ার কারন জিজ্ঞাসা করলে ঠিকাদারের লোকজনের সাথে কথা কাটা কাটি একপর্যায়ে হাতা হাতি পর্যন্ত হয় । খবর পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম পীরগাছা থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাময়িকভাবে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর বিমের ফাকা জায়গাগুলো রাতের অন্ধকারে পুরন করে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে । স্থানীয়দের দাবী কাজ চলাকালিন প্রকৌশলী অফিসের লোক তেমন থাকেন না তারা সাইটে আসলেও সাথে একজন করে বহিরাগতকে নিয়ে আসেন প্রকৌশলীরা সামান্য কয়েক মিনিট থেকে নিজেদের টি.এ/ডি.এ সহ কমিশন নিয়ে ওই বহিরাগতকে রেখে চলে যান । তারা আরো বলেন গ্রেটবিম ঢালাইয়ের সময় ভাইব্রেটর ব্যবহার না করে ঢালাই করায় বিমের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত দেখা যাচ্ছে । একইভাবে তাম্বুলপুর ইউনিয়নের তারার বাজার হইতে ভোলানাথের হাট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলো.রাস্তার দুইধারে দুই ফুট করে সম্প্রসারনসহ পুরা রাস্তা কার্পেটিংয়ের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । ওই রাস্তার কাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ ইট দুই নম্বর ছিল । বর্তমানেও দৃশ্যমান অবস্থায় আছে রাস্তার দুই ধারে রেজিং এর দুই নম্বর ইট । খোজ নিয়ে জানা যায়,উর্ধতন কোন প্রকৌশলী কোন রাস্তার কাজ দেখার জন্য আসলে তাকে দেখানো হয় পীরগাছা হতে বকসির বাজার রাস্তার চালুনিয়া হতে বকসির বাজার পর্যন্ত । ওই রাস্তার ভালো হওয়ার কারনে বার বার একই রাস্তা দেখানো হচ্ছে বলে জানা যায়। কাটানদী খাল খননের সময় স্থানীয়দের মতামতকে প্রাধন্য না দিয়ে চরম বাধাকে উপেক্ষা করে প্রয়োজন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে বিবেচনা না করে নিজেদের ইচ্ছা মত খনন করায় নদীর দুই ধারের বসবাসকারি সাধারন মানুষ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । নদী খনন করে নদীর দুই ধারে তৈরী করা হয়নি বকচর,সঠিকভাবে লাগানো হয়নি গাছের চারা ও বপন করা হয়নি কাসিয়া/কাসফুল, কিন্তু সব কিছুর বাজেট বরাদ্দ উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে পশ্চিমদেবু আমডারা এবং পাকার মাথা রাজবাড়ী এলাকায় নদীতে ভেঙ্গে পড়েছে বেশ কিছু বাড়ী ঘর, সুপাড়ীর,লিচুর বাগান, পুকুর ও কয়েকটি ব্রিজ কালভার্ট । বিচ্ছিন্ন হয়েছে মানুষের যোগাযোগ ব্যাবস্থা । এভাবে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করলে একদিকে খরচ হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমানে সরকারি টাকা, অন্য দিকে ভারি হচ্ছে প্রকৌশলীদের পকেট কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা । পীরগাছায় অগনিত প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন অনিয়মের ঘটনা ঘটছে ।

দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী আহসান হাবীব এর সংগে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিপ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি । উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন আমি শুনেছি, গ্রেটবিম ঢালাইয়ের সময় ভাইভেরেটর নষ্ট হয়েছিল । এই জন্য একটু কাজের মান খারাপ হয়েছে । ওই খানে ঠিকাদারের লোকজনের সাথে গণমাধ্যম কর্মীসহ স্থানীদের ঝগড়াঝাটি শুরু হলে মাহিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।