তরুণদের উচ্চমানের শিক্ষায় গড়ে তোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের জন্য জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, তিনি চান যে তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে উচ্চমানের শিক্ষায় প্রস্তুত হোক।

তিনি বলেন, ‘একটি জাতির জন্য যুবসমাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি চাই যুবকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষেত্রে উচ্চমানের হোক। আমাদের যুবসমাজ আমাদের জন্য একটি বড় শক্তি এবং তারাই বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত দ্বিতীয়বারের মতো ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে এবং সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়া এবং তরুণরাই সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে, কারণ তারাই ২০৪১ সালের মূল স্থপতি।

তিনি বলেন, এই দেশটা এগিয়ে যাবে, শত বাধা অতিক্রম করে। পৃথিবীর অনেক দেশ এখন বয়োবৃদ্ধদের দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা সেটা হতে চাই না। কাজেই আমাদের এই যুবসমাজই পারবে বাংলাদেশটাকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে।

যুবসমাজ সেবক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে এমন আশা পোষণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুবসমাজ মানুষের সেবক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে, নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করবে, পরিবারকে সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসমাজকে সুশিক্ষিত করতে ক্ষমতায় এসেই কাজ শুরু করে আওয়ামী লীগ। করোনার মাঝে যুবসমাজই সবার আগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা পুরো জাতির জন্য উৎসাহের কারণ। শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক যুবসমাজের উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ থেকে যুবকদের জন্য কিছু অংশ পাঠ করেন শেখ হাসিনা। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অন্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তৃণমূলে শিক্ষা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও জাতি গঠনমূলক কর্মকা-ে অবদানের জন্য ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’প্রাপ্ত যুবকদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে যুবসমাজ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আমি আশা করি আগামী প্রজন্ম তাদের কর্মকা-ের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হবে এবং জাতি গঠনমূলক কর্মকা-ে নিজেদের নিয়োজিত করবে।’

তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গ স্মরণ করেন, কোভিড-১৯ মহামারীর শীর্ষ সময়ে যখন ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অনেকে নিকটাত্মীয়দের মৃতদেহ ছেড়ে চলে গিয়েছিল তখন বিপুল সংখ্যক যুবক জনসাধারণকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল।

তরুণরাই বাংলাদেশের প্রধান সম্পদ এবং তারাই দেশ গড়বে বলে বঙ্গবন্ধুর একটি মন্তব্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের উপযোগী করে তরুণ প্রজন্মকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বিজয়ীদের হাতে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ তুলে দেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন স্বাগত বক্তৃতা করেন।

পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদের ক্রেস্ট, সনদপত্র এবং এক লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে মো. মাসুদ আলম ও মেঘনা খাতুন অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। শেখ হাসিনার বিভিন্ন মানবিক কর্মকা-ের ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৮ ভাদ্র ১৪২৯ ১৫ সফর ১৪৪৪

শেখ হাসিনা-ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড

তরুণদের উচ্চমানের শিক্ষায় গড়ে তোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের জন্য জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, তিনি চান যে তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে উচ্চমানের শিক্ষায় প্রস্তুত হোক।

তিনি বলেন, ‘একটি জাতির জন্য যুবসমাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি চাই যুবকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষেত্রে উচ্চমানের হোক। আমাদের যুবসমাজ আমাদের জন্য একটি বড় শক্তি এবং তারাই বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত দ্বিতীয়বারের মতো ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে এবং সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়া এবং তরুণরাই সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে, কারণ তারাই ২০৪১ সালের মূল স্থপতি।

তিনি বলেন, এই দেশটা এগিয়ে যাবে, শত বাধা অতিক্রম করে। পৃথিবীর অনেক দেশ এখন বয়োবৃদ্ধদের দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা সেটা হতে চাই না। কাজেই আমাদের এই যুবসমাজই পারবে বাংলাদেশটাকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে।

যুবসমাজ সেবক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে এমন আশা পোষণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুবসমাজ মানুষের সেবক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে, নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করবে, পরিবারকে সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসমাজকে সুশিক্ষিত করতে ক্ষমতায় এসেই কাজ শুরু করে আওয়ামী লীগ। করোনার মাঝে যুবসমাজই সবার আগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা পুরো জাতির জন্য উৎসাহের কারণ। শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক যুবসমাজের উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ থেকে যুবকদের জন্য কিছু অংশ পাঠ করেন শেখ হাসিনা। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অন্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তৃণমূলে শিক্ষা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও জাতি গঠনমূলক কর্মকা-ে অবদানের জন্য ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’প্রাপ্ত যুবকদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে যুবসমাজ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আমি আশা করি আগামী প্রজন্ম তাদের কর্মকা-ের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হবে এবং জাতি গঠনমূলক কর্মকা-ে নিজেদের নিয়োজিত করবে।’

তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গ স্মরণ করেন, কোভিড-১৯ মহামারীর শীর্ষ সময়ে যখন ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অনেকে নিকটাত্মীয়দের মৃতদেহ ছেড়ে চলে গিয়েছিল তখন বিপুল সংখ্যক যুবক জনসাধারণকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল।

তরুণরাই বাংলাদেশের প্রধান সম্পদ এবং তারাই দেশ গড়বে বলে বঙ্গবন্ধুর একটি মন্তব্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের উপযোগী করে তরুণ প্রজন্মকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বিজয়ীদের হাতে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ তুলে দেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন স্বাগত বক্তৃতা করেন।

পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদের ক্রেস্ট, সনদপত্র এবং এক লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে মো. মাসুদ আলম ও মেঘনা খাতুন অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। শেখ হাসিনার বিভিন্ন মানবিক কর্মকা-ের ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।