ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা

বর্তমান আবহাওয়া, তাপমাত্রা ও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিশ মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযোগী। মশা দমনে দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

পুরো সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। এখনই এডিশ মশা দমনে কার্যক্রম হাতে না নিলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকবে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন।

অপরদিকে শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ বছর ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও ভর্তি আছে ২৭ শিশু।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সী অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ৩৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৪ জন।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ১ হাজার ১১২ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল সকাল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে মোট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯ হাজার ৯৫ জন। তার মধ্যে ঢাকায় ৭ হাজার ২৯৯ জন ও ঢাকার বাহিরে ১ হাজার ৭৯৬ জন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন মোট ৭ হাজার ৯৪৬ জন আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৩৭ জন মারা গেছেন।

সিনিয়র কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ খলিলুর রহমান জানান, বর্তমান আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত এডিশ মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযোগী। এডিশ মশা ও মশার লার্ভা দমনে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়াই বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী। এ মুহূর্তে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। যা পুরো সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত থাকতে পারে। তাই এখন মশা দমন ও লার্ভা নিধনের ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডেঙ্গুতে শিশু রোগী বাড়ছে। শিশু হাসপাতালে এখনও ২৭ জন শিশু ভর্তি আছে। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৫৯ জন শিশু ভর্তি হয়েছিল। তার মধ্যে ৭ জন শিশু মারা গেছেন।

এ বিশেষজ্ঞের মতে, জরুরি ভিত্তিতে মশা নিধন করতে হবে। না হয় থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিশ মশার উপদ্রব বাড়তে থাকবে। এ মুহূর্তে শিশুদেরকে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে দিতে হবে। বাড়ির ভিতর যাতে পানি জমে না থাকে তার জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।

আর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে প্রথম দিনে ডেঙ্গুটেস্ট করতে হবে। ডেঙ্গুজ্বর নিশ্চিত হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এছাড়াও আক্রান্ত শিশুদেরকে প্রচুর পরিমাণ পানি ও তরল খাবার, পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। শরবত ও ডাবের পানি খাওয়াতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমি) একেএম মোশাররফ হোসেন জানান, এখন ডেঙ্গুজ্বরের পাশাপাশি করোনাও বাড়তে শুরু করেছে। দুইটি ভাইরাস। তবে সিনড্রম আলাদা। সতর্কতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ডা. দেবব্রত বনিক বলেন, ডেঙ্গুর সঙ্গে কোভিডও বাড়ছে। মানুষ বিধি-নিষেধ মানছে না। বৃষ্টির কারণে মশা বাড়ছে। জমে থাকা বদ্ধ পানিতে মশা বংশ বিস্তার ও প্রজনন হচ্ছে। আক্রান্তদের শরীর যাতে পানি শূন্য না হয় তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। রক্ত জমাট বাঁধলে সমস্যা আছে।

হাসপাতালের তথ্য মতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৭ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৫ জন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২২ জন, হলিফ্যামিলি হাসপাতালে ১০ জন ভর্তি হয়েছে। এভাবে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অনেকেই ভর্তি আছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই ডেঙ্গু ফিবারে আক্রান্ত। ডেঙ্গু হেমোরোজিক ও ডেঙ্গু শক্ সিনড্রমে আক্রান্ত সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

ডেঙ্গু প্রতিবেদনের এক তথ্যে বলা হয়েছে, চলতি মাসের গত ১২ দিনে ২ হাজার ৯১৪ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে ১৬ জন মারা গেছেন। গত আগস্ট মাসে ৩৫শ’ ২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মারা গেছে ১১ জন।

চলতি মাসে শুধু বাড়ছে। সরকারি হিসেবে এ তথ্য জানা গেলেও যারা বাসা-বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের হিসাব পাওয়া গেলে সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।

আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। সর্বশেষ নুরুল আবছার (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ওই যুবক। তার বাড়ি টেকনাফে। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।

এর মধ্যে ২২ জনই রোহিঙ্গা ও ২ জন স্থানীয়। মৃত ২৪ জনের মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানীয় ২ জনসহ মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৫৩৪ জন। আর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তির রোগীর সংখ্যা ৭১২ জন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কক্সবাজার শহর ও রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। সেপ্টেম্বর মাস খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। যে বাসায় রোগী থাকে তার আশপাশের এলাকার মশানাশক ওষুধ ছিটানোর পরামর্শ দেন তিনি।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, কক্সবাজারে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৯৬ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ৭৪১ জন এবং রোহিঙ্গা ১২ হাজার ৬৫৪ জন।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোমিনুর রহমান জানান, বর্তমানে সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫২ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ পর্যন্ত ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৭১২ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ৫২৬ জন ও রোহিঙ্গা ১৮৬ জন। ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ১২ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ১০ জন রোহিঙ্গা।

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২৯ ভাদ্র ১৪২৯ ১৬ সফর ১৪৪৪

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা

বাকী বিল্লাহ

image

কক্সবাজার : ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে, রোগী ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন হাসপাতালে -সংবাদ

বর্তমান আবহাওয়া, তাপমাত্রা ও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিশ মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযোগী। মশা দমনে দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

পুরো সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। এখনই এডিশ মশা দমনে কার্যক্রম হাতে না নিলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকবে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন।

অপরদিকে শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ বছর ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও ভর্তি আছে ২৭ শিশু।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সী অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ৩৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৪ জন।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ১ হাজার ১১২ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল সকাল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে মোট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯ হাজার ৯৫ জন। তার মধ্যে ঢাকায় ৭ হাজার ২৯৯ জন ও ঢাকার বাহিরে ১ হাজার ৭৯৬ জন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন মোট ৭ হাজার ৯৪৬ জন আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৩৭ জন মারা গেছেন।

সিনিয়র কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ খলিলুর রহমান জানান, বর্তমান আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত এডিশ মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযোগী। এডিশ মশা ও মশার লার্ভা দমনে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়াই বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী। এ মুহূর্তে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। যা পুরো সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত থাকতে পারে। তাই এখন মশা দমন ও লার্ভা নিধনের ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডেঙ্গুতে শিশু রোগী বাড়ছে। শিশু হাসপাতালে এখনও ২৭ জন শিশু ভর্তি আছে। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৫৯ জন শিশু ভর্তি হয়েছিল। তার মধ্যে ৭ জন শিশু মারা গেছেন।

এ বিশেষজ্ঞের মতে, জরুরি ভিত্তিতে মশা নিধন করতে হবে। না হয় থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিশ মশার উপদ্রব বাড়তে থাকবে। এ মুহূর্তে শিশুদেরকে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে দিতে হবে। বাড়ির ভিতর যাতে পানি জমে না থাকে তার জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।

আর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে প্রথম দিনে ডেঙ্গুটেস্ট করতে হবে। ডেঙ্গুজ্বর নিশ্চিত হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এছাড়াও আক্রান্ত শিশুদেরকে প্রচুর পরিমাণ পানি ও তরল খাবার, পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। শরবত ও ডাবের পানি খাওয়াতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমি) একেএম মোশাররফ হোসেন জানান, এখন ডেঙ্গুজ্বরের পাশাপাশি করোনাও বাড়তে শুরু করেছে। দুইটি ভাইরাস। তবে সিনড্রম আলাদা। সতর্কতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ডা. দেবব্রত বনিক বলেন, ডেঙ্গুর সঙ্গে কোভিডও বাড়ছে। মানুষ বিধি-নিষেধ মানছে না। বৃষ্টির কারণে মশা বাড়ছে। জমে থাকা বদ্ধ পানিতে মশা বংশ বিস্তার ও প্রজনন হচ্ছে। আক্রান্তদের শরীর যাতে পানি শূন্য না হয় তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। রক্ত জমাট বাঁধলে সমস্যা আছে।

হাসপাতালের তথ্য মতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৭ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৫ জন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২২ জন, হলিফ্যামিলি হাসপাতালে ১০ জন ভর্তি হয়েছে। এভাবে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অনেকেই ভর্তি আছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই ডেঙ্গু ফিবারে আক্রান্ত। ডেঙ্গু হেমোরোজিক ও ডেঙ্গু শক্ সিনড্রমে আক্রান্ত সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

ডেঙ্গু প্রতিবেদনের এক তথ্যে বলা হয়েছে, চলতি মাসের গত ১২ দিনে ২ হাজার ৯১৪ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে ১৬ জন মারা গেছেন। গত আগস্ট মাসে ৩৫শ’ ২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মারা গেছে ১১ জন।

চলতি মাসে শুধু বাড়ছে। সরকারি হিসেবে এ তথ্য জানা গেলেও যারা বাসা-বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের হিসাব পাওয়া গেলে সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।

আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। সর্বশেষ নুরুল আবছার (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ওই যুবক। তার বাড়ি টেকনাফে। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।

এর মধ্যে ২২ জনই রোহিঙ্গা ও ২ জন স্থানীয়। মৃত ২৪ জনের মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানীয় ২ জনসহ মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৫৩৪ জন। আর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তির রোগীর সংখ্যা ৭১২ জন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কক্সবাজার শহর ও রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। সেপ্টেম্বর মাস খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। যে বাসায় রোগী থাকে তার আশপাশের এলাকার মশানাশক ওষুধ ছিটানোর পরামর্শ দেন তিনি।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, কক্সবাজারে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৯৬ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ৭৪১ জন এবং রোহিঙ্গা ১২ হাজার ৬৫৪ জন।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোমিনুর রহমান জানান, বর্তমানে সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫২ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ পর্যন্ত ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৭১২ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ৫২৬ জন ও রোহিঙ্গা ১৮৬ জন। ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ১২ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ১০ জন রোহিঙ্গা।