ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি আইন আরও কড়াকড়ি করা হচ্ছে

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইন সংশোধন করে আরও কঠোর করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন আইনের সংশোধিত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। নতুন আইনটি তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইন-২০২২ নামে অভিহিত হবে। অবশ্য নতুন সংশোধিত আইনটি নিয়ে ইতোমধ্যে মিশ্র আলোচনা শুরু হয়েছে।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ভ্র্যাম্যমাণ দোকানে বা ফেরি করে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলাধূলার স্থান, শিশুপার্ক ইত্যাদি সীমানার মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ। এর ফলে কোন ব্যক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলাধূলার স্থান ও শিশুপার্কের সীমানার ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে পারবে না। কোন ব্যক্তি নতুন আইনটি অমান্য করলে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। শুধু তাই না, দ্বিতীয়বার একই ধরনের অপরাধ করলে তার দ্বিগুণ দন্ড হবে।

নতুন আইনে কোন ব্যক্তি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লাইসেন্স ব্যতীত তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে পারবে না। এই আইন লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয় বার বা বার বার এই ধরনের অপরাধ করলে পর্যায়ক্রমে দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডিত হবে। কোন ব্যক্তি ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম, যন্ত্রাংশ বা অংশবিশেষ (ই-সিগারেট, ভ্যাপ, ভ্যাপিং ভ্যাপার ইত্যাদি) হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্টস, হিট নট বার্ন এবং ওরাল নিকোটিন পাউচ যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, সংরক্ষণ, বিজ্ঞাপন, প্রচার-প্রচারণা, প্রণোদনা, পৃষ্ঠপোষক, বিপণন, বিতরণ, কেনাবেচা ও পরিবহন করতে পারবে না। এই বিধান লঙ্ঘন করলে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনরায় একই ধরনের অপরাধ করলে দণ্ডের দ্বিণ হারে দণ্ডিত হবেন।

বিড়ি নিষিদ্ধ : কুম্ভি পাতা, টেণ্ড পাতা বা অন্য কোন গাছের পাতা দ্বারা মোড়ানো বিড়ি উৎপাদন, আমদানি, মজুদ, বিপণ, বিতরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও কেনাবেচা করা নিষিদ্ধ হচ্ছে। এ আইন অমান্য করলে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তামাকজাত দব্যের সঙ্গে মিষ্টি দ্রব্য, মশলা, সুগন্ধি (ফ্লেভার), আসক্তিমূলক দ্রব্য, রঙ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে। কোন ব্যক্তি এই আইন লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। দ্বিতীয়বার বা পুনরায় একই অপরাধ করলে পর্যায়ক্রমে দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডিত হবে।

কোন ব্যক্তি তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদনকারী কোম্পানি তামাক আইন লঙ্ঘন করলে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

এইভাবে তামাকজাত দ্রব্য আইনকে আরও কঠোর করে নতুন খসড়া তৈরি করা হয়েছে। টার্গেট দেশকে তামাকমুক্ত করা।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বনয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকারের লেখা এক প্রতিবেদনে বলা হয় তামাক হচ্ছে একটি উদ্ভিদজাত ভেষজ পণ্য। যার মধ্যে ব্যাপক ক্ষতির উপাদান রয়েছে। তামাকের উৎপাদন (চাষ ও চুল্লিতে তামাক পাতা শুকানো) প্রক্রিয়াজাতকরণ (কারখানায় ধূমপানের উপাদান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক তৈরি) ও সেবন। যার সব প্রক্রিয়াতেই জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

তামাক ব্যবহার বিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়ায় ৭ হাজারেরও বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ আছে। যার মধ্যে অন্তত ২৫০টি রাসায়নিক মারাত্মক ক্ষতিকর। আর ৭০টির বেশি রাসায়নিক মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ, সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। হৃদরোগ, স্ট্রোক, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি অসংক্রমক রোগে আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে বছরে ৮০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্যে ১২ লাখ অধূমপায়ী পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। যার অধিকাংশই শিশু ও নারী।

আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি ও ভাইটাল স্ট্রাটেজিকের বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিবেদনে টোব্যাকো এটলাস ২০১৮ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায়।

বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ, আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি ও ক্যানসার রিসার্চ-ইউকের সঙ্গে যৌথ গবেষণায়র তথ্য মতে, সরকার সব তামাক থেকে যত রাজস্ব পায় তার চাইতে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে সংবাদকে জানান, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইন অধিকতর সংশোধনীর প্রস্তাবে কয়েকটি ধারায় বলা হয়েছে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা, ধূমপান এলাকা ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা ও পাবলিক প্লেসের সংজ্ঞায় চায়ের দোকান অন্তর্ভুক্ত করা ও কারাদণ্ডেরে বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই আইনের কারণে রাজস্ব আদায়ে সমস্যা হবে। এতে প্রতি বছর কমপক্ষে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে। ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি বিষয়টি বৃহৎ করদাতা ইউনিটকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। তারা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। আর বাংলাদেশে সিগারেট খাতে ক্ষুদ্র ও খুচরা ব্যবসায়ী প্রায় ১৫ লাখ দোকানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রায় ৮০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবিকার ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

তাই লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হোল্ডিং নম্বরের অভাবে লাইসেন্স গ্রহণ করতে পারবে না। ফলে তারা কর্মসংস্থান হারাবে। আর তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো দরিদ্র হয়ে পড়বে।

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৮ ভাদ্র ১৪২৯ ১৫ সফর ১৪৪৪

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি আইন আরও কড়াকড়ি করা হচ্ছে

বাকী বিল্লাহ

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইন সংশোধন করে আরও কঠোর করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন আইনের সংশোধিত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। নতুন আইনটি তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইন-২০২২ নামে অভিহিত হবে। অবশ্য নতুন সংশোধিত আইনটি নিয়ে ইতোমধ্যে মিশ্র আলোচনা শুরু হয়েছে।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ভ্র্যাম্যমাণ দোকানে বা ফেরি করে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলাধূলার স্থান, শিশুপার্ক ইত্যাদি সীমানার মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ। এর ফলে কোন ব্যক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলাধূলার স্থান ও শিশুপার্কের সীমানার ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে পারবে না। কোন ব্যক্তি নতুন আইনটি অমান্য করলে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। শুধু তাই না, দ্বিতীয়বার একই ধরনের অপরাধ করলে তার দ্বিগুণ দন্ড হবে।

নতুন আইনে কোন ব্যক্তি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লাইসেন্স ব্যতীত তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে পারবে না। এই আইন লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয় বার বা বার বার এই ধরনের অপরাধ করলে পর্যায়ক্রমে দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডিত হবে। কোন ব্যক্তি ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম, যন্ত্রাংশ বা অংশবিশেষ (ই-সিগারেট, ভ্যাপ, ভ্যাপিং ভ্যাপার ইত্যাদি) হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্টস, হিট নট বার্ন এবং ওরাল নিকোটিন পাউচ যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, সংরক্ষণ, বিজ্ঞাপন, প্রচার-প্রচারণা, প্রণোদনা, পৃষ্ঠপোষক, বিপণন, বিতরণ, কেনাবেচা ও পরিবহন করতে পারবে না। এই বিধান লঙ্ঘন করলে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনরায় একই ধরনের অপরাধ করলে দণ্ডের দ্বিণ হারে দণ্ডিত হবেন।

বিড়ি নিষিদ্ধ : কুম্ভি পাতা, টেণ্ড পাতা বা অন্য কোন গাছের পাতা দ্বারা মোড়ানো বিড়ি উৎপাদন, আমদানি, মজুদ, বিপণ, বিতরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও কেনাবেচা করা নিষিদ্ধ হচ্ছে। এ আইন অমান্য করলে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তামাকজাত দব্যের সঙ্গে মিষ্টি দ্রব্য, মশলা, সুগন্ধি (ফ্লেভার), আসক্তিমূলক দ্রব্য, রঙ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে। কোন ব্যক্তি এই আইন লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। দ্বিতীয়বার বা পুনরায় একই অপরাধ করলে পর্যায়ক্রমে দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডিত হবে।

কোন ব্যক্তি তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদনকারী কোম্পানি তামাক আইন লঙ্ঘন করলে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

এইভাবে তামাকজাত দ্রব্য আইনকে আরও কঠোর করে নতুন খসড়া তৈরি করা হয়েছে। টার্গেট দেশকে তামাকমুক্ত করা।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বনয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকারের লেখা এক প্রতিবেদনে বলা হয় তামাক হচ্ছে একটি উদ্ভিদজাত ভেষজ পণ্য। যার মধ্যে ব্যাপক ক্ষতির উপাদান রয়েছে। তামাকের উৎপাদন (চাষ ও চুল্লিতে তামাক পাতা শুকানো) প্রক্রিয়াজাতকরণ (কারখানায় ধূমপানের উপাদান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক তৈরি) ও সেবন। যার সব প্রক্রিয়াতেই জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

তামাক ব্যবহার বিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়ায় ৭ হাজারেরও বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ আছে। যার মধ্যে অন্তত ২৫০টি রাসায়নিক মারাত্মক ক্ষতিকর। আর ৭০টির বেশি রাসায়নিক মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ, সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। হৃদরোগ, স্ট্রোক, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি অসংক্রমক রোগে আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে বছরে ৮০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্যে ১২ লাখ অধূমপায়ী পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। যার অধিকাংশই শিশু ও নারী।

আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি ও ভাইটাল স্ট্রাটেজিকের বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিবেদনে টোব্যাকো এটলাস ২০১৮ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায়।

বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ, আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি ও ক্যানসার রিসার্চ-ইউকের সঙ্গে যৌথ গবেষণায়র তথ্য মতে, সরকার সব তামাক থেকে যত রাজস্ব পায় তার চাইতে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে সংবাদকে জানান, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইন অধিকতর সংশোধনীর প্রস্তাবে কয়েকটি ধারায় বলা হয়েছে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা, ধূমপান এলাকা ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা ও পাবলিক প্লেসের সংজ্ঞায় চায়ের দোকান অন্তর্ভুক্ত করা ও কারাদণ্ডেরে বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই আইনের কারণে রাজস্ব আদায়ে সমস্যা হবে। এতে প্রতি বছর কমপক্ষে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে। ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি বিষয়টি বৃহৎ করদাতা ইউনিটকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। তারা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। আর বাংলাদেশে সিগারেট খাতে ক্ষুদ্র ও খুচরা ব্যবসায়ী প্রায় ১৫ লাখ দোকানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রায় ৮০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবিকার ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

তাই লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হোল্ডিং নম্বরের অভাবে লাইসেন্স গ্রহণ করতে পারবে না। ফলে তারা কর্মসংস্থান হারাবে। আর তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো দরিদ্র হয়ে পড়বে।