গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী আজও বেগবান

মতিউর রহমান রাণা

নতুন নাটক ‘গ্যাঁড়াকল’ নিয়ে বলেন

প্রকৃত জনপদের পান্তিক জনগোষ্ঠী যাদের জলমান জীবন বোধ ও জীবন-যাপন, প্রেম-বিরহ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, সুখ-শান্তি দুঃখের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরবার চেষ্টা করা হয়েছে ‘গ্যাঁড়াকল’ নাটকে। এই প্রান্তজনের জীবনের গল্পেও চলে আসে প্রকৃত জনপদের মতই বন্ধুর স্বার্থপরতা, ভুল বোঝাবুঝির দ্বন্ধ। আবার বন্ধুর বিরহে মনোস্তাত্ত্বিক নিপীড়ন, কতকটা প্রেম আর খানিকটা ঈর্ষা। প্রকৃতির এই সহজ সরল মানুষগুলো তাদের কষ্টের মাঝে সৎ ও অবিচল থাকতেও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থেকে অসৎ রাজনৈতিক নেতা দ্বারা প্রভাবিত হতে হয় বাধ্য। এরকমই এক সামান্য ঘটনা থেকেই বিবাদে জড়িয়ে পড়ে গ্রামের সহজ-সরল খেটেখাওয়া মানুষ মোখলেস ও মফিজ। ঘটনা সাধারণ কিন্তু সময়ে হয়ে উঠে বিপর্যয়ের অনুরণন।

উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা কেমন থাকছে?

উদ্বোধনী আয়োজনে রয়েছে সীমিত পরিসরে আনুষ্ঠিকতা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন আতাউর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে থাকবেন চন্দন রেজা ও অনন্ত হিরা। নাটকটির উদ্বোধন করবেন লিয়াকত আলী লাকী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করবেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক খলিল।

নাটকের অভিনয় শিল্পী ও কলাকুশলী বিষয়ে বলেন

গ্যাঁড়াকল নাটকের চরিত্রগুলোর রূপদান করবেনÑ রিপন, মাসুদ, তানিশা, জ্যোতি, আবীর, রুদ্র, মাসুম, আল-আমিন, মানিক, নাসরিন, মজিবর, মাহমুদুলসহ অনেকে। নাটকটি কস্টিউমে থাকবেন নওশীন ইসলাম দিশা, সেটে রফিকুল্লাহ, আলোয় নজরুল ইসলাম, মেকাপে আলতাফ সুবধ, আবহে বিকাশ।

গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী সম্পর্কে সংক্ষেপে যদি বলেন

ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় অর্থাৎ ১৯৭৭ সালে নাটকের রিহার্সেল দেখতে দেখতে আমার নাটক লেখায় হাতেখড়ি। প্রথম লিখিত নাটক ‘গোলাপ কেন ঝরে’। তরুণ প্রজন্মকে পথভ্রষ্ট হতে দিতে না চাওয়ার এ নাটক মঞ্চায়নের সঙ্গে সঙ্গে তিন গ্রামে বায়না আসে। মাস্টার্স শেষে ঢাকায় চাকরির সুবাদে পরিচয় স্বরবীথির দলপ্রধান মোহাম্মদ আলী সুজনের সঙ্গে। ১৯৮৮ সালে তার তত্ত্বাবধানে মঞ্চয়িত হয় আমার লেখা নাটক, ‘এখানেই শেষ নয়’ ও ‘এখন ও ওরা’। তারপর নিজেদের নাটক নিজেদের মতো করবো ভেবে ১৯৯৩ সালে তৎকালীন ইত্তেফাক পত্রিকার সিনিয়র সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, জনকন্ঠ পত্রিকার সহ-সম্পাদক কবি ইউসুফ পাশাদের মতো ব্যক্তিত্বদের নিয়ে ওয়ারীতে প্রতিষ্ঠা করি গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী। সেøাগান হিসেবে হৃদয়ে এবং দলীয় ব্যানারে তুলে নেই- ‘গুহাবাস থেকে জ্ঞান বিজ্ঞান, সবই মানুষের অবদান। অচলায়তন এর আগল ভাঙ্গ।’ প্রায় ত্রিশ বছরের প্রান্ত ছুঁয়ে অতীতের আমাদের গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী আজও বেগবান।

দলের বিগত প্রযোজনা নিয়ে বলেন

ভাষা আন্দোলনের চেতনা নিয়ে নাটক এখানেই শেষ নয়, সামাজিক প্রহসন নিয়ে গণতন্ত্রের পাঠশালা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে স্মৃতি হয়ে থাকবে- মৌলবাদ নিয়ে এখনও ওরা, ব্যক্তির ভ-ামি নিয়ে গিরগিট, কলহের কা-ারীদের নিয়ে অগ্নিগণ প্রভৃতি। তবে একটা আনন্দের কথা বলতে চাই, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে উদ্বোধিত হয়েছিল আমার রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘ গিরগিট’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী আজও বেগবান

মতিউর রহমান রাণা

image

নতুন নাটক ‘গ্যাঁড়াকল’ নিয়ে বলেন

প্রকৃত জনপদের পান্তিক জনগোষ্ঠী যাদের জলমান জীবন বোধ ও জীবন-যাপন, প্রেম-বিরহ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, সুখ-শান্তি দুঃখের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরবার চেষ্টা করা হয়েছে ‘গ্যাঁড়াকল’ নাটকে। এই প্রান্তজনের জীবনের গল্পেও চলে আসে প্রকৃত জনপদের মতই বন্ধুর স্বার্থপরতা, ভুল বোঝাবুঝির দ্বন্ধ। আবার বন্ধুর বিরহে মনোস্তাত্ত্বিক নিপীড়ন, কতকটা প্রেম আর খানিকটা ঈর্ষা। প্রকৃতির এই সহজ সরল মানুষগুলো তাদের কষ্টের মাঝে সৎ ও অবিচল থাকতেও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থেকে অসৎ রাজনৈতিক নেতা দ্বারা প্রভাবিত হতে হয় বাধ্য। এরকমই এক সামান্য ঘটনা থেকেই বিবাদে জড়িয়ে পড়ে গ্রামের সহজ-সরল খেটেখাওয়া মানুষ মোখলেস ও মফিজ। ঘটনা সাধারণ কিন্তু সময়ে হয়ে উঠে বিপর্যয়ের অনুরণন।

উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা কেমন থাকছে?

উদ্বোধনী আয়োজনে রয়েছে সীমিত পরিসরে আনুষ্ঠিকতা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন আতাউর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে থাকবেন চন্দন রেজা ও অনন্ত হিরা। নাটকটির উদ্বোধন করবেন লিয়াকত আলী লাকী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করবেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক খলিল।

নাটকের অভিনয় শিল্পী ও কলাকুশলী বিষয়ে বলেন

গ্যাঁড়াকল নাটকের চরিত্রগুলোর রূপদান করবেনÑ রিপন, মাসুদ, তানিশা, জ্যোতি, আবীর, রুদ্র, মাসুম, আল-আমিন, মানিক, নাসরিন, মজিবর, মাহমুদুলসহ অনেকে। নাটকটি কস্টিউমে থাকবেন নওশীন ইসলাম দিশা, সেটে রফিকুল্লাহ, আলোয় নজরুল ইসলাম, মেকাপে আলতাফ সুবধ, আবহে বিকাশ।

গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী সম্পর্কে সংক্ষেপে যদি বলেন

ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় অর্থাৎ ১৯৭৭ সালে নাটকের রিহার্সেল দেখতে দেখতে আমার নাটক লেখায় হাতেখড়ি। প্রথম লিখিত নাটক ‘গোলাপ কেন ঝরে’। তরুণ প্রজন্মকে পথভ্রষ্ট হতে দিতে না চাওয়ার এ নাটক মঞ্চায়নের সঙ্গে সঙ্গে তিন গ্রামে বায়না আসে। মাস্টার্স শেষে ঢাকায় চাকরির সুবাদে পরিচয় স্বরবীথির দলপ্রধান মোহাম্মদ আলী সুজনের সঙ্গে। ১৯৮৮ সালে তার তত্ত্বাবধানে মঞ্চয়িত হয় আমার লেখা নাটক, ‘এখানেই শেষ নয়’ ও ‘এখন ও ওরা’। তারপর নিজেদের নাটক নিজেদের মতো করবো ভেবে ১৯৯৩ সালে তৎকালীন ইত্তেফাক পত্রিকার সিনিয়র সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, জনকন্ঠ পত্রিকার সহ-সম্পাদক কবি ইউসুফ পাশাদের মতো ব্যক্তিত্বদের নিয়ে ওয়ারীতে প্রতিষ্ঠা করি গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী। সেøাগান হিসেবে হৃদয়ে এবং দলীয় ব্যানারে তুলে নেই- ‘গুহাবাস থেকে জ্ঞান বিজ্ঞান, সবই মানুষের অবদান। অচলায়তন এর আগল ভাঙ্গ।’ প্রায় ত্রিশ বছরের প্রান্ত ছুঁয়ে অতীতের আমাদের গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠী আজও বেগবান।

দলের বিগত প্রযোজনা নিয়ে বলেন

ভাষা আন্দোলনের চেতনা নিয়ে নাটক এখানেই শেষ নয়, সামাজিক প্রহসন নিয়ে গণতন্ত্রের পাঠশালা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে স্মৃতি হয়ে থাকবে- মৌলবাদ নিয়ে এখনও ওরা, ব্যক্তির ভ-ামি নিয়ে গিরগিট, কলহের কা-ারীদের নিয়ে অগ্নিগণ প্রভৃতি। তবে একটা আনন্দের কথা বলতে চাই, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে উদ্বোধিত হয়েছিল আমার রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘ গিরগিট’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে।