শিক্ষার্থী নিহত, নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ

আবারও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার বিজিপ্রেসের সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় আলী হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় এ বিক্ষোভ করা হয়। গতকাল বেলা ১১টার দিকে ফার্মগেটের মূলসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর বিজয় সরণি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। একইসঙ্গে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়।

আজ বেলা ১২টার দিকে সড়কে নামার কথা রয়েছে শিক্ষার্থীদের। বিক্ষোভ থেকে আলী হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় সর্বোচ্চ বিচারও দাবি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আলী হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক মাইক্রোবাস চালক জিয়াউল হককে (৫০) আশুলিয়ার বিশ মাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় ফার্মগেট ও বিজয় সরণিসহ আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক। চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন স্কুল-কলেজগুলোর শিক্ষক ও পুলিশ টানা দুই ঘণ্টা সড়কে অবস্থানের পর নিজেরাই সরে যান শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল ও সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও তেজগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ আশপাশের বেশকয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস; আমার ভাই মরলো কেন? প্রশাসন জবাব চাই; নিরাপদ সড়কের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে’ ’৭১-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, আর কত মায়ের বুক খালি হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হবে। আর কতজন আলী হোসেন মারা গেলে নিরাপদে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারব। শুধু আলী হোসেনের বিচারের দাবিতে নয়, দেশের সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি। তারা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আজ দুপুর ১২টা থেকে তারা একত্রিত হয়ে সড়কে অবস্থান নেবেন বলে জানান।

তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজিম খান রুবেল বলেন, আমাদের কলেজের স্কুলের সামনে দিয়ে যত্রতত্রভাবে গাড়ি চলাচল করে। অনেক গতিতে গাড়ি চলাচল করলেও পুলিশ কখনও ব্যবস্থা নেয়নি। আমার এক সহপাঠী খুন হলো। বিচার কখনও হয় না। তাই বিচারের দাবিতে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি। গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রনি বলেন, আমরা চাই নিরাপদ সড়ক। শুধু আমাদের সহপাঠী কেন, কোন শিক্ষার্থীর যেন সড়কে নির্মমভাবে মৃত্যু না হয় সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের। এ বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রোবায়েত হাসান বলেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ঘাতক চালক গ্রেপ্তার-গত রোববার সকালে রাস্তা পারাপারের সময় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলী হোসেন নিহতের ঘটনায় ঘাতক চালক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে আশুলিয়ার বিশ মাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক জানান, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সোয়া ৭টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন বিজিপ্রেসের সামনে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আলী হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা ও পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেল কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় রোববার রাতেই তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ঘাতক চালক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, দুর্ঘটনা বুঝতে পেরে পুলিশের থামার সিগন্যাল অমান্য করে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যান মাইক্রোবাসের চালক জিয়াউল। রুট পরিবর্তন করে মাইক্রোবাস নিয়ে আশুলিয়ায় চলে যান। সেখানে তিনি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকেন। একপর্যায়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন তিনি। উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক জানান, দুর্ঘটনার পর ৩৭টি সিটি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনার পর মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর চালকের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিসি আজিমুল হক বলেন, গাড়ির মালিকের কর্মস্থল ঢাকায়। তিনি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করেন। এ সময় গাড়িটি সাভারে তার পারিবারিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। চালক আশুলিয়ায় থাকেন। তিনি মালিককে পিক করতে রোববার এখানে আসেন। এদিকে জব্দ করা মাইক্রোবাসটিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড লেখা স্টিকার ছিল। এ বিষয়ে ডিসি আজিমুলকে প্রশ্ন করা হলে আজিমুল বলেন, অনেকেই সাংবাদিক বা পুলিশ না হয়েও সাংবাদিক বা পুলিশ লেখা স্টিকার গাড়িতে ব্যবহার করেন। আমরা তদন্ত করে দেখব মাইক্রোবাসের মালিক আসলে কে। কারণ গ্রেপ্তার চালক জিয়া একেক সময় একেক ধরনের তথ্য দিচ্ছেন। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছি। সেটা সঠিক কি-না তাও খতিয়ে দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবি গণবিক্ষোভে পরিণত হয়। ওই বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং ৯ দফা দাবি জানানো হয়। এছাড়া ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ সিটির ময়লার গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান নিহত হলে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আবারও সরব হয়। একই মাসে এক সপ্তাহ না পেরোতেই রামপুরায় অনাবিল পরিবহনের বাসের ধাক্কায় নিহত মাইনুদ্দীন ইসলাম নামের এক এসএসসি শিক্ষার্থী নিহত হয়। তখনও নিরাপদ সড়কের জন্য ৯ দফা দাবি নিয়ে লাগাতার বিক্ষোভে নামে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৯ ভাদ্র ১৪২৯ ১৬ সফর ১৪৪৪

শিক্ষার্থী নিহত, নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

শিক্ষার্থী আলী হোসেন নিহতের ঘটনায় ফের নিরাপদ সড়কের দাবিতে গতকাল তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে -সংবাদ

আবারও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার বিজিপ্রেসের সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় আলী হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় এ বিক্ষোভ করা হয়। গতকাল বেলা ১১টার দিকে ফার্মগেটের মূলসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর বিজয় সরণি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। একইসঙ্গে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়।

আজ বেলা ১২টার দিকে সড়কে নামার কথা রয়েছে শিক্ষার্থীদের। বিক্ষোভ থেকে আলী হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় সর্বোচ্চ বিচারও দাবি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আলী হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক মাইক্রোবাস চালক জিয়াউল হককে (৫০) আশুলিয়ার বিশ মাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় ফার্মগেট ও বিজয় সরণিসহ আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক। চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন স্কুল-কলেজগুলোর শিক্ষক ও পুলিশ টানা দুই ঘণ্টা সড়কে অবস্থানের পর নিজেরাই সরে যান শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল ও সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও তেজগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ আশপাশের বেশকয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস; আমার ভাই মরলো কেন? প্রশাসন জবাব চাই; নিরাপদ সড়কের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে’ ’৭১-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, আর কত মায়ের বুক খালি হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হবে। আর কতজন আলী হোসেন মারা গেলে নিরাপদে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারব। শুধু আলী হোসেনের বিচারের দাবিতে নয়, দেশের সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি। তারা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আজ দুপুর ১২টা থেকে তারা একত্রিত হয়ে সড়কে অবস্থান নেবেন বলে জানান।

তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজিম খান রুবেল বলেন, আমাদের কলেজের স্কুলের সামনে দিয়ে যত্রতত্রভাবে গাড়ি চলাচল করে। অনেক গতিতে গাড়ি চলাচল করলেও পুলিশ কখনও ব্যবস্থা নেয়নি। আমার এক সহপাঠী খুন হলো। বিচার কখনও হয় না। তাই বিচারের দাবিতে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি। গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রনি বলেন, আমরা চাই নিরাপদ সড়ক। শুধু আমাদের সহপাঠী কেন, কোন শিক্ষার্থীর যেন সড়কে নির্মমভাবে মৃত্যু না হয় সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের। এ বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রোবায়েত হাসান বলেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ঘাতক চালক গ্রেপ্তার-গত রোববার সকালে রাস্তা পারাপারের সময় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলী হোসেন নিহতের ঘটনায় ঘাতক চালক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে আশুলিয়ার বিশ মাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক জানান, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সোয়া ৭টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন বিজিপ্রেসের সামনে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আলী হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা ও পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেল কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় রোববার রাতেই তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ঘাতক চালক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, দুর্ঘটনা বুঝতে পেরে পুলিশের থামার সিগন্যাল অমান্য করে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যান মাইক্রোবাসের চালক জিয়াউল। রুট পরিবর্তন করে মাইক্রোবাস নিয়ে আশুলিয়ায় চলে যান। সেখানে তিনি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকেন। একপর্যায়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন তিনি। উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক জানান, দুর্ঘটনার পর ৩৭টি সিটি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনার পর মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর চালকের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিসি আজিমুল হক বলেন, গাড়ির মালিকের কর্মস্থল ঢাকায়। তিনি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করেন। এ সময় গাড়িটি সাভারে তার পারিবারিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। চালক আশুলিয়ায় থাকেন। তিনি মালিককে পিক করতে রোববার এখানে আসেন। এদিকে জব্দ করা মাইক্রোবাসটিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড লেখা স্টিকার ছিল। এ বিষয়ে ডিসি আজিমুলকে প্রশ্ন করা হলে আজিমুল বলেন, অনেকেই সাংবাদিক বা পুলিশ না হয়েও সাংবাদিক বা পুলিশ লেখা স্টিকার গাড়িতে ব্যবহার করেন। আমরা তদন্ত করে দেখব মাইক্রোবাসের মালিক আসলে কে। কারণ গ্রেপ্তার চালক জিয়া একেক সময় একেক ধরনের তথ্য দিচ্ছেন। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছি। সেটা সঠিক কি-না তাও খতিয়ে দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবি গণবিক্ষোভে পরিণত হয়। ওই বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং ৯ দফা দাবি জানানো হয়। এছাড়া ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ সিটির ময়লার গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান নিহত হলে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আবারও সরব হয়। একই মাসে এক সপ্তাহ না পেরোতেই রামপুরায় অনাবিল পরিবহনের বাসের ধাক্কায় নিহত মাইনুদ্দীন ইসলাম নামের এক এসএসসি শিক্ষার্থী নিহত হয়। তখনও নিরাপদ সড়কের জন্য ৯ দফা দাবি নিয়ে লাগাতার বিক্ষোভে নামে শিক্ষার্থীরা।