এবার ওএমএসে প্যাকেটজাত আটা বিক্রির পরিকল্পনা

আগামী ১ অক্টোবর থেকে সরকারের খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রমে আটা প্যাকেটে বিক্রি করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ওএমএসে আটা প্যাকেট করে বিক্রির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে দাম একটু বেশি পড়তে পারে, দুই কেজির প্যাকেট করা হবে। তবে, বাজারে আটা যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তার অর্ধেক দামে বিক্রি করা হবে।’

গতকাল সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ এ তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাস আর সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

মন্ত্রী বলেন, ‘গম শিপিং শুরু হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে খোলা বাজারে আটা বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে। সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে যেসব ডিলার আছে তাদের এক টন করে আটা দেয়া হবে। আমাদের অনেক বড় পরিবার। খাদ্য অধিদপ্তর বা খাদ্য কর্মকর্তা উপজেলা পর্যায়ে যারা আছেন তাদের কন্ট্রোল করে, আমাদের চলা খুব কষ্টকর। তবু আমরা চলছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দেয়ার বিষয়টি থাকে, আবার ভোক্তারা যাতে কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। আবার বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। এর পাশাপাশি আমাদের অস্থির প্রকৃতির মতো, অস্থির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের পাঞ্জা লড়তে হয়। এ নানাবিধ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের এগোতে হয়। জ্বালানি তেলের দাম যখন বাড়লো, সেই হিসেবে যদি আমরা দেখি চালের দাম খুব বেশি হলে ৪০ পয়সা থেকে ৫০ পয়সা, না হলে জায়গা বেসিসে সর্বোচ্চ এক টাকা বাড়তে পারে। সেখানে রাতারাতি ৫, ৭ ও ৮ টাকা বাড়িয়ে দিলো। আমি বলবো এটা অস্থির মস্তিষ্কের পরিচয়।’

খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সে সময় আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ১ সেপ্টেম্বর ওএমএসে চাল বিক্রি করা হবে। আমরা সেই দিন থেকে সারাদেশে এটার উদ্বোধন করেছি এবং এ কার্যক্রম চালু আছে। আমাদের গম আসছে। গমের সমস্যা হবে না। আমরা ১ অক্টোবর থেকে জেলা এবং সিটি করপোরেশন, যেখানে আমরা আটা দিতাম, সব ডিলারকে আমরা দিনে এক টন করে আটা দেয়া শুরু করবো। যাতে মানুষ আটা পায়। সব আটা প্যাকেট করা যায় কিনা সেই পরিকল্পনা নিয়েছি। এ আটা আমরা দুই কেজি করে প্যাকেট করার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের ১৮ টাকা, আর বাজারে অনেক বেশি। আমাদের তো লোভের সীমা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘যার পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় সব প্যাকেট করে... হয় তো প্যাকেট করে বিক্রি করলে দাম একটু বেশি থাকবে। তবে এটাও ঠিক বাজার মূল্যের থেকে অর্ধেক দাম পড়বে। আমি মনে করি, এখানে থেকে কালোবাজারি বা অসৎ উদ্দেশ্য বন্ধ হবে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওএমএসে আমরা আটা প্যাকেট করে বিক্রির চেষ্টা করছি। যদি প্যাকেটজাত সম্পন্ন করতে না পারি, তাহলে খোলা আমরা যেভাবে বিক্রি করি, সেইভাবে বিক্রি করবো। আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য মজুদ আছে, তাতে খাদ্যের হাহাকারের কোন অবস্থা নেই। আমরা সামনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। না জানি সামনে বন্যা হয় কিনা বা খরায় যদি আমাদের ফসলের ক্ষতি হয়, আমাদের যদি উৎপাদন কম হয়, সে জন্য অগ্রিম প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছি। আমাদের গোডাউন থেকে যতটুকু বেরিয়ে যাচ্ছে ওএমএস, রেশন, কাবিখা, ভিজিবি ইত্যাদি মিলে যেটুকু বেরিয়ে যাবে, আমরা যেন সেটা পূর্ণাঙ্গ পরিপূর্ণ করে রাখতে পারি। সবসময় যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি, এটা আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে।’

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

এবার ওএমএসে প্যাকেটজাত আটা বিক্রির পরিকল্পনা

অর্থনৈতিক বার্তা পারবেশক

আগামী ১ অক্টোবর থেকে সরকারের খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রমে আটা প্যাকেটে বিক্রি করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ওএমএসে আটা প্যাকেট করে বিক্রির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে দাম একটু বেশি পড়তে পারে, দুই কেজির প্যাকেট করা হবে। তবে, বাজারে আটা যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তার অর্ধেক দামে বিক্রি করা হবে।’

গতকাল সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ এ তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাস আর সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

মন্ত্রী বলেন, ‘গম শিপিং শুরু হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে খোলা বাজারে আটা বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে। সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে যেসব ডিলার আছে তাদের এক টন করে আটা দেয়া হবে। আমাদের অনেক বড় পরিবার। খাদ্য অধিদপ্তর বা খাদ্য কর্মকর্তা উপজেলা পর্যায়ে যারা আছেন তাদের কন্ট্রোল করে, আমাদের চলা খুব কষ্টকর। তবু আমরা চলছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দেয়ার বিষয়টি থাকে, আবার ভোক্তারা যাতে কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। আবার বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। এর পাশাপাশি আমাদের অস্থির প্রকৃতির মতো, অস্থির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের পাঞ্জা লড়তে হয়। এ নানাবিধ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের এগোতে হয়। জ্বালানি তেলের দাম যখন বাড়লো, সেই হিসেবে যদি আমরা দেখি চালের দাম খুব বেশি হলে ৪০ পয়সা থেকে ৫০ পয়সা, না হলে জায়গা বেসিসে সর্বোচ্চ এক টাকা বাড়তে পারে। সেখানে রাতারাতি ৫, ৭ ও ৮ টাকা বাড়িয়ে দিলো। আমি বলবো এটা অস্থির মস্তিষ্কের পরিচয়।’

খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সে সময় আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ১ সেপ্টেম্বর ওএমএসে চাল বিক্রি করা হবে। আমরা সেই দিন থেকে সারাদেশে এটার উদ্বোধন করেছি এবং এ কার্যক্রম চালু আছে। আমাদের গম আসছে। গমের সমস্যা হবে না। আমরা ১ অক্টোবর থেকে জেলা এবং সিটি করপোরেশন, যেখানে আমরা আটা দিতাম, সব ডিলারকে আমরা দিনে এক টন করে আটা দেয়া শুরু করবো। যাতে মানুষ আটা পায়। সব আটা প্যাকেট করা যায় কিনা সেই পরিকল্পনা নিয়েছি। এ আটা আমরা দুই কেজি করে প্যাকেট করার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের ১৮ টাকা, আর বাজারে অনেক বেশি। আমাদের তো লোভের সীমা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘যার পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় সব প্যাকেট করে... হয় তো প্যাকেট করে বিক্রি করলে দাম একটু বেশি থাকবে। তবে এটাও ঠিক বাজার মূল্যের থেকে অর্ধেক দাম পড়বে। আমি মনে করি, এখানে থেকে কালোবাজারি বা অসৎ উদ্দেশ্য বন্ধ হবে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওএমএসে আমরা আটা প্যাকেট করে বিক্রির চেষ্টা করছি। যদি প্যাকেটজাত সম্পন্ন করতে না পারি, তাহলে খোলা আমরা যেভাবে বিক্রি করি, সেইভাবে বিক্রি করবো। আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য মজুদ আছে, তাতে খাদ্যের হাহাকারের কোন অবস্থা নেই। আমরা সামনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। না জানি সামনে বন্যা হয় কিনা বা খরায় যদি আমাদের ফসলের ক্ষতি হয়, আমাদের যদি উৎপাদন কম হয়, সে জন্য অগ্রিম প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছি। আমাদের গোডাউন থেকে যতটুকু বেরিয়ে যাচ্ছে ওএমএস, রেশন, কাবিখা, ভিজিবি ইত্যাদি মিলে যেটুকু বেরিয়ে যাবে, আমরা যেন সেটা পূর্ণাঙ্গ পরিপূর্ণ করে রাখতে পারি। সবসময় যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি, এটা আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে।’